বাস ছাড়া চলছে সব যানবাহনই
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ এখন অনেকটা স্বাভাবিক। বাস ছাড়া সড়ক-মহাসড়কে চলছে সব ধরনের যানবাহন। স্বাভাবিকভাবে চলছে মানুষের চলাফেরা।
কঠোর বিধি-নিষেধের ১৩তম দিনে বুধবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল যানবাহনের চাপ। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি লেগুনা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বেশির ভাগ যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে সব ধরনের দোকানপাট ছিল খোলা। চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলে বসেই খেতে দেখা গেছে অনেককেই। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব। কোন কারণ ছাড়াই বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষজন। সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে একই দৃশ্য। রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় আজিজ নামের এক মুদি দোকানদার বলেন, ‘সব কিছুই স্বাভাবিক। এখন কি লকডাউন আছে? পুলিশের গাড়ি মাঝে মাঝে সাইরেন বাজায়। তখন সামনের শাটার বন্ধ করি। পাশেরগুলো খোলাই থাকে। রাস্তায় সিএনজি আর বাস কম বলে একটু ফাঁকা লাগছে। আর কোনভাবে লকডাউন আছে বলে মনে হয়?’
আলম নামের অপর এক দোকানদার বলেন, ‘গার্মেন্টস চালরু পর সব খুলে দেয়া হয়েছে। কোথায় লকডাউন? সব তো খোলা। মানুষ তো অফিসে যাচ্ছে। তাই আমার কাছে কাপড় আসছে ধোয়া কিংবা ইস্ত্রি করার জন্য। দোকান তো এখন খোলা রাখতেই হবে।’
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে বাস ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচল করতে। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে। গুলিস্তান থেকে মোটরসাইকেলে মিরপুর যাচ্ছিলেন কামাল নামের একযাত্রী। গুলিস্তান জিপিওর পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য তার মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান।
পরে কামাল বলেন, ‘পুলিশ মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখল। সবকিছু ঠিক ছিল। আমি আমার ভাইকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমাকে সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।’
টিকাটুলি এলাকায় হাচিব নামের এক যাত্রী বলেন, ‘পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে তুমুল আড্ডা। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে কে? লকডাউনের তৎপরতা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টগুলোতে দেখা যায়। আর কোথাও দেখা যায় না।’
মিরপুর এলাকায় চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাহাবুব হাসান লিটন বলেন, ‘কোনো না কোনো অজুহাতে ঘর থেকে বাইরে আসছে মানুষজন। তাদের হরেক রকমের অজুহাত। বেশির ভাগ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলছেন, ডাক্তার দেখাতে যাব। ডাক্তারি সব বিষয় তো আমরাও বুঝি না।’ বুধবার তেমন কোনো মামলা বা জরিমানা করা হয়নি। সতর্ক করে মানুষজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বেসরকারি অফিসে কর্মরত সাইফুল ইসলামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু লকডাউনে তো আমার অফিস বন্ধ থাকার কথা। হোম অফিস করার কথা। কিন্তু তা কী হচ্ছে? আমাকে তো যেতে হচ্ছে। তাহলে লকডাউনটা কোথায়? লকডাউন শুধু নামে আছে। আপনিই নিজেই দেখছেন, স্কুল বন্ধ আর বাস বন্ধ। এ ছাড়া সব কিছুই চলছে।’
দয়াগঞ্জ এলাকার ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘সাধারণ মানুষ লকডাউনে বাইর না হইতে পারলে কি খাইব? তাই আমার মতো অনেকেই বাধ্য হইয়া রাস্তায় বাইর হইছে।’
রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন না থাকলেও অবাধেই চলাচল করছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মালবাহী পিকআপ কিংবা সিএনজি অটোরিকশা। কোথাও কোথাও দেখা গেছে যানজট। গুলিস্তান এলাকায় রিকশা চালক চাঁন মিয়া বলেন, ‘সড়কে গাড়ি আগের থেকে অনেক বেড়েছে। মানুষও চলাচল বেশি। কোন সড়কে যানজটে আটকে থাকতে হয়।’
রাজধানীর মালিবাগ, কাকরাইল, তোপখানা রোড, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন সড়কে রিকশা আর মানুষজনের চলাচলে কোনো বাধা ছিল না। রামপুরা থেকে দৈনিক বাংলা মোড়ে যাত্রী নিয়ে আসা রিকশা সরুজ মিয়া বলেন, ‘লকডাউন শেষ দিকে আছিল, কালকে আবার সরকার বাড়াইছে। ভোরবেলা রিকশা নিইয়া রাস্তায় আইসা রোডের চেহারা দেইখা মনে হইলো না লকডাউন বাড়াইছে। কোনো কড়াকড়িও পুলিশের দেখি নাই।’
বাস ছাড়া চলছে সব যানবাহনই
বুধবার, ০৪ আগস্ট ২০২১
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘কঠোর লকডাউন’ এখন অনেকটা স্বাভাবিক। বাস ছাড়া সড়ক-মহাসড়কে চলছে সব ধরনের যানবাহন। স্বাভাবিকভাবে চলছে মানুষের চলাফেরা।
কঠোর বিধি-নিষেধের ১৩তম দিনে বুধবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছিল যানবাহনের চাপ। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি লেগুনা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বেশির ভাগ যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে সব ধরনের দোকানপাট ছিল খোলা। চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলে বসেই খেতে দেখা গেছে অনেককেই। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব। কোন কারণ ছাড়াই বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষজন। সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে একই দৃশ্য। রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় আজিজ নামের এক মুদি দোকানদার বলেন, ‘সব কিছুই স্বাভাবিক। এখন কি লকডাউন আছে? পুলিশের গাড়ি মাঝে মাঝে সাইরেন বাজায়। তখন সামনের শাটার বন্ধ করি। পাশেরগুলো খোলাই থাকে। রাস্তায় সিএনজি আর বাস কম বলে একটু ফাঁকা লাগছে। আর কোনভাবে লকডাউন আছে বলে মনে হয়?’
আলম নামের অপর এক দোকানদার বলেন, ‘গার্মেন্টস চালরু পর সব খুলে দেয়া হয়েছে। কোথায় লকডাউন? সব তো খোলা। মানুষ তো অফিসে যাচ্ছে। তাই আমার কাছে কাপড় আসছে ধোয়া কিংবা ইস্ত্রি করার জন্য। দোকান তো এখন খোলা রাখতেই হবে।’
রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে বাস ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচল করতে। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে। গুলিস্তান থেকে মোটরসাইকেলে মিরপুর যাচ্ছিলেন কামাল নামের একযাত্রী। গুলিস্তান জিপিওর পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য তার মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান।
পরে কামাল বলেন, ‘পুলিশ মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখল। সবকিছু ঠিক ছিল। আমি আমার ভাইকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমাকে সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।’
টিকাটুলি এলাকায় হাচিব নামের এক যাত্রী বলেন, ‘পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে তুমুল আড্ডা। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে কে? লকডাউনের তৎপরতা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টগুলোতে দেখা যায়। আর কোথাও দেখা যায় না।’
মিরপুর এলাকায় চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মাহাবুব হাসান লিটন বলেন, ‘কোনো না কোনো অজুহাতে ঘর থেকে বাইরে আসছে মানুষজন। তাদের হরেক রকমের অজুহাত। বেশির ভাগ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলছেন, ডাক্তার দেখাতে যাব। ডাক্তারি সব বিষয় তো আমরাও বুঝি না।’ বুধবার তেমন কোনো মামলা বা জরিমানা করা হয়নি। সতর্ক করে মানুষজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বেসরকারি অফিসে কর্মরত সাইফুল ইসলামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু লকডাউনে তো আমার অফিস বন্ধ থাকার কথা। হোম অফিস করার কথা। কিন্তু তা কী হচ্ছে? আমাকে তো যেতে হচ্ছে। তাহলে লকডাউনটা কোথায়? লকডাউন শুধু নামে আছে। আপনিই নিজেই দেখছেন, স্কুল বন্ধ আর বাস বন্ধ। এ ছাড়া সব কিছুই চলছে।’
দয়াগঞ্জ এলাকার ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘সাধারণ মানুষ লকডাউনে বাইর না হইতে পারলে কি খাইব? তাই আমার মতো অনেকেই বাধ্য হইয়া রাস্তায় বাইর হইছে।’
রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন না থাকলেও অবাধেই চলাচল করছে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মালবাহী পিকআপ কিংবা সিএনজি অটোরিকশা। কোথাও কোথাও দেখা গেছে যানজট। গুলিস্তান এলাকায় রিকশা চালক চাঁন মিয়া বলেন, ‘সড়কে গাড়ি আগের থেকে অনেক বেড়েছে। মানুষও চলাচল বেশি। কোন সড়কে যানজটে আটকে থাকতে হয়।’
রাজধানীর মালিবাগ, কাকরাইল, তোপখানা রোড, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন সড়কে রিকশা আর মানুষজনের চলাচলে কোনো বাধা ছিল না। রামপুরা থেকে দৈনিক বাংলা মোড়ে যাত্রী নিয়ে আসা রিকশা সরুজ মিয়া বলেন, ‘লকডাউন শেষ দিকে আছিল, কালকে আবার সরকার বাড়াইছে। ভোরবেলা রিকশা নিইয়া রাস্তায় আইসা রোডের চেহারা দেইখা মনে হইলো না লকডাউন বাড়াইছে। কোনো কড়াকড়িও পুলিশের দেখি নাই।’