ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর পর যাকে ময়লার গাড়ির মূল চালক হিসেবে পুলিশ দেখিয়ে আসছিল, ডিএসসিসি থেকে বরখাস্তের আদেশ হওয়ার পর দেখা গেল, তিনিও চালক নন।
সিটি করপোরেশন হারুন মিয়াকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ থেকে বরখাস্ত করেছে। আর বুধবার দুর্ঘটনার সময় যে রাসেল মিয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সে সিটি করপোরেশনের কোনো পর্যাযয়ের কর্মী নয় বলে সংস্থার কর্মকর্তারা এখন দাবি করছেন।
নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির এক দাপ্তরিক আদেশে হারুন মিয়ার পাশাপাশি গাড়িচালক ইরান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কর্মচ্যুত করা হয় আরেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আব্দুর রাজ্জাককে।
বুধবার গুলিস্তানে নাঈমকে চাপা দেওয়ার পর ময়লার গাড়িটি চালানোর দায়িত্বে থাকা রাসেল মিয়াকে আটক করা হয়েছিল। এই দুর্ঘটনার মামলায় তাকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডেও পেয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ বলেছিল, হারুন এই গাড়ির চালক, আর রাসেল পরিচ্ছন্নতাকর্মী। হারুন বদলি দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাসেলকে।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ সংবাদ সম্মেলন জানিয়েছিলেন হারুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেছিলেন, “হারুনও এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সে কেন লাইসেন্সবিহীন রাসেলকে ট্রাকটি চালাতে দিল।”
অথচ এখন দেখা গেল, হারুন মিয়াও চালক নন, তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মী। আর রাসেল পরিচ্ছন্নতাকর্মীও নন। গাড়িটির চালক ইরান মিয়া।
আর হারুনের মতোই সিটি করপোরেশনের আরেক দৈনিক মজুরিভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আব্দুর রাজ্জাক। তারা দুজনই চাকরি হারিয়েছেন। আর সাময়িক বরখাস্ত ইরান মিয়া বরখাস্তকালীন সময়ে খোরাকী ভাতা পাবেন।
আদেশে বলা হয়, “গাড়িটি পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক (ভারী) ইরান মিয়ার অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তিনি অবৈধভাবে হারুন মিয়াকে মৌখিকভাবে চালানোর দায়িত্ব দেন। দুর্ঘটনার দিন হারুন, রাসেল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তিকে গাড়ি চালনার জন্য অবৈধভাবে দায়িত্ব দেন। ইরানের এ ধরনের দায়িত্বহীনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করাসহ তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের রাসেলের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, “রাসেল আসলে সিটি কর্পোরেশনের কেউ না। তাই তার সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছি না।”
সিটি কর্পোরেশনের সাবেক পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, “এমন বদলি চালক দিয়ে গাড়ি চালানোর রীতি সিটি কর্পোরেশনে বহুদিন থেকে চলে আসছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিন শতাধিক ভারী যানবাহন থাকলেও চালক একশও নেই। গাড়ির চেয়ে চালক কম। আর নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক চালক নিজে গাড়ি না চালিয়ে অন্য আরেকজনকে দিয়ে চালায়।”
এদিকে নাঈমের বিক্ষুব্ধ সহপাঠীরা বৃহস্পতিবার নগর ভবনে অবস্থান নিলে তাদের সামনে এসে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি যার চালানোর কথা ছিল, সে তার নিজের দায়িত্ব পালন না করে আরেকজন চালককে ভাড়া করে সেই গাড়ি চালিয়েছে। তাদের দুইজনকেই শাস্তি পেতে হবে। মূল চালককে আমরা সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। আর যে গাড়ি চালাচ্ছিল, তার সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা নিশ্চিত করব।”
সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী ময়লার গাড়ি রাতের বেলায় চলে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মনিবুর রহমান বলেন, কোনো বিশেষ কারণ ছাড়া ময়লার গাড়ি রাতেই চলাচল করার কথা। “যে দুটি গাড়ি দিনে চলাচল করে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিশেষ কোনো কারণ আছে কিনা তা জানতে হবে। কোনো কারণ না থাকলে নিয়ম মেনে রাতে চললে দুটি দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”
বৃহস্পতিবারও ময়লার গাড়ির ধাক্কায় ঢাকার পান্থপথে একজন নিহত হন। এই গাড়িটি ছিল উত্তর সিটি করপোরেশনের।
শুক্রবার, ২৬ নভেম্বর ২০২১
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যুর পর যাকে ময়লার গাড়ির মূল চালক হিসেবে পুলিশ দেখিয়ে আসছিল, ডিএসসিসি থেকে বরখাস্তের আদেশ হওয়ার পর দেখা গেল, তিনিও চালক নন।
সিটি করপোরেশন হারুন মিয়াকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ থেকে বরখাস্ত করেছে। আর বুধবার দুর্ঘটনার সময় যে রাসেল মিয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সে সিটি করপোরেশনের কোনো পর্যাযয়ের কর্মী নয় বলে সংস্থার কর্মকর্তারা এখন দাবি করছেন।
নাঈমের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মধ্যে বৃহস্পতিবার ডিএসসিসির এক দাপ্তরিক আদেশে হারুন মিয়ার পাশাপাশি গাড়িচালক ইরান মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কর্মচ্যুত করা হয় আরেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আব্দুর রাজ্জাককে।
বুধবার গুলিস্তানে নাঈমকে চাপা দেওয়ার পর ময়লার গাড়িটি চালানোর দায়িত্বে থাকা রাসেল মিয়াকে আটক করা হয়েছিল। এই দুর্ঘটনার মামলায় তাকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডেও পেয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ বলেছিল, হারুন এই গাড়ির চালক, আর রাসেল পরিচ্ছন্নতাকর্মী। হারুন বদলি দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাসেলকে।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ সংবাদ সম্মেলন জানিয়েছিলেন হারুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেছিলেন, “হারুনও এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সে কেন লাইসেন্সবিহীন রাসেলকে ট্রাকটি চালাতে দিল।”
অথচ এখন দেখা গেল, হারুন মিয়াও চালক নন, তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মী। আর রাসেল পরিচ্ছন্নতাকর্মীও নন। গাড়িটির চালক ইরান মিয়া।
আর হারুনের মতোই সিটি করপোরেশনের আরেক দৈনিক মজুরিভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী আব্দুর রাজ্জাক। তারা দুজনই চাকরি হারিয়েছেন। আর সাময়িক বরখাস্ত ইরান মিয়া বরখাস্তকালীন সময়ে খোরাকী ভাতা পাবেন।
আদেশে বলা হয়, “গাড়িটি পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক (ভারী) ইরান মিয়ার অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তিনি অবৈধভাবে হারুন মিয়াকে মৌখিকভাবে চালানোর দায়িত্ব দেন। দুর্ঘটনার দিন হারুন, রাসেল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তিকে গাড়ি চালনার জন্য অবৈধভাবে দায়িত্ব দেন। ইরানের এ ধরনের দায়িত্বহীনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করাসহ তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের রাসেলের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, “রাসেল আসলে সিটি কর্পোরেশনের কেউ না। তাই তার সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছি না।”
সিটি কর্পোরেশনের সাবেক পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, “এমন বদলি চালক দিয়ে গাড়ি চালানোর রীতি সিটি কর্পোরেশনে বহুদিন থেকে চলে আসছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিন শতাধিক ভারী যানবাহন থাকলেও চালক একশও নেই। গাড়ির চেয়ে চালক কম। আর নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক চালক নিজে গাড়ি না চালিয়ে অন্য আরেকজনকে দিয়ে চালায়।”
এদিকে নাঈমের বিক্ষুব্ধ সহপাঠীরা বৃহস্পতিবার নগর ভবনে অবস্থান নিলে তাদের সামনে এসে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি যার চালানোর কথা ছিল, সে তার নিজের দায়িত্ব পালন না করে আরেকজন চালককে ভাড়া করে সেই গাড়ি চালিয়েছে। তাদের দুইজনকেই শাস্তি পেতে হবে। মূল চালককে আমরা সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। আর যে গাড়ি চালাচ্ছিল, তার সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা নিশ্চিত করব।”
সিটি করপোরেশনের নিয়ম অনুযায়ী ময়লার গাড়ি রাতের বেলায় চলে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মনিবুর রহমান বলেন, কোনো বিশেষ কারণ ছাড়া ময়লার গাড়ি রাতেই চলাচল করার কথা। “যে দুটি গাড়ি দিনে চলাচল করে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিশেষ কোনো কারণ আছে কিনা তা জানতে হবে। কোনো কারণ না থাকলে নিয়ম মেনে রাতে চললে দুটি দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”
বৃহস্পতিবারও ময়লার গাড়ির ধাক্কায় ঢাকার পান্থপথে একজন নিহত হন। এই গাড়িটি ছিল উত্তর সিটি করপোরেশনের।