চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান শফিউল্লাহ খান। সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় আরেক মাদক ব্যবসায়ী মোকলেস মোল্লার সঙ্গে। এক সময়ে দুইজনের মধ্যে গড়ে ওঠে সখ্য। সেই সখ্যে কারাগারে বসেই পরিকল্পনা করেন হাইকোর্ট থেকে কীভাবে জামিন জালিয়াতি করা যায়। তাতে সুফলও মেলে। কিন্তু পরবর্তীকালে গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলার মূল নথির সঙ্গে হাইকোর্টের জামিনাদেশ মিলিয়ে ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা দেখতে পান। চিঠিও দেওয়া হয় হাইকোর্টকে। এরপরই জামিন বাতিল করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। সেই মামলার তদন্ত শেষে সিআইডি ভয়াবহ এই জামিন জালিয়াত চক্রের সন্ধান পায়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার আদালতে চলতি মাসে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে তদন্তে জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় গোপালগঞ্জ আদালতের চার কর্মচারীকে অব্যাহতি দিতে চার্জশিটে আবেদন জানানো হয়েছে।
সিআইডির তদন্তে জামিন জালিয়াতির ঘটনায় পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলো-আইনজীবী মোস্তফা কামাল (সুপ্রিম কোর্ট), এম এ আলম সেলিম ওরফে মো. এন্তেখাফ আলম সেলিম, মো. হাবিবুর রহমান শেখ, মো. সাইফুল ইসলাম পিন্টু (গোপালগঞ্জ জজ কোর্ট) ও ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম ছাড়াও শফিউল্লাহ খান, মো. আলী ফকির, দাউদ মোল্লা, ওবায়দুর রহমান মোল্লা, মোকলেস মোল্লা, সিফাত মোল্লা, হীরা বেগম, হাছিনা বেগম, মনির হোসেন। মামলাটির তদন্ত করেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. সুলতান হোসেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভয়াবহ জালিয়াত চক্র চতুরতার কৌশল অবলম্বন করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সরবরাহকৃত মামলার সত্যায়িত অনুলিপি পুনরায় কম্পিউটারে টাইপ করে ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ২০ পিস দেখিয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন দাখিল করে দন্ডবিধির ৪৬৫/৪৬৭/৪২০/১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন। ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৩০ হাজার টাকাসহ গোপালগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট গ্রেফতার হন শফিউল্লাহ খান (৪২)। ঐ দিনই সদর থানায় মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পাঠানো হয় কারাগারে। সেপ্টেম্বরে জামিন চাইলে গোপালগঞ্জের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নামঞ্জুর হয়। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন। আবেদন করেন হাইকোর্টে। সেই জামিন আবেদনে দাখিল করা নথিতে জালিয়াত চক্র ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ২০ পিস উল্লেখ করেন। ইয়াবার পরিমাণ কম দেখানোয় ঐ বছরের ৬ নভেম্বর বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত বেঞ্চ জামিন মঞ্জুর করে। এরপর জালিয়াত চক্র দ্রুত জামিনের ওকালতনামা দাখিল করলে মুক্তি পান শফিউল্লাহ খান। বিষয়টি নজরে আনা হলে জালিয়াতির মামলা করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ঐ নির্দেশনা মোতাবেক হাইকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন পাটোয়ারী শাহবাগ থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
যেভাবে জামিন জালিয়াতি হয়
মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির দাখিলকৃত চার্জশিটে বলা হয়েছে,কাশিয়ানি থানার ইয়াবা মামলায় ২০১৮ সাল থেকে কারাগারে আছেন মোকলেস মোল্লা। যিনি জেলে থেকে মামলার আসামিদের জামিন করানোর জন্য চুক্তি করেন। এদিকে পরের বছর ইয়াবা মামলায় কারাগারে যান শফিউল্লাহ খান। দুজনে জেলা কারাগারের একই সেলে ছিলেন। মোকলেস জেলখানায় বসে শফিউল্লাহকে জামিনের ব্যবস্থা করে দেবে বলে জানায়। সেই প্রস্তাবে রাজি হয় শফিউল্লাহ। মোকলেস তার স্ত্রী হীরা বেগমকে জেল গেটে দেখা করে জামিন করানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেন। হীরা বেগম আসামি শফিউল্লাহর স্ত্রী হাছিনা বেগম ও গোপালগঞ্জ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট এম এ আলম সেলিমের মুহুরি ওবায়দুর রহমান মোল্লার সঙ্গে দেখা করেন। ওবায়দুর খুলনার তেরখাদার কাটেঙ্গা গ্রামের মো. আলী ফকিরের ওপর দায়িত্ব দেন। আলী ফকির তার পূর্ব পরিচিত বিভিন্ন মামলার তদবিরকারক দাউদ মোল্লার সঙ্গে দেখা করেন।
আলী ফকির জানান,২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার মামলার আসামিকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করাতে হবে। সেখানে উপস্থিত কাটেঙ্গা গ্রামের মো. ইউসুফ শেখ বলেন, ওনার ভাগ্নে মো. কামরুল ইসলাম হাইকোর্টের উকিল। তখন দাউদ মোল্লা আইনজীবী কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে দাউদ ও আলী ফকির মুহুরি ওবায়দুরের সঙ্গে দেখা করেন। পরে ওবায়দুর গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নকলখানা হতে মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা, ফরওয়ার্ডিং ও জামিন নামঞ্জুরের আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি নেন। ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার পরিমাণ দেখে দাউদ মোল্লা বলেন, হাইকোর্ট থেকে জামিন করানো যাবে না। পরে কীভাবে জামিন করানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন দাউদ মোল্লা, আলী ফকির, মুহুরি ওবায়দুর, হাছিনা বেগম, হীরা বেগম এবং আইনজীবী এম এ আলম সেলিম। ঐ আলোচনার পরই ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ‘২০ পিস’ ইয়াবা দেখিয়ে জাল নথি তৈরি করেন মুহুরি। পরে খুলনায় গিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঐ জাল নথি অ্যাডভোকেট কামরুলের কাছে পাঠানো হয়। কামরুল বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামালের সঙ্গে কথা বলেন। মোস্তফা কামালের গাড়ির চালক মনির হোসেনকে দিয়ে আসামি শফিউল্লাহর পক্ষে এফিডেভিট করে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন দাখিল করা হয়।
গত বছরের ৬ নভেম্বর আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। হাইকোর্টের জামিনাদেশে ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। ঐ আদেশনামা গোপালগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছে। আসামি শফিউল্লাহর পক্ষে মুহুরি ওবায়দুরের তত্ত্বাবধানে আইনজীবী হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাইফুল ইসলাম পিন্টু এবং স্থানীয় জামিনদার হিসেবে আসামির স্ত্রী হাছিনা বেগম ও সিফাত মোল্লা একে অপরের যোগসাজশে দ্রুত জামিনের ওকালতনামা দাখিল করেন। এরপর আসামি শফিউল্লাহ কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক। তার বিরুদ্ধে আটটি মাদকের মামলা বিচারাধীন।
চক্রের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান শফিউল্লাহ খান। সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় আরেক মাদক ব্যবসায়ী মোকলেস মোল্লার সঙ্গে। এক সময়ে দুইজনের মধ্যে গড়ে ওঠে সখ্য। সেই সখ্যে কারাগারে বসেই পরিকল্পনা করেন হাইকোর্ট থেকে কীভাবে জামিন জালিয়াতি করা যায়। তাতে সুফলও মেলে। কিন্তু পরবর্তীকালে গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলার মূল নথির সঙ্গে হাইকোর্টের জামিনাদেশ মিলিয়ে ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা দেখতে পান। চিঠিও দেওয়া হয় হাইকোর্টকে। এরপরই জামিন বাতিল করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। সেই মামলার তদন্ত শেষে সিআইডি ভয়াবহ এই জামিন জালিয়াত চক্রের সন্ধান পায়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার আদালতে চলতি মাসে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে তদন্তে জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় গোপালগঞ্জ আদালতের চার কর্মচারীকে অব্যাহতি দিতে চার্জশিটে আবেদন জানানো হয়েছে।
সিআইডির তদন্তে জামিন জালিয়াতির ঘটনায় পাঁচ আইনজীবীসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলো-আইনজীবী মোস্তফা কামাল (সুপ্রিম কোর্ট), এম এ আলম সেলিম ওরফে মো. এন্তেখাফ আলম সেলিম, মো. হাবিবুর রহমান শেখ, মো. সাইফুল ইসলাম পিন্টু (গোপালগঞ্জ জজ কোর্ট) ও ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম ছাড়াও শফিউল্লাহ খান, মো. আলী ফকির, দাউদ মোল্লা, ওবায়দুর রহমান মোল্লা, মোকলেস মোল্লা, সিফাত মোল্লা, হীরা বেগম, হাছিনা বেগম, মনির হোসেন। মামলাটির তদন্ত করেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. সুলতান হোসেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ভয়াবহ জালিয়াত চক্র চতুরতার কৌশল অবলম্বন করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সরবরাহকৃত মামলার সত্যায়িত অনুলিপি পুনরায় কম্পিউটারে টাইপ করে ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ২০ পিস দেখিয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন দাখিল করে দন্ডবিধির ৪৬৫/৪৬৭/৪২০/১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন। ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৩০ হাজার টাকাসহ গোপালগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট গ্রেফতার হন শফিউল্লাহ খান (৪২)। ঐ দিনই সদর থানায় মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পাঠানো হয় কারাগারে। সেপ্টেম্বরে জামিন চাইলে গোপালগঞ্জের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নামঞ্জুর হয়। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হন। আবেদন করেন হাইকোর্টে। সেই জামিন আবেদনে দাখিল করা নথিতে জালিয়াত চক্র ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ২০ পিস উল্লেখ করেন। ইয়াবার পরিমাণ কম দেখানোয় ঐ বছরের ৬ নভেম্বর বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত বেঞ্চ জামিন মঞ্জুর করে। এরপর জালিয়াত চক্র দ্রুত জামিনের ওকালতনামা দাখিল করলে মুক্তি পান শফিউল্লাহ খান। বিষয়টি নজরে আনা হলে জালিয়াতির মামলা করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ঐ নির্দেশনা মোতাবেক হাইকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন পাটোয়ারী শাহবাগ থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
যেভাবে জামিন জালিয়াতি হয়
মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির দাখিলকৃত চার্জশিটে বলা হয়েছে,কাশিয়ানি থানার ইয়াবা মামলায় ২০১৮ সাল থেকে কারাগারে আছেন মোকলেস মোল্লা। যিনি জেলে থেকে মামলার আসামিদের জামিন করানোর জন্য চুক্তি করেন। এদিকে পরের বছর ইয়াবা মামলায় কারাগারে যান শফিউল্লাহ খান। দুজনে জেলা কারাগারের একই সেলে ছিলেন। মোকলেস জেলখানায় বসে শফিউল্লাহকে জামিনের ব্যবস্থা করে দেবে বলে জানায়। সেই প্রস্তাবে রাজি হয় শফিউল্লাহ। মোকলেস তার স্ত্রী হীরা বেগমকে জেল গেটে দেখা করে জামিন করানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেন। হীরা বেগম আসামি শফিউল্লাহর স্ত্রী হাছিনা বেগম ও গোপালগঞ্জ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট এম এ আলম সেলিমের মুহুরি ওবায়দুর রহমান মোল্লার সঙ্গে দেখা করেন। ওবায়দুর খুলনার তেরখাদার কাটেঙ্গা গ্রামের মো. আলী ফকিরের ওপর দায়িত্ব দেন। আলী ফকির তার পূর্ব পরিচিত বিভিন্ন মামলার তদবিরকারক দাউদ মোল্লার সঙ্গে দেখা করেন।
আলী ফকির জানান,২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার মামলার আসামিকে হাইকোর্ট থেকে জামিন করাতে হবে। সেখানে উপস্থিত কাটেঙ্গা গ্রামের মো. ইউসুফ শেখ বলেন, ওনার ভাগ্নে মো. কামরুল ইসলাম হাইকোর্টের উকিল। তখন দাউদ মোল্লা আইনজীবী কামরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে দাউদ ও আলী ফকির মুহুরি ওবায়দুরের সঙ্গে দেখা করেন। পরে ওবায়দুর গোপালগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নকলখানা হতে মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা, ফরওয়ার্ডিং ও জামিন নামঞ্জুরের আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি নেন। ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার পরিমাণ দেখে দাউদ মোল্লা বলেন, হাইকোর্ট থেকে জামিন করানো যাবে না। পরে কীভাবে জামিন করানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন দাউদ মোল্লা, আলী ফকির, মুহুরি ওবায়দুর, হাছিনা বেগম, হীরা বেগম এবং আইনজীবী এম এ আলম সেলিম। ঐ আলোচনার পরই ২ হাজার ২০০ পিস ইয়াবার স্থলে ‘২০ পিস’ ইয়াবা দেখিয়ে জাল নথি তৈরি করেন মুহুরি। পরে খুলনায় গিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঐ জাল নথি অ্যাডভোকেট কামরুলের কাছে পাঠানো হয়। কামরুল বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামালের সঙ্গে কথা বলেন। মোস্তফা কামালের গাড়ির চালক মনির হোসেনকে দিয়ে আসামি শফিউল্লাহর পক্ষে এফিডেভিট করে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন দাখিল করা হয়।
গত বছরের ৬ নভেম্বর আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। হাইকোর্টের জামিনাদেশে ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। ঐ আদেশনামা গোপালগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছে। আসামি শফিউল্লাহর পক্ষে মুহুরি ওবায়দুরের তত্ত্বাবধানে আইনজীবী হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাইফুল ইসলাম পিন্টু এবং স্থানীয় জামিনদার হিসেবে আসামির স্ত্রী হাছিনা বেগম ও সিফাত মোল্লা একে অপরের যোগসাজশে দ্রুত জামিনের ওকালতনামা দাখিল করেন। এরপর আসামি শফিউল্লাহ কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক। তার বিরুদ্ধে আটটি মাদকের মামলা বিচারাধীন।