ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপ
জয়ের কারণ বিএনপির বর্জন
চেয়ারম্যান পদে ‘জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থী’ মনোনয়ন দিতে না পারায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিদ্রোহীরা জয়লাভ করছে, এমন অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপি ভোটে না থাকায় অনেক ইউপিতে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করছে। কারণ, বিএনপি-জামায়াতের ভোট বিদ্রোহীদের পক্ষে চলে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার মতে, যেসব এলাকায় স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী ছিল, সেখানে তারা দলের পক্ষে কাজ করেছে। যেসব ইউপিতে প্রার্থী নেই, সেখানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। তাই তাদের ভোট গেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে।
করোনা সংক্রমণের উচ্চহার বিবেচনায় প্রথম ধাপে স্থগিত হওয়া ১৬০টি ইউপিতে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোট হয়। এর মধ্যে নৌকা ১১৯টিতে বিজয়ী হয়। জয়ের হার ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ আগেই ৪৩টি ইউপিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ১১৭টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। অনিয়ম, গোলযোগের কারণে স্থগিত কয়েকটি ইউপির ছাড়া প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে, নৌকার প্রার্থীরা ৭৬টি ইউপিতে এবং স্বতন্ত্র প্রতীকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা ২৪টিতে বিজয়ী হয়। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপির সাতজন, জামায়াতের একজন, দলীয় প্রতীকে ওয়ার্কার্স পার্টির একজন এবং চারটি ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেন।
এর আগে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন দেশের ২০৪টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১৪৮টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থিরা (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮জনসহ) চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। দলটির জয়ের হার ৭২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রতীকে অন্তত ৪৯টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি ইউপিতে, জাতীয় পার্টি-জেপি ও জাতীয় পার্টি-জাপা ৩টি করে ইউপিতে বিজয়ী হয়।
দেখা যাচ্ছে, প্রথম ধাপে প্রায় ৩৬০টি ইউপির মধ্যে অন্তত ৭৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা জয়লাভ করেছে। অর্থাৎ নৌকার বিদ্রোহীদের জয়ের হার ২০ শতাংশের বেশি।
সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অনেক সময় অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার কারণেই বিভিন্ন ইউপিতে বিদ্রোহ দমন করা যাচ্ছে না। ফলে নৌকার পরাজয় হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় কোন্দল ও বিবাদের কারণেও দলে বিভক্তি আছে। একাধিক প্রার্থী হওযায় ভোটও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের ভুলের কারণে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হচ্ছেন, বিদ্রোহীরা জয়লাভ করছে- ঢালাওভাবে তৃণমূলে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল মুহাম্মদ ফারুক খান (অব.)।
বুধবার রাতে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থেকে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা পাঠানো হয়। কেন্দ্র ওই তালিকা থেকেই মনোনয়ন দেয়। তবে একটা বিষয় হলো-গত নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী ছিল, তাদের অনেকে জনপ্রিয় হলেও শাস্তিস্বরূপ তাদের এবার মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিদ্রোহী কিছু প্রার্থী জয়লাভ করেছে। সেটা খুবই কম, ১৫ শতাংশের মতো হবে। তবে আগামীতেও সব পর্যায়ের নির্বাচনে বিদ্রোহীদের একই শাস্তি হবে। সাংগঠনিক একটা শৃঙ্খলা যাতে তৃণমূল পর্যন্ত বজায় থাকে কেন্দ্র তা নিশ্চিত করতে চাইছে।’
ফারুক খান বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ড তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করে। বেশ কয়েকটি এজেন্সির জরিপও এ ক্ষেত্রে দেখা হয়। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাঠ না ছাড়ার নেপথ্যে অনেক সময় কোন কোন নেতার ভূমিকা থাকে। এ বিষয়গুলোর আমাদের নজরে এসেছে। বড় নেতার সমর্থন পেয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে তৃণমূল নেতারা বিদ্রোহী হয়। আমরা জরিপ করে দেখেছি, কেন্দ্র থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়, তাদের ৮০ ভাগই নির্বাচনে জয়লাভ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে চারটির বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে, তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত থাকায় গাজীরগাট ইউপির পুরো ফল ঘোষণা করা হয়নি। এখানেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মফিজুল ইসলাম এগিয়ে আছেন।
সাতক্ষীরা জেলায় ২১টি ইউপির মধ্যে ৯টিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। তবে কয়লা, জয়নগর, জালালাবাদ, কেড়াগাছি, চন্দনপুর, খেসড়া ও সরুলিয়া-এই ৭টি ইউপিতে বিদ্রোহীরা জয়লাভ করেছেন। কলোরোয়ার হেলাতলা, তালার ধানদিয়া ও জালালপুরে স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপি এবং ইসলামকাটিতে স্বতন্ত্র প্রতীকে জামায়াত জয়লাভ করেছে। খলিষখালী ইউনিয়নে নৌকাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভিযোগ, খুলনায় মনোনয়ন প্রদান যথাযথ হয়নি। বিদ্রোহী যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই সদ্য চেয়ারম্যান ছিলেন। আর যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তারা জনম্পৃক্ততা তুলনামূলক কম ছিল।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সংবাদকে বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে বিএনপি এবার ইউপি নির্বাচন করেনি। অল্পকিছু ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রতীকে স্থানীয় নেতারা অংশ নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল না। একই এলাকায় নৌকার মনোনয়ন চেয়েছেন অনেকে। আমরা কেন্দ্র থেকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপরও কিছু এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোটে রয়ে গেছে। সেখানে স্থানীয় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করেছে। নৌকাকে পরাজিত করতে বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে তারা।’
ইউপি নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সোমবারের ভোটে বাগেরহাটের দুটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি ৬৪টিতেই নৌকা বিজয়ী হয়েছে। কক্সবাজারের ১২টি ইউপির মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও চারটিতে বিএনপি নেতারা নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ছয়টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া নোয়াখালীর ১৩টি ইউপির মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের ১২টির মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।
ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপ
জয়ের কারণ বিএনপির বর্জন
বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
চেয়ারম্যান পদে ‘জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থী’ মনোনয়ন দিতে না পারায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিদ্রোহীরা জয়লাভ করছে, এমন অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপি ভোটে না থাকায় অনেক ইউপিতে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করছে। কারণ, বিএনপি-জামায়াতের ভোট বিদ্রোহীদের পক্ষে চলে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার মতে, যেসব এলাকায় স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী ছিল, সেখানে তারা দলের পক্ষে কাজ করেছে। যেসব ইউপিতে প্রার্থী নেই, সেখানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল। তাই তাদের ভোট গেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে।
করোনা সংক্রমণের উচ্চহার বিবেচনায় প্রথম ধাপে স্থগিত হওয়া ১৬০টি ইউপিতে সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোট হয়। এর মধ্যে নৌকা ১১৯টিতে বিজয়ী হয়। জয়ের হার ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ আগেই ৪৩টি ইউপিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়। বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) ১১৭টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। অনিয়ম, গোলযোগের কারণে স্থগিত কয়েকটি ইউপির ছাড়া প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে, নৌকার প্রার্থীরা ৭৬টি ইউপিতে এবং স্বতন্ত্র প্রতীকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা ২৪টিতে বিজয়ী হয়। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপির সাতজন, জামায়াতের একজন, দলীয় প্রতীকে ওয়ার্কার্স পার্টির একজন এবং চারটি ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেন।
এর আগে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন দেশের ২০৪টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১৪৮টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থিরা (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮জনসহ) চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। দলটির জয়ের হার ৭২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রতীকে অন্তত ৪৯টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি ইউপিতে, জাতীয় পার্টি-জেপি ও জাতীয় পার্টি-জাপা ৩টি করে ইউপিতে বিজয়ী হয়।
দেখা যাচ্ছে, প্রথম ধাপে প্রায় ৩৬০টি ইউপির মধ্যে অন্তত ৭৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা জয়লাভ করেছে। অর্থাৎ নৌকার বিদ্রোহীদের জয়ের হার ২০ শতাংশের বেশি।
সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের বঞ্চিত করে অনেক সময় অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার কারণেই বিভিন্ন ইউপিতে বিদ্রোহ দমন করা যাচ্ছে না। ফলে নৌকার পরাজয় হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় কোন্দল ও বিবাদের কারণেও দলে বিভক্তি আছে। একাধিক প্রার্থী হওযায় ভোটও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের ভুলের কারণে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হচ্ছেন, বিদ্রোহীরা জয়লাভ করছে- ঢালাওভাবে তৃণমূলে এমন অভিযোগ মানতে নারাজ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল মুহাম্মদ ফারুক খান (অব.)।
বুধবার রাতে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থেকে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা পাঠানো হয়। কেন্দ্র ওই তালিকা থেকেই মনোনয়ন দেয়। তবে একটা বিষয় হলো-গত নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী ছিল, তাদের অনেকে জনপ্রিয় হলেও শাস্তিস্বরূপ তাদের এবার মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিদ্রোহী কিছু প্রার্থী জয়লাভ করেছে। সেটা খুবই কম, ১৫ শতাংশের মতো হবে। তবে আগামীতেও সব পর্যায়ের নির্বাচনে বিদ্রোহীদের একই শাস্তি হবে। সাংগঠনিক একটা শৃঙ্খলা যাতে তৃণমূল পর্যন্ত বজায় থাকে কেন্দ্র তা নিশ্চিত করতে চাইছে।’
ফারুক খান বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ড তৃণমূল থেকে পাঠানো তালিকা যাচাই-বাছাই করে। বেশ কয়েকটি এজেন্সির জরিপও এ ক্ষেত্রে দেখা হয়। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাঠ না ছাড়ার নেপথ্যে অনেক সময় কোন কোন নেতার ভূমিকা থাকে। এ বিষয়গুলোর আমাদের নজরে এসেছে। বড় নেতার সমর্থন পেয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে তৃণমূল নেতারা বিদ্রোহী হয়। আমরা জরিপ করে দেখেছি, কেন্দ্র থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়, তাদের ৮০ ভাগই নির্বাচনে জয়লাভ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে চারটির বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে, তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত থাকায় গাজীরগাট ইউপির পুরো ফল ঘোষণা করা হয়নি। এখানেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মফিজুল ইসলাম এগিয়ে আছেন।
সাতক্ষীরা জেলায় ২১টি ইউপির মধ্যে ৯টিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। তবে কয়লা, জয়নগর, জালালাবাদ, কেড়াগাছি, চন্দনপুর, খেসড়া ও সরুলিয়া-এই ৭টি ইউপিতে বিদ্রোহীরা জয়লাভ করেছেন। কলোরোয়ার হেলাতলা, তালার ধানদিয়া ও জালালপুরে স্বতন্ত্র প্রতীকে বিএনপি এবং ইসলামকাটিতে স্বতন্ত্র প্রতীকে জামায়াত জয়লাভ করেছে। খলিষখালী ইউনিয়নে নৌকাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভিযোগ, খুলনায় মনোনয়ন প্রদান যথাযথ হয়নি। বিদ্রোহী যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই সদ্য চেয়ারম্যান ছিলেন। আর যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তারা জনম্পৃক্ততা তুলনামূলক কম ছিল।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সংবাদকে বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে বিএনপি এবার ইউপি নির্বাচন করেনি। অল্পকিছু ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রতীকে স্থানীয় নেতারা অংশ নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল না। একই এলাকায় নৌকার মনোনয়ন চেয়েছেন অনেকে। আমরা কেন্দ্র থেকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপরও কিছু এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোটে রয়ে গেছে। সেখানে স্থানীয় জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করেছে। নৌকাকে পরাজিত করতে বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে তারা।’
ইউপি নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সোমবারের ভোটে বাগেরহাটের দুটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি ৬৪টিতেই নৌকা বিজয়ী হয়েছে। কক্সবাজারের ১২টি ইউপির মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও চারটিতে বিএনপি নেতারা নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ছয়টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া নোয়াখালীর ১৩টি ইউপির মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের ১২টির মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।