হত্যাকান্ডের শিকার মাহমুদা খানম মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ২০১৩ সালের কক্সবাজারে জাতি সংঘের শরণার্থী শিবিরে কর্মরত উন্নয়নকর্মী ভারতীয় নাগরিক গায়েত্রী সিংয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পথের কাটা সরাতেই স্ত্রী মিতুকে খুন করান বাবুল আক্তার। মূলত উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিংয়ের সঙ্গে বাবুলের প্রেমের বিরোধ থেকেই স্ত্রীকে মিতুকে সরিয়ে দিতে এ কিলিং মিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তাবায়ন করেন বাবুল আক্তার। তদন্ত সংস্থা ও মিতুর বাবার মামলা সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করার পর পাঁচলাইশ থানায় সাংবাদিকদের মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে এক এনজিও কর্মীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঝগড়া হয়। মত্যুর আগে মিতু বিষয়টি তাদের জানিয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তারা বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফল হননি। একপর্যায়ে বাবুল ও ওই নারী মিতুকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। মিতু-বাবুল দম্পত্তির সুখের ঘরে আগুন লাগে মূলত এ গায়েত্রীর পরকীয়ার জেরে। তাদের পারিবারীক কলহের জেরে পরকীয়ার জেরে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করতে ভাড়াটে খুনিদের তিন লাখ টাকায় কিংলিং মিশনের চুক্তি করেন তারই স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। এ কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন তারই ঘনিষ্ট সোর্স মুছা। আর চুক্তির তিন লাখ টাকা বাবুলের নিকটাত্মীয় সাইফুলের মাধ্যমে মুছার এক আত্মীয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। সাইফুলের সাথে বাবুলের মামুন নামে এক বন্ধুও ছিল। মূলত উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিংয়ের সঙ্গে বাবুলের প্রেমের বিরোধ থেকেই স্ত্রীকে মিতুকে সরিয়ে দিতে এ কিলিং মিশনের পরিকল্পনা করেন বাবুল আক্তার।
সম্প্রতি মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যগুলো জানিয়েছিলেন বাবুলের নিকটাত্মীয় সাইফুল। তিনি শুধু পিবিআইকের কাছেই এসব তথ্য স্বীকার করেননি। সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় দেওয়া আদালতেও কিলিং মিশনের বিস্তারিত তুলেও ধরেছেন সাইফুল ও মামুন। মূলত এরপরই খুনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বাবুল আক্তারের নাম উঠে আসে। কেননা এর আগে কিলিং মিশনের দলনেতা হিসেবে মুছার নাম অন্য খুনিদের জবানবন্দিতে উঠে আসলেও কার নির্দেশে বা কে মাস্টার মাইন্ড তা স্পষ্ট ছিল না। এতোদিন পর স্পষ্ট হয়েছে মূলত, বাবুল আক্তারই মিতু হত্যার মাস্টার মাইন্ড ও নির্দেশদাতা।
গায়ত্রী জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে প্রতিরোধ শাখার একজন কর্মকর্তা হিসাবে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন। ২০১৩ সালে তখন বাবুল আক্তার কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে গায়ত্রী সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কর্মরত।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাবুল আক্তার সুদানে শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে ২৯ বার বিভিন্ন ম্যাসেজ দেন গায়েত্রী সিং। এরপর মিশন থেকে বাবুল ফিরলে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের বাবুল আক্তার বিছানার উপর মোবাইল ফোনটি রেখে বাথরুমে যান। এসময় একটি এসএমএস আসে বাবুলের মোবাইলে। তখন মিতু এসএমএসটি চেক করে দেখতে পান একটি আপত্তিকর বার্তা। তখন মিতু মোবাইলটির সুইস বন্ধ করে বাসার স্টোর রুমে ফোনটি লুকিয়ে রাখে। এরপর বাবুল আক্তার ফোন খোঁজাখুঁজি করলে মিতু ফোনের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন। পরদিন বাবুল আক্তার বাসা থেকে বের হলে মিতু মোবাইলের সিম বের করে মোবাইলটি অন করেন। এরপর ওই মোবাইল থেকে একে একে ২৯টি এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা) পড়েন। পরে এ ব্যাপারটি মিতু প্রমাণ হিসেবে ছেলের ছবি আঁকার আর্ট পেপারে লিখে রাখেন। ২৯টি ম্যাসেজের সবগুলোই ইংরেজিতে লেখা। ম্যাসেজগুলোতে গায়ত্রী ও বাবুলের মধ্যে গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। একটি ম্যাসেজে এমন লেখা হয়েছে, ‘মাই পোয়েট মাই লাভ কাম টু মি’, লাভ ইউ মাই কিং উলড হ্যাভ কিসড ইউ প্যাশোনেটলি, ইফ ইউ ওয়্যার হেয়ার নাউ’, লাভ ইউ বেবি, গুড মর্নিং, কাম টু স্লিপ টু মি।’
এদিকে মোবাইল না পেয়ে বাবুল আক্তার ট্র্যাকিং করে নিশ্চিত হন যে তার মোবাইল ফোনটি বাসাতেই রয়েছে। এই মোবাইল ফোন নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছে। বিষয়টি নিয়ে পরদিন মিতু ফোন দেয় তার মায়ের কাছে। এরপর থেকেই মূলত তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। মূলত গায়েত্রী ও বাবুলের পরকীয়া প্রেমের বলি হতে হয়েছিল দুই সন্তানের জনক মাহমুদা খানম মিতুকে। পরকীয়া প্রেমের এসএমএস নিয়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যায় হত্যার সাত মাস আগে।এছাড়া বাবুল-গায়েত্রীর প্রেমের নানা উপখ্যান ছোট ছোট চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘তালিবান’ ও ‘বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট’ নামে গায়েত্রীর উপহার দেওয়া দুটি বইয়ে।
বুধবার, ১২ মে ২০২১
হত্যাকান্ডের শিকার মাহমুদা খানম মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার ২০১৩ সালের কক্সবাজারে জাতি সংঘের শরণার্থী শিবিরে কর্মরত উন্নয়নকর্মী ভারতীয় নাগরিক গায়েত্রী সিংয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পথের কাটা সরাতেই স্ত্রী মিতুকে খুন করান বাবুল আক্তার। মূলত উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিংয়ের সঙ্গে বাবুলের প্রেমের বিরোধ থেকেই স্ত্রীকে মিতুকে সরিয়ে দিতে এ কিলিং মিশনের পরিকল্পনা ও বাস্তাবায়ন করেন বাবুল আক্তার। তদন্ত সংস্থা ও মিতুর বাবার মামলা সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করার পর পাঁচলাইশ থানায় সাংবাদিকদের মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে এক এনজিও কর্মীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের ঝগড়া হয়। মত্যুর আগে মিতু বিষয়টি তাদের জানিয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তারা বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সফল হননি। একপর্যায়ে বাবুল ও ওই নারী মিতুকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। মিতু-বাবুল দম্পত্তির সুখের ঘরে আগুন লাগে মূলত এ গায়েত্রীর পরকীয়ার জেরে। তাদের পারিবারীক কলহের জেরে পরকীয়ার জেরে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করতে ভাড়াটে খুনিদের তিন লাখ টাকায় কিংলিং মিশনের চুক্তি করেন তারই স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। এ কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন তারই ঘনিষ্ট সোর্স মুছা। আর চুক্তির তিন লাখ টাকা বাবুলের নিকটাত্মীয় সাইফুলের মাধ্যমে মুছার এক আত্মীয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। সাইফুলের সাথে বাবুলের মামুন নামে এক বন্ধুও ছিল। মূলত উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিংয়ের সঙ্গে বাবুলের প্রেমের বিরোধ থেকেই স্ত্রীকে মিতুকে সরিয়ে দিতে এ কিলিং মিশনের পরিকল্পনা করেন বাবুল আক্তার।
সম্প্রতি মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যগুলো জানিয়েছিলেন বাবুলের নিকটাত্মীয় সাইফুল। তিনি শুধু পিবিআইকের কাছেই এসব তথ্য স্বীকার করেননি। সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় দেওয়া আদালতেও কিলিং মিশনের বিস্তারিত তুলেও ধরেছেন সাইফুল ও মামুন। মূলত এরপরই খুনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বাবুল আক্তারের নাম উঠে আসে। কেননা এর আগে কিলিং মিশনের দলনেতা হিসেবে মুছার নাম অন্য খুনিদের জবানবন্দিতে উঠে আসলেও কার নির্দেশে বা কে মাস্টার মাইন্ড তা স্পষ্ট ছিল না। এতোদিন পর স্পষ্ট হয়েছে মূলত, বাবুল আক্তারই মিতু হত্যার মাস্টার মাইন্ড ও নির্দেশদাতা।
গায়ত্রী জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক ইউএনএইচসিআর প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে প্রতিরোধ শাখার একজন কর্মকর্তা হিসাবে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন। ২০১৩ সালে তখন বাবুল আক্তার কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে গায়ত্রী সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কর্মরত।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাবুল আক্তার সুদানে শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে ২৯ বার বিভিন্ন ম্যাসেজ দেন গায়েত্রী সিং। এরপর মিশন থেকে বাবুল ফিরলে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের বাবুল আক্তার বিছানার উপর মোবাইল ফোনটি রেখে বাথরুমে যান। এসময় একটি এসএমএস আসে বাবুলের মোবাইলে। তখন মিতু এসএমএসটি চেক করে দেখতে পান একটি আপত্তিকর বার্তা। তখন মিতু মোবাইলটির সুইস বন্ধ করে বাসার স্টোর রুমে ফোনটি লুকিয়ে রাখে। এরপর বাবুল আক্তার ফোন খোঁজাখুঁজি করলে মিতু ফোনের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন। পরদিন বাবুল আক্তার বাসা থেকে বের হলে মিতু মোবাইলের সিম বের করে মোবাইলটি অন করেন। এরপর ওই মোবাইল থেকে একে একে ২৯টি এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা) পড়েন। পরে এ ব্যাপারটি মিতু প্রমাণ হিসেবে ছেলের ছবি আঁকার আর্ট পেপারে লিখে রাখেন। ২৯টি ম্যাসেজের সবগুলোই ইংরেজিতে লেখা। ম্যাসেজগুলোতে গায়ত্রী ও বাবুলের মধ্যে গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। একটি ম্যাসেজে এমন লেখা হয়েছে, ‘মাই পোয়েট মাই লাভ কাম টু মি’, লাভ ইউ মাই কিং উলড হ্যাভ কিসড ইউ প্যাশোনেটলি, ইফ ইউ ওয়্যার হেয়ার নাউ’, লাভ ইউ বেবি, গুড মর্নিং, কাম টু স্লিপ টু মি।’
এদিকে মোবাইল না পেয়ে বাবুল আক্তার ট্র্যাকিং করে নিশ্চিত হন যে তার মোবাইল ফোনটি বাসাতেই রয়েছে। এই মোবাইল ফোন নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছে। বিষয়টি নিয়ে পরদিন মিতু ফোন দেয় তার মায়ের কাছে। এরপর থেকেই মূলত তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। মূলত গায়েত্রী ও বাবুলের পরকীয়া প্রেমের বলি হতে হয়েছিল দুই সন্তানের জনক মাহমুদা খানম মিতুকে। পরকীয়া প্রেমের এসএমএস নিয়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যায় হত্যার সাত মাস আগে।এছাড়া বাবুল-গায়েত্রীর প্রেমের নানা উপখ্যান ছোট ছোট চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘তালিবান’ ও ‘বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট’ নামে গায়েত্রীর উপহার দেওয়া দুটি বইয়ে।