একই ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত থাকলে সেগুলো শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল, বিটিআরসি গ্রাহকদের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অতিরিক্ত সিম ‘ডি-রেজিস্টার’ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেক গ্রাহক তা না করায় এবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত সিম বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেন, “১ নভেম্বর থেকে ধাপে ধাপে অতিরিক্ত সিম বন্ধের কাজ শুরু করবে বিটিআরসি। যাদের নামে ১০টির বেশি সিম আছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হবে এবং কোন অপারেটরের কয়টি সিম আছে তা চিহ্নিত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে যেন তারা গ্রাহকের সবচেয়ে কম ব্যবহৃত সিমগুলো আগে বন্ধ করে দেয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যক্তির প্রধান সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, অতীতে একজন ব্যক্তির নামে অতিরিক্ত সিম ব্যবহার করে গাড়ির ট্র্যাকিংসহ বিভিন্ন ‘আইওটি’ (Internet of Things) ডিভাইস চালানো হতো। এখন এসব আইওটি সিম আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। তাই একজন গ্রাহকের নামে অতিরিক্ত সিম রাখার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এমদাদুল বারী বলেন, “ধাপে ধাপে একজন ব্যক্তির নামে সিমের সংখ্যা আরও কমানো হবে। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও চাপ রয়েছে।”
গত মে মাসে বিটিআরসির কমিশন সভায় একজন ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে কমিয়ে ১০টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে ২৬ লাখ গ্রাহকের নামে থাকা প্রায় ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গ্রাহকের নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানতে *১৬০০১# ডায়াল করে জানা যাবে। আর ১০টির বেশি সিম থাকলে গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে অতিরিক্ত সিম ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে পারবেন।
২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধনের অনুমতি দিয়েছিল বিটিআরসি। আট বছর পর, চলতি বছরের ১৯ মে কমিশন সভায় সিমের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিটিআরসির পর্যালোচনায় দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এতগুলো সিম ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা, অপারেটরদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন বিবেচনায় একজনের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম রাখার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিটিআরসির মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সক্রিয় সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার। অন্যদিকে, বিক্রি হওয়া সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। এর মধ্যে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের নামে পাঁচটি বা তার কম সিম রয়েছে, ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের নামে পাঁচ থেকে ১০টি পর্যন্ত সিম এবং ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের নামে ১১ থেকে ১৫টি পর্যন্ত সিম রয়েছে।
অপারেটরগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লাখ নতুন সিম বিক্রি হয়। তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গ্রাহক একদিনে দুই বা ততোধিক সিম নিবন্ধন করেছেন, যা অস্বাভাবিক।
বিটিআরসি আরও বলছে, কিছু অসাধু রিটেইলার (খুচরা বিক্রেতা) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ) সংরক্ষণ করে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করে থাকেন, যা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
একই ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত থাকলে সেগুলো শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল, বিটিআরসি গ্রাহকদের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অতিরিক্ত সিম ‘ডি-রেজিস্টার’ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেক গ্রাহক তা না করায় এবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত সিম বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এমদাদুল বারী বলেন, “১ নভেম্বর থেকে ধাপে ধাপে অতিরিক্ত সিম বন্ধের কাজ শুরু করবে বিটিআরসি। যাদের নামে ১০টির বেশি সিম আছে, তাদের তালিকা তৈরি করা হবে এবং কোন অপারেটরের কয়টি সিম আছে তা চিহ্নিত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে যেন তারা গ্রাহকের সবচেয়ে কম ব্যবহৃত সিমগুলো আগে বন্ধ করে দেয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যক্তির প্রধান সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, অতীতে একজন ব্যক্তির নামে অতিরিক্ত সিম ব্যবহার করে গাড়ির ট্র্যাকিংসহ বিভিন্ন ‘আইওটি’ (Internet of Things) ডিভাইস চালানো হতো। এখন এসব আইওটি সিম আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। তাই একজন গ্রাহকের নামে অতিরিক্ত সিম রাখার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এমদাদুল বারী বলেন, “ধাপে ধাপে একজন ব্যক্তির নামে সিমের সংখ্যা আরও কমানো হবে। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও চাপ রয়েছে।”
গত মে মাসে বিটিআরসির কমিশন সভায় একজন ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে কমিয়ে ১০টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে ২৬ লাখ গ্রাহকের নামে থাকা প্রায় ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গ্রাহকের নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানতে *১৬০০১# ডায়াল করে জানা যাবে। আর ১০টির বেশি সিম থাকলে গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে অতিরিক্ত সিম ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে পারবেন।
২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধনের অনুমতি দিয়েছিল বিটিআরসি। আট বছর পর, চলতি বছরের ১৯ মে কমিশন সভায় সিমের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিটিআরসির পর্যালোচনায় দেখা গেছে, একজন গ্রাহক এতগুলো সিম ব্যবহার করেন না। পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা, অপারেটরদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলন বিবেচনায় একজনের নামে সর্বোচ্চ ১০টি সিম রাখার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিটিআরসির মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সক্রিয় সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার। অন্যদিকে, বিক্রি হওয়া সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখ। এর মধ্যে ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের নামে পাঁচটি বা তার কম সিম রয়েছে, ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ গ্রাহকের নামে পাঁচ থেকে ১০টি পর্যন্ত সিম এবং ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ গ্রাহকের নামে ১১ থেকে ১৫টি পর্যন্ত সিম রয়েছে।
অপারেটরগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লাখ নতুন সিম বিক্রি হয়। তদন্তে দেখা গেছে, অনেক গ্রাহক একদিনে দুই বা ততোধিক সিম নিবন্ধন করেছেন, যা অস্বাভাবিক।
বিটিআরসি আরও বলছে, কিছু অসাধু রিটেইলার (খুচরা বিক্রেতা) গ্রাহকের বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ) সংরক্ষণ করে অতিরিক্ত সিম নিবন্ধন করে থাকেন, যা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে।