চব্বিশ বছর যাবত ভাত না খেয়ে দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে আকাশ নামের এক কিশোর। আকাশের বাড়ী শিবালয় উপজেলার শিবালয় গ্রামে। স্থানিয় ভাবে অনেকেই গ্রামটির নাম শিবালয় নতুন পাড়া আবার অনেকেই শিবালয় বালুর চর বলেই এলাকাটিকে চিনেন। এই গ্রামেই আকাশের বাড়ী । ছোট বেলা থেকেই কষ্টের সাথে পাল্লা দিয়ে আকাশের বেড়ে উঠা। পিতৃহীন আকাশ এর এই দুনিয়ায় মা আর নানি ছাড়া কেউ নেই। শত কষ্টের মাঝেও প্রাণখুলে হাসতে পারে আকাশ। অভাব-অনটন কখনও পিছু ছাড়েনি আকাশদের। মা আর নানি কাজ করে মুখের আহার জুগিয়েছেন। এখনও একই অবস্থা । সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। আকাশ লেখাপড়া করতে পারেনি এই সর্বনাশা অভাবের কারনে।
হায়রে অভাব! কোন কিছুই করতে পারলাম না এই জীবনে। একমাত্র ছেলেটা কে মানুষ করার বড় সাধ ছিল। পূরণ হল না এই অভাব না অভিশাপের কারনে। ছেলেটাকে তেমন লেখাপড়া শেখাতে পারলাম না। ছেলেটা ভাত মাছ খায় না। তারপরও তাকে সুধু রুটি ছাড়া ভাল মন্দ কোন কিছু খাওয়াতে পারলাম না। এমন করে কথা বলেই আকাশের মা রেনু বেগম আফসোস করছিলেন। তিনি আরো বলছিলেন , আকাশ শিশু বেলা থেকেই ভাত-মাছ খায় না । আমরা অনেক চেষ্টা করেছি ভাত-মাছ খাওয়ানোর জন্য কিন্তু পারিনি। খুবই ভয় পেতাম ছেলেটা ভাত-মাছ খায় না কোন বড় ধরনের অসুখ হল কিনা। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। উনারা বলেছেন কোন অসুবিধা হবে না।
আকাশের নানী হাজেরা বেগম বলেন, আমার নাতি আকাশ ছোট বেলা থেকেই ভাত- মাছ খায় না। অনেক কষ্ট করছি ওরে নিয়া । কত ডাক্তার - কবিরাজ দেখিয়েছি, কোন লাভ হয় নাই । কত ঝাড় - ফুক করিয়েছি তাও কোন কাম অয় নাই । তয় আমার নাতিটা অনেক ভাল । সব সময় হাসি খুুশি থাকে।
দীর্ঘদিন ভাত না খেয়ে কেমন আছেন এমন প্রশ্ন শুনে হাসি মুখেই আকাশ বলেন,ভাত না খেয়ে ভালই আছি। আমি নানান জাতিয় ফলমুল ও রুটি খাই। কোন অসুবিধা হয় না । তাছাড়া এখন আর মনেই হয় না আমি ভাত জাতিয় কোন কিছু খাই না। আমার কোন সমস্যা নাই। আমি দিব্যি ভাল আছি । আনন্দেই আছি।
একটি খেলাধুলার সামগ্রী বিত্রিুর দোকানে কাজ করে সংসার চালানো আকাশ কে দেখলে মনেই হয় না তার কোন অভাব আছে। সদা হাসি মুখে কাষ্টমার দের সাথে কথা বলছেন। তার আশে-পাশের দোকানদাররাও তার উপর অনেক খুশি তার ব্যবহারের কারনে। তার পাশের ব্যাবসায়ী আলামিন , রফিক দর্জি , লিটন , শিপলু ,মাজেদ, সুনিল সহ অনেকেই বলেছেন, আকাশ অত্যান্ত ভাল ছেলে । তার ব্যাবহারে আমরা সবাই খুব খুশি। তাকে দেখে মনেই হয় না তিনি কোন অভাবে আছেন। তারা আরো বলেন, আমরা কেউ অনেকদিন পর্যন্ত জানতাম না যে আকাশ ভাত- মাছ খায় না ।
দীর্ঘ চব্বিশ বছর যাবত একজন মানুষ ভাত না খেয়ে বেচে আছেন। ভাল আছেন। এটা কেমন করে সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক মো: আরশাদ উল্লাহ বলেন, এটা এক ধরনের সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার। আকাশের শিশু কাল থেকেই ভাত এর প্রতি অনিহা তৈরী হয়েছে। তাই সে ভাত খায় না। তাছাড়া ভাত হলো কার্বহাইড্রেড জাতিয় খাবার। ভাত ছাড়াও অনেক খাবারে কার্বহাইড্রেড ও শর্করা জাতিয় উপাদান আছে। তাই আকাশ ভাত না খেলেও যেহেতু রুটি জাতিয় খাবার খাচ্ছে সেই কারনে তার শারিরীক কোন সমস্যা হচ্ছে না।
একই বিষয়ে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল বলেন, এটা এক ধরনের মানসিক ব্যাপার। তাছাড়া কোন সমস্যা না। এছাড়া পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই ভাত খায় না । ভাতে থাকা পুষ্টি উপাদান অন্য খাবার থেকেও পূরণ হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
রোববার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
চব্বিশ বছর যাবত ভাত না খেয়ে দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে আকাশ নামের এক কিশোর। আকাশের বাড়ী শিবালয় উপজেলার শিবালয় গ্রামে। স্থানিয় ভাবে অনেকেই গ্রামটির নাম শিবালয় নতুন পাড়া আবার অনেকেই শিবালয় বালুর চর বলেই এলাকাটিকে চিনেন। এই গ্রামেই আকাশের বাড়ী । ছোট বেলা থেকেই কষ্টের সাথে পাল্লা দিয়ে আকাশের বেড়ে উঠা। পিতৃহীন আকাশ এর এই দুনিয়ায় মা আর নানি ছাড়া কেউ নেই। শত কষ্টের মাঝেও প্রাণখুলে হাসতে পারে আকাশ। অভাব-অনটন কখনও পিছু ছাড়েনি আকাশদের। মা আর নানি কাজ করে মুখের আহার জুগিয়েছেন। এখনও একই অবস্থা । সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। আকাশ লেখাপড়া করতে পারেনি এই সর্বনাশা অভাবের কারনে।
হায়রে অভাব! কোন কিছুই করতে পারলাম না এই জীবনে। একমাত্র ছেলেটা কে মানুষ করার বড় সাধ ছিল। পূরণ হল না এই অভাব না অভিশাপের কারনে। ছেলেটাকে তেমন লেখাপড়া শেখাতে পারলাম না। ছেলেটা ভাত মাছ খায় না। তারপরও তাকে সুধু রুটি ছাড়া ভাল মন্দ কোন কিছু খাওয়াতে পারলাম না। এমন করে কথা বলেই আকাশের মা রেনু বেগম আফসোস করছিলেন। তিনি আরো বলছিলেন , আকাশ শিশু বেলা থেকেই ভাত-মাছ খায় না । আমরা অনেক চেষ্টা করেছি ভাত-মাছ খাওয়ানোর জন্য কিন্তু পারিনি। খুবই ভয় পেতাম ছেলেটা ভাত-মাছ খায় না কোন বড় ধরনের অসুখ হল কিনা। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। উনারা বলেছেন কোন অসুবিধা হবে না।
আকাশের নানী হাজেরা বেগম বলেন, আমার নাতি আকাশ ছোট বেলা থেকেই ভাত- মাছ খায় না। অনেক কষ্ট করছি ওরে নিয়া । কত ডাক্তার - কবিরাজ দেখিয়েছি, কোন লাভ হয় নাই । কত ঝাড় - ফুক করিয়েছি তাও কোন কাম অয় নাই । তয় আমার নাতিটা অনেক ভাল । সব সময় হাসি খুুশি থাকে।
দীর্ঘদিন ভাত না খেয়ে কেমন আছেন এমন প্রশ্ন শুনে হাসি মুখেই আকাশ বলেন,ভাত না খেয়ে ভালই আছি। আমি নানান জাতিয় ফলমুল ও রুটি খাই। কোন অসুবিধা হয় না । তাছাড়া এখন আর মনেই হয় না আমি ভাত জাতিয় কোন কিছু খাই না। আমার কোন সমস্যা নাই। আমি দিব্যি ভাল আছি । আনন্দেই আছি।
একটি খেলাধুলার সামগ্রী বিত্রিুর দোকানে কাজ করে সংসার চালানো আকাশ কে দেখলে মনেই হয় না তার কোন অভাব আছে। সদা হাসি মুখে কাষ্টমার দের সাথে কথা বলছেন। তার আশে-পাশের দোকানদাররাও তার উপর অনেক খুশি তার ব্যবহারের কারনে। তার পাশের ব্যাবসায়ী আলামিন , রফিক দর্জি , লিটন , শিপলু ,মাজেদ, সুনিল সহ অনেকেই বলেছেন, আকাশ অত্যান্ত ভাল ছেলে । তার ব্যাবহারে আমরা সবাই খুব খুশি। তাকে দেখে মনেই হয় না তিনি কোন অভাবে আছেন। তারা আরো বলেন, আমরা কেউ অনেকদিন পর্যন্ত জানতাম না যে আকাশ ভাত- মাছ খায় না ।
দীর্ঘ চব্বিশ বছর যাবত একজন মানুষ ভাত না খেয়ে বেচে আছেন। ভাল আছেন। এটা কেমন করে সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক মো: আরশাদ উল্লাহ বলেন, এটা এক ধরনের সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার। আকাশের শিশু কাল থেকেই ভাত এর প্রতি অনিহা তৈরী হয়েছে। তাই সে ভাত খায় না। তাছাড়া ভাত হলো কার্বহাইড্রেড জাতিয় খাবার। ভাত ছাড়াও অনেক খাবারে কার্বহাইড্রেড ও শর্করা জাতিয় উপাদান আছে। তাই আকাশ ভাত না খেলেও যেহেতু রুটি জাতিয় খাবার খাচ্ছে সেই কারনে তার শারিরীক কোন সমস্যা হচ্ছে না।
একই বিষয়ে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল বলেন, এটা এক ধরনের মানসিক ব্যাপার। তাছাড়া কোন সমস্যা না। এছাড়া পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষই ভাত খায় না । ভাতে থাকা পুষ্টি উপাদান অন্য খাবার থেকেও পূরণ হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।