ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার, কুমিল্লায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
অবশেষে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে শনাক্ত হওয়া দেশব্যাপী আলোচিত কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদীঘির উত্তর পাড়ের অস্থায়ী একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননা ও এ নিয়ে সৃষ্ট সহিংস ঘটনার মূল হোতা ইকবাল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার জেলা সদরের সুগন্ধা বিচ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত থেকে চশমা পড়া অবস্থায় গ্রেপ্তারের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার চৌকস টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। এ ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছেন এবং ইকবালকে দিয়ে পূজামণ্ডপে কোরআন কারা রেখেছে, তাদের খুজে বের করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় ইটের আঘাতে আহত দিলীপ কুমার দাস (৫৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে রাত ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে কক্সবাজার পুলিশ থেকে তাকে বুঝে নিয়ে কড়া পাহারার মধ্যদিয়ে শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়। এ সময় জেলা পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজে ধরাপরা ব্যক্তিই কক্সবাজারে আটক হওয়া ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কুমিল্লা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিনভর ইকবাল কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচে চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে এলোমেলোভাবে ঘুরাফেরা করে। নোয়াখালী থেকে সুগন্ধা বিচে বেড়াতে যাওয়ার সময় তিন যুবকের সঙ্গে কথা বার্তার একপর্যায়ে ইকবালের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় ইকবাল তার পালিয়ে থাকার সমস্যার কথা তাদের জানায়। বিষয়টি জেনে তারা রাতের দিকে কক্সবাজার পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে রাতেই কক্সবাজার পৌঁছে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল। কক্সবাজার পুলিশ থেকে ইকবালকে বুঝে নিয়ে মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়িয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে কালো রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে করে সেখান থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়।
এ সময় ইকবালকে গ্রেপ্তারের ছবি ও তথ্য সংগ্রহে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আলেখারচর, পুলিশ অফিস গেইট, পুলিশ লাইন্সের ১ ও ২ নম্বর গেইটসহ বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ছুটাছুটি করতে হয়। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে বারোটার পরে পুলিশ লাইন্সের ১ নম্বর গেইট এলাকায় কিছু সময়ের জন্য শুধুমাত্র ফটো সেশন করতে ইকবালকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। ইকবালকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় কুমিল্লা পুলিশের পক্ষ থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন প্রেসব্রিফিং করা হয়নি। পুলিশ জানায়, কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে রেখে ইকবালকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে আসা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনসহ চৌকস টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম. তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, আমরা ইকবাল হোসেনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের শেষে আপনাদের বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ইকবাল সেখানে পবিত্র কোরআন রাখা ও হনুমানের মূর্তি থেকে গদা নেয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
এদিকে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও অবমাননাসহ পরবর্তী সহিংস ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় র্যাব বাদী হয়ে একটিসহ মোট ৫টি মামলা হয়। এর মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতহানা মামলায় কোন আসামির নাম উল্লেখ না থাকলেও এ মামলায় ইকবালকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। তাকে সহিংসতার অন্যান্য মামলায়ও আসামি করা হতে পারে বলে সূত্রটি জানায়।
ইকবালকে গ্রেপ্তারের পর এখন তার পেছনে থাকা নেপথ্য কুশীলবদের খুঁজছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ইকবালের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইকবালকে কোন কিছুর লোভ দেখিয়ে, অথবা যে কোন মূল্যে ম্যানেজ করে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘৃণ্য এ ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন না কোন শক্তির হাত রয়েছে এবং সরকারকে দেশে-বিদেশে বিতর্কিত করতে একটি অশুভ শক্তি এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনই কুমিল্লার পূজামণ্ডপকাণ্ডে সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই ইকবাল। তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (২৩ অক্টোবর) এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হবে বলেও তিনি জানান।
পূজামণ্ডপে হামলার সময় আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় ইটের আঘাতে আহত দিলীপ কুমার দাস বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। ১৩ অক্টোবর তিনি নগরীর মনোহরপুর এলাকার রাজ রাজেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরের ফটক বন্ধ করতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হন। দিলীপের বাসা নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানাসংলগ্ন পানপট্টি এলাকায়। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা বিষু লাল দাসের ছেলে। সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ঢাকায় একজন মারা গেছে বলে শুনেছি। তবে অভিযোগ পাইনি।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়াদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচটি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি, দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি, দেবিদ্বার থানায় একটিসহ ৯টি মামলা হয়।
ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার, কুমিল্লায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১
অবশেষে সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে শনাক্ত হওয়া দেশব্যাপী আলোচিত কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদীঘির উত্তর পাড়ের অস্থায়ী একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে অবমাননা ও এ নিয়ে সৃষ্ট সহিংস ঘটনার মূল হোতা ইকবাল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার জেলা সদরের সুগন্ধা বিচ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত থেকে চশমা পড়া অবস্থায় গ্রেপ্তারের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার চৌকস টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। এ ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছেন এবং ইকবালকে দিয়ে পূজামণ্ডপে কোরআন কারা রেখেছে, তাদের খুজে বের করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় ইটের আঘাতে আহত দিলীপ কুমার দাস (৫৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে রাত ১১টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে কক্সবাজার পুলিশ থেকে তাকে বুঝে নিয়ে কড়া পাহারার মধ্যদিয়ে শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়। এ সময় জেলা পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজে ধরাপরা ব্যক্তিই কক্সবাজারে আটক হওয়া ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত করেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, কুমিল্লা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দিনভর ইকবাল কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচে চোখে সানগ্লাস লাগিয়ে এলোমেলোভাবে ঘুরাফেরা করে। নোয়াখালী থেকে সুগন্ধা বিচে বেড়াতে যাওয়ার সময় তিন যুবকের সঙ্গে কথা বার্তার একপর্যায়ে ইকবালের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় ইকবাল তার পালিয়ে থাকার সমস্যার কথা তাদের জানায়। বিষয়টি জেনে তারা রাতের দিকে কক্সবাজার পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে রাতেই কক্সবাজার পৌঁছে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল। কক্সবাজার পুলিশ থেকে ইকবালকে বুঝে নিয়ে মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়িয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে কালো রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে করে সেখান থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তাকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়।
এ সময় ইকবালকে গ্রেপ্তারের ছবি ও তথ্য সংগ্রহে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আলেখারচর, পুলিশ অফিস গেইট, পুলিশ লাইন্সের ১ ও ২ নম্বর গেইটসহ বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ছুটাছুটি করতে হয়। এক পর্যায়ে দুপুর সাড়ে বারোটার পরে পুলিশ লাইন্সের ১ নম্বর গেইট এলাকায় কিছু সময়ের জন্য শুধুমাত্র ফটো সেশন করতে ইকবালকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। ইকবালকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় কুমিল্লা পুলিশের পক্ষ থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন প্রেসব্রিফিং করা হয়নি। পুলিশ জানায়, কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে রেখে ইকবালকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে আসা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজনসহ চৌকস টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম. তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, আমরা ইকবাল হোসেনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের শেষে আপনাদের বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ইকবাল সেখানে পবিত্র কোরআন রাখা ও হনুমানের মূর্তি থেকে গদা নেয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।
এদিকে কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও অবমাননাসহ পরবর্তী সহিংস ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় র্যাব বাদী হয়ে একটিসহ মোট ৫টি মামলা হয়। এর মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতহানা মামলায় কোন আসামির নাম উল্লেখ না থাকলেও এ মামলায় ইকবালকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। তাকে সহিংসতার অন্যান্য মামলায়ও আসামি করা হতে পারে বলে সূত্রটি জানায়।
ইকবালকে গ্রেপ্তারের পর এখন তার পেছনে থাকা নেপথ্য কুশীলবদের খুঁজছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ইকবালের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইকবালকে কোন কিছুর লোভ দেখিয়ে, অথবা যে কোন মূল্যে ম্যানেজ করে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘৃণ্য এ ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন না কোন শক্তির হাত রয়েছে এবং সরকারকে দেশে-বিদেশে বিতর্কিত করতে একটি অশুভ শক্তি এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, কক্সবাজারে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনই কুমিল্লার পূজামণ্ডপকাণ্ডে সিসি টিভি ফুটেজে ধরা পড়া সেই ইকবাল। তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (২৩ অক্টোবর) এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হবে বলেও তিনি জানান।
পূজামণ্ডপে হামলার সময় আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সময় ইটের আঘাতে আহত দিলীপ কুমার দাস বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। ১৩ অক্টোবর তিনি নগরীর মনোহরপুর এলাকার রাজ রাজেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরের ফটক বন্ধ করতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হন। দিলীপের বাসা নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানাসংলগ্ন পানপট্টি এলাকায়। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা বিষু লাল দাসের ছেলে। সন্ধ্যায় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ঢাকায় একজন মারা গেছে বলে শুনেছি। তবে অভিযোগ পাইনি।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়াদীঘিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচটি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি, দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি, দেবিদ্বার থানায় একটিসহ ৯টি মামলা হয়।