রাজধানীর কলাবাগান মাঠে পূজামণ্ডপ তৈরি করার অনুমতি না দেওয়ার কারণ জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। তারা বলেছে, উন্নয়ন প্রকল্প চলার কারণে বাস্তবতা বিবেচনায় এবং মাঠের ক্ষতি এড়াতে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। একই প্রেক্ষাপটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রাজধানীর কলাবাগান মাঠে দুর্গাপূজার জন্য মণ্ডপ তৈরি করার অনুমতি দিচ্ছে না। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূজামণ্ডপ তৈরির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে শুক্রবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলাবাগান মাঠ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় কলাবাগান মাঠের উন্নয়ন, মাঠ থেকে ধানমন্ডি-৩২ এবং মাঠ থেকে ধানমন্ডি লেকের পানসি রেস্তোরাঁ পর্যন্ত পথচারীদের হাঁটার পথ (ফুটপাত), মাঠের চারপাশে নর্দমাব্যবস্থা (ড্রেনেজ) ও লেকের পাড়ে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ, মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য সুবিধাসংবলিত অনুষঙ্গের সৃষ্টি এবং অনুশীলনের জন্য জাল (নেট) স্থাপন ইত্যাদি বহুবিধ কর্মযজ্ঞ চলমান।
২০১৮ সালে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর ২০১৯ সালে কলাবাগান মাঠে বিশেষ বিবেচনায় মাঠের ক্ষয়ক্ষতি না করা এবং ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার শর্তে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্গাপূজার কারণে মাঠের যে অংশে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হয়, সেই অংশের ঘাস সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়, পূজা আয়োজনে খোঁড়াখুঁড়ির ফলে মাঠ ভরাটে ব্যবহৃত বালি সরিয়ে ফেলায় মাটির নিচের থাকা খোয়া বেরিয়ে আসে, মাটির নিচে স্থাপিত পাইপ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পুরো মাঠ ময়লা-আবর্জনায় ভরে ওঠে। সামগ্রিকভাবে সে সময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার। ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে মর্মে মুচলেকা দেওয়া হলেও বস্তুত কমিটি কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমেন সাহা বলেছিলেন, ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ২০০৭ সাল থেকে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র মাঠে দুর্গাপূজা করছেন। এ এলাকার প্রায় ৬০ হাজার হিন্দু অধিবাসীর জন্য কোনো মন্দির নেই। গত ২৬ আগস্ট সরকার নির্দেশিত সব নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদ্যাপনের জন্য ডিএসসিসি মেয়র ফজলে নূর তাপসের কাছে লিখিত অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু এক মাস পার হওয়ার পর যোগাযোগ করেও সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলেছে, এ ধরনের বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। কারণ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ থাকাকালীন ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় আটটি মন্দিরের উন্নয়ন ও সংস্কার করেছেন। সুতরাং সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের তথ্য প্রদান করা অশুভ কোনো উদ্দেশ্য সাধনের ইঙ্গিত করে।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতগুলো মন্দির আছে, যাঁরা তা জানেন না, বরং তাঁদের কাছে একমাত্র স্থান হিসেবে কলাবাগান মাঠকে বিবেচনা করার অর্থ, ধর্মের নামে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যবসায়িক পুঁজি আহরণ এবং চাঁদাবাজির মহোৎসব সম্পাদন বৈ আর কিছু হতে পারে না। দুর্গাপূজার মতো একটি ধর্মীয় উৎসবকে উপলক্ষ করে যাঁরা মিথ্যাচার করতে পারেন, তাঁদের উদ্দেশ্য যে ধর্মীয় আরাধনা নয়, সেটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
রোববার, ১০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর কলাবাগান মাঠে পূজামণ্ডপ তৈরি করার অনুমতি না দেওয়ার কারণ জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। তারা বলেছে, উন্নয়ন প্রকল্প চলার কারণে বাস্তবতা বিবেচনায় এবং মাঠের ক্ষতি এড়াতে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। একই প্রেক্ষাপটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রাজধানীর কলাবাগান মাঠে দুর্গাপূজার জন্য মণ্ডপ তৈরি করার অনুমতি দিচ্ছে না। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূজামণ্ডপ তৈরির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
এ বিষয়ে শুক্রবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলাবাগান মাঠ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে একটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় কলাবাগান মাঠের উন্নয়ন, মাঠ থেকে ধানমন্ডি-৩২ এবং মাঠ থেকে ধানমন্ডি লেকের পানসি রেস্তোরাঁ পর্যন্ত পথচারীদের হাঁটার পথ (ফুটপাত), মাঠের চারপাশে নর্দমাব্যবস্থা (ড্রেনেজ) ও লেকের পাড়ে হাঁটার পথ (ওয়াকওয়ে) নির্মাণ, মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য সুবিধাসংবলিত অনুষঙ্গের সৃষ্টি এবং অনুশীলনের জন্য জাল (নেট) স্থাপন ইত্যাদি বহুবিধ কর্মযজ্ঞ চলমান।
২০১৮ সালে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর ২০১৯ সালে কলাবাগান মাঠে বিশেষ বিবেচনায় মাঠের ক্ষয়ক্ষতি না করা এবং ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করার শর্তে দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্গাপূজার কারণে মাঠের যে অংশে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হয়, সেই অংশের ঘাস সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়, পূজা আয়োজনে খোঁড়াখুঁড়ির ফলে মাঠ ভরাটে ব্যবহৃত বালি সরিয়ে ফেলায় মাটির নিচের থাকা খোয়া বেরিয়ে আসে, মাটির নিচে স্থাপিত পাইপ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পুরো মাঠ ময়লা-আবর্জনায় ভরে ওঠে। সামগ্রিকভাবে সে সময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার। ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে মর্মে মুচলেকা দেওয়া হলেও বস্তুত কমিটি কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমেন সাহা বলেছিলেন, ধানমন্ডি, কলাবাগান, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ২০০৭ সাল থেকে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র মাঠে দুর্গাপূজা করছেন। এ এলাকার প্রায় ৬০ হাজার হিন্দু অধিবাসীর জন্য কোনো মন্দির নেই। গত ২৬ আগস্ট সরকার নির্দেশিত সব নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদ্যাপনের জন্য ডিএসসিসি মেয়র ফজলে নূর তাপসের কাছে লিখিত অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু এক মাস পার হওয়ার পর যোগাযোগ করেও সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলেছে, এ ধরনের বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। কারণ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ থাকাকালীন ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় আটটি মন্দিরের উন্নয়ন ও সংস্কার করেছেন। সুতরাং সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের তথ্য প্রদান করা অশুভ কোনো উদ্দেশ্য সাধনের ইঙ্গিত করে।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতগুলো মন্দির আছে, যাঁরা তা জানেন না, বরং তাঁদের কাছে একমাত্র স্থান হিসেবে কলাবাগান মাঠকে বিবেচনা করার অর্থ, ধর্মের নামে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যবসায়িক পুঁজি আহরণ এবং চাঁদাবাজির মহোৎসব সম্পাদন বৈ আর কিছু হতে পারে না। দুর্গাপূজার মতো একটি ধর্মীয় উৎসবকে উপলক্ষ করে যাঁরা মিথ্যাচার করতে পারেন, তাঁদের উদ্দেশ্য যে ধর্মীয় আরাধনা নয়, সেটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।