একেকটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে গোটা একটি শহর কিংবা বিস্তীর্ণ একটি অঞ্চল। ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পেছনে সম্ভাব্য একটি কারণ ধরা হয় একে। পৃথিবীর কাছাকাছি মহাকাশে এমন গ্রহাণু আছে হাজার হাজার। তাদের ছুটে আসার ঝুঁকি মোকাবেলায় পৃথিবী কতটা সক্ষম, তা বোঝার জন্যই একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা।
ডাইমর্ফোস নামে মহাশূন্যে ভাসমান গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে কক্ষচ্যুত করতে ‘আত্মঘাতী’ মহাশূন্যযান পাঠিয়েছে তারা। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও ঘটনা সত্য। নাসা পরীক্ষামূলক এই মহাকাশ প্রকল্পের নাম দিয়েছে ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডিরেকশন (ডার্ট)।
ক্যালিফোনির্য়ার ভ্যান্ডেনবার্গের স্পেস ফোর্স বেইস থেকে স্পেসএক্স রকেটে করে মহাশূন্যযানটির উৎক্ষেপন হয়েছে গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২১ মিনিটে। গ্রীনিচ মান সময় অনুযায়ী বুধবার ৬টা ২১ মিনিটে।
এর লক্ষ্য ১৬০ মিটার (৫২৫ ফুট) প্রশস্ত ডাইমর্ফোসের যাত্রাপথ কিছুটা হলেও পাল্টে দেওয়া। এটি আবার ৭৬২ মিটার (২৫০০ ফুট) ব্যাসের, কয়েকগুণ বড় আরেকটি গ্রহাণু ডাইডিমোসকে ঘিরে আবর্তিত হয়। আর ডাইমর্ফোসকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ডাইডিমোস।
ধাক্কাটা দেওয়া হবে ২০২২ এর তৃতীয় প্রান্তিকে, যখন গ্রহাণুদ্বয় পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থানে থাকবে। সে সময় পৃথিবী থেকে তাদের দুরত্ব হবে ১ কোটি ১০ লাখ কিলোমিটার বা ৬৮ লাখ মাইল।
প্রথমবারের মতো বাস্তবায়নাধীন ৩৩ কোটি ডলারের এই প্রকল্পের শীর্ষ বিজ্ঞানী থমাস জুবুরচেন বলেন, ‘এ ধরনের ঝুঁকি কীভাবে দূর করা যায় আমরা সেটিই শেখার চেষ্টা করছি।’
এই দুই গ্রহাণু কিন্তু পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি না। তবে এগুলোকে বলা হয় ‘নিয়ার আর্থ অবজেক্টস’, অর্থাৎ পৃথিবীর নিকটবর্তী বস্তুসমূহ। এগুলো পৃথিবী থেকে ৪ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার বা ৩ কোটি মাইল দুরত্বের মধ্যে অবস্থান করে।
এদের মধ্যে যেগুলোর ব্যস বা প্রশস্ততা ১৪০ মিটার বা ৪৬০ ফুটের চেয়ে বেশি সেগুলো নিয়েই আগ্রহী নাসার প্লানেটারি ডিফেন্স কোঅর্ডিনেশন অফিস। পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়লে এদের একেকটি পারমাণবিক বোমার চেয়েও কয়েকগুণ শক্তিতে একটি নগর বা কোনো একটি অঞ্চল বিধ্বস্ত সমতল বানিয়ে ফেলবে।
এখন পর্যন্ত এমন ১০ হাজার বিভিন্ন আকারের গ্রহাণুর কথা জানা গেছে। তবে আগামী ১০০ বছরে সেগুলোর কোনটিরই পৃথিবীর দিকে ছুটে আসার সম্ভাবনা নেই। তা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীদের ভয়ের জায়গা হচ্ছে, এমন আরো অন্তত আরো ১৫ হাজার গ্রহাণু আছে যেগুলো অজানা রয়ে গেছে।
নাসার গ্রহ-বিজ্ঞানী এসাম হেজি বলেন, ‘নাসার এই মিশন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও পৃথিবীর জন্য গ্রহাণুর এই হুমকি কিন্তু বাস্তব, বিশেষ করে যদি আপনারা ৮ কোটি বছর আগে ডাইনোসরদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা স্মরণ করেন।’
তার কথা, ‘গ্রহাণুর আঘাত কল্পকাহিনী না। ১০০ মিটার বা তার বেশি ব্যাসের গ্রহাণু পৃথিবীর জন্য হুমকি। আমরা তা মোকাবেলা কতটুকু সামর্থ্য রাখি তার একটা পরিমাপ থাকা দরকার।’
শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
একেকটি গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে গোটা একটি শহর কিংবা বিস্তীর্ণ একটি অঞ্চল। ডাইনোসরদের বিলুপ্তির পেছনে সম্ভাব্য একটি কারণ ধরা হয় একে। পৃথিবীর কাছাকাছি মহাকাশে এমন গ্রহাণু আছে হাজার হাজার। তাদের ছুটে আসার ঝুঁকি মোকাবেলায় পৃথিবী কতটা সক্ষম, তা বোঝার জন্যই একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা।
ডাইমর্ফোস নামে মহাশূন্যে ভাসমান গ্রহাণুকে ধাক্কা মেরে কক্ষচ্যুত করতে ‘আত্মঘাতী’ মহাশূন্যযান পাঠিয়েছে তারা। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও ঘটনা সত্য। নাসা পরীক্ষামূলক এই মহাকাশ প্রকল্পের নাম দিয়েছে ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডিরেকশন (ডার্ট)।
ক্যালিফোনির্য়ার ভ্যান্ডেনবার্গের স্পেস ফোর্স বেইস থেকে স্পেসএক্স রকেটে করে মহাশূন্যযানটির উৎক্ষেপন হয়েছে গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২১ মিনিটে। গ্রীনিচ মান সময় অনুযায়ী বুধবার ৬টা ২১ মিনিটে।
এর লক্ষ্য ১৬০ মিটার (৫২৫ ফুট) প্রশস্ত ডাইমর্ফোসের যাত্রাপথ কিছুটা হলেও পাল্টে দেওয়া। এটি আবার ৭৬২ মিটার (২৫০০ ফুট) ব্যাসের, কয়েকগুণ বড় আরেকটি গ্রহাণু ডাইডিমোসকে ঘিরে আবর্তিত হয়। আর ডাইমর্ফোসকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে ডাইডিমোস।
ধাক্কাটা দেওয়া হবে ২০২২ এর তৃতীয় প্রান্তিকে, যখন গ্রহাণুদ্বয় পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থানে থাকবে। সে সময় পৃথিবী থেকে তাদের দুরত্ব হবে ১ কোটি ১০ লাখ কিলোমিটার বা ৬৮ লাখ মাইল।
প্রথমবারের মতো বাস্তবায়নাধীন ৩৩ কোটি ডলারের এই প্রকল্পের শীর্ষ বিজ্ঞানী থমাস জুবুরচেন বলেন, ‘এ ধরনের ঝুঁকি কীভাবে দূর করা যায় আমরা সেটিই শেখার চেষ্টা করছি।’
এই দুই গ্রহাণু কিন্তু পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি না। তবে এগুলোকে বলা হয় ‘নিয়ার আর্থ অবজেক্টস’, অর্থাৎ পৃথিবীর নিকটবর্তী বস্তুসমূহ। এগুলো পৃথিবী থেকে ৪ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার বা ৩ কোটি মাইল দুরত্বের মধ্যে অবস্থান করে।
এদের মধ্যে যেগুলোর ব্যস বা প্রশস্ততা ১৪০ মিটার বা ৪৬০ ফুটের চেয়ে বেশি সেগুলো নিয়েই আগ্রহী নাসার প্লানেটারি ডিফেন্স কোঅর্ডিনেশন অফিস। পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়লে এদের একেকটি পারমাণবিক বোমার চেয়েও কয়েকগুণ শক্তিতে একটি নগর বা কোনো একটি অঞ্চল বিধ্বস্ত সমতল বানিয়ে ফেলবে।
এখন পর্যন্ত এমন ১০ হাজার বিভিন্ন আকারের গ্রহাণুর কথা জানা গেছে। তবে আগামী ১০০ বছরে সেগুলোর কোনটিরই পৃথিবীর দিকে ছুটে আসার সম্ভাবনা নেই। তা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীদের ভয়ের জায়গা হচ্ছে, এমন আরো অন্তত আরো ১৫ হাজার গ্রহাণু আছে যেগুলো অজানা রয়ে গেছে।
নাসার গ্রহ-বিজ্ঞানী এসাম হেজি বলেন, ‘নাসার এই মিশন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো শোনালেও পৃথিবীর জন্য গ্রহাণুর এই হুমকি কিন্তু বাস্তব, বিশেষ করে যদি আপনারা ৮ কোটি বছর আগে ডাইনোসরদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা স্মরণ করেন।’
তার কথা, ‘গ্রহাণুর আঘাত কল্পকাহিনী না। ১০০ মিটার বা তার বেশি ব্যাসের গ্রহাণু পৃথিবীর জন্য হুমকি। আমরা তা মোকাবেলা কতটুকু সামর্থ্য রাখি তার একটা পরিমাপ থাকা দরকার।’