লোহালক্কড়ের মতো বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ৩০টি বাস। অথচ বাসগুলো চলার কথা ছিলো অন্ততপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। ১৫ বছর মেয়াদি এসব বাস কেনা হয়েছিল ২০১১ সালে। সব বাসই দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিখ্যাত দায়্যু কোম্পানির। বিদেশি অর্থে কেনা এসব বাস অচল হতে শুরু করেছে মেয়াদ শেষ হওয়ার ঢের আগেই। ২০১৬ সালের মধ্যে অচল হয়ে পড়ে অর্ধেক বাস। একটি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সব মিলিয়ে ১৫৩টি বাস লোহালক্কড় হিসেবে বিক্রির দরপত্র আহ্বান করেছে বিআরটিসি। এর বাইরে আরও ১০১টি বাস রয়েছে ‘অমেরামতযোগ্য’ তালিকায়। এগুলোর মধ্যে কোনো কোনো বাস পাঁচ-ছয় বছর ধরে ডিপোতে পড়ে আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দায়্যু কোম্পানি থেকে আনা প্রতিটি বাসের দাম পড়ে ধরনভেদে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। আর সেই বাসই এখন লোহার দরে বিক্রি হতে যাচ্ছে। বিআরটিসির কর্মকর্তাদের ধারণা বাসগুলো এক-দেড় লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না। প্রশ্ন হচ্ছে এত দামের বাসগুলো কেন নির্ধারিত মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে বাসগুলো দামে চড়া হলেও মানে সেরা নয়। বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, রাস্তায় নামার পর থেকেই বাসগুলোতে নানা ত্রুটি দেখা দিতে শুরু করে। ২০১৬ সাল নাগাদ অর্ধেক বাস অচল হয়ে যায়। সাধারণত একেকটি বাসে ইঞ্জিনসহ ২০টির মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র থাকে। এখন দায়্যু কোম্পানির বেশির ভাগ বাসের অর্ধেক যন্ত্র বিকল।
যেসব দেশ বা কোম্পানি থেকে বিআরটিসি বাস সংগ্রহ করে সেসব দেশ বা কোম্পানির পণ্যের সর্বোচ্চ মান রক্ষার ক্ষেত্রে সুনাম রয়েছে। তারপরও সেখান থেকে মানহীন বাস আসে কীভাবে? এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ গাড়ি হিসেবে স্বীকৃত ভলভো কোম্পানি থেকে বাস কেনা হয়েছিল। বাস কেনা হয়েছে চীনের ইয়াংশি, ফাও, ভারতের টাটা এবং অশোক লেল্যান্ডের কাছ থেকেও। বিশেষ করে ভলভো গাড়ির মান নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না। সেসব বাসের এখন কী অবস্থা, কোথায় আছে-সেটা আমরা জানতে চাই।
অভিযোগ রয়েছে বিআরটিসির বাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজেই গলদ রয়েছে। বাসগুলো ঠিকঠাকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। এমনকি যথাসময়ে মেরামতও করা হয় না। বরং যাদের ওপর এ দায়িত্ব তারাই বিভিন্ন সময় নানান কৌশলে যন্ত্রপাতি আত্মসাৎ করে। তাদের গাফিলতির কারণেই বিআরটিসি ধুঁকছে। বহুমূল্যে বাস কিনেও রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে রাখা যাচ্ছে না। অথচ বেসরকারি খাতে বাসগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও রাস্তায় চলতে দেখা যায়। সেই সব বাস বিআরটিসির চেয়ে অনেক কম দামে কেনা হয় এবং মানেও খারাপ বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
কিছুদিন পরপর জনগণের করের টাকায় বা ধারের টাকায় গাড়ি আনা হবে আর মেয়াদ শেষ হতে না হতেই লোহালক্কড়ের মতো বিক্রি করা হবে- এমন অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। বিআরটিসির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে যারা নিয়োজিত তাদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
লোহালক্কড়ের মতো বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ৩০টি বাস। অথচ বাসগুলো চলার কথা ছিলো অন্ততপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। ১৫ বছর মেয়াদি এসব বাস কেনা হয়েছিল ২০১১ সালে। সব বাসই দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিখ্যাত দায়্যু কোম্পানির। বিদেশি অর্থে কেনা এসব বাস অচল হতে শুরু করেছে মেয়াদ শেষ হওয়ার ঢের আগেই। ২০১৬ সালের মধ্যে অচল হয়ে পড়ে অর্ধেক বাস। একটি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সব মিলিয়ে ১৫৩টি বাস লোহালক্কড় হিসেবে বিক্রির দরপত্র আহ্বান করেছে বিআরটিসি। এর বাইরে আরও ১০১টি বাস রয়েছে ‘অমেরামতযোগ্য’ তালিকায়। এগুলোর মধ্যে কোনো কোনো বাস পাঁচ-ছয় বছর ধরে ডিপোতে পড়ে আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দায়্যু কোম্পানি থেকে আনা প্রতিটি বাসের দাম পড়ে ধরনভেদে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। আর সেই বাসই এখন লোহার দরে বিক্রি হতে যাচ্ছে। বিআরটিসির কর্মকর্তাদের ধারণা বাসগুলো এক-দেড় লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না। প্রশ্ন হচ্ছে এত দামের বাসগুলো কেন নির্ধারিত মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে বাসগুলো দামে চড়া হলেও মানে সেরা নয়। বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে, রাস্তায় নামার পর থেকেই বাসগুলোতে নানা ত্রুটি দেখা দিতে শুরু করে। ২০১৬ সাল নাগাদ অর্ধেক বাস অচল হয়ে যায়। সাধারণত একেকটি বাসে ইঞ্জিনসহ ২০টির মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র থাকে। এখন দায়্যু কোম্পানির বেশির ভাগ বাসের অর্ধেক যন্ত্র বিকল।
যেসব দেশ বা কোম্পানি থেকে বিআরটিসি বাস সংগ্রহ করে সেসব দেশ বা কোম্পানির পণ্যের সর্বোচ্চ মান রক্ষার ক্ষেত্রে সুনাম রয়েছে। তারপরও সেখান থেকে মানহীন বাস আসে কীভাবে? এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ গাড়ি হিসেবে স্বীকৃত ভলভো কোম্পানি থেকে বাস কেনা হয়েছিল। বাস কেনা হয়েছে চীনের ইয়াংশি, ফাও, ভারতের টাটা এবং অশোক লেল্যান্ডের কাছ থেকেও। বিশেষ করে ভলভো গাড়ির মান নিয়ে কোন প্রশ্ন ছিল না। সেসব বাসের এখন কী অবস্থা, কোথায় আছে-সেটা আমরা জানতে চাই।
অভিযোগ রয়েছে বিআরটিসির বাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজেই গলদ রয়েছে। বাসগুলো ঠিকঠাকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। এমনকি যথাসময়ে মেরামতও করা হয় না। বরং যাদের ওপর এ দায়িত্ব তারাই বিভিন্ন সময় নানান কৌশলে যন্ত্রপাতি আত্মসাৎ করে। তাদের গাফিলতির কারণেই বিআরটিসি ধুঁকছে। বহুমূল্যে বাস কিনেও রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে রাখা যাচ্ছে না। অথচ বেসরকারি খাতে বাসগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও রাস্তায় চলতে দেখা যায়। সেই সব বাস বিআরটিসির চেয়ে অনেক কম দামে কেনা হয় এবং মানেও খারাপ বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
কিছুদিন পরপর জনগণের করের টাকায় বা ধারের টাকায় গাড়ি আনা হবে আর মেয়াদ শেষ হতে না হতেই লোহালক্কড়ের মতো বিক্রি করা হবে- এমন অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। বিআরটিসির গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে যারা নিয়োজিত তাদের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।