আর্থিক অনটনের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণীতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় কিশোর মেহেদী হাসানের। জীবন ও জীবিকার তাগিদে বেছে নেয় বাউলজীবন। শার্ট-প্যান্ট ছেড়ে গায়ে জড়ায় বাউলের বেশভূষা, মাথার চুলও রাখে লম্বা। কিন্তু এটাকে ভালো চোখে দেখেননি গ্রামের মাতব্বররা, নানা সময়ে কটূক্তি করতে থাকে তাকে। এর প্রতিবাদ করায় মাতব্বররা একজোট হয়ে কিশোর বাউলকে জোর করে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। গত শনিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জুড়ি মাঝপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সংবাদ-এ আজ বৃহস্পতিবার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের হাতে বাউলদের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা আজও ঘটছে। একশ্রেণীর সমাজপতি ও বৃহত্তর ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয়রা তার ওপর নির্যাতন চালায়। ২০১৪ সালে যশোরে বাউল আসরে বোমা হামলা চালানো হয় ও কুপিয়ে এক বাউল শিল্পীকে হত্যা করা হয়। এমনকি প্রশাসনকেও বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হতে দেখা যায়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি বাউল শিল্পী শরিয়ত সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাউলরা বাংলার আবহমান সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে তাদের আত্মিক বোঝাপাড়া রয়েছে। বাউল দর্শন বা তাদের জীবনাচারণ নিয়ে সাধারণ মানুষের কখনও কোন ওজর-আপত্তি লক্ষ্য করা যায় না। যত সমস্যা একশ্রেণীর সমাজপতি ও ধর্মীয় নেতাদের। তাই তারা বাউলদের দমন-পীড়ন ও নির্যাতন করে। এমনকি কিশোর বাউল তাদের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পায়নি।
কোন মানুষ বা সম্প্রদায় কীসে বিশ্বাস করবে, কীভাবে চলবে, তাদের পোশাক-আশাক কেমন হবে- এটা একান্তই তাদের নিজেদের ব্যাপার। একজন কিশোর বাউলের চুল বড় রাখায় সমাজপতিদের কী ক্ষতি হয়েছে- সেটা আমরা জানতে চাই। একজনের ধর্মবোধ বা বিশ্বাসের সঙ্গে অন্যজনের পার্থক্য থাকতেই পারে। তাই বলে কেউ কারও বিরুদ্ধে চড়াও হবে বা নির্যাতন চালাবে সেটা হতে পারে না।
রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিককে নিজ নিজ ধর্ম পালন করার বা মতাদর্শ অনুযায়ী চলার স্বাধীনতা দিয়েছে। এই স্বাধীনতায় যারা হস্তক্ষেপ করে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে- এটাই স্বাভাবিক। অভিযোগ আছে বাউলসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় প্রায়ই কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হলেও বিচার করা হয় না। কিশোর বাউল নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা স্বস্তির খবর। এখন তাদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে কিশোর বাউলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
আর্থিক অনটনের কারণে ষষ্ঠ শ্রেণীতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় কিশোর মেহেদী হাসানের। জীবন ও জীবিকার তাগিদে বেছে নেয় বাউলজীবন। শার্ট-প্যান্ট ছেড়ে গায়ে জড়ায় বাউলের বেশভূষা, মাথার চুলও রাখে লম্বা। কিন্তু এটাকে ভালো চোখে দেখেননি গ্রামের মাতব্বররা, নানা সময়ে কটূক্তি করতে থাকে তাকে। এর প্রতিবাদ করায় মাতব্বররা একজোট হয়ে কিশোর বাউলকে জোর করে মাথা ন্যাড়া করে দেয়। গত শনিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার জুড়ি মাঝপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সংবাদ-এ আজ বৃহস্পতিবার সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের হাতে বাউলদের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা আজও ঘটছে। একশ্রেণীর সমাজপতি ও বৃহত্তর ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয়রা তার ওপর নির্যাতন চালায়। ২০১৪ সালে যশোরে বাউল আসরে বোমা হামলা চালানো হয় ও কুপিয়ে এক বাউল শিল্পীকে হত্যা করা হয়। এমনকি প্রশাসনকেও বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হতে দেখা যায়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি বাউল শিল্পী শরিয়ত সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বাউলরা বাংলার আবহমান সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে তাদের আত্মিক বোঝাপাড়া রয়েছে। বাউল দর্শন বা তাদের জীবনাচারণ নিয়ে সাধারণ মানুষের কখনও কোন ওজর-আপত্তি লক্ষ্য করা যায় না। যত সমস্যা একশ্রেণীর সমাজপতি ও ধর্মীয় নেতাদের। তাই তারা বাউলদের দমন-পীড়ন ও নির্যাতন করে। এমনকি কিশোর বাউল তাদের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পায়নি।
কোন মানুষ বা সম্প্রদায় কীসে বিশ্বাস করবে, কীভাবে চলবে, তাদের পোশাক-আশাক কেমন হবে- এটা একান্তই তাদের নিজেদের ব্যাপার। একজন কিশোর বাউলের চুল বড় রাখায় সমাজপতিদের কী ক্ষতি হয়েছে- সেটা আমরা জানতে চাই। একজনের ধর্মবোধ বা বিশ্বাসের সঙ্গে অন্যজনের পার্থক্য থাকতেই পারে। তাই বলে কেউ কারও বিরুদ্ধে চড়াও হবে বা নির্যাতন চালাবে সেটা হতে পারে না।
রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিককে নিজ নিজ ধর্ম পালন করার বা মতাদর্শ অনুযায়ী চলার স্বাধীনতা দিয়েছে। এই স্বাধীনতায় যারা হস্তক্ষেপ করে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে- এটাই স্বাভাবিক। অভিযোগ আছে বাউলসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় প্রায়ই কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হলেও বিচার করা হয় না। কিশোর বাউল নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা স্বস্তির খবর। এখন তাদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে কিশোর বাউলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।