alt

শিক্ষা

প্রথম দিকে অল্প সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পরামর্শ

কিছু সতর্কতার পরামর্শ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও কিছু সতর্কতা জানিয়েছে কোভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেখানে প্রথমদিকে স্বল্পসময়ের জন্য শিক্ষাপ্রিতিষ্ঠানসমূহ খোলা রাখতে বলা হয়েছে, যেন খাবার গ্রহণের জন্য মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের সব ধরনের ঝুঁকি কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এলাকায় কোভিড-১৯ পরবর্তী সংক্রমণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কমিটি জানায়, সারাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে সংক্রমণ হারে উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার থেকে অনেকটাই নেমে কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় এসেছে। যদিও সংক্রমণ এবং মৃত্যু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। জীবিকা ও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল রাখার উদ্দেশ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে প্রায় সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে সরকার অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ইতোমধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং হলের আবাসিক, আঠারো ও তদুর্ধ্ব বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যান্য ১৮ ও তদুর্ধ্ব বয়সী ছাত্রছাত্রীদের টিকার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রয়োজনীয় গাইডলাইনের খসড়া সভায় উপস্থাপিত করা হয়। জাতীয় পরামর্শক কমিটির রোগতত্ত্ববিষয়ক কমিটি আমন্ত্রিত অতিথির সামনে তাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সবার আলোচনার প্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ গৃহীত হয়।

স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ কখন এবং কীভাবে পুনরায় চালু করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে তা হলো, সব শিক্ষার্থীর শিক্ষা, শিক্ষক-কর্মচারী ও সমাজের মঙ্গল এবং স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে তাদের সব ধরনের ঝুঁকি কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা করা। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এলাকায় কোভিড-১৯ পরবর্তী সংক্রমণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।

সরকার যদি স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সে ক্ষেত্রে- ক. প্রি-স্কুল ব্যতীত সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ পুনরায় খুলে দেয়া যেতে পারে। খ. সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করা এবং ব্যত্যয় ঘটলে সে ব্যাপার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা (৫ বছরের কমবয়সী শিশু ব্যতীত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী)। কেন্দ্রীয়ভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত মানসম্পন্ন এবং সঠিক মাপের মাস্কের ব্যবস্থা ও বিতরণ করা। একইসঙ্গে অন্যান্য জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপ সমূহ, যেমন- হাত পরিষ্কার রাখা (হাত ধোয়া বা হাত জীবাণুমুক্তকরণ স্টেশন স্থাপন করা) এবং সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। গ. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক এবং কর্মচারীর কোভিড-১৯-এর টিকা নেয়া থাকতে হবে এবং তারা দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পার হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রথম ডোজের ১৪ দিন পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি প্রদান করা যেতে পারে। ঘ. উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ১৮ বছরের অধিক বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ঙ. শ্রেণীকক্ষে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস সপ্তাহের কোন দিন কোনটি হবে, তা বিভক্ত করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, প্রথমদিকে আমরা পরীক্ষার্থীদের ক্লাস প্রতিদিন খোলা রাখা ছাড়া, বাকি সব ক্লাস সপ্তাহের দু-এক দিন খোলা রাখতে পারি। এতে একটি নির্দিষ্ট দিনে যে ক্লাসটি খোলা থাকবে তার শিক্ষার্থীরা অন্যান্য খালি শ্রেণীকক্ষগুলো ব্যবহার করতে পারবে। এতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হবে। অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। চ. আবাসিক সুবিধা সংবলিত স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিম্নোক্ত পরামর্শসমূহ প্রযোজ্য (মাদ্রাসাসহ)- ১. সব সমাবেশ স্থানসমূহ (ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং, টিভি/স্পোর্টস রুম, ইত্যাদি) বন্ধ রাখা এবং রান্নাঘর থেকে রুমসমূহে সরাসরি খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা। ২. একাধিক শিক্ষার্থী একই বিছানা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে। ৩. মাদ্রাসায় একসঙ্গে নামাজ, সমাবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা।

এসব ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। ছ. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেয়ার আগে ‘করণীয়’ এবং ‘বর্জনীয়’ কাজ সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিবাবকসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারীদের একটি অরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। এই ওরিয়েন্টেশন সীমিত উপস্থিতি ও নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে সশরীরে আয়োজন করা যেতে পারে, তবে প্রয়োজনে অনলাইন সেশন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ-সংক্রান্ত তথ্য সংবলিত লিফলেট তৈরি, বিতরণ করা এবং ‘করণীয়’ ও ‘বর্জনীয়’ বিষয়গুলো মিডিয়া এবং স্থানীয় ক্যাবল লাইনের মাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। যেসব শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ থাকবে তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিন/ আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টিন/আইসোলেশন থাকাকালে তাদের শুশ্রষার জন্য নির্দেশনা এই ওরিয়েন্টেশনে থাকতে হবে। যে সব শিক্ষার্থীর রোগের লক্ষণ পাওয়া যাবে অথবা তাদের পরিবারের কারও এ রকম লক্ষণ থাকবে অথবা কোভিড-১৯ রোগ পাওয়া যাবে তাদের অনুপস্থিত গণ্য না করে ১৪ দিন বড়িতে থাকার অনুমতি দিতে হবে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) ও প্রচারণাপত্র প্রস্তুত করা দরকার। জ. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীর মধ্যে সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ এবং দৈনিক রিপোর্ট করতে হবে।

নির্বাচিত কিছু স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা এবং সার্ভিল্যান্সের প্রোটোকল তৈরি এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসব জেলায় (আরটি পিসিআর) ল্যাব আছে সে সব জেলার স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই সার্ভিল্যান্সের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে। যেসব জেলায় সংক্রমণের হার বেশি, সেই জেলাগুলোতে আরও নিবিড় সার্ভিল্যন্স থাকা উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করতে হবে। ঝ. সব বিধিনিষেধ সুষ্ঠু পালন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মনিটরিং টিম গঠন করে দৈনিক মনিটরিং করতে হবে।

ছবি

তৃতীয় দফায় তিনদিন শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনে ঘোষণা কুবি শিক্ষক সমিতির

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ১ম বর্ষ ভর্তির আবেদনের ২য় মেধা তালিকা প্রকাশ

ছবি

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে অব্যাহতি

ছবি

এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু মঙ্গলবার, চলবে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত

ছবি

স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরন

ছবি

রাবি-চবির অধিভুক্ত হল ৯ সরকারি কলেজ

ছবি

১১ মের মধ্যেই এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

নতুন শিক্ষাক্রম : আগের ধাচেই শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি এনটিআরসিএ’র

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টেস্ট পরীক্ষার নামে ফি আদায় করলে ব্যবস্থা

ছবি

এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ৩০ জুন, রুটিন প্রকাশ

ছবি

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে : হাইকোর্ট

ছবি

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন করবে ছাত্রলীগ

ছবি

তিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তিন ক্যাম্পাসে চলছে পাল্টাপাল্টি মহড়া

ছবি

৩০টি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব স্থগিত:এনবিআর

ছবি

শিক্ষায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় স্তরে পারিবারিক ব্যয় বেড়েছে

শিক্ষায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় স্তরে পারিবারিক ব্যয় বেড়েছে

কক্সবাজারে ওয়্যারলেস অডিও ডিভাইসসহ দুইজন আটক

ছবি

মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী কমেছে, বেড়েছে মাদ্রাসায়

ছবি

দুর্নীতির অভিযোগে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বরখাস্ত

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৬ দিনের ছুটি শুরু

ছবি

শনিবার স্কুল খোলা রাখার ইঙ্গিত: শিক্ষামন্ত্রী নওফেল

উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সমাপনী পরীক্ষা পাঁচ ঘণ্টা করার প্রস্তাব এনসিটিবির

ছবি

ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ

ছবি

এইচএসসি পরীক্ষা কার কোন কেন্দ্রে, তালিকা প্রকাশ

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শতাধিক ‘ট্রেড কোর্সের’ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই সংস্থার দ্বন্দ্ব

ছবি

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের ২০০ বছর বয়সী ভবন ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন

কেমব্রিজ পরীক্ষায় ডিপিএস শিক্ষার্থীদের অনন্য সাফল্য

ছবি

বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে

সিমাগো র‍্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ভর্তির ফল ১৮ মার্চ

ছবি

রাবির ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৪৫.৩ শতাংশ

ছবি

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত রোজায় স্কুল খোলা

ছবি

রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা রাখতে কোনো বাধা নেই

ছবি

দ্বিতীয় দিনে পাঁচ দফা দাবিতে জাবির প্রশাসনিক ভবন অবরোধ

ছবি

অপরিকল্পিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর ভেঙে দিলো ছাত্র ইউনিয়ন

tab

শিক্ষা

প্রথম দিকে অল্প সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার পরামর্শ

কিছু সতর্কতার পরামর্শ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও কিছু সতর্কতা জানিয়েছে কোভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেখানে প্রথমদিকে স্বল্পসময়ের জন্য শিক্ষাপ্রিতিষ্ঠানসমূহ খোলা রাখতে বলা হয়েছে, যেন খাবার গ্রহণের জন্য মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) কারিগরি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের সব ধরনের ঝুঁকি কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এলাকায় কোভিড-১৯ পরবর্তী সংক্রমণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কমিটি জানায়, সারাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে সংক্রমণ হারে উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার থেকে অনেকটাই নেমে কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় এসেছে। যদিও সংক্রমণ এবং মৃত্যু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। জীবিকা ও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল রাখার উদ্দেশ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে প্রায় সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে সরকার অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ইতোমধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং হলের আবাসিক, আঠারো ও তদুর্ধ্ব বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যান্য ১৮ ও তদুর্ধ্ব বয়সী ছাত্রছাত্রীদের টিকার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রয়োজনীয় গাইডলাইনের খসড়া সভায় উপস্থাপিত করা হয়। জাতীয় পরামর্শক কমিটির রোগতত্ত্ববিষয়ক কমিটি আমন্ত্রিত অতিথির সামনে তাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সবার আলোচনার প্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ গৃহীত হয়।

স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ কখন এবং কীভাবে পুনরায় চালু করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে তা হলো, সব শিক্ষার্থীর শিক্ষা, শিক্ষক-কর্মচারী ও সমাজের মঙ্গল এবং স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে তাদের সব ধরনের ঝুঁকি কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা করা। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তা কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এলাকায় কোভিড-১৯ পরবর্তী সংক্রমণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।

সরকার যদি স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, সে ক্ষেত্রে- ক. প্রি-স্কুল ব্যতীত সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ পুনরায় খুলে দেয়া যেতে পারে। খ. সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করা এবং ব্যত্যয় ঘটলে সে ব্যাপার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা (৫ বছরের কমবয়সী শিশু ব্যতীত এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী)। কেন্দ্রীয়ভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত মানসম্পন্ন এবং সঠিক মাপের মাস্কের ব্যবস্থা ও বিতরণ করা। একইসঙ্গে অন্যান্য জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপ সমূহ, যেমন- হাত পরিষ্কার রাখা (হাত ধোয়া বা হাত জীবাণুমুক্তকরণ স্টেশন স্থাপন করা) এবং সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। গ. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক এবং কর্মচারীর কোভিড-১৯-এর টিকা নেয়া থাকতে হবে এবং তারা দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পার হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রথম ডোজের ১৪ দিন পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি প্রদান করা যেতে পারে। ঘ. উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ১৮ বছরের অধিক বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ঙ. শ্রেণীকক্ষে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস সপ্তাহের কোন দিন কোনটি হবে, তা বিভক্ত করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, প্রথমদিকে আমরা পরীক্ষার্থীদের ক্লাস প্রতিদিন খোলা রাখা ছাড়া, বাকি সব ক্লাস সপ্তাহের দু-এক দিন খোলা রাখতে পারি। এতে একটি নির্দিষ্ট দিনে যে ক্লাসটি খোলা থাকবে তার শিক্ষার্থীরা অন্যান্য খালি শ্রেণীকক্ষগুলো ব্যবহার করতে পারবে। এতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হবে। অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। চ. আবাসিক সুবিধা সংবলিত স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিম্নোক্ত পরামর্শসমূহ প্রযোজ্য (মাদ্রাসাসহ)- ১. সব সমাবেশ স্থানসমূহ (ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং, টিভি/স্পোর্টস রুম, ইত্যাদি) বন্ধ রাখা এবং রান্নাঘর থেকে রুমসমূহে সরাসরি খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা। ২. একাধিক শিক্ষার্থী একই বিছানা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে। ৩. মাদ্রাসায় একসঙ্গে নামাজ, সমাবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা।

এসব ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। ছ. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেয়ার আগে ‘করণীয়’ এবং ‘বর্জনীয়’ কাজ সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিবাবকসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারীদের একটি অরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। এই ওরিয়েন্টেশন সীমিত উপস্থিতি ও নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে সশরীরে আয়োজন করা যেতে পারে, তবে প্রয়োজনে অনলাইন সেশন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ-সংক্রান্ত তথ্য সংবলিত লিফলেট তৈরি, বিতরণ করা এবং ‘করণীয়’ ও ‘বর্জনীয়’ বিষয়গুলো মিডিয়া এবং স্থানীয় ক্যাবল লাইনের মাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। যেসব শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ থাকবে তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিন/ আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টিন/আইসোলেশন থাকাকালে তাদের শুশ্রষার জন্য নির্দেশনা এই ওরিয়েন্টেশনে থাকতে হবে। যে সব শিক্ষার্থীর রোগের লক্ষণ পাওয়া যাবে অথবা তাদের পরিবারের কারও এ রকম লক্ষণ থাকবে অথবা কোভিড-১৯ রোগ পাওয়া যাবে তাদের অনুপস্থিত গণ্য না করে ১৪ দিন বড়িতে থাকার অনুমতি দিতে হবে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) ও প্রচারণাপত্র প্রস্তুত করা দরকার। জ. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীর মধ্যে সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ এবং দৈনিক রিপোর্ট করতে হবে।

নির্বাচিত কিছু স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা এবং সার্ভিল্যান্সের প্রোটোকল তৈরি এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসব জেলায় (আরটি পিসিআর) ল্যাব আছে সে সব জেলার স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই সার্ভিল্যান্সের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে। যেসব জেলায় সংক্রমণের হার বেশি, সেই জেলাগুলোতে আরও নিবিড় সার্ভিল্যন্স থাকা উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করতে হবে। ঝ. সব বিধিনিষেধ সুষ্ঠু পালন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মনিটরিং টিম গঠন করে দৈনিক মনিটরিং করতে হবে।

back to top