দশ ঘণ্টার অভিযানে
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া দুর্গম পাহাড়ে ভেজাল মদের গোপন কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। গত শনিবার সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের ২০ কর্মকর্তা ও সদস্য দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে এ ভেজাল (চোলাই) মদের কারখানার সন্ধান পায়। কারখানা থেকে ১২ হাজারেও বেশি লিটার ভেজাল মদসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ে ভেজাল মদ তৈরি করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি বিক্রি করত। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তাদের র্যাব খুঁজছে।
র্যাব-৭ অপারেশন অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, তাদের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাপ্ততথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সকালে র্যাব-৭ একটি বিশেষ টিম তিন ঘণ্টায় কাদা-মাটি ও উঁচু-নিচু রাস্তা দিয়ে রাঙ্গুনিয়ার দুর্গম পাহাড়ে অভিযানে নামে। তারা পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে একটি ঘর দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরটি ঘেরাও করে। তারা ওই ঘর তল্লাশি করে অবৈধভাবে তৈরিকৃত ভেজাল চোলাই মদ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মদের পরিমাণ ১২ হাজার ৮৫০ লিটার। অপরিষ্কার ও নোংরা ড্রাম, বোতলসহ বিভিন্নভাবে এ সব মদ তৈরি করে সেখানে রাখা হতো। এরপর শহরে, নদীপথে মদের স্পটগুলোতে পাইকারি বিক্রির জন্য পাঠানো হতো।
গ্রেপ্তারকৃত ৪ মাদক ব্যবসায়ী হলো, লিয়াত, আজগর আলী, নূর হোসেন ও রমজান। রাঙ্গুনিয়ার মুসুবাম পদুয়া এলাকার বাসিন্দা।
মাদক ব্যবসায়ীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দুর্গম পাহাড়ে আস্তানা করে চোলাই মদ তৈরি ও পাইকারি বিক্রি করত। দুর্গম পাহাড় এবং সেখানে যাওয়া কষ্টকর বিধায় কেউ সেখানে যেতে সাহস করত না। ওই পাহাড়ে আরও সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানা আছে কিনা তা উদ্ঘাটনে র্যাব তদন্ত করছেন।
আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, রাঙ্গুনিয়া এলাকায় একাধিক দুর্গম পাহাড় রয়েছে। এ সব পাহাড়ের অপরাধীরা আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ করে। অনেকে সময় অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করে।
সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও রাঙ্গুনিয়ার বর্ডার এলাকায় চাঁদাবাজরা অবস্থান নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করে। চাঁদাবাজরা চাঁদাবাজি করে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। স্থানীয়রা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দাপটে আতংকে থাকেন। পাহাড়ে সন্ত্রাসী ধরপাকড় অভিযান চালালে অনেক চিহ্নিত অপরাধীও গ্রেপ্তার হবে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী মুঠোফোনে বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় অর্ধশতের বেশি ছোট বড় পাহাড় আছে। পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে অভিযান চালানো কষ্টকর। অভিযানের খবর পাওয়ার পর অপরাধীরা আগে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে কিছু উপজাতি বসবাস করে। তারা নিজেরাই ওই সব মদ তৈরি ও বিক্রি করে এবং খায়। ওই সব দুর্গম অঞ্চলে মাঝে মধ্যে পুলিশও অভিযান চালায়।
র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে তারা প্রায় অভিযান চালায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজখবর নিয়ে তারা এ অভিযান চালায়। সেখানে অপরাধীদের খোঁজে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত আছে। ভেজাল, মদ বিক্রিকারীরা বিভিন্ন বোতলে মদ রেখে বস্তায় ভরে সাপ্লাই দেয়।
উল্লেখ্য, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে। কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত ভেজাল মদ পান করে অনেকেই আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করেছে। এ নিয়ে প্রায় সমস্যা হচ্ছে। এর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভেজাল মদের কারখানা উদ্ঘাটনে দেশজুড়ে অভিযান জোরদার করে। এরই অংশ হিসেবে র্যাবের বিশেষ টিম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালায়।
দশ ঘণ্টার অভিযানে
সোমবার, ১০ মে ২০২১
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া দুর্গম পাহাড়ে ভেজাল মদের গোপন কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। গত শনিবার সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের ২০ কর্মকর্তা ও সদস্য দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে এ ভেজাল (চোলাই) মদের কারখানার সন্ধান পায়। কারখানা থেকে ১২ হাজারেও বেশি লিটার ভেজাল মদসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ে ভেজাল মদ তৈরি করে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি বিক্রি করত। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তাদের র্যাব খুঁজছে।
র্যাব-৭ অপারেশন অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন ভূইয়া মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, তাদের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাপ্ততথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সকালে র্যাব-৭ একটি বিশেষ টিম তিন ঘণ্টায় কাদা-মাটি ও উঁচু-নিচু রাস্তা দিয়ে রাঙ্গুনিয়ার দুর্গম পাহাড়ে অভিযানে নামে। তারা পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে একটি ঘর দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরটি ঘেরাও করে। তারা ওই ঘর তল্লাশি করে অবৈধভাবে তৈরিকৃত ভেজাল চোলাই মদ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মদের পরিমাণ ১২ হাজার ৮৫০ লিটার। অপরিষ্কার ও নোংরা ড্রাম, বোতলসহ বিভিন্নভাবে এ সব মদ তৈরি করে সেখানে রাখা হতো। এরপর শহরে, নদীপথে মদের স্পটগুলোতে পাইকারি বিক্রির জন্য পাঠানো হতো।
গ্রেপ্তারকৃত ৪ মাদক ব্যবসায়ী হলো, লিয়াত, আজগর আলী, নূর হোসেন ও রমজান। রাঙ্গুনিয়ার মুসুবাম পদুয়া এলাকার বাসিন্দা।
মাদক ব্যবসায়ীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দুর্গম পাহাড়ে আস্তানা করে চোলাই মদ তৈরি ও পাইকারি বিক্রি করত। দুর্গম পাহাড় এবং সেখানে যাওয়া কষ্টকর বিধায় কেউ সেখানে যেতে সাহস করত না। ওই পাহাড়ে আরও সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানা আছে কিনা তা উদ্ঘাটনে র্যাব তদন্ত করছেন।
আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি জানান, রাঙ্গুনিয়া এলাকায় একাধিক দুর্গম পাহাড় রয়েছে। এ সব পাহাড়ের অপরাধীরা আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ করে। অনেকে সময় অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করে।
সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও রাঙ্গুনিয়ার বর্ডার এলাকায় চাঁদাবাজরা অবস্থান নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করে। চাঁদাবাজরা চাঁদাবাজি করে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। স্থানীয়রা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দাপটে আতংকে থাকেন। পাহাড়ে সন্ত্রাসী ধরপাকড় অভিযান চালালে অনেক চিহ্নিত অপরাধীও গ্রেপ্তার হবে।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কী মুঠোফোনে বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় অর্ধশতের বেশি ছোট বড় পাহাড় আছে। পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে অভিযান চালানো কষ্টকর। অভিযানের খবর পাওয়ার পর অপরাধীরা আগে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে কিছু উপজাতি বসবাস করে। তারা নিজেরাই ওই সব মদ তৈরি ও বিক্রি করে এবং খায়। ওই সব দুর্গম অঞ্চলে মাঝে মধ্যে পুলিশও অভিযান চালায়।
র্যাব সদর দপ্তর থেকে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে তারা প্রায় অভিযান চালায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খোঁজখবর নিয়ে তারা এ অভিযান চালায়। সেখানে অপরাধীদের খোঁজে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত আছে। ভেজাল, মদ বিক্রিকারীরা বিভিন্ন বোতলে মদ রেখে বস্তায় ভরে সাপ্লাই দেয়।
উল্লেখ্য, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে। কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত ভেজাল মদ পান করে অনেকেই আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করেছে। এ নিয়ে প্রায় সমস্যা হচ্ছে। এর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভেজাল মদের কারখানা উদ্ঘাটনে দেশজুড়ে অভিযান জোরদার করে। এরই অংশ হিসেবে র্যাবের বিশেষ টিম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালায়।