বেশিরভাগ বই উপজেলায় পৌঁছে গেছে
কাগজের মূল্য বৃদ্ধি এবং বাজারে কাগজ সংকটের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই দেশের সব ছাত্রছাত্রী নতুন বই না পাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশে স্কুলপর্যায়ে সরকারের বিনামূল্যের বই বিতরণ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মোট চাহিদার বেশিরভাগ বই উপজেলাপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি কপি বই উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে ছাপাখানা মালিকরা (মুদ্রাকর)। ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ২/৩ কোটি বই ছাপা হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বই ছাপা ও সরবরাহ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা থাকলেও সেই লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২২ ডিসেম্বর প্রাথমিক স্তরের আট কোটি ৪৫ লাখ ৬৫ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৫৮ হাজার কপি বই উপজেলা পর্যায়ে ছেপে সরবরাহ করেছে ছাপাখানা মালিকরা। নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপা সম্ভব না হওয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবার রাজধানী ও আশপাশের এলাকা এবং বিশেষ বিশেষ জেলাগুলোতে শতভাগ বই সরবরাহের চেষ্টা চলছে।
পাঠ্যবইয়ের মান তদারকির দায়িত্ব পাওয়া ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন সার্সিসেস বিডি’ প্রধান শেখ বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনভাবেই ৭৫ শতাংশের বেশি পাঠ্যবই স্কুলে পাঠানো সম্ভব হবে না। প্রাথমিকের বইয়ের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও মাধ্যমিকে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বই এই বছর পাঠানো যাবে না।’
নি¤œমানের কাগজে বই ছাপার কারণে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ রয়েছে জানিয়ে শেখ বেলাল হোসেন বলেন, এই ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বই আছে অন্তত পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ কোটি।
২০২১ সালে প্রাথমিক স্তরের (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী) ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৭১৪ কপি এবং প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। আর ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর জন্য ব্রেইল বইসহ (৯ হাজার ৫০৪টি) ২৪ কোটি ৪১ লাখ ২২ হাজার ৩৪৯টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা স্তরসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।
পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদকে বলেছেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কোনভাবেই বই পাঠানো সম্ভব হবে না। করোনা সংক্রমণের কারণে পুরো কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া সক্ষমতা যাচাই-বাচাই না করে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়াও একটি বড় কারণ। আবার হঠাৎ করে কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং বাজারে ভালোমানের কাগজের সংকটের কারণে ছাপার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবছর দরপত্র আহ্বানের সময়ের তুলনায় পরবর্তীতে কাগজের দাম কমলেও এবার হয়েছে উল্টো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বৃহস্পতিবার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই স্কুলপর্র্যয়ে পৌঁছে দিতে, কিছু বই ছাপার কাজ বাদ থাকলেও কোন সমস্যা হবে না। কারণ আমরা সব স্কুলেই বই পৌঁছাতে চেষ্টা করছি। যাদের ১২/১৩টি বই, তারা হয়তো ২/৩টি বই কম পাবে, বাকি বইগুলো পরবর্তীতে পেয়ে যাবে। আমরা সেভাবেই স্কুলে বই পাঠাচ্ছি।’
সংবাদ-এর নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য চাহিদার ৯৫ শতাংশ নতুন বই নারায়ণগঞ্জে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলপর্যায়ে নতুন বিতরণ শুরু হয়েছে। এবার জেলায় প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ নতুন পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে বছরের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এখন পর্যন্ত (বুধবার) মোট ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৪৩২ হাজার নতুন বই এসে পৌঁছেছে। চাহিদা রয়েছে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৩০২। জেলায় মোট ৫৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১১২৮টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। জেলায় মোট ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সবার কাছে বছরের প্রথম দিন থেকেই বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, অন্য বছরের মতো বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়টি এবার হবে না। বই বিতরণের জন্য সরকারি কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জড়ো করা হবে না। শ্রেণী অনুযায়ী ভাগ করে অভিভাবকদের কাছে বই বিতরণ করা হবে। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাড়ি-বাড়ি বই পৌঁছে দেয়া হবে।
বেশিরভাগ বই উপজেলায় পৌঁছে গেছে
বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
কাগজের মূল্য বৃদ্ধি এবং বাজারে কাগজ সংকটের কারণে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই দেশের সব ছাত্রছাত্রী নতুন বই না পাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশে স্কুলপর্যায়ে সরকারের বিনামূল্যের বই বিতরণ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মোট চাহিদার বেশিরভাগ বই উপজেলাপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ছাপা হচ্ছে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি কপি বই উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে ছাপাখানা মালিকরা (মুদ্রাকর)। ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ২/৩ কোটি বই ছাপা হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বই ছাপা ও সরবরাহ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা থাকলেও সেই লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২২ ডিসেম্বর প্রাথমিক স্তরের আট কোটি ৪৫ লাখ ৬৫ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৫৮ হাজার কপি বই উপজেলা পর্যায়ে ছেপে সরবরাহ করেছে ছাপাখানা মালিকরা। নির্ধারিত সময়ে সব বই ছাপা সম্ভব না হওয়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবার রাজধানী ও আশপাশের এলাকা এবং বিশেষ বিশেষ জেলাগুলোতে শতভাগ বই সরবরাহের চেষ্টা চলছে।
পাঠ্যবইয়ের মান তদারকির দায়িত্ব পাওয়া ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্সপেকশন সার্সিসেস বিডি’ প্রধান শেখ বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনভাবেই ৭৫ শতাংশের বেশি পাঠ্যবই স্কুলে পাঠানো সম্ভব হবে না। প্রাথমিকের বইয়ের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও মাধ্যমিকে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বই এই বছর পাঠানো যাবে না।’
নি¤œমানের কাগজে বই ছাপার কারণে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ রয়েছে জানিয়ে শেখ বেলাল হোসেন বলেন, এই ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বই আছে অন্তত পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ কোটি।
২০২১ সালে প্রাথমিক স্তরের (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী) ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৭১৪ কপি এবং প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। আর ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর জন্য ব্রেইল বইসহ (৯ হাজার ৫০৪টি) ২৪ কোটি ৪১ লাখ ২২ হাজার ৩৪৯টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা স্তরসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।
পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিপণন সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদকে বলেছেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কোনভাবেই বই পাঠানো সম্ভব হবে না। করোনা সংক্রমণের কারণে পুরো কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া সক্ষমতা যাচাই-বাচাই না করে অনেক প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়াও একটি বড় কারণ। আবার হঠাৎ করে কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং বাজারে ভালোমানের কাগজের সংকটের কারণে ছাপার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবছর দরপত্র আহ্বানের সময়ের তুলনায় পরবর্তীতে কাগজের দাম কমলেও এবার হয়েছে উল্টো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বৃহস্পতিবার সংবাদকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই স্কুলপর্র্যয়ে পৌঁছে দিতে, কিছু বই ছাপার কাজ বাদ থাকলেও কোন সমস্যা হবে না। কারণ আমরা সব স্কুলেই বই পৌঁছাতে চেষ্টা করছি। যাদের ১২/১৩টি বই, তারা হয়তো ২/৩টি বই কম পাবে, বাকি বইগুলো পরবর্তীতে পেয়ে যাবে। আমরা সেভাবেই স্কুলে বই পাঠাচ্ছি।’
সংবাদ-এর নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য চাহিদার ৯৫ শতাংশ নতুন বই নারায়ণগঞ্জে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলপর্যায়ে নতুন বিতরণ শুরু হয়েছে। এবার জেলায় প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ নতুন পাঠ্যবইয়ের চাহিদা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে বছরের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এখন পর্যন্ত (বুধবার) মোট ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৪৩২ হাজার নতুন বই এসে পৌঁছেছে। চাহিদা রয়েছে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৩০২। জেলায় মোট ৫৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১১২৮টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। জেলায় মোট ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সবার কাছে বছরের প্রথম দিন থেকেই বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, অন্য বছরের মতো বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়টি এবার হবে না। বই বিতরণের জন্য সরকারি কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জড়ো করা হবে না। শ্রেণী অনুযায়ী ভাগ করে অভিভাবকদের কাছে বই বিতরণ করা হবে। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাড়ি-বাড়ি বই পৌঁছে দেয়া হবে।