alt

সারাদেশ

দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রতিবাদে আগামী ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সেদিন সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপগুলোতে কালো কাপড় পরে প্রতিবাদ করবেন তাঁরা।

আজ (২৩ অক্টোবর) শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক গণ–অনশন থেকে এ কর্মসূচি বর্জনের ডাক দেওয়া হয়।

শাহবাগে সকাল থেকে সারা দেশে প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গণ-অনশন, গণ-অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বান এবং আয়োজনে সারা দেশে গণ-অনশন, গণ-অবস্থান হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর স্বামীবাগ থেকে একটি মিছিলে ভোর ছয়টার দিকে শাহবাগে আসে। সেখানেই এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন। এটি শেষ হয় বেলা পৌনে একটার দিকে।

কর্মসূচির শেষের দিকে অবস্থান থেকে দাবি তুলে ধরেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, আগামী ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে মন্দির, পূজামণ্ডপে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাবিরোধী প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হবে। ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দেন তিনি।

অবস্থান কর্মসূচিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। এ হামলার বিচারের দাবিতে গণ–অনশনের মূল দাবি হলো এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সরকার থাকা সত্ত্বেও এর আগে রামু, নাসিরনগর, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হয়েছে। এসব হামলার প্রতিকারে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। তিনি বলেন, সারা দেশে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। পরিকল্পিত না হলে পরপর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের হামলা হতে পারে না।’

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রাষ্ট্রের জন্য সামনে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ‘এ শক্তির বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার হতে হবে। দেশের অপমৃত্যু আমরা দেখতে চাই না।’

সাবেক সাংসদ উষাতন তালুকদার জানান, পূজাকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হলো এর দায় রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সরকার এড়াতে পারে না। প্রশাসন এত নীরব কেন? দেশে অশান্তি করার জন্য অপশক্তি এসব করছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায়, সেখানে এমন ঘটনা কেন? সরকার শুধু জিরো টলারেন্সের কথা মুখে বলে, এটা মুখে বললেই হবে না।

দেশের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো পরিকল্পিত ঘটনা বলে মনে করেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক বলেন, দেশকে আফগানিস্তান বানানোর অসৎ উদ্দেশ্য চলছে। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। সময় এসেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম ঐক্য পরিষদ গঠনের।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি রেখা চৌধুরী জানান, প্রতিবছর এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। কিন্তু এসব ঘটনা ঠেকাতে পূর্বপ্রস্তুতি দেখা যায় না। এসব হামলার দায় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে দায় নিতে হবে‌‌, সতর্ক থাকতে হবে।

দেশ রাজনৈতিক আস্থাহীনতায় আছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা জানান, সব মানুষের, সব ধর্ম–সম্প্রদায়ের অধিকারের রাজনীতিটাকে ফিরিয়ে আনার মধ্যে দিয়েই আস্থা অর্জন করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার মধ্যে দিয়েই আস্থা অর্জিত হবে।

গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে এ দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই বসবাস করছে। কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্রকারী এটা সব সময় নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করেছে। অতীতের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি জিয়াউল হাসান বলেন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, কোনো জাতি বা সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচার না করতে, গালিগালাজ বা কটাক্ষ না করতে। স্বাধীনতাসংগ্রামে সব ধর্মের মানুষ মিলে এ দেশ স্বাধীন করেছিল। একসঙ্গে হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছে তারা। এ সম্প্রীতি এখন নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ১৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, যেখানে মেরুদণ্ডহীন একটা বিরোধী দল আছে, এককভাবে তারা সংসদ চালায়, প্রশাসন চালায়, রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। তারপর দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে দেশে এমন ঘটনা ঘটল কী করে?’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও দেশের বদনাম হলো। আমরা সব মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারিনি। একটিও সাম্প্রদায়িক হামলার এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়নি। সরষের মধ্যেই ভূত আছে। প্রশাসনের মধ্যে সাম্প্রদায়িক চিন্তা কাজ করে।’

আজকের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, সাংসদ মমতাজ বেগম, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির প্রমুখ।

ছবি

টাঙ্গাইলে সংঘ‌র্ষ থামাতে গিয়ে হামলার শিকার এসআই, ১৬ জন আটক

ছবি

কক্সবাজারে জলকেলি উৎসবের সমাপনীতে আলোকিত জীবনের প্রত্যাশা

ছবি

মায়ানমারের বিজিপির আরও ২৪ সদস্য বাংলাদেশে

ছবি

রাজশাহীতে মোটরসাইকেলে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ৩

ছবি

ইউএসএআইডি এবং সিমিট প্রতিনিধি দলের বারি পরিদর্শন

ছবি

পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ

ছবি

‘আনন্দে’ শুরুর পর সড়কের ঈদযাত্রা কেন ‘বিষাদে’

ছবি

ঘটনা চাপা দিতে ১৫০ বস্তা সিমেন্ট সরিয়ে ফেলার অভিযোগ

মীরসরাইয়ে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, ঘরের চাল ছিদ্র হয়ে গেছে

ছবি

মাধবপুরে বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

ছবি

টঙ্গীতে আগুনে পুড়ল ১২টি খাদ্য গুদাম

ছবি

জলকেলি উৎসবে মুখরিত কক্সবাজরের রাখাইন পল্লী

শেরপুরে বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ উদ্বোধন

কেশবপুরে সকাল-সন্ধ্যা বাজারের দখল নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি উচ্ছেদ আতঙ্কে অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

ভালুকায় বোরো ধানে চিটা কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে সরকারি রাস্তার ১২০টি গাছ কর্তনের অভিযোগ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে

পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করেন পুত্রবধূ

ছবি

মির্জাগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ছবি

নড়াইলের শ্রীনগর গ্রামে ভ্যানচালককে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা

ছবি

প্রেমিকার ওপর অভিমান প্রেমিকের আত্মহত্যা

ছবি

শ্যামনগর পদ্মপুকুরের প্রধান সড়কের একাংশ যেন বালুর স্তুপে পরিণত

আমার চেয়ে খারাপ লোক এ জেলায় নাই : তাহেরপুত্র বিপ্লব

ছবি

কক্সবাজারে রিসোর্টে পযটক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ছবি

ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা

ছবি

সুনামগঞ্জে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ছবি

টোলপ্লাজায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ১৪

ছবি

গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, বেশিরভাগ অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ

কোম্পানীগঞ্জে পর্যটকের সঙ্গে এএসপির মারামারি

ছবি

গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ গোপালগঞ্জে গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

শার্শায় সাংবাদিকের উপর হামলা

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় রেললাইনের পাশ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সালথায় স্বামীর উপর অভিমান করে গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি

শিবগঞ্জে পরিবারের উপর অভিমান করে কিশোরের আত্মহত্যা

ছবি

ভালুকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছাত্রলীগ নেতা নিহত

tab

সারাদেশ

দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রতিবাদে আগামী ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সেদিন সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপগুলোতে কালো কাপড় পরে প্রতিবাদ করবেন তাঁরা।

আজ (২৩ অক্টোবর) শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক গণ–অনশন থেকে এ কর্মসূচি বর্জনের ডাক দেওয়া হয়।

শাহবাগে সকাল থেকে সারা দেশে প্রতিমা, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গণ-অনশন, গণ-অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বান এবং আয়োজনে সারা দেশে গণ-অনশন, গণ-অবস্থান হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর স্বামীবাগ থেকে একটি মিছিলে ভোর ছয়টার দিকে শাহবাগে আসে। সেখানেই এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীরা সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন। এটি শেষ হয় বেলা পৌনে একটার দিকে।

কর্মসূচির শেষের দিকে অবস্থান থেকে দাবি তুলে ধরেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, আগামী ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে মন্দির, পূজামণ্ডপে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাবিরোধী প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হবে। ৪ নভেম্বর শ্যামাপূজার দীপাবলি উৎসব বর্জনের ডাক দেন তিনি।

অবস্থান কর্মসূচিতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। এ হামলার বিচারের দাবিতে গণ–অনশনের মূল দাবি হলো এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সরকার থাকা সত্ত্বেও এর আগে রামু, নাসিরনগর, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হয়েছে। এসব হামলার প্রতিকারে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। তিনি বলেন, সারা দেশে পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। পরিকল্পিত না হলে পরপর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের হামলা হতে পারে না।’

সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রাষ্ট্রের জন্য সামনে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ‘এ শক্তির বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার হতে হবে। দেশের অপমৃত্যু আমরা দেখতে চাই না।’

সাবেক সাংসদ উষাতন তালুকদার জানান, পূজাকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হলো এর দায় রাষ্ট্র, প্রশাসন ও সরকার এড়াতে পারে না। প্রশাসন এত নীরব কেন? দেশে অশান্তি করার জন্য অপশক্তি এসব করছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার ক্ষমতায়, সেখানে এমন ঘটনা কেন? সরকার শুধু জিরো টলারেন্সের কথা মুখে বলে, এটা মুখে বললেই হবে না।

দেশের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো পরিকল্পিত ঘটনা বলে মনে করেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক বলেন, দেশকে আফগানিস্তান বানানোর অসৎ উদ্দেশ্য চলছে। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। সময় এসেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলিম ঐক্য পরিষদ গঠনের।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি রেখা চৌধুরী জানান, প্রতিবছর এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। কিন্তু এসব ঘটনা ঠেকাতে পূর্বপ্রস্তুতি দেখা যায় না। এসব হামলার দায় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে দায় নিতে হবে‌‌, সতর্ক থাকতে হবে।

দেশ রাজনৈতিক আস্থাহীনতায় আছে মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা জানান, সব মানুষের, সব ধর্ম–সম্প্রদায়ের অধিকারের রাজনীতিটাকে ফিরিয়ে আনার মধ্যে দিয়েই আস্থা অর্জন করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার মধ্যে দিয়েই আস্থা অর্জিত হবে।

গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে এ দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই বসবাস করছে। কিন্তু কিছু ষড়যন্ত্রকারী এটা সব সময় নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করেছে। অতীতের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি জিয়াউল হাসান বলেন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, কোনো জাতি বা সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচার না করতে, গালিগালাজ বা কটাক্ষ না করতে। স্বাধীনতাসংগ্রামে সব ধর্মের মানুষ মিলে এ দেশ স্বাধীন করেছিল। একসঙ্গে হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছে তারা। এ সম্প্রীতি এখন নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ১৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, যেখানে মেরুদণ্ডহীন একটা বিরোধী দল আছে, এককভাবে তারা সংসদ চালায়, প্রশাসন চালায়, রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। তারপর দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে দেশে এমন ঘটনা ঘটল কী করে?’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও দেশের বদনাম হলো। আমরা সব মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারিনি। একটিও সাম্প্রদায়িক হামলার এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়নি। সরষের মধ্যেই ভূত আছে। প্রশাসনের মধ্যে সাম্প্রদায়িক চিন্তা কাজ করে।’

আজকের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, সাংসদ মমতাজ বেগম, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির প্রমুখ।

back to top