খাদ্য মজুদ গড়ে তোলার জন্য প্রতি বছর খাদ্যশস্য সংগ্রহের কাজ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। শক্তিশালী খাদ্য নিরাপত্তা মজুদ গড়ে তোলা, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রদানে সহায়তা, খাদ্যশস্যের বাজারদর যৌক্তিক পর্যায়ে স্থিতিশীল রাখা এবং সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থায় সরবরাহ অব্যাহত রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের সবচেয়ে বড় অংশই সংগ্রহ করা হয় বোরো মৌসুমে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের মৌসুমে মোট ১৯ লাখ ৮৫ হাজার টন খাদ্য শস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ লাখ ১১ হাজার টন, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ কম। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার টন। সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৬ শতাংশ। ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৩ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৩ শতাংশ। আর এক লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ২১২ টন। গম সংগ্রহের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে প্রায় ১০৩ শতাংশ। গত ৩০ জুন গম এবং ৩১ আগস্ট ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুম শেষ হয়।
ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্ধেকই পূরণ হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। তাই কৃষক সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করেননি।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে খাদ্যশস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়। কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেয়ার যে প্রয়াস সরকার নেয় সেটা ব্যাহত হয়। অভ্যন্তরীণ বাজারে মৌসুম শেষে খাদ্যশস্যের দাম স্থিতিশীল থাকে না। সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা ভেঙে পড়ে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি যদি ধান না কেনা হয় তাহলে কৃষক কী ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য আসলে কত হওয়া উচিত? গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকার ধানের যে দাম নির্ধারণ করেছিল কৃষকরা বাইরে তার চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করেছে। বরং সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতো বা কম লাভবান হতো। যেখানে লাভ বেশি সেখানেই কৃষক তার ফসল বিক্রি করবে- এটাই স্বাভাবিক। কৃষক কেন তার কষ্টে উৎপাদিত ফসল কম দামে বা লোকসানে বিক্রি করবে। কৃষককে যথাযথ মূল্য দিতে না পারাও লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার একটা কারণ।
অভিযোগ রয়েছে, বাজার দর বা উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কৃষককে প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে না পারলে খাদ্যপণ্য সংগ্রহের প্রশ্নে এমন ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি আগামীতেও ঘটবে। সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
রোববার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১
খাদ্য মজুদ গড়ে তোলার জন্য প্রতি বছর খাদ্যশস্য সংগ্রহের কাজ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। শক্তিশালী খাদ্য নিরাপত্তা মজুদ গড়ে তোলা, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রদানে সহায়তা, খাদ্যশস্যের বাজারদর যৌক্তিক পর্যায়ে স্থিতিশীল রাখা এবং সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থায় সরবরাহ অব্যাহত রাখাই এর মূল উদ্দেশ্য। সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের সবচেয়ে বড় অংশই সংগ্রহ করা হয় বোরো মৌসুমে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের মৌসুমে মোট ১৯ লাখ ৮৫ হাজার টন খাদ্য শস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর সংগ্রহ করা হয়েছে ১৬ লাখ ১১ হাজার টন, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ কম। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার টন। সংগ্রহ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৬ শতাংশ। ১২ লাখ ৩৫ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৩ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৩ শতাংশ। আর এক লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ২১২ টন। গম সংগ্রহের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে প্রায় ১০৩ শতাংশ। গত ৩০ জুন গম এবং ৩১ আগস্ট ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুম শেষ হয়।
ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্ধেকই পূরণ হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। তাই কৃষক সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করেননি।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে খাদ্যশস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে, ঝুঁকির মুখে পড়ে যায়। কৃষককে ন্যায্যমূল্য দেয়ার যে প্রয়াস সরকার নেয় সেটা ব্যাহত হয়। অভ্যন্তরীণ বাজারে মৌসুম শেষে খাদ্যশস্যের দাম স্থিতিশীল থাকে না। সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা ভেঙে পড়ে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি যদি ধান না কেনা হয় তাহলে কৃষক কী ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য আসলে কত হওয়া উচিত? গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকার ধানের যে দাম নির্ধারণ করেছিল কৃষকরা বাইরে তার চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি করেছে। বরং সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতো বা কম লাভবান হতো। যেখানে লাভ বেশি সেখানেই কৃষক তার ফসল বিক্রি করবে- এটাই স্বাভাবিক। কৃষক কেন তার কষ্টে উৎপাদিত ফসল কম দামে বা লোকসানে বিক্রি করবে। কৃষককে যথাযথ মূল্য দিতে না পারাও লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার একটা কারণ।
অভিযোগ রয়েছে, বাজার দর বা উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। কৃষককে প্রতিযোগিতামূলক দাম দিতে না পারলে খাদ্যপণ্য সংগ্রহের প্রশ্নে এমন ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি আগামীতেও ঘটবে। সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।