দাবিটি আজকের নয়। গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের (অর্ধেক ভাড়া) দাবি উঠেছিল স্বাধীনতার পূর্বেই। তখন দেশজুড়ে ১১ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিল, সেখানে এই দাবি ছিল। এর পর স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়েছে। একই দাবিতে শিক্ষার্থীদের আজও আন্দোলন করতে হচ্ছে। হাফ পাসের দাবি পূরণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে।
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ৯ দফা দাবিতেও হাফ পাসের কথা বলা হয়েছে। আন্দোলন করলে দাবি পূরণের আশ্বাসই মেলে শুধু, কিন্তু তা পূরণ করা হয় না। ২০১৫ সালে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও পর্যায়ক্রমে হাফ ভাড়া বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর আয়-রোজগারের পথ নেই। অভিভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া টাকাই তাদের খরচের প্রধান উৎস। এর বাইরে টিউশনি বা অন্য কোন উৎস থেকে পাওয়া টাকার পরিমাণও খুব বেশি না। বাস ভাড়া বাড়ানোর পর শুধু যাতায়াতের জন্যই একেক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন গুনতে হয় ৫০-১০০ টাকার মতো।
শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের দাবিকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না। আইনগতভাবে কার্যকর করা না হলেও রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে কোন কোন গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়ার চল আছে বা ছিল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশে নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া নেয়ার ব্যবস্থা আছে। প্রতিবেশী ভারতের গণপরিবহনগুলোতে শিক্ষার্থীসহ বয়স্ক নাগরিকদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়। পাকিস্তানের অনেক প্রদেশেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। পশ্চিমা দেশগুলোর বেসরকারি বাস কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থীদের এ সুবিধা দিয়ে থাকে। এমনকি এ নিয়ে চটকদার বিজ্ঞাপনও প্রচার করে তারা।
দেশের গণপরিবহনের কোন কোন মালিকের কথায় মনে হয়, তাদের এ বিষয়ে জোরালো আপত্তি নেই। তাদের বক্তব্য, সরকার যদি অর্ধেক ভাড়া নিতে বলে তাহলে নিবে, যদি ফ্রি নিতে বলে তাহলেও নিবে।
‘হাফ পাসে’ পরিবহন মালিকদের যদি কোন সমস্যা না থাকে, তাহলে সরকারের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সহজ হয়ে যায় বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি কেন অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে- সেটা আমরা জানতে চাই।
হাফ পাসের বিষয় দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। কারণ এনিয়ে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
সম্প্রতি অর্ধেক ভাড়া ইস্যুতে সরকারি বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখতে চাই যে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
গণপরিবহনের একশ্রেণীর চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় যাত্রীসাধারণকে হয়রানি, হুমকি, নির্যাতন ও নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ আছে। অতীতে গণপরিবহনে ধর্ষণ ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের ঘটনাও ঘটেছে। গণপরিবহনের এমন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১
দাবিটি আজকের নয়। গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের (অর্ধেক ভাড়া) দাবি উঠেছিল স্বাধীনতার পূর্বেই। তখন দেশজুড়ে ১১ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিল, সেখানে এই দাবি ছিল। এর পর স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়েছে। একই দাবিতে শিক্ষার্থীদের আজও আন্দোলন করতে হচ্ছে। হাফ পাসের দাবি পূরণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে।
২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ৯ দফা দাবিতেও হাফ পাসের কথা বলা হয়েছে। আন্দোলন করলে দাবি পূরণের আশ্বাসই মেলে শুধু, কিন্তু তা পূরণ করা হয় না। ২০১৫ সালে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও পর্যায়ক্রমে হাফ ভাড়া বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর আয়-রোজগারের পথ নেই। অভিভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া টাকাই তাদের খরচের প্রধান উৎস। এর বাইরে টিউশনি বা অন্য কোন উৎস থেকে পাওয়া টাকার পরিমাণও খুব বেশি না। বাস ভাড়া বাড়ানোর পর শুধু যাতায়াতের জন্যই একেক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন গুনতে হয় ৫০-১০০ টাকার মতো।
শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের দাবিকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না। আইনগতভাবে কার্যকর করা না হলেও রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে কোন কোন গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়ার চল আছে বা ছিল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশে নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া নেয়ার ব্যবস্থা আছে। প্রতিবেশী ভারতের গণপরিবহনগুলোতে শিক্ষার্থীসহ বয়স্ক নাগরিকদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়। পাকিস্তানের অনেক প্রদেশেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। পশ্চিমা দেশগুলোর বেসরকারি বাস কোম্পানিগুলো শিক্ষার্থীদের এ সুবিধা দিয়ে থাকে। এমনকি এ নিয়ে চটকদার বিজ্ঞাপনও প্রচার করে তারা।
দেশের গণপরিবহনের কোন কোন মালিকের কথায় মনে হয়, তাদের এ বিষয়ে জোরালো আপত্তি নেই। তাদের বক্তব্য, সরকার যদি অর্ধেক ভাড়া নিতে বলে তাহলে নিবে, যদি ফ্রি নিতে বলে তাহলেও নিবে।
‘হাফ পাসে’ পরিবহন মালিকদের যদি কোন সমস্যা না থাকে, তাহলে সরকারের জন্য শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সহজ হয়ে যায় বলেই আমরা মনে করি। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি কেন অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে- সেটা আমরা জানতে চাই।
হাফ পাসের বিষয় দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। কারণ এনিয়ে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করা হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
সম্প্রতি অর্ধেক ভাড়া ইস্যুতে সরকারি বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখতে চাই যে, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
গণপরিবহনের একশ্রেণীর চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় যাত্রীসাধারণকে হয়রানি, হুমকি, নির্যাতন ও নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ আছে। অতীতে গণপরিবহনে ধর্ষণ ও হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের ঘটনাও ঘটেছে। গণপরিবহনের এমন নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।