ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসারত এক রোগী গত শনিবার মারা গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উক্ত রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিল বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গেছে। এছাড়াও একই হাসপাতালে আরও দুজন রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে।
দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের খবরে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে মিউকোরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মানুষ। সংক্রমিত ব্যক্তিদের প্রায় ৫০ শতাংশই মারা যাচ্ছেন। যারা বেঁচে যাচ্ছেন, তাদের অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। ভারতের তামিলনাড়ু, গুজরাট, উড়িষ্যা, রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মিউকোরমাইকোসিস নতুন কোন ছত্রাক নয়। এর ‘স্পোর’ মাটি, বাতাস; এমনকি খাবারেও থাকে। এর সংক্রমণ ঘটতে পারে শরীরের যে কোন স্থানে। তবে সাধারণত নাকের আশেপাশে ও চোখে এর সংক্রমণ বেশি হয়। চোখ সংক্রমিত হলে এই ছত্রাক মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে দ্রুত। রোগীর যে স্থানে ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে সেস্থানে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে কালো হয়ে যায়। এ কারণে একে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলা হয়। এটা ছোঁয়াচে রোগ নয়।
কভিডের আগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ঘটনা ছিল খুবই কম। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের যোগসূত্র রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনায় সংক্রমিত রোগীদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যেসব ব্যক্তির করোনার চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি যদি কারও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে তাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস)। সাধারণত কভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠার ১২ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা দেয়।
বাংলাদেশে যদিও এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের অস্বাভাবিক সংক্রমণ দেখা যায়নি তবুও সতর্ক থাকতে হবে। আবার এ নিয়ে যেন কোন আতঙ্ক না ছড়ায় সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় দেশে খুব শিগগির একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) জানিয়েছে, কভিড-১৯ প্রতিরোধে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারি কমিটি কিছু সুপারিশ তৈরি করছে। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যসেবা উপদেষ্টা কমিটিও কিছু বিধিবিধান তৈরি করছে। আমরা আশা করব, দ্রুতই নীতিমালা তৈরি ও প্রকাশ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা সেই নীতিমালা মেনে চলবে সেটা আমাদের প্রত্যাশা। বিশেষকরে স্টেরয়েডের অপব্যবহার যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
বুধবার, ২৬ মে ২০২১
রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসারত এক রোগী গত শনিবার মারা গেছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উক্ত রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিল বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গেছে। এছাড়াও একই হাসপাতালে আরও দুজন রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে।
দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের খবরে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে মিউকোরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানে এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৯ হাজার মানুষ। সংক্রমিত ব্যক্তিদের প্রায় ৫০ শতাংশই মারা যাচ্ছেন। যারা বেঁচে যাচ্ছেন, তাদের অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। ভারতের তামিলনাড়ু, গুজরাট, উড়িষ্যা, রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মিউকোরমাইকোসিস নতুন কোন ছত্রাক নয়। এর ‘স্পোর’ মাটি, বাতাস; এমনকি খাবারেও থাকে। এর সংক্রমণ ঘটতে পারে শরীরের যে কোন স্থানে। তবে সাধারণত নাকের আশেপাশে ও চোখে এর সংক্রমণ বেশি হয়। চোখ সংক্রমিত হলে এই ছত্রাক মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে দ্রুত। রোগীর যে স্থানে ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে সেস্থানে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে কালো হয়ে যায়। এ কারণে একে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলা হয়। এটা ছোঁয়াচে রোগ নয়।
কভিডের আগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ঘটনা ছিল খুবই কম। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের যোগসূত্র রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনায় সংক্রমিত রোগীদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যেসব ব্যক্তির করোনার চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও নাজুক হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি যদি কারও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে তাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস)। সাধারণত কভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠার ১২ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা দেয়।
বাংলাদেশে যদিও এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের অস্বাভাবিক সংক্রমণ দেখা যায়নি তবুও সতর্ক থাকতে হবে। আবার এ নিয়ে যেন কোন আতঙ্ক না ছড়ায় সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় দেশে খুব শিগগির একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) জানিয়েছে, কভিড-১৯ প্রতিরোধে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারি কমিটি কিছু সুপারিশ তৈরি করছে। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যসেবা উপদেষ্টা কমিটিও কিছু বিধিবিধান তৈরি করছে। আমরা আশা করব, দ্রুতই নীতিমালা তৈরি ও প্রকাশ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা সেই নীতিমালা মেনে চলবে সেটা আমাদের প্রত্যাশা। বিশেষকরে স্টেরয়েডের অপব্যবহার যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।