অভিযোগপত্র দাখিলের আগে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্ব অনুমতি নেওয়ার বিধানকে কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আজিজুর রহমান দুলু ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। একইসঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়ার পরও কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া এনডিসি এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৩ আগস্ট ফৌজদারি মামলার আসামি কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন হাইকোর্ট। নির্যাতনের শিকার কুড়িগ্রামের সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম রিগান এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারীর আইনজীবীরা বলেন, ওই চার সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। সে মামলায় তারা এখনও জামিন নেননি। ফলে আইনের দৃষ্টিতে তারা এখনো পলাতক। অথচ তারা ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিংয়ের চেষ্টা চলছে। যা আইনবহির্ভূত। তাই একজনের পোস্টিংয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং মামলার তিন আসামিকে যেন পোস্টিং দেওয়া না হয় সেজন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এরপর তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। পরে তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে তাকে এক বছরের কারাদ- দিয়ে মধ্যরাতেই জেলহাজতে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় ঘটনার পরদিনই ঘটনাস্থলে যান রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের তিনটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নি¤œধাপে নামানো এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অন্যদের প্রজ্ঞাপন জারি হলেও রিন্টু বিকাশ চাকমার বিষয়টির এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তাদের মধ্যে এনডিসি রাহাতুল ইসলামকে বরিশাল ডিসি অফিসে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। তবে এসব পোস্টিংয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের একটি (আইনি) লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
রোববার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
অভিযোগপত্র দাখিলের আগে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্ব অনুমতি নেওয়ার বিধানকে কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আজিজুর রহমান দুলু ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। একইসঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়ার পরও কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া এনডিসি এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৩ আগস্ট ফৌজদারি মামলার আসামি কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন হাইকোর্ট। নির্যাতনের শিকার কুড়িগ্রামের সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম রিগান এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারীর আইনজীবীরা বলেন, ওই চার সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। সে মামলায় তারা এখনও জামিন নেননি। ফলে আইনের দৃষ্টিতে তারা এখনো পলাতক। অথচ তারা ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিংয়ের চেষ্টা চলছে। যা আইনবহির্ভূত। তাই একজনের পোস্টিংয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং মামলার তিন আসামিকে যেন পোস্টিং দেওয়া না হয় সেজন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এরপর তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। পরে তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে তাকে এক বছরের কারাদ- দিয়ে মধ্যরাতেই জেলহাজতে পাঠানো হয়।
ওই ঘটনা গণমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় ঘটনার পরদিনই ঘটনাস্থলে যান রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এনডিসি এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
পরবর্তীতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যার ধারাবাহিকতায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের তিনটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নি¤œধাপে নামানো এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অন্যদের প্রজ্ঞাপন জারি হলেও রিন্টু বিকাশ চাকমার বিষয়টির এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তাদের মধ্যে এনডিসি রাহাতুল ইসলামকে বরিশাল ডিসি অফিসে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। তবে এসব পোস্টিংয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের একটি (আইনি) লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে নোটিশের জবাব না পাওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।