বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ান দলের ওপর রীতিমত দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জিতে নিয়েছে ২৩ রানে। ফলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে থেকে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অজিদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ওডিআই ম্যাচ জয়ের পর ঘরের মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়ের ধারাবাহিকতায় প্রথম টি২০ ম্যাচও জিতে গেলো টাইগাররা। মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত চারবারের সাক্ষাতে অজিরা ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম মোকাবেলায় পরিসংখ্যানটা হয়ে গেলো ৫-১।
সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বলা হচ্ছিলো যে, ত্রাকা ক্রিকেটারবিহীন সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলটা খর্ব শক্তির। আসলে অস্ট্রেলিয়ান দলটায় যেমন ছিলেন না তারকা ব্যাটাররা, তেমনি বাংলাদেশ দলেও নেই তামিম-মুশফিক-লিটন। তবে অস্ট্রেলিয়ান দলের বোলিং ডিপার্টমেন্ট পূর্ণশক্তির। এই বোলিং ডিপার্টমেন্টের সাথে লড়াই চালিয়ে কিছুটা মন্থর গতিতে হলেও সাকিব-নাইম-আফিফের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ দল নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ১৩১ রান। কিন্তু টাইগার বোলারদের রণহুংকারে লেজ গুটিয়ে পালায় ক্যাঙারু ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট, তাদের ইনিংস থেমে যায় ১০৮ রানে। টাইগার বোলার নাসুম আহমেদ একাই শিকার করেন চার ক্যাঙারু ব্যাটারকে।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের ওপেনার মোহাম্মদ নাইম প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দিলেও শুরু থেকেই উসখুশ করতে থাকা সৌম্য সরকারের কারণে স্বাগতিকদের ইনিংস হয়ে যায় মন্থর। পাওয়ার প্লেতে একের পর এক ডট বলের কারণেই যে চাপ ভর করেছিলো সেটা থেকে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত আর মুক্তি মেলেনি।
একের পর এক ডট বলের চাপ সামাল দিতে গিয়েই দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাইম ছুড়ে দিয়ে আসেন উইকেট। চাপমুক্ত হয়ে খেলার তাগিদে সৌম্য সরকার অফ স্ট্যাম্প ছেড়ে লেগ স্ট্যাম্পের কাছে চলে গিয়েছিলেন । জশ হেইজেলউড ইনিংসের তম ওভারের তম বলটা করলেন লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে। যে বলটা হতো ওয়াইড, সেই বলেই প্লেইড অন হয়ে সৌম্য (২) ফিরলেন।
অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্প খোয়ালেন নাঈম। তার ফেরেন ২৯ বলে ৩০ রানের ইনিংসটায় ছিলো দুটো করে ছক্কা ও চারের মার।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর সাকিব- মাহমুদুল্লাহও ডট বলের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। প্রথম ৫০ রান করতে ৫১ বল বর্তমান টি২০ ক্রিকেটের ধূম-ধাড়াক্কার যুগে বেমানান। ত্রয়েদশ ওভারে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (এক ছক্কায় ২০ রান) রানের গতি বাড়ানোর তাগিদে হেইজেলউডের প্রথম বলটা স্কয়ার লেগ দিয়ে সীমানাছাড়া করার পরের বলেও হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন মিড অফে। রানের গতি বাড়ানোর চাপে উইকেট হারিয়েছেন নুরুল হাসান সোহানও (৩)। অ্যান্ড্রু টাইয়ের ওয়াইড লাইন পেরোনো বলটাকে অফ সাইড দিয়ে সীমানাছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ডিপ পয়েন্টে। একবার ‘জীবন’ পাওয়া সাকিবও (৩৩) হেইজেলউডের বলে স্টাম্প খুইয়েছেন ইমপ্রোভাইজ করতে গিয়েই। তবে সাকিবের তিন বাউন্ডারীর মারে ৩৩ বলে তোলা ৩৬ রানই বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর।
এরপরও বাংলাদেশের রানরেট যে ছয় পেরিয়ে শেষ করেছে, সে কৃতিত্বটা আফিফ হোসেনের। তার তিন বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ২৩ রানের ছোটো ঝড়টা টাইগারদের স্কোর নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে নিয়ে যায় ১৩১ এ। আর এতেই পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে ১৩২ রানের টার্গেট দেয়া সম্ভব হয়।
জয়ের জন্য ১৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই অ্যালেক্স ক্যারিকে (০) হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাহেদি হাসান উড়িয়ে দেন অজি ওপেনারের স্টাম্প। নাসুম আহমেদের বলে আরেক ওপেনার জস ফিলিপ (৯) শিকার হন স্টাম্পিংয়ের। দলীয় ১০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো অজিরা স্কোরবোর্ডে আর মাত্র এক রান যোগ হতেই মোয়েসে হেনরিকসকে (১) সাজঘরের পথ ধরতে দেখেন। তাকে বোল্ড করেন সাকিব। অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও মিচেল মার্শের ৩৮ রানের পার্টনারশিপ ভাঙেন নাসুম আহমেদ। অজিদের আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা মিচেল মার্শ ৪৫ বলে একটি ছক্কা ও চারটি বাউন্ডারির মারে ৪৫ রানে নাসুমের শিকারে পরিণত হলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। তার আগে অবশ্য অ্যাস্টন অগারও (৮) হিট উইকেট হয়েছিলেন নাসুমের বলেই। দলীয় ৮৪ রানে মিচেল মার্শ বিদায় নেয়ার পর অ্যাস্টন টার্নারকে (৮) ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। শরিফুলের বলে রানের খাতা না খুলেই ক্রিজছাড়া হয়েছেন অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জাম্পা। শেষ বলে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করে দেন মোস্তাফিজুর রহমান, ১০৮ রানে শেষ হয় অজিদের ইনিংস আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি২০ ম্যাচ জয়ের আনন্দে ভাসে টাইগাররা।
নিজের কোটার চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন নাসুম আহমেদ।
মঙ্গলবার, ০৩ আগস্ট ২০২১
বাংলাদেশ সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ান দলের ওপর রীতিমত দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জিতে নিয়েছে ২৩ রানে। ফলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে থেকে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অজিদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ওডিআই ম্যাচ জয়ের পর ঘরের মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়ের ধারাবাহিকতায় প্রথম টি২০ ম্যাচও জিতে গেলো টাইগাররা। মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত চারবারের সাক্ষাতে অজিরা ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম মোকাবেলায় পরিসংখ্যানটা হয়ে গেলো ৫-১।
সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বলা হচ্ছিলো যে, ত্রাকা ক্রিকেটারবিহীন সফরে আসা অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলটা খর্ব শক্তির। আসলে অস্ট্রেলিয়ান দলটায় যেমন ছিলেন না তারকা ব্যাটাররা, তেমনি বাংলাদেশ দলেও নেই তামিম-মুশফিক-লিটন। তবে অস্ট্রেলিয়ান দলের বোলিং ডিপার্টমেন্ট পূর্ণশক্তির। এই বোলিং ডিপার্টমেন্টের সাথে লড়াই চালিয়ে কিছুটা মন্থর গতিতে হলেও সাকিব-নাইম-আফিফের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ দল নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ১৩১ রান। কিন্তু টাইগার বোলারদের রণহুংকারে লেজ গুটিয়ে পালায় ক্যাঙারু ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট, তাদের ইনিংস থেমে যায় ১০৮ রানে। টাইগার বোলার নাসুম আহমেদ একাই শিকার করেন চার ক্যাঙারু ব্যাটারকে।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের ওপেনার মোহাম্মদ নাইম প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দিলেও শুরু থেকেই উসখুশ করতে থাকা সৌম্য সরকারের কারণে স্বাগতিকদের ইনিংস হয়ে যায় মন্থর। পাওয়ার প্লেতে একের পর এক ডট বলের কারণেই যে চাপ ভর করেছিলো সেটা থেকে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত আর মুক্তি মেলেনি।
একের পর এক ডট বলের চাপ সামাল দিতে গিয়েই দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাইম ছুড়ে দিয়ে আসেন উইকেট। চাপমুক্ত হয়ে খেলার তাগিদে সৌম্য সরকার অফ স্ট্যাম্প ছেড়ে লেগ স্ট্যাম্পের কাছে চলে গিয়েছিলেন । জশ হেইজেলউড ইনিংসের তম ওভারের তম বলটা করলেন লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে। যে বলটা হতো ওয়াইড, সেই বলেই প্লেইড অন হয়ে সৌম্য (২) ফিরলেন।
অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্প খোয়ালেন নাঈম। তার ফেরেন ২৯ বলে ৩০ রানের ইনিংসটায় ছিলো দুটো করে ছক্কা ও চারের মার।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর সাকিব- মাহমুদুল্লাহও ডট বলের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। প্রথম ৫০ রান করতে ৫১ বল বর্তমান টি২০ ক্রিকেটের ধূম-ধাড়াক্কার যুগে বেমানান। ত্রয়েদশ ওভারে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (এক ছক্কায় ২০ রান) রানের গতি বাড়ানোর তাগিদে হেইজেলউডের প্রথম বলটা স্কয়ার লেগ দিয়ে সীমানাছাড়া করার পরের বলেও হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন মিড অফে। রানের গতি বাড়ানোর চাপে উইকেট হারিয়েছেন নুরুল হাসান সোহানও (৩)। অ্যান্ড্রু টাইয়ের ওয়াইড লাইন পেরোনো বলটাকে অফ সাইড দিয়ে সীমানাছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ডিপ পয়েন্টে। একবার ‘জীবন’ পাওয়া সাকিবও (৩৩) হেইজেলউডের বলে স্টাম্প খুইয়েছেন ইমপ্রোভাইজ করতে গিয়েই। তবে সাকিবের তিন বাউন্ডারীর মারে ৩৩ বলে তোলা ৩৬ রানই বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর।
এরপরও বাংলাদেশের রানরেট যে ছয় পেরিয়ে শেষ করেছে, সে কৃতিত্বটা আফিফ হোসেনের। তার তিন বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ২৩ রানের ছোটো ঝড়টা টাইগারদের স্কোর নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে নিয়ে যায় ১৩১ এ। আর এতেই পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটা জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়াকে ১৩২ রানের টার্গেট দেয়া সম্ভব হয়।
জয়ের জন্য ১৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই অ্যালেক্স ক্যারিকে (০) হারায় অস্ট্রেলিয়া। মাহেদি হাসান উড়িয়ে দেন অজি ওপেনারের স্টাম্প। নাসুম আহমেদের বলে আরেক ওপেনার জস ফিলিপ (৯) শিকার হন স্টাম্পিংয়ের। দলীয় ১০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো অজিরা স্কোরবোর্ডে আর মাত্র এক রান যোগ হতেই মোয়েসে হেনরিকসকে (১) সাজঘরের পথ ধরতে দেখেন। তাকে বোল্ড করেন সাকিব। অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ও মিচেল মার্শের ৩৮ রানের পার্টনারশিপ ভাঙেন নাসুম আহমেদ। অজিদের আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা মিচেল মার্শ ৪৫ বলে একটি ছক্কা ও চারটি বাউন্ডারির মারে ৪৫ রানে নাসুমের শিকারে পরিণত হলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। তার আগে অবশ্য অ্যাস্টন অগারও (৮) হিট উইকেট হয়েছিলেন নাসুমের বলেই। দলীয় ৮৪ রানে মিচেল মার্শ বিদায় নেয়ার পর অ্যাস্টন টার্নারকে (৮) ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। শরিফুলের বলে রানের খাতা না খুলেই ক্রিজছাড়া হয়েছেন অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জাম্পা। শেষ বলে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করে দেন মোস্তাফিজুর রহমান, ১০৮ রানে শেষ হয় অজিদের ইনিংস আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি২০ ম্যাচ জয়ের আনন্দে ভাসে টাইগাররা।
নিজের কোটার চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে চারটি উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন নাসুম আহমেদ।