alt

জাতীয়

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

সম্পত্তিতে অধিকার রয়েছে হিন্দু বিধবা নারীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

হিন্দু উইমেন্স রাইটস টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট (১৯৩৭ সালের) বাংলাদেশে প্রযোজ্য বলে এক রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আইনে কোনো সুনির্দিষ্ট সম্পত্তির কথা নেই। ‘সম্পত্তি’ শব্দের অর্থ সব সম্পত্তি যেখানে স্থাবর বা অস্থাবর, বসতভিটা, কৃষিভূমি, নগদ টাকা বা অন্য কোনো ধরনের সম্পত্তি। কৃষিজমি ও বসতভিটার মধ্যে পার্থক্য করার সুযোগ নেই এবং এ ধরনের সম্পত্তি বিধবার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।

খুলনার হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে করা এক আবেদনের (রিভিশন) শুনানি শেষে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। ওই আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে হাইকোর্টের দেওয়া ২২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর তথ্যমতে, খুলনার রাজবিহারী মণ্ডলের দুই ছেলে। তাঁরা হলেন জ্যোতিন্দ্রনাথ মণ্ডল ও অভিমন্যু মণ্ডল। অভিমন্যু মণ্ডল ১৯৫৮ সালে মারা যান। এ অবস্থায় মৃত ভাইয়ের স্ত্রী (গৌরী দাসী) কৃষিজমি পাবেন না, শুধু বসতভিটা থেকে অর্ধেক পাবেন—এমন দাবি নিয়ে ১৯৮৩ সালে নিম্ন আদালতে মামলা করেন জ্যোতিন্দ্রনাথ। তবে মামলায় পক্ষ যথাযথভাবে না করায় ১৯৯৬ সালে তা খারিজ করে রায় দেন আদালত। তবে গৌরীর কৃষিজমির সম্পত্তি পাবেন না বলে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে খুলনার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আপিল করেন জ্যোতিন্দ্রনাথ। আদালত ২০০৪ সালে ৭ মার্চ রায় দেন। রায়ে বসতভিটা ও কৃষিজমিতে গৌরী দাসীর অধিকার থাকবে বলা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জ্যোতিন্দ্রনাথসহ অন্যরা। রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, রাজবিহারী মণ্ডলের আগে তাঁর পুত্র অভিমন্যু মারা যান। গৌরী দাসী অভিমন্যুর বিধবা স্ত্রী। বিবাদী গৌরী শুধু বসতভিটার উত্তরাধিকারী এবং তাঁকে কৃষিজমি থেকে বঞ্চিত করার কারণ দেখা যাচ্ছে না। শ্বশুর মারা যাওয়ার পর তাঁর রেখে যাওয়া বসতভিটায় বাস করেছিলেন গৌরী এবং আপাতদৃষ্টিতে জীবনধারণের জন্য শ্বশুরের কৃষিজমির ওপর নির্ভরশীল তিনি। এই মামলার বিবাদী গৌরী দাসীর ক্ষেত্রে হিন্দু আইনের দায়ভাগা পদ্ধতি প্রযোজ্য। ১৯৩৭ সালের আইনের ৩(১) ধারা অনুসারে, বাবার আগে মারা যাওয়া ছেলের মতোই তিনি (গৌরী) তাঁর শ্বশুরের রেখে যাওয়া সব সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন।

আদালতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতে আইনি সহায়তাকারী হিসেবে) হিসেবে শুনানি করেন আইনজীবী উজ্জ্বল ভৌমিক। রিভিশন আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এম এ জব্বার এবং গৌরী দাসীর পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ নাফিউল ইসলাম শুনানিতে ছিলেন। উজ্জ্বল ভৌমিক বলেন, ১৯৩৭ সালের হিন্দু উইমেন্স রাইটস টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট অনুসারে স্বামীর কৃষি-অকৃষি উভয় জমিতে বিধবা নারীর অধিকারের কথা আছে। তবে এর আগে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, ছেলে, ছেলের ছেলে এবং ছেলের ছেলের ছেলে থাকলে বিধবারা সম্পত্তি পেতেন না। আইনটি করার কারণ হচ্ছে, ছেলে তথা তিন পুরুষের সঙ্গে বিধবাদের সম্পত্তির সমান ভাগ দেওয়া। তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্পত্তি বিষয়ে ১৯৩৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের করা ওই আইনের বৈধতা নিয়ে তৎকালীন ফেডারেল কোর্টে প্রশ্ন ওঠে। আইনটি কৃষিজমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে ১৯৪১ সালে ইন্ডিয়ান ফেডারেল কোর্ট অভিমত দেন। এই রায় এত দিন ধরে অনুসরণ করা হতো।

ছবি

একদিনে করোনায় আক্রান্ত ১৬ জন

ছবি

তাপপ্রবাহ নিয়ে ৭২ ঘণ্টার সতর্ক বার্তা আবহাওয়া অধিদপ্তরের

ছবি

বঙ্গবন্ধু টানেলে টোল ফ্রি সুবিধা পেল যেসব গাড়ি

ছবি

সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

ছবি

জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাস আর নেই

ছবি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে : আরাফাত

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং মুজিবনগর দিবস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মেকে জানাতে হবে

ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচ‌নে ভোটার উপ‌স্থি‌তি সংসদ নির্বাচ‌নের ‌চে‌য়ে বে‌শি থাকবে

ছবি

প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

ছবি

থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জুন-জুলাইয়ে দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার হার বেশি

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

এথেন্স সম্মেলনে দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

কৃষকরাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি: স্পিকার

ছবি

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাবেক ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ

ছবি

তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে

ছবি

এমভি আবদুল্লাহ : ২১ নাবিক দেশে ফিরবেন জাহাজে, বাকি দুজন বিমানে

ছবি

৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগে প্রক্রিয়া শুরু, আবেদনের নিয়ম

ছবি

ঢাকায় গ্রিসের দূতাবাস স্থাপন ও জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা

ছবি

টিসিবির তালিকা হালনাগাদ করতে চাই:বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে গমের আবাদ কম

ছবি

ভোজ্য তেলের দাম বাড়াতে চায় ব্যবসায়ীরা আপত্তি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর

ছবি

অনিবন্ধিত অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবো : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিখাত : মন্ত্রী

ছবি

দেশে ফিরতে আরও ১০ দিন সময় লাগবে নাবিকদের

ছবি

মুক্ত এমভি আবদুল্লাহর ৩ ছবি প্রকাশ

ছবি

২ মে বসছে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন

ছবি

কারো যাতে ডেঙ্গু না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি নিয়ে যা বললেন নৌ প্রতিমন্ত্রী

ছবি

লঞ্চে বেড়েছে ঢাকায় ফেরা যাত্রীর চাপ

ছবি

নববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট ভবিষ্যৎ নির্মাণে একযোগে কাজ করার আহ্বান অর্থ প্রতিমন্ত্রীর

ছবি

জিম্মি জাহাজটি কীভাবে মুক্ত হলো, জানাল মালিকপক্ষ

ছবি

সোমানিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে এমভি আব্দুল্লাহ মুক্ত ২৩ নাবিক অক্ষত

ছবি

মুক্তিপণ নিয়ে তীরে উঠেই ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার

ছবি

দেশের প্রতি ভালোবাসার বার্তা এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের

tab

জাতীয়

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

সম্পত্তিতে অধিকার রয়েছে হিন্দু বিধবা নারীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

হিন্দু উইমেন্স রাইটস টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট (১৯৩৭ সালের) বাংলাদেশে প্রযোজ্য বলে এক রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আইনে কোনো সুনির্দিষ্ট সম্পত্তির কথা নেই। ‘সম্পত্তি’ শব্দের অর্থ সব সম্পত্তি যেখানে স্থাবর বা অস্থাবর, বসতভিটা, কৃষিভূমি, নগদ টাকা বা অন্য কোনো ধরনের সম্পত্তি। কৃষিজমি ও বসতভিটার মধ্যে পার্থক্য করার সুযোগ নেই এবং এ ধরনের সম্পত্তি বিধবার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।

খুলনার হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে করা এক আবেদনের (রিভিশন) শুনানি শেষে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরীর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। ওই আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে হাইকোর্টের দেওয়া ২২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়।

সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর তথ্যমতে, খুলনার রাজবিহারী মণ্ডলের দুই ছেলে। তাঁরা হলেন জ্যোতিন্দ্রনাথ মণ্ডল ও অভিমন্যু মণ্ডল। অভিমন্যু মণ্ডল ১৯৫৮ সালে মারা যান। এ অবস্থায় মৃত ভাইয়ের স্ত্রী (গৌরী দাসী) কৃষিজমি পাবেন না, শুধু বসতভিটা থেকে অর্ধেক পাবেন—এমন দাবি নিয়ে ১৯৮৩ সালে নিম্ন আদালতে মামলা করেন জ্যোতিন্দ্রনাথ। তবে মামলায় পক্ষ যথাযথভাবে না করায় ১৯৯৬ সালে তা খারিজ করে রায় দেন আদালত। তবে গৌরীর কৃষিজমির সম্পত্তি পাবেন না বলে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে খুলনার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আপিল করেন জ্যোতিন্দ্রনাথ। আদালত ২০০৪ সালে ৭ মার্চ রায় দেন। রায়ে বসতভিটা ও কৃষিজমিতে গৌরী দাসীর অধিকার থাকবে বলা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন জ্যোতিন্দ্রনাথসহ অন্যরা। রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রায় দেন।

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, রাজবিহারী মণ্ডলের আগে তাঁর পুত্র অভিমন্যু মারা যান। গৌরী দাসী অভিমন্যুর বিধবা স্ত্রী। বিবাদী গৌরী শুধু বসতভিটার উত্তরাধিকারী এবং তাঁকে কৃষিজমি থেকে বঞ্চিত করার কারণ দেখা যাচ্ছে না। শ্বশুর মারা যাওয়ার পর তাঁর রেখে যাওয়া বসতভিটায় বাস করেছিলেন গৌরী এবং আপাতদৃষ্টিতে জীবনধারণের জন্য শ্বশুরের কৃষিজমির ওপর নির্ভরশীল তিনি। এই মামলার বিবাদী গৌরী দাসীর ক্ষেত্রে হিন্দু আইনের দায়ভাগা পদ্ধতি প্রযোজ্য। ১৯৩৭ সালের আইনের ৩(১) ধারা অনুসারে, বাবার আগে মারা যাওয়া ছেলের মতোই তিনি (গৌরী) তাঁর শ্বশুরের রেখে যাওয়া সব সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন।

আদালতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতে আইনি সহায়তাকারী হিসেবে) হিসেবে শুনানি করেন আইনজীবী উজ্জ্বল ভৌমিক। রিভিশন আবেদনের পক্ষে আইনজীবী এম এ জব্বার এবং গৌরী দাসীর পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ নাফিউল ইসলাম শুনানিতে ছিলেন। উজ্জ্বল ভৌমিক বলেন, ১৯৩৭ সালের হিন্দু উইমেন্স রাইটস টু প্রোপার্টি অ্যাক্ট অনুসারে স্বামীর কৃষি-অকৃষি উভয় জমিতে বিধবা নারীর অধিকারের কথা আছে। তবে এর আগে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, ছেলে, ছেলের ছেলে এবং ছেলের ছেলের ছেলে থাকলে বিধবারা সম্পত্তি পেতেন না। আইনটি করার কারণ হচ্ছে, ছেলে তথা তিন পুরুষের সঙ্গে বিধবাদের সম্পত্তির সমান ভাগ দেওয়া। তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্পত্তি বিষয়ে ১৯৩৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের করা ওই আইনের বৈধতা নিয়ে তৎকালীন ফেডারেল কোর্টে প্রশ্ন ওঠে। আইনটি কৃষিজমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে ১৯৪১ সালে ইন্ডিয়ান ফেডারেল কোর্ট অভিমত দেন। এই রায় এত দিন ধরে অনুসরণ করা হতো।

back to top