দেশব্যাপী সংঘবদ্ধ জালিয়াতচক্রের সদস্যরা নানান পরিচয়ে প্রতারণা ও অপরাধ করছে। প্রতিটি প্রতারকচক্র গড়ে ৪ থেকে ৫শ’ মোবাইল সিম ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বিশেষ টিম সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান থানার একটি জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুইজনকে যাত্রাবাড়ী ও তিনজনকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ চক্রের কাছ থেকে পাঁচ শতাধিক মোবাইল সিম জব্দ করা হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে চলছে ডিবির অভিযান।
ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, ফরিদপুরে ভাঙ্গা ও মধুখালীর কয়েকটি গ্রামে প্রতারকচক্রের কমপক্ষে পাঁচ শত সদস্য তৎপর। এ নিয়ে ডিবির টিম অনুসন্ধানে নেমেছে।
প্রতারকচক্র মোবাইল ফোনের একাধিক সিম ব্যবহার করে বিকাশ ও নগদ গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান থানার একটি অভিযোগের (সাধারণ ডায়রি) সূত্র ধরে ঢাকা ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে পাঁচ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে। তারা ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে, চলছে ডিবির অভিযান। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা গেছে, প্রতারকচক্র ফরিদপুরের ভাঙ্গা, মধুখালীতে চক্রের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করছে বলে স্বীকার করেছে।
ফরিদপুর জেলার একজন পুলিশের একজন এডিসি সংবাদকে বলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার বিভিন্ন এলাকায় ওয়েলকাম পার্টি নামে পরিচিত প্রতারকচক্র রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে থাকে। বিশিষ্ট ব্যক্তি বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের প্রথমে মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর ওই বিশিষ্ট ব্যক্তির সিম ক্লোন করে অন্যদের ফোন করে বলেন, আমি অমুক বলছি। সমস্যায় পড়েছি। আমার জন্য দ্রুত বিকাশে টাকা পাঠান। এভাবে প্রতারকচক্র চাহিদামতো টাকা হাতিয়ে নেয়। ফেইসবুকের আইডি হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকচক্র। ফরিদপুরের ডিবি ও ঢাকা থেকে ডিবির টিম ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি সৈয়দ লুৎফর রহমান মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, প্রতারণা নিয়ে ভাঙ্গা থানায় প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪টি মামলা নেয়া হয়। ঢাকা থেকে প্রতারণার মামলা তদন্তে ডিবি ও সিআইডির টিম অভিযানে নামে। প্রতিটি মামলায় সব মিলিয়ে ৩ থেকে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তার মতে, প্রতারণার মামলায় কমপক্ষে দুই থেকে আড়াইশ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতারকরা আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার প্রতারণা করছে। ভাঙ্গা থানা এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নে এ ধরনের একাধিক প্রতারক চক্র রয়েছে। কোন কোন গ্রামে আত্মীয়-স্বজন সবাই প্রতারণা করছে। তারা এটাকে ব্যবসা মনে করে প্রতারণা করছে। ফরিদপুরের আজিমনগর, কালামিদা, কাউলিবেড়াসহ তিনটি ইউনিয়নে এই চক্রের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। মামলা ও গ্রেপ্তারের কারণে আগের চেয়ে কিছুটা প্রতারণা কমছে বলে তিনি মনে করেন।
গোয়েন্দা ইনসপেক্টর (ডিবি) এস এম শাহজালাল সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, প্রতারকচক্রের মধ্যে ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইনে ২০০ প্রতারক সক্রিয়। ভাঙ্গার কয়েকটি গ্রামে তিন শতাধিক প্রতারক রয়েছে। ভাঙ্গার আজিমনগরে কয়েকটি গ্রামে একাধিক গ্রুপ রয়েছে।
এসব চক্র মোবাইল ফোনে কল করে বলে, স্যার ভুলে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা চলে গেছে। আপনার অ্যাকাউন্ট স্থগিত হয়ে যাবে। এরপর কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে বিকাশ অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার অ্যাপসের মাধ্যমে স্কুটিং করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। গুলশানে এক ব্যক্তির ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অনেক বিকাশ প্রতারকচক্রের সন্ধান পাওয়া গেছেন। ডিবির তদন্ত কর্মকর্তাও বিভিন্ন সময় শতাধিক প্রতারক গ্রেপ্তার করেছেন।
পুলিশের একজন সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ সংবাদকে বলেন, প্রতারকচক্র ইন্টারনেট সাইড ও হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ব্যক্তির নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের সিম ক্লোন করে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এটির সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ইন্টারনেটে বা হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশি সিম ব্যবহার করে পরিচিত যে কারও নম্বর থেকে আমেরিকায় টেলিফোন করে টাকা নিতে পারে। এখন তদন্ত করে অনেক সাইট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশের সাইবার টিমগুলো কাজ করছেন।
বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
দেশব্যাপী সংঘবদ্ধ জালিয়াতচক্রের সদস্যরা নানান পরিচয়ে প্রতারণা ও অপরাধ করছে। প্রতিটি প্রতারকচক্র গড়ে ৪ থেকে ৫শ’ মোবাইল সিম ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বিশেষ টিম সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান থানার একটি জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে ঢাকা ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুইজনকে যাত্রাবাড়ী ও তিনজনকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ চক্রের কাছ থেকে পাঁচ শতাধিক মোবাইল সিম জব্দ করা হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে চলছে ডিবির অভিযান।
ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, ফরিদপুরে ভাঙ্গা ও মধুখালীর কয়েকটি গ্রামে প্রতারকচক্রের কমপক্ষে পাঁচ শত সদস্য তৎপর। এ নিয়ে ডিবির টিম অনুসন্ধানে নেমেছে।
প্রতারকচক্র মোবাইল ফোনের একাধিক সিম ব্যবহার করে বিকাশ ও নগদ গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান থানার একটি অভিযোগের (সাধারণ ডায়রি) সূত্র ধরে ঢাকা ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে পাঁচ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে। তারা ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যমতে, চলছে ডিবির অভিযান। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা গেছে, প্রতারকচক্র ফরিদপুরের ভাঙ্গা, মধুখালীতে চক্রের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করছে বলে স্বীকার করেছে।
ফরিদপুর জেলার একজন পুলিশের একজন এডিসি সংবাদকে বলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার বিভিন্ন এলাকায় ওয়েলকাম পার্টি নামে পরিচিত প্রতারকচক্র রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে থাকে। বিশিষ্ট ব্যক্তি বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের প্রথমে মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। এরপর ওই বিশিষ্ট ব্যক্তির সিম ক্লোন করে অন্যদের ফোন করে বলেন, আমি অমুক বলছি। সমস্যায় পড়েছি। আমার জন্য দ্রুত বিকাশে টাকা পাঠান। এভাবে প্রতারকচক্র চাহিদামতো টাকা হাতিয়ে নেয়। ফেইসবুকের আইডি হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকচক্র। ফরিদপুরের ডিবি ও ঢাকা থেকে ডিবির টিম ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি সৈয়দ লুৎফর রহমান মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, প্রতারণা নিয়ে ভাঙ্গা থানায় প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪টি মামলা নেয়া হয়। ঢাকা থেকে প্রতারণার মামলা তদন্তে ডিবি ও সিআইডির টিম অভিযানে নামে। প্রতিটি মামলায় সব মিলিয়ে ৩ থেকে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তার মতে, প্রতারণার মামলায় কমপক্ষে দুই থেকে আড়াইশ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতারকরা আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার প্রতারণা করছে। ভাঙ্গা থানা এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নে এ ধরনের একাধিক প্রতারক চক্র রয়েছে। কোন কোন গ্রামে আত্মীয়-স্বজন সবাই প্রতারণা করছে। তারা এটাকে ব্যবসা মনে করে প্রতারণা করছে। ফরিদপুরের আজিমনগর, কালামিদা, কাউলিবেড়াসহ তিনটি ইউনিয়নে এই চক্রের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। মামলা ও গ্রেপ্তারের কারণে আগের চেয়ে কিছুটা প্রতারণা কমছে বলে তিনি মনে করেন।
গোয়েন্দা ইনসপেক্টর (ডিবি) এস এম শাহজালাল সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, প্রতারকচক্রের মধ্যে ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইনে ২০০ প্রতারক সক্রিয়। ভাঙ্গার কয়েকটি গ্রামে তিন শতাধিক প্রতারক রয়েছে। ভাঙ্গার আজিমনগরে কয়েকটি গ্রামে একাধিক গ্রুপ রয়েছে।
এসব চক্র মোবাইল ফোনে কল করে বলে, স্যার ভুলে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা চলে গেছে। আপনার অ্যাকাউন্ট স্থগিত হয়ে যাবে। এরপর কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে বিকাশ অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার অ্যাপসের মাধ্যমে স্কুটিং করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। গুলশানে এক ব্যক্তির ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অনেক বিকাশ প্রতারকচক্রের সন্ধান পাওয়া গেছেন। ডিবির তদন্ত কর্মকর্তাও বিভিন্ন সময় শতাধিক প্রতারক গ্রেপ্তার করেছেন।
পুলিশের একজন সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ সংবাদকে বলেন, প্রতারকচক্র ইন্টারনেট সাইড ও হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ব্যক্তির নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের সিম ক্লোন করে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এটির সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ইন্টারনেটে বা হোয়াটসঅ্যাপে বাংলাদেশি সিম ব্যবহার করে পরিচিত যে কারও নম্বর থেকে আমেরিকায় টেলিফোন করে টাকা নিতে পারে। এখন তদন্ত করে অনেক সাইট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে পুলিশের সাইবার টিমগুলো কাজ করছেন।