তাকে বলা হয় আফ্রিকার চে গুয়েভারা। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত বারকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
আপার ভোল্টার নাম বদলে তিনিই রেখেছিলেন দেশটির বর্তমান নাম, যার অর্থ - ঋজু মানুষের দেশ।
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী এই নেতা নিজের বেতন কমিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সরকারি পদে থাকা সবার।
মাত্র চার বছরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে শিক্ষার হার ১৩ শতাংশ থেকে উন্নীত করেছিলেন ৭৩ শতাংশে।
অথচ তাকেই হত্যা করা হলো। ১৯৮৭ সালের ১৫ অক্টোবর। যখন তার বয়স মাত্র ৩৭ বছর।
তবে চৌত্রিশ বছর পর সেই হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শুরু হয়েছে সেদেশে। হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে ১৪ জনের বিরুদ্ধে।
এদের মধ্যে আছেন সানকারারই বন্ধু ব্লেইস কোম্পাওরে, যিনি ওই হত্যাকাণ্ডের পরে ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে তিনি আছেন পাশের দেশ আইভরি কোস্টে।
সানকারার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সেখানে পালিয়ে যান কোম্পাওরে। তবে বরাবরই তিনি তার বন্ধুর হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কোম্পাওরের আমলের চীফ অব স্টাফ জেনারেল গিলবার্ট ডিয়েন্ডারে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের নিরাপত্তায় আঘাত, হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা এবং মৃতদেহ গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডিয়েন্ডারে আগে থেকেই জেলে আছেন। ২০১৫ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান সংঘটনের দায়ে তার ২০ বছরের সাজা হয়েছে।
ডাক্তার ডিয়েব্রে জীন ক্রিস্টোফারের হত্যার বিষয়ে সরকারি নথিতে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি মৃত্যুসনদে স্বাক্ষর করেছিলেন। তাতে লেখা ছিল সানকারার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
কোম্পাওরের নিরাপত্তা প্রধান হায়াসিন্থ কাফান্ডোর বিরুদ্ধে হত্যা সংঘটনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এদের সবারই বিচার হবে সামরিক আদালতে।
“আমি এই বিচার দেখার জন্য কত দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে আছি,” বলেন সানকারার স্ত্রী মারিয়াম।
তিনি বিবিসিকে বলেন, আমি সত্যটা জানতে চাই শুধু। কারা কী করেছে, সেটা।
তার ভাই পল সানকারা বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করেছি। কোম্পাওরের ২৭ বছরের শাসনকালের পুরোটা। তার আমলে এই বিচারের স্বপ্নও দেখতে পারতাম না আমরা।
সানকারার স্ত্রী তার স্বামীর হত্যার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন ১৯৯৭ সালে। কিন্তু এর তদন্ত চালানোর আদেশ দিতে দেশটির সুপ্রীম কোর্টের লেগেছে ১৫ বছর।
কেননা ২০১৪ সালে কোম্পাওরে উৎখাত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি ছিল না।
এর পরের বছর তার দেহাবশেষ তোলা হয়েছিল ডিএনএ টেস্টের জন্য। কিন্তু তাতেও তার কোনো চিহ্ন ছিল না।
পরে ২০১৬ সালে সরকারিভাবে ফ্রান্সের কাছে সানকারা হত্যার বিষয়ে তাদের সামরিক নথিসমূহ প্রকাশের অনুরোধ জানায় বারকিনা ফাসো ।
তিন ধাপে সেই নথি অবমুক্ত করা হয়। সর্বশেষটি এ বছর এপ্রিল মাসে।
অনেকেরই আশঙ্কা ছিলো এই বিচারের প্রক্রিয়া নতুন করে বারকিনা ফাসোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যখন দেশটিতে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আলকায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের আক্রমণ বেড়েছে।
এছাড়া কোম্পাওরে এখনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে সেদেশে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর যে অংশটি তার প্রতি এখনো আনুগত্য পোষণ করে তারা বিগ্রহ ঘটাতে পারে সেই জল্পনাও ছিল।
তবে এসবের কিছুই হয়নি এখন পর্যন্ত। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্যাবোরে আশা প্রকাশ করে বলেন এই বিচার দেশটির মধ্যকার সংহতি বাড়াতে সহায়ক হবে। উত্তেজনা দূর হবে।
প্রসঙ্গত, পুরো আফ্রিকা জুড়েই সানকারা একজন আইকন। পশ্চিম আফ্রিকার গাড়িতে গাড়িতে এখনো তার ছবির স্টিকার শোভা পায়। দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা জুলিয়াস মালেমার মতো মহাদেশটির অনেকের কাছেই সানকারা এক অনুপ্রেরণার নাম।
সানকারার স্মৃতি রক্ষার্থে গঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুক ডামিবা বলেন, “আমাদের কাছে সানকারা দেশপ্রেমিক। তিনি তার মানুষদের ভালবাসতেন। তিনি আফ্রিকাকে ভালবাসতেন। তিনি আমাদের জন্য জীবন দিয়েছেন।”
খুবই সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন সানকারা। সরকারি গাড়ি আর বিমানের প্রথম শ্রেণীতে টিকেট কাটা বন্ধ করেছিলেন তিনি।
গোটা দেশকে টিকার আওতায় এনেছিলেন।
নব্য সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলতেন, যে তোমাকে খাওয়াবে, সে তোমাকে নিয়ন্ত্রণও করতে চাইবে।
তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী পররাষ্ট্রনীতি নিয়েছিলেন যা তার দেশসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রভাবের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে উঠেছিল।
সে কারণেই সানকারার স্ত্রী তার হত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য ফ্রান্সকে দায়ী করেন।
বারকিনা ফাসোর রাজধানী ঔগাদুগুর থমাস সানকারা মেমোরিয়াল পার্কে ছ’মিটার উচু ভাস্কর্য রয়েছে সানকারার। এই ভাস্কর্যটির উদ্বোধন হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু এর নির্মাণ নিয়ে কিছু অভিযোগ থাকায় গত বছর তা আবার ঠিকঠাক করা হয়।
ডাম্বিয়া জানান এই পার্কটি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ৮৭ মিটার উচু একটি টাওয়ার হবে। সেখানে সানকারার একটি সংগ্রহশালা করা হবে। একটা প্রেক্ষাগৃহ এবং মিডিয়া লাইব্রেরি কথা হবে। এসবই সানকারার বিপ্লবী আদর্শকে এগিয়ে নেবে।
দেশটির রাজধানীতেই তার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বিবিসিকে বলেন, “তিনি এখনো আমার প্রেসিডেন্ট। তিনি মানুষের জন্য যা করেছেন তা আজও তরুণদের অনুপ্রাণিত করে।”
তবে সানকারা সমালোচনার উর্ধ্বে ছিলেন না। তার বামপন্থী আদর্শকে দানবীয় বলে থাকেন মানবাধিকারবাদীরা।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে বিনা বিচারে বিরোধীদের আটকে রাখা এবং তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
খোদ সানকারার তথ্যমন্ত্রী থিওফাইল বালিমা বলেন, আমি মনে করে বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণা গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি খুব ধীর ছিলেন।
“তিনি মানুষকে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন। তাই শোষিত শ্রেণীর মানুষকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্বে বসিয়েছিলেন। তিনি এটি করেছিলেন ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মানুষকে উজ্জীবিত করতে। কিন্তু তারা তার অপব্যবহার করেছিল, যা সানকারার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ”
সানকারার দ্বারা উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্টে জীন ব্যাপ্টিস্ট ঔয়েড্রাওগো ২০২০ সালের এক সাক্ষাৎকারে সানকারাকে নিষ্ঠুর ও রাজনৈতিকভাবে শঠ হিসেবে অভিহিত করেন।
মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১
তাকে বলা হয় আফ্রিকার চে গুয়েভারা। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত বারকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
আপার ভোল্টার নাম বদলে তিনিই রেখেছিলেন দেশটির বর্তমান নাম, যার অর্থ - ঋজু মানুষের দেশ।
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী এই নেতা নিজের বেতন কমিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সরকারি পদে থাকা সবার।
মাত্র চার বছরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে শিক্ষার হার ১৩ শতাংশ থেকে উন্নীত করেছিলেন ৭৩ শতাংশে।
অথচ তাকেই হত্যা করা হলো। ১৯৮৭ সালের ১৫ অক্টোবর। যখন তার বয়স মাত্র ৩৭ বছর।
তবে চৌত্রিশ বছর পর সেই হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শুরু হয়েছে সেদেশে। হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়েছে ১৪ জনের বিরুদ্ধে।
এদের মধ্যে আছেন সানকারারই বন্ধু ব্লেইস কোম্পাওরে, যিনি ওই হত্যাকাণ্ডের পরে ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে তিনি আছেন পাশের দেশ আইভরি কোস্টে।
সানকারার বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সেখানে পালিয়ে যান কোম্পাওরে। তবে বরাবরই তিনি তার বন্ধুর হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন কোম্পাওরের আমলের চীফ অব স্টাফ জেনারেল গিলবার্ট ডিয়েন্ডারে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের নিরাপত্তায় আঘাত, হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা এবং মৃতদেহ গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডিয়েন্ডারে আগে থেকেই জেলে আছেন। ২০১৫ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থান সংঘটনের দায়ে তার ২০ বছরের সাজা হয়েছে।
ডাক্তার ডিয়েব্রে জীন ক্রিস্টোফারের হত্যার বিষয়ে সরকারি নথিতে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি মৃত্যুসনদে স্বাক্ষর করেছিলেন। তাতে লেখা ছিল সানকারার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
কোম্পাওরের নিরাপত্তা প্রধান হায়াসিন্থ কাফান্ডোর বিরুদ্ধে হত্যা সংঘটনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
এদের সবারই বিচার হবে সামরিক আদালতে।
“আমি এই বিচার দেখার জন্য কত দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে আছি,” বলেন সানকারার স্ত্রী মারিয়াম।
তিনি বিবিসিকে বলেন, আমি সত্যটা জানতে চাই শুধু। কারা কী করেছে, সেটা।
তার ভাই পল সানকারা বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষা করেছি। কোম্পাওরের ২৭ বছরের শাসনকালের পুরোটা। তার আমলে এই বিচারের স্বপ্নও দেখতে পারতাম না আমরা।
সানকারার স্ত্রী তার স্বামীর হত্যার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন ১৯৯৭ সালে। কিন্তু এর তদন্ত চালানোর আদেশ দিতে দেশটির সুপ্রীম কোর্টের লেগেছে ১৫ বছর।
কেননা ২০১৪ সালে কোম্পাওরে উৎখাত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি ছিল না।
এর পরের বছর তার দেহাবশেষ তোলা হয়েছিল ডিএনএ টেস্টের জন্য। কিন্তু তাতেও তার কোনো চিহ্ন ছিল না।
পরে ২০১৬ সালে সরকারিভাবে ফ্রান্সের কাছে সানকারা হত্যার বিষয়ে তাদের সামরিক নথিসমূহ প্রকাশের অনুরোধ জানায় বারকিনা ফাসো ।
তিন ধাপে সেই নথি অবমুক্ত করা হয়। সর্বশেষটি এ বছর এপ্রিল মাসে।
অনেকেরই আশঙ্কা ছিলো এই বিচারের প্রক্রিয়া নতুন করে বারকিনা ফাসোতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যখন দেশটিতে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আলকায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের আক্রমণ বেড়েছে।
এছাড়া কোম্পাওরে এখনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে সেদেশে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর যে অংশটি তার প্রতি এখনো আনুগত্য পোষণ করে তারা বিগ্রহ ঘটাতে পারে সেই জল্পনাও ছিল।
তবে এসবের কিছুই হয়নি এখন পর্যন্ত। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রোচ মার্ক ক্যাবোরে আশা প্রকাশ করে বলেন এই বিচার দেশটির মধ্যকার সংহতি বাড়াতে সহায়ক হবে। উত্তেজনা দূর হবে।
প্রসঙ্গত, পুরো আফ্রিকা জুড়েই সানকারা একজন আইকন। পশ্চিম আফ্রিকার গাড়িতে গাড়িতে এখনো তার ছবির স্টিকার শোভা পায়। দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা জুলিয়াস মালেমার মতো মহাদেশটির অনেকের কাছেই সানকারা এক অনুপ্রেরণার নাম।
সানকারার স্মৃতি রক্ষার্থে গঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুক ডামিবা বলেন, “আমাদের কাছে সানকারা দেশপ্রেমিক। তিনি তার মানুষদের ভালবাসতেন। তিনি আফ্রিকাকে ভালবাসতেন। তিনি আমাদের জন্য জীবন দিয়েছেন।”
খুবই সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন সানকারা। সরকারি গাড়ি আর বিমানের প্রথম শ্রেণীতে টিকেট কাটা বন্ধ করেছিলেন তিনি।
গোটা দেশকে টিকার আওতায় এনেছিলেন।
নব্য সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলতেন, যে তোমাকে খাওয়াবে, সে তোমাকে নিয়ন্ত্রণও করতে চাইবে।
তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী পররাষ্ট্রনীতি নিয়েছিলেন যা তার দেশসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রভাবের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে উঠেছিল।
সে কারণেই সানকারার স্ত্রী তার হত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য ফ্রান্সকে দায়ী করেন।
বারকিনা ফাসোর রাজধানী ঔগাদুগুর থমাস সানকারা মেমোরিয়াল পার্কে ছ’মিটার উচু ভাস্কর্য রয়েছে সানকারার। এই ভাস্কর্যটির উদ্বোধন হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু এর নির্মাণ নিয়ে কিছু অভিযোগ থাকায় গত বছর তা আবার ঠিকঠাক করা হয়।
ডাম্বিয়া জানান এই পার্কটি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ৮৭ মিটার উচু একটি টাওয়ার হবে। সেখানে সানকারার একটি সংগ্রহশালা করা হবে। একটা প্রেক্ষাগৃহ এবং মিডিয়া লাইব্রেরি কথা হবে। এসবই সানকারার বিপ্লবী আদর্শকে এগিয়ে নেবে।
দেশটির রাজধানীতেই তার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বিবিসিকে বলেন, “তিনি এখনো আমার প্রেসিডেন্ট। তিনি মানুষের জন্য যা করেছেন তা আজও তরুণদের অনুপ্রাণিত করে।”
তবে সানকারা সমালোচনার উর্ধ্বে ছিলেন না। তার বামপন্থী আদর্শকে দানবীয় বলে থাকেন মানবাধিকারবাদীরা।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে বিনা বিচারে বিরোধীদের আটকে রাখা এবং তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
খোদ সানকারার তথ্যমন্ত্রী থিওফাইল বালিমা বলেন, আমি মনে করে বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণা গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি খুব ধীর ছিলেন।
“তিনি মানুষকে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন। তাই শোষিত শ্রেণীর মানুষকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্বে বসিয়েছিলেন। তিনি এটি করেছিলেন ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মানুষকে উজ্জীবিত করতে। কিন্তু তারা তার অপব্যবহার করেছিল, যা সানকারার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ”
সানকারার দ্বারা উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্টে জীন ব্যাপ্টিস্ট ঔয়েড্রাওগো ২০২০ সালের এক সাক্ষাৎকারে সানকারাকে নিষ্ঠুর ও রাজনৈতিকভাবে শঠ হিসেবে অভিহিত করেন।