alt

অর্থ-বাণিজ্য

ক্যাবের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন

প্রতি বছরই বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

গত তিন বছরের মধ্যে ২০২০ সালে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ সময়ে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের আয় রোজগার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের জীবনমান বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুন) কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনঅব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব চিত্র তুলে ধরা হয়। রাজধানী ঢাকায় ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবা-সার্ভিসের মধ্যে থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা-সার্ভিসের সংগৃহীত মূল্য থেকে প্রতিবেদন করা হয়।

ভোক্তারা যেসব পণ্য ভোগ করেন যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে, সেসব পণ্য বা সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য বা সেবার মানের ভিত্তিতে জীবনযাত্রা ব্যয়ের এ হিসাব করা হয়েছে। এ হিসাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রকৃত যাতায়াত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ক্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও পণ্য ও সেবা-সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। পূর্ববর্তী ২০১৯ সালে এ বৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।

২০২০ সালে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। বছরের শেষে আমন ধানের ভরা মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি থেমে থাকেনি। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে চালের গড় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর মধ্যে মোটা চালের দাম বেড়েছে (পারিজা ও স্বর্ণা) ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, পাইজাম চালে ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, বিআর৮ ও বিআর১১ চালে ২০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, মিনিকেট চালে ১৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ, নাজিরশাইল চালে ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং সুগন্ধি চালের গড় দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

আটার মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কেজি প্রতি ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। দেশি ও আমদানি করা ডালের দাম গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। দেশি মসুর ডালে ২৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, আমদানি করা মসুর ডালে ৪৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং খেসারির ডালে দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ভোজ্য তেলের দাম গড়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে খোলা পাম অয়েলে ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। চিনি ও গুড়ের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

মসলার দাম গড়ে বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর মধ্যে এলাচে বেড়েছে ১০৪ দশমিক ১৮ শতাংশ, দেশি শুকনা মরিচে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, কাঁচামরিচে ৩১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৩১ দশমিক ০৪ শতাংশ, দেশি পেঁয়াজে ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, আমদানি করা পেঁয়াজে ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং আমদানি করা শুকনামরিচে দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শাক-সজির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে করলার ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, কাঁচা পেঁপে ৩১ দশমিক ১৬ শতাংশ, দেশি আলুতে ২৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং আলুতে (হল্যান্ড) বেড়েছে ২৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

২০২০ সালে ২০১৯-এর তুলনায় গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে গড়ে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, মুরগির দাম ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ আর ডিমের দাম গড়ে বেড়েছে ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। মাছের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। গড়ে গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের গড় বাড়িভাড়া বেড়েছে গড়ে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ফ্ল্যাট বাসায় ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, বস্তিতে ঘরভাড়া বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মেসের ৮ সিট বিশিষ্ট রুমের ভাড়া বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে সাধারণ শাড়ি-কাপড়ের দাম বেড়েছে গড়ে ৯ শতাংশেরও বেশি।

ওয়াসার পানি প্রতি হাজার লিটারে দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আবাসিকে বিদ্যুতের গড়মূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক বিদ্যুতে মূল্য বেড়েছে গড়ে ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।

এছাড়া কিছু পণ্যে ব্যয় কমেছে। সেসব পণ্যগুলো হলো, সরিষার তেলের দাম প্রতি কেজিতে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, ডালডাতে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং খোলা আটার দাম কমেছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। আমদানি করা মটরডালের মূল্য কমেছে কেজিপ্রতি ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ আর দেশি মটরডালে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শাক-সবজির মধ্যে পটলের দাম প্রতি কেজিতে ১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, শশা বা খিরার মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ, বেগুনে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, মুখিকচুতে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। মসলার মধ্যে গোলমরিচের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গরুর তরল দুধের দাম কমেছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ছোট ইলিশ মাছের মূল্য কমেছে গড়ে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ, ছোট চিংড়ির দাম ১ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পাঙ্গাশ মাছের দাম ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমেছে।

এছাড়া কিছু পণ্যের দাম স্থীতিশীল রয়েছে। সেগুলো হলো- সদ্য সমাপ্ত ২০২০ সালে লবণ, চা-পাতা, দেশি-বিদেশী কাপড়, গেটি স্থিতীশীল ছিল। অন্যদিকে সব ধরনের জ্বালানি তেল এবং চুলার গ্যাসের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল। সড়ক, নৌ-পথ ও রেলের নির্ধারিত ভাড়ারও পরিবর্তন করা হয়নি। তবে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাস মালিকদের চাপে অর্ধেক আসন খালি রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের শর্তে ৬০ শতাংশ অধিক হারে ভাড়া আদায়ের অনুমতি দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল যাত্রীদের নিকট থেকে আরও অধিক হারে ভাড়া আদায় করা হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থবিধি মানা হয়নি।

ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম।

ছবি

বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন পাঁচ ও ভারত নয়ে

ছবি

বিআইসিএমের উদ্যোগে হবে পুঁজিবাজার সম্মেলন

ছবি

যমুনা ব্যাংক ও ডেল্টা লাইফের মধ্যে চুক্তি

ছবি

সোনার দাম আরও কমলো

ছবি

ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি পেলেন মোঃ নুরুল ইসলাম মজুমদার

ছবি

রিজার্ভ কমায় উদ্বেগ ও আতঙ্ক বাড়ছে

ছবি

তড়িঘড়ি ব্যাংক একীভূতকরণ খেলাপিদের দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি

ছবি

হঠাৎ ঝলকের পর আবার পতন, বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

পদত্যাগ করেছেন পদ্মা ব্যাংকের এমডি তারেক রিয়াজ

ঈদের পর শেয়ারবাজার কিছুটা ভালো হতে শুরু করেছে

ছবি

দিনাজপুরে বাঁশ ফুলের চাল তৈরি

ছবি

অভিনেতা ওয়ালিউল হক রুমি মারা গেছেন

ছবি

বিআইপিডি’র অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করছে : এফএফআইএল

ছবি

চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর

ছবি

রাজধানীতে ঈদের পরও চড়া সবজির বাজার

ছবি

সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি দাম বাড়ল ৪ টাকা

ছবি

সূচকের পতনে পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন

ছবি

ব্যাংক এশিয়া কিনবে পাকিস্তানি ব্যাংক আলফালাহর বাংলাদেশ অংশ

ছবি

এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭%: আইএমএফ

ছবি

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় থাকা ব্যাংক চাইলে সরে যেতে পারবে, তবে শর্তসাপেক্ষে : কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী

ছবি

একীভূত ব্যাংক : পাঁচটির বাইরে আপাতত আর না

ছবি

ঈদে মানুষের মাঝে স্বস্তি দেখেছি : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে বেশি দেখছে এডিবি

ছবি

মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯.৮১ শতাংশ

ছবি

ঈদের আগে পাঁচ দিনে দেশে এলো ৪৬ কোটি ডলার

ছবি

শিল্পাঞ্চলের বাইরের কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ আর নয়, পাবেনা ঋণও

এবার ঈদে পর্যটন খাত চাঙ্গা হওয়ার আশা

ছবি

জাতীয় লজিস্টিক নীতির খসড়ার অনুমোদন

সোনালীতে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

ছবি

সোনার দাম আবার বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা

ছবি

সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংক

ছবি

বিজিএমইএর দায়িত্ব নিলেন এস এম মান্নান কচি

ছবি

বাজার মূলধন কিছুটা বাড়লো, তবু লাখ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি

ছবি

নতুন বিদেশী ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ শোধ করছে সরকার : সিপিডি

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ক্যাবের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন

প্রতি বছরই বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

গত তিন বছরের মধ্যে ২০২০ সালে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ সময়ে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের আয় রোজগার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এতে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের জীবনমান বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুন) কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনঅব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব চিত্র তুলে ধরা হয়। রাজধানী ঢাকায় ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবা-সার্ভিসের মধ্যে থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা-সার্ভিসের সংগৃহীত মূল্য থেকে প্রতিবেদন করা হয়।

ভোক্তারা যেসব পণ্য ভোগ করেন যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে, সেসব পণ্য বা সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য বা সেবার মানের ভিত্তিতে জীবনযাত্রা ব্যয়ের এ হিসাব করা হয়েছে। এ হিসাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও প্রকৃত যাতায়াত ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ক্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও পণ্য ও সেবা-সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। পূর্ববর্তী ২০১৯ সালে এ বৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।

২০২০ সালে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। বছরের শেষে আমন ধানের ভরা মৌসুমে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি থেমে থাকেনি। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে চালের গড় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর মধ্যে মোটা চালের দাম বেড়েছে (পারিজা ও স্বর্ণা) ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, পাইজাম চালে ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, বিআর৮ ও বিআর১১ চালে ২০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, মিনিকেট চালে ১৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ, নাজিরশাইল চালে ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং সুগন্ধি চালের গড় দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

আটার মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কেজি প্রতি ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। দেশি ও আমদানি করা ডালের দাম গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। দেশি মসুর ডালে ২৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, আমদানি করা মসুর ডালে ৪৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং খেসারির ডালে দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ভোজ্য তেলের দাম গড়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে খোলা পাম অয়েলে ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। চিনি ও গুড়ের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

মসলার দাম গড়ে বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর মধ্যে এলাচে বেড়েছে ১০৪ দশমিক ১৮ শতাংশ, দেশি শুকনা মরিচে ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, কাঁচামরিচে ৩১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৩১ দশমিক ০৪ শতাংশ, দেশি পেঁয়াজে ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, আমদানি করা পেঁয়াজে ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং আমদানি করা শুকনামরিচে দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। শাক-সজির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে করলার ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, কাঁচা পেঁপে ৩১ দশমিক ১৬ শতাংশ, দেশি আলুতে ২৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং আলুতে (হল্যান্ড) বেড়েছে ২৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

২০২০ সালে ২০১৯-এর তুলনায় গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে গড়ে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ, মুরগির দাম ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ আর ডিমের দাম গড়ে বেড়েছে ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। মাছের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। গড়ে গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তের গড় বাড়িভাড়া বেড়েছে গড়ে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ফ্ল্যাট বাসায় ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, বস্তিতে ঘরভাড়া বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং মেসের ৮ সিট বিশিষ্ট রুমের ভাড়া বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে সাধারণ শাড়ি-কাপড়ের দাম বেড়েছে গড়ে ৯ শতাংশেরও বেশি।

ওয়াসার পানি প্রতি হাজার লিটারে দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আবাসিকে বিদ্যুতের গড়মূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক বিদ্যুতে মূল্য বেড়েছে গড়ে ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।

এছাড়া কিছু পণ্যে ব্যয় কমেছে। সেসব পণ্যগুলো হলো, সরিষার তেলের দাম প্রতি কেজিতে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, ডালডাতে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং খোলা আটার দাম কমেছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। আমদানি করা মটরডালের মূল্য কমেছে কেজিপ্রতি ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ আর দেশি মটরডালে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শাক-সবজির মধ্যে পটলের দাম প্রতি কেজিতে ১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, শশা বা খিরার মূল্য কমেছে ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ, বেগুনে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, মুখিকচুতে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। মসলার মধ্যে গোলমরিচের দাম কমেছে ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গরুর তরল দুধের দাম কমেছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ছোট ইলিশ মাছের মূল্য কমেছে গড়ে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ, ছোট চিংড়ির দাম ১ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পাঙ্গাশ মাছের দাম ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ কমেছে।

এছাড়া কিছু পণ্যের দাম স্থীতিশীল রয়েছে। সেগুলো হলো- সদ্য সমাপ্ত ২০২০ সালে লবণ, চা-পাতা, দেশি-বিদেশী কাপড়, গেটি স্থিতীশীল ছিল। অন্যদিকে সব ধরনের জ্বালানি তেল এবং চুলার গ্যাসের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল। সড়ক, নৌ-পথ ও রেলের নির্ধারিত ভাড়ারও পরিবর্তন করা হয়নি। তবে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাস মালিকদের চাপে অর্ধেক আসন খালি রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের শর্তে ৬০ শতাংশ অধিক হারে ভাড়া আদায়ের অনুমতি দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল যাত্রীদের নিকট থেকে আরও অধিক হারে ভাড়া আদায় করা হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থবিধি মানা হয়নি।

ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান, সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম।

back to top