ভয়েস অফ আমেরিকার (ভিওএ) বাংলা বিভাগের বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ১৭ জুলাইয়ের পর আর বেতারে ভিওএর বাংলা সম্প্রচার শোনা যাবে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম।
বেতারে শ্রোতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শক-অনুসারীর সংখ্যা বাড়ায় ভিওএ বাংলা এফএম ও শর্টওয়েভে বেতার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
তবে ভয়েস অব আমেরিকা টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলা দর্শক-শ্রোতাগোষ্ঠীর জন্য নতুন অনুষ্ঠান ও আধেয় প্রচার বাড়াবে বলেও জানানো হয়।
তবে এই পরিবর্তনের কারণে ‘লাইফলাইন’ নামের বেতার অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় প্রচারিত ৩০ মিনিটের এই বেতার অনুষ্ঠান চালু থাকবে। এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে।
সম্প্রচারের শেষ দিনগুলোতে ভিওএর বাংলা সার্ভিস অতীতের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানমালা পুনঃপ্রচার করবে। এর মধ্যদিয়ে তাদের বেতার সম্প্রচার কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তা তুলে ধরা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রায় ৬৩ বছর আগে ১৯৫৮ সালে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অর্থাৎ তখনকার ‘পূর্ব পাকিস্তানে’র বাংলাভাষী মানুষকে লক্ষ্য করেই বাংলায় সংবাদ ও অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে ভয়েস অফ আমেরিকা। তখন এই অঞ্চল সামরিক শাসনের অধীনে। এই অঞ্চল ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাভাষীরাও এত বছর ধরে শুনে আসছিলেন ভিওএর সংবাদসহ নানা অনুষ্ঠান।
ভিওএর অনুষ্ঠান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জন লিপম্যান বলেন, “১৯৫৮ সালে ভয়েস অফ আমেরিকা যখন বাংলায় সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু করে, তখন ‘পূর্ব পাকিস্তান’ হিসেবে পরিচিত ভূখণ্ডটি সামরিক শাসনের অধীনে ছিল এবং কোনো বেসরকারি টেলিভিশন বা বেতার ছিলো না সেখানে।
ভিওএর স্বল্প তরঙ্গ বেতার সম্প্রচার সেখানকার বাংলাভাষী জনগণের জন্য স্বতন্ত্র উৎস থেকে সংবাদ ও তথ্য পাওয়ার একটি ‘লাইফলাইন’ হিসেবে কাজ করেছে।”
এখন ভিওএর স্বল্প তরঙ্গ বা শর্টওয়েভ সার্ভিসের শ্রোতা এক শতাংশেরও কম। তবে সোশাল মিডিয়ায় ভিওএর বাংলা ভাষার অনুষ্ঠান বা আধেয়র দর্শক-শ্রোতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
তারা বলছে গত বছর ভিওএর বাংলা টুইটার অ্যাকাউন্টে ব্যবহারকারীদের সংযোগ বেড়েছে ৫৪ শতাংশ, আর একই সময়ে ইনস্টাগ্রামে ভিডিওর দর্শক বেড়েছে ২৭৪ শতাংশ।
লিপম্যান বলেন, “বাংলাদেশে টেলিভিশন এবং অনলাইনে সংবাদের জন্য দর্শক-শ্রোতার চাহিদা বাড়ায় ভিওএর বাংলা সার্ভিসের অনুষ্ঠানমালা ওইসব মঞ্চেই বেশি দরকার, যেখানে দর্শক-শ্রোতা সবচেয়ে বেশি সক্রিয়।”
জুনে বিভাগীয় কর্মীদের এক সভায় ভিওএ বাংলা সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শতরূপা বড়ুয়া বলেন, “আমাদের বেড়ে ওঠার সময় একটি বড় অংশজুড়ে ছিল এই বেতার সম্প্রচার, ঘরে ঘরে সুপরিচিত ছিল ভিওএ। এই পরিচিতির ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
এখনকার দিনে শর্টওয়েভ ও মিডিয়াম ওয়েভ রেডিওর তুলনায় যেসব মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতা বেশি সক্রিয়, সেখানে উপস্থিতি আরও বাড়িয়ে তুলব আমরা।”
ভয়েস অফ আমেরিকা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪২ সালে। যে সব দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বা জনগণ সীমিত সংবাদ পায়, তাদের কাছে ভিওএ ৪০টিরও বেশি ভাষায় খবর প্রচার করে বলে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।
বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১
ভয়েস অফ আমেরিকার (ভিওএ) বাংলা বিভাগের বেতার সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ১৭ জুলাইয়ের পর আর বেতারে ভিওএর বাংলা সম্প্রচার শোনা যাবে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম।
বেতারে শ্রোতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শক-অনুসারীর সংখ্যা বাড়ায় ভিওএ বাংলা এফএম ও শর্টওয়েভে বেতার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
তবে ভয়েস অব আমেরিকা টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলা দর্শক-শ্রোতাগোষ্ঠীর জন্য নতুন অনুষ্ঠান ও আধেয় প্রচার বাড়াবে বলেও জানানো হয়।
তবে এই পরিবর্তনের কারণে ‘লাইফলাইন’ নামের বেতার অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় প্রচারিত ৩০ মিনিটের এই বেতার অনুষ্ঠান চালু থাকবে। এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে।
সম্প্রচারের শেষ দিনগুলোতে ভিওএর বাংলা সার্ভিস অতীতের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানমালা পুনঃপ্রচার করবে। এর মধ্যদিয়ে তাদের বেতার সম্প্রচার কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে তা তুলে ধরা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রায় ৬৩ বছর আগে ১৯৫৮ সালে বাংলাদেশ ভূখণ্ড অর্থাৎ তখনকার ‘পূর্ব পাকিস্তানে’র বাংলাভাষী মানুষকে লক্ষ্য করেই বাংলায় সংবাদ ও অনুষ্ঠান প্রচার শুরু করে ভয়েস অফ আমেরিকা। তখন এই অঞ্চল সামরিক শাসনের অধীনে। এই অঞ্চল ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাভাষীরাও এত বছর ধরে শুনে আসছিলেন ভিওএর সংবাদসহ নানা অনুষ্ঠান।
ভিওএর অনুষ্ঠান বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জন লিপম্যান বলেন, “১৯৫৮ সালে ভয়েস অফ আমেরিকা যখন বাংলায় সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু করে, তখন ‘পূর্ব পাকিস্তান’ হিসেবে পরিচিত ভূখণ্ডটি সামরিক শাসনের অধীনে ছিল এবং কোনো বেসরকারি টেলিভিশন বা বেতার ছিলো না সেখানে।
ভিওএর স্বল্প তরঙ্গ বেতার সম্প্রচার সেখানকার বাংলাভাষী জনগণের জন্য স্বতন্ত্র উৎস থেকে সংবাদ ও তথ্য পাওয়ার একটি ‘লাইফলাইন’ হিসেবে কাজ করেছে।”
এখন ভিওএর স্বল্প তরঙ্গ বা শর্টওয়েভ সার্ভিসের শ্রোতা এক শতাংশেরও কম। তবে সোশাল মিডিয়ায় ভিওএর বাংলা ভাষার অনুষ্ঠান বা আধেয়র দর্শক-শ্রোতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
তারা বলছে গত বছর ভিওএর বাংলা টুইটার অ্যাকাউন্টে ব্যবহারকারীদের সংযোগ বেড়েছে ৫৪ শতাংশ, আর একই সময়ে ইনস্টাগ্রামে ভিডিওর দর্শক বেড়েছে ২৭৪ শতাংশ।
লিপম্যান বলেন, “বাংলাদেশে টেলিভিশন এবং অনলাইনে সংবাদের জন্য দর্শক-শ্রোতার চাহিদা বাড়ায় ভিওএর বাংলা সার্ভিসের অনুষ্ঠানমালা ওইসব মঞ্চেই বেশি দরকার, যেখানে দর্শক-শ্রোতা সবচেয়ে বেশি সক্রিয়।”
জুনে বিভাগীয় কর্মীদের এক সভায় ভিওএ বাংলা সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শতরূপা বড়ুয়া বলেন, “আমাদের বেড়ে ওঠার সময় একটি বড় অংশজুড়ে ছিল এই বেতার সম্প্রচার, ঘরে ঘরে সুপরিচিত ছিল ভিওএ। এই পরিচিতির ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
এখনকার দিনে শর্টওয়েভ ও মিডিয়াম ওয়েভ রেডিওর তুলনায় যেসব মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতা বেশি সক্রিয়, সেখানে উপস্থিতি আরও বাড়িয়ে তুলব আমরা।”
ভয়েস অফ আমেরিকা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪২ সালে। যে সব দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নেই বা জনগণ সীমিত সংবাদ পায়, তাদের কাছে ভিওএ ৪০টিরও বেশি ভাষায় খবর প্রচার করে বলে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।