alt

সম্পাদকীয়

স্বাধীন দেশে কেন সাম্প্রদায়িকতাকে পরাস্ত করা যাচ্ছে না

: শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১

আমরা আশা করেছিলাম, মানুষের, বিশেষত যারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ থেকে অন্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ভেবেছিলাম কুমিল্লার নানুয়াদীঘির ঘটনার ইতি ঘটবে সেখানেই। কোথাও কোন সাম্প্রদায়িক হামলা হবে না। কিন্তু চাঁদপুরে সাম্প্রদায়িক হামলা হলো, রক্ত ঝরল। তিনদিন পরও এর রেশ রয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তো আছেই, মসজিদ-মাদ্রাসা থেকেও দেয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িক উসকানি, চালানো হচ্ছে হামলা।

মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার উদ্দেশ্যে। একাত্তরে এমন একটি দেশ আমরা চেয়েছিলাম, যেখানে সাম্প্রাদায়িক বিদ্বেষ থাকবে না, মুখ্য হবে না ধর্মপরিচয়, ধর্মের নামে এক সম্প্রদায় আরেক সম্প্রদায়ের ওপর খড়গহস্ত হবে না। অথচ স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ বছর পরও সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সমাজ কি পদক্ষেপ নিচ্ছে? সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দেয়ার যে দায়িত্ব সমাজের আছে সেটা কি সে ঠিকঠাক পালন করতে পারছে? হামলাকারীদের প্রতিরোধ করা, নেপথ্যের চক্রকে চিহ্নিত করে অন্তত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করার দায়িত্ব সমাজের রয়েছে। সাম্প্রদায়িক হামলারোধে সমাজই তো সবার আগে এগিয়ে আসবে। আক্রান্ত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। সমাজ নিজেকে অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করে, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে। তাহলে আক্রান্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে না কেন? আক্রান্তরা কি এই সমাজের অন্তর্ভুক্ত নয়?

অতীতে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সমাজকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেখা গেছে। আজ সমাজ অবতীর্ণ হয়েছে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আর দুর্বৃত্তরা সদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সমাজের এই অনাকাক্সিক্ষত রূপান্তরের কারণ কী? সমাজ কি সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধের ন্যূনতম শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে- এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে তাদের রক্ষায় এগিয়ে যাওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠের কর্তব্য। হামলার বিরুদ্ধে সবার আগে সোচ্চার হওয়া উচিত তাদেরই। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বা করছে না বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বারবার আঘাত হানছে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো। কোন কোন মসজিদ থেকে অন্য ধর্মের ওপর আঘাত হানার উসকানি দেয়া হয় বলে গুরুতর অভিযোগ আছে। মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত সরলমনা মুসল্লিদের প্রায়ই উসকানি দিতে দেখা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, গুজব ছড়িয়ে বা মুসল্লিদের উত্তেজিত করে কোন সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা চালানো কি ধর্মসম্মত কাজ?

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আজ কোথায় গেল- সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা সবাই কি সাম্প্রদায়িক হচ্ছি? আমরা দেশটাকে কোথায় নিয়ে গেলাম। কক্সবাজারের রামু-উখিয়া, সুনামগঞ্জের শাল্লা, ভোলার বোরহানউদ্দীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কুমিল্লার মুরাদনগর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জই কি সমাজের দর্পণ হয়ে দাঁড়িয়েছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর মিললে হয়তো বোঝা যাবে যে, স্বাধীন বাংলাদেশে কেন সাম্প্রদায়িকতাকে পরাস্ত করা যাচ্ছে না।

চকরিয়ায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

গরমে দুর্বিষহ জনজীবন

ভালুকায় খাবার পানির সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নিন

সড়কে চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

লঞ্চ চালাতে হবে নিয়ম মেনে

নতুন বছররে শুভচ্ছো

বিষ ঢেলে মাছ নিধনের অভিযোগ আমলে নিন

ঈদের আনন্দ স্পর্শ করুক সবার জীবন

মীরসরাইয়ের বন রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া জরুরি

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি

কৃষকরা কেন তামাক চাষে ঝুঁকছে

রেলক্রসিংয়ে প্রাণহানির দায় কার

আর কত অপেক্ষার পর সেতু পাবে রানিশংকৈলের মানুষ^

পাহাড়ে ব্যাংক হামলা কেন

সিসা দূষণ রোধে আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি

হার্টের রিংয়ের নির্ধারিত দর বাস্তবায়নে মনিটরিং জরুরি

রইচপুর খালে সেতু নির্মাণে আর কত অপেক্ষা

রাজধানীকে যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না কেন

জেলেরা কেন বরাদ্দকৃত চাল পাচ্ছে না

নিয়মতান্ত্রিক সংগঠনের সুযোগ থাকা জরুরি, বন্ধ করতে হবে অপরাজনীতি

ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে সংস্কার করুন

শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

স্লুইসগেটের ফাটল মেরামতে উদ্যোগ নিন

পরিবেশ দূষণ বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

রংপুর শিশু হাসপাতাল চালু হতে কালক্ষেপণ কেন

দেশে এত খাবার অপচয়ের কারণ কী

রায়গঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ দূর করুন

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠী নিয়ে ভাবতে হবে

জলাশয় দূষণের জন্য দায়ী কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করুন

বহরবুনিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন নির্মাণে আর কত বিলম্ব

মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিন

সিলেট ‘ইইডি’ কার্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

পাহাড় কাটা বন্ধ করুন

স্বাধীনতার ৫৪ বছর : মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা কতটা পূরণ হলো

চিকিৎসক সংকট দূর করুন

tab

সম্পাদকীয়

স্বাধীন দেশে কেন সাম্প্রদায়িকতাকে পরাস্ত করা যাচ্ছে না

শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১

আমরা আশা করেছিলাম, মানুষের, বিশেষত যারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ থেকে অন্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ভেবেছিলাম কুমিল্লার নানুয়াদীঘির ঘটনার ইতি ঘটবে সেখানেই। কোথাও কোন সাম্প্রদায়িক হামলা হবে না। কিন্তু চাঁদপুরে সাম্প্রদায়িক হামলা হলো, রক্ত ঝরল। তিনদিন পরও এর রেশ রয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তো আছেই, মসজিদ-মাদ্রাসা থেকেও দেয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িক উসকানি, চালানো হচ্ছে হামলা।

মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার উদ্দেশ্যে। একাত্তরে এমন একটি দেশ আমরা চেয়েছিলাম, যেখানে সাম্প্রাদায়িক বিদ্বেষ থাকবে না, মুখ্য হবে না ধর্মপরিচয়, ধর্মের নামে এক সম্প্রদায় আরেক সম্প্রদায়ের ওপর খড়গহস্ত হবে না। অথচ স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ বছর পরও সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সমাজ কি পদক্ষেপ নিচ্ছে? সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দেয়ার যে দায়িত্ব সমাজের আছে সেটা কি সে ঠিকঠাক পালন করতে পারছে? হামলাকারীদের প্রতিরোধ করা, নেপথ্যের চক্রকে চিহ্নিত করে অন্তত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করার দায়িত্ব সমাজের রয়েছে। সাম্প্রদায়িক হামলারোধে সমাজই তো সবার আগে এগিয়ে আসবে। আক্রান্ত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। সমাজ নিজেকে অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করে, বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে। তাহলে আক্রান্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে না কেন? আক্রান্তরা কি এই সমাজের অন্তর্ভুক্ত নয়?

অতীতে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সমাজকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেখা গেছে। আজ সমাজ অবতীর্ণ হয়েছে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আর দুর্বৃত্তরা সদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সমাজের এই অনাকাক্সিক্ষত রূপান্তরের কারণ কী? সমাজ কি সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধের ন্যূনতম শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে- এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে তাদের রক্ষায় এগিয়ে যাওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠের কর্তব্য। হামলার বিরুদ্ধে সবার আগে সোচ্চার হওয়া উচিত তাদেরই। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বা করছে না বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর বারবার আঘাত হানছে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো। কোন কোন মসজিদ থেকে অন্য ধর্মের ওপর আঘাত হানার উসকানি দেয়া হয় বলে গুরুতর অভিযোগ আছে। মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত সরলমনা মুসল্লিদের প্রায়ই উসকানি দিতে দেখা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, গুজব ছড়িয়ে বা মুসল্লিদের উত্তেজিত করে কোন সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা চালানো কি ধর্মসম্মত কাজ?

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আজ কোথায় গেল- সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা সবাই কি সাম্প্রদায়িক হচ্ছি? আমরা দেশটাকে কোথায় নিয়ে গেলাম। কক্সবাজারের রামু-উখিয়া, সুনামগঞ্জের শাল্লা, ভোলার বোরহানউদ্দীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কুমিল্লার মুরাদনগর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জই কি সমাজের দর্পণ হয়ে দাঁড়িয়েছে?

এসব প্রশ্নের উত্তর মিললে হয়তো বোঝা যাবে যে, স্বাধীন বাংলাদেশে কেন সাম্প্রদায়িকতাকে পরাস্ত করা যাচ্ছে না।

back to top