মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
উদাসীন বাঙালি
বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাংলাদেশও। তার সাথে বেড়েছে বিদেশি সংস্কৃতির চর্চা। বিদেশি সংস্কৃতির ভিড়ে বাংলা ভাষার চর্চা তেমন চোখে পড়ে না। বায়ান্নোতে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আরবি হরফে বাংলা লেখার সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ করেছিল যে জাতি, সে জাতির উত্তরসূরি হয়েও আজ আমরা ইংরেজি লিপিতে বাংলা লেখার অভ্যাস গড়ে তুলেছি।
বাংলা ভাষার বর্তমান চর্চিত রূপ অনেক ক্ষেত্রেই অশুদ্ধ বা বিকৃত। আর ভাষার এ অবস্থার জন্য অনেকেই দায়ী করে থাকেন নতুন প্রজন্মের ভাষা বিষয়ক অজ্ঞতাকে। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের কথাবার্তায় এমন কিছু অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়, যে শব্দের কোনো আভিধানিক অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে না। শব্দগুলো বিদেশি শব্দও নয়। নতুন প্রজন্ম সবসময় ভাষাকে ধারণ করেছে নিজেদের ব্যবহারিক সুবিধা অনুযায়ী। কিন্তু তাদের এ প্রবণতা অনেক ক্ষেত্রে ভাষার শুদ্ধতাকে বিনষ্ট করে।
দেশে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বহির্বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে সত্য; কিন্তু বাংলাকে বুকে ধারণ করা তার থেকেও বেশি প্রয়োজন নয় কি? বাংলাদেশে যতটা না চর্চা হয় বাংলা ভাষার, তার থেকে বেশি চর্চা হয় How can I improve my English-এর। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তরা তাদের সন্তানদের আর বাংলা মাধ্যমের স্কুলে পড়ায় না। পড়ানো হয় ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে। এসব স্কুলে বাংলা চর্চা শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্যে ও বাংলা ব্যাকরণ বইয়ের মলাটে সীমাবদ্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারগুলোতে বাংলা ভাষার গবেষণামূলক বই নেই। বাংলা জানার আগ্রহ আছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
বাংলাভাষা আমাদের নিজেদের ভাষা। এ ভাষাকে ভালোবাসতেই হবে। এখনও যদি আমরা মাতৃভাষায় শুদ্ধ করে কথা বলার চেষ্টা না করি এবং এ ব্যাপারে সচেতন না হই, তাহলে ভাষার জন্য আমাদের অহংকার টিকবে না। বাংলা ভাষার স্বকীয়তা ধরে রাখতে হলে শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলার ও বাংলা লিপিতে বাংলা লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি পরিবারের উচিত শুদ্ধ বাংলা ভাষার চর্চা করা এবং সন্তানকে বাংলা ভাষায় শিক্ষিত করে তোলা। আমরা বাংলাদেশি, আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি- এটাই আমাদের পরিচয়। দেশ, ভাষা, মা- তিনটি শব্দকে আমাদের সম্মান জানাতেই হবে।
সুদীপ্ত বর্মণ
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
পথশিশুর পাশে দাঁড়ান
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত পথশিশুরা। তাদের দেখার কেউ যেন নেই। ফুটপাতে হাজারো শিশু খালি গায়ে ধুলা-ময়লা জড়িয়ে পড়ে থাকে। প্রচন্ড শীতে তাদের জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। দরিদ্রদের কাছে এই মৌসুমটি খুবই কষ্টকর। যাদের গরম কাপড় নেই তাদের কাবু করে রেখেছে শীত।
কেউ কেউ প্লাস্টিকের বস্তা গায়ে দিয়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে রাতযাপন করছে। অনেকেই ছেঁড়া কাঁথা গায়ে দিচ্ছে। আবার অনেকে আগুনের পাশে বসে থাকছে।
পথশিশুদের সহায়তায় সবার এগিয়ে আসা উচিত। যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা যদি অসহার শিশুদের পাশে দাঁড়ান তাহলে অনেকেই শীতের তীব্রতা থেকে মুক্তি পাবে।
মেহেদী হাসান
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
উদাসীন বাঙালি
বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাংলাদেশও। তার সাথে বেড়েছে বিদেশি সংস্কৃতির চর্চা। বিদেশি সংস্কৃতির ভিড়ে বাংলা ভাষার চর্চা তেমন চোখে পড়ে না। বায়ান্নোতে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আরবি হরফে বাংলা লেখার সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ করেছিল যে জাতি, সে জাতির উত্তরসূরি হয়েও আজ আমরা ইংরেজি লিপিতে বাংলা লেখার অভ্যাস গড়ে তুলেছি।
বাংলা ভাষার বর্তমান চর্চিত রূপ অনেক ক্ষেত্রেই অশুদ্ধ বা বিকৃত। আর ভাষার এ অবস্থার জন্য অনেকেই দায়ী করে থাকেন নতুন প্রজন্মের ভাষা বিষয়ক অজ্ঞতাকে। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের কথাবার্তায় এমন কিছু অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়, যে শব্দের কোনো আভিধানিক অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে না। শব্দগুলো বিদেশি শব্দও নয়। নতুন প্রজন্ম সবসময় ভাষাকে ধারণ করেছে নিজেদের ব্যবহারিক সুবিধা অনুযায়ী। কিন্তু তাদের এ প্রবণতা অনেক ক্ষেত্রে ভাষার শুদ্ধতাকে বিনষ্ট করে।
দেশে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বহির্বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে সত্য; কিন্তু বাংলাকে বুকে ধারণ করা তার থেকেও বেশি প্রয়োজন নয় কি? বাংলাদেশে যতটা না চর্চা হয় বাংলা ভাষার, তার থেকে বেশি চর্চা হয় How can I improve my English-এর। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তরা তাদের সন্তানদের আর বাংলা মাধ্যমের স্কুলে পড়ায় না। পড়ানো হয় ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে। এসব স্কুলে বাংলা চর্চা শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্যে ও বাংলা ব্যাকরণ বইয়ের মলাটে সীমাবদ্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারগুলোতে বাংলা ভাষার গবেষণামূলক বই নেই। বাংলা জানার আগ্রহ আছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
বাংলাভাষা আমাদের নিজেদের ভাষা। এ ভাষাকে ভালোবাসতেই হবে। এখনও যদি আমরা মাতৃভাষায় শুদ্ধ করে কথা বলার চেষ্টা না করি এবং এ ব্যাপারে সচেতন না হই, তাহলে ভাষার জন্য আমাদের অহংকার টিকবে না। বাংলা ভাষার স্বকীয়তা ধরে রাখতে হলে শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলার ও বাংলা লিপিতে বাংলা লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিটি পরিবারের উচিত শুদ্ধ বাংলা ভাষার চর্চা করা এবং সন্তানকে বাংলা ভাষায় শিক্ষিত করে তোলা। আমরা বাংলাদেশি, আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি- এটাই আমাদের পরিচয়। দেশ, ভাষা, মা- তিনটি শব্দকে আমাদের সম্মান জানাতেই হবে।
সুদীপ্ত বর্মণ
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
পথশিশুর পাশে দাঁড়ান
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত পথশিশুরা। তাদের দেখার কেউ যেন নেই। ফুটপাতে হাজারো শিশু খালি গায়ে ধুলা-ময়লা জড়িয়ে পড়ে থাকে। প্রচন্ড শীতে তাদের জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। দরিদ্রদের কাছে এই মৌসুমটি খুবই কষ্টকর। যাদের গরম কাপড় নেই তাদের কাবু করে রেখেছে শীত।
কেউ কেউ প্লাস্টিকের বস্তা গায়ে দিয়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে রাতযাপন করছে। অনেকেই ছেঁড়া কাঁথা গায়ে দিচ্ছে। আবার অনেকে আগুনের পাশে বসে থাকছে।
পথশিশুদের সহায়তায় সবার এগিয়ে আসা উচিত। যাদের সামর্থ্য রয়েছে তারা যদি অসহার শিশুদের পাশে দাঁড়ান তাহলে অনেকেই শীতের তীব্রতা থেকে মুক্তি পাবে।
মেহেদী হাসান