মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
ছাত্ররা কি আজ অসহায়?
বাংলাদেশ সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত সব থেকে বড় নাম ছাত্রসমাজ। শুধু সৃষ্টি বললে ভুল হবে দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে সর্বপ্রথম সোচ্চার হয়ে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে এই ছাত্রছাত্রীরাই। দেশ সৃষ্টির আগে থেকেও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে ছাত্ররা বুকের রক্ত দিতে কার্পণ্য করেনি। এই যে মায়ের ভাষা এই ভাষাটাও আমাদের মুখ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলো। তখন এই ছাত্ররাই বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই ভাষাটা আজ আমাদের করে নিয়েছে। পৃথিবীর এক মাত্র ভাষা যা রক্ত দিয়ে কেনা সেই রক্তফুটা গুলো ছাত্রদের। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ছাত্রসমাজের ভূমিকা কোন দিন জাতি ভুলে যেতে পারবে না।
দেশের প্রথম পতাকা ছাত্রদের হাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের অবদান বাংলাদেশের ইতিহাস যত দিন আছে ততো দিন চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। বঙ্গবন্ধু হত্যার নিন্দা প্রস্তাব ১৯৭৫ সালেই ছাত্ররা পাস করিয়েছে। এতো এতো গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী ছাত্ররা। সেই ছাত্ররা আজ নির্যাতিত। তাদের নির্যাতনের সম্মতি জানাতেও আজ অবিভাবকেরা নিশ্চুপ। প্রতিবাদ তো বহুদূর। রাতের আঁধারে ছাত্রদের মেরে আহত করে চলে গিয়েও আজ দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিক্ষক প্রশাসন আজ কোন পদক্ষেপই নিচ্ছে না। এই নিয়ে জিজ্ঞেস করলে আমাদের ছাত্রসমাজের অবিভাবকেরা ভয় পায়। কেউ কেউ অস্বীকার করে। কিন্তু ১৯৬৯ সালের স্যার শামসুজ্জোহা তার সন্তান তুল্য ছাত্রদের দিকে ছুটে আসা বুলেট নিজের শরীরে নিতে পিছ পা হয়নি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর নির্যাতনের ঘটনা দেশের প্রতিটি ছাত্রীর হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করেছে। সেই ঘটনার দুদিন না পেরোতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর হামলা কি ছাত্রদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পরিচয় প্রদান করে? না! এসব ঘটনা ছাত্রদের ইতিহাসকে অস্বীকার করে। ছাত্ররা চাইলে যে কোন সময় এসব কুলাঙ্গার হাত মুহূর্তে ভেঙে দিতে পারে। দামাল ছাত্ররা এরা চাইলে যে কোন অসাধ্য কে সাধন করতে পারে। তার প্রমাণ বাংলাদেশের জন্মের আগে থেকে বাঙালি দেখে আসতেছে। এমন পাঁচ কোটির বেশি সৈন্য নিয়েও আজ অভিভাবকেরা ভয় পায়। নির্যাতনের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে চায় না। অভিভাবকদের এমন ব্যবহারের জন্য আজ আমাদের ক্ষত হৃদয় নিয়ে বাধ্য হয়েই ভাবতে হচ্ছে ছাত্ররা কি আজ অসহায়?
রেজুয়ান রিজভী
শিক্ষার্থী
ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুইরেন্স বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শিশুদের ঘাড়ে বইয়ের বোঝা
ব্যাগের ভার বইতে বইতে ছাত্রছাত্রীরা সত্যিই ক্লান্ত। দিনের পর দিন ছোট ছোট বাচ্চাদের পিঠে এই স্কুল ব্যাগের ভার ক্রমশই যেন বেড়ে চলেছে। শিশুদের বইয়ের সঙ্গে ভালোবাসা সৃষ্টি করতে হবে নিঃসন্দেহে। প্লে শব্দের অর্থ খেলা করা। তাহলে প্লে ক্লাসের শিশুরা খেলতে খেলতে শিখবে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে, প্লে ক্লাসের একটি শিশুকে যত বই-খাতা স্কুলে বহন করে নিয়ে যেতে হয়, দশম শ্রেণীর একজন ছাত্রকে তত বই বহন করতে হয় না। প্লে থেকে কেজি ক্লাসের শিশুদের ব্যাগ এত বেশি ভারী থাকে যে তাদের ব্যাগ নিতে অনেক কষ্ট হয়। আমি যখন প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম তখন তিনটি বই আর একটি খাতা নিয়ে স্কুলে যেতাম। আর এখন কেজি স্কুলে নার্সারিতে পড়ুয়া আমার ভাইবোনটি বই-খাতা মোট ১৫টি নিয়ে যায়। সঙ্গে পানির ফ্লাক্স, টিফিনবক্স তো আছেই। শিশুদের বিভিন্ন রকমের পাঠ্যবই আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত না করে সৃজনশীল পাঠাভ্যাসের জন্য বিকল্প কিছু চিন্তা করা দরকার।
সঠিক দিকনির্দেশনা যেমন শিশুকে আগামী দিনের একজন সফল মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারে, তেমনি ভুল নির্দেশনাও একটি শিশুকে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই সন্তানের যত্ন নিন, পড়াশোনার জন্য কেবল চাপ না দিয়ে তাকে পড়তে উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার আলোকোজ্জ্বল পৃথিবী শিশুকে স্পর্শ করুক। ভালো থাকুক, ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে উঠুক প্রতিটি শিশু।
সিনথিয়া সুমি
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
ছাত্ররা কি আজ অসহায়?
বাংলাদেশ সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত সব থেকে বড় নাম ছাত্রসমাজ। শুধু সৃষ্টি বললে ভুল হবে দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে সর্বপ্রথম সোচ্চার হয়ে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে এই ছাত্রছাত্রীরাই। দেশ সৃষ্টির আগে থেকেও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে ছাত্ররা বুকের রক্ত দিতে কার্পণ্য করেনি। এই যে মায়ের ভাষা এই ভাষাটাও আমাদের মুখ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলো। তখন এই ছাত্ররাই বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এই ভাষাটা আজ আমাদের করে নিয়েছে। পৃথিবীর এক মাত্র ভাষা যা রক্ত দিয়ে কেনা সেই রক্তফুটা গুলো ছাত্রদের। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ছাত্রসমাজের ভূমিকা কোন দিন জাতি ভুলে যেতে পারবে না।
দেশের প্রথম পতাকা ছাত্রদের হাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের অবদান বাংলাদেশের ইতিহাস যত দিন আছে ততো দিন চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। বঙ্গবন্ধু হত্যার নিন্দা প্রস্তাব ১৯৭৫ সালেই ছাত্ররা পাস করিয়েছে। এতো এতো গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী ছাত্ররা। সেই ছাত্ররা আজ নির্যাতিত। তাদের নির্যাতনের সম্মতি জানাতেও আজ অবিভাবকেরা নিশ্চুপ। প্রতিবাদ তো বহুদূর। রাতের আঁধারে ছাত্রদের মেরে আহত করে চলে গিয়েও আজ দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিক্ষক প্রশাসন আজ কোন পদক্ষেপই নিচ্ছে না। এই নিয়ে জিজ্ঞেস করলে আমাদের ছাত্রসমাজের অবিভাবকেরা ভয় পায়। কেউ কেউ অস্বীকার করে। কিন্তু ১৯৬৯ সালের স্যার শামসুজ্জোহা তার সন্তান তুল্য ছাত্রদের দিকে ছুটে আসা বুলেট নিজের শরীরে নিতে পিছ পা হয়নি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর নির্যাতনের ঘটনা দেশের প্রতিটি ছাত্রীর হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করেছে। সেই ঘটনার দুদিন না পেরোতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর হামলা কি ছাত্রদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের পরিচয় প্রদান করে? না! এসব ঘটনা ছাত্রদের ইতিহাসকে অস্বীকার করে। ছাত্ররা চাইলে যে কোন সময় এসব কুলাঙ্গার হাত মুহূর্তে ভেঙে দিতে পারে। দামাল ছাত্ররা এরা চাইলে যে কোন অসাধ্য কে সাধন করতে পারে। তার প্রমাণ বাংলাদেশের জন্মের আগে থেকে বাঙালি দেখে আসতেছে। এমন পাঁচ কোটির বেশি সৈন্য নিয়েও আজ অভিভাবকেরা ভয় পায়। নির্যাতনের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে চায় না। অভিভাবকদের এমন ব্যবহারের জন্য আজ আমাদের ক্ষত হৃদয় নিয়ে বাধ্য হয়েই ভাবতে হচ্ছে ছাত্ররা কি আজ অসহায়?
রেজুয়ান রিজভী
শিক্ষার্থী
ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্সুইরেন্স বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শিশুদের ঘাড়ে বইয়ের বোঝা
ব্যাগের ভার বইতে বইতে ছাত্রছাত্রীরা সত্যিই ক্লান্ত। দিনের পর দিন ছোট ছোট বাচ্চাদের পিঠে এই স্কুল ব্যাগের ভার ক্রমশই যেন বেড়ে চলেছে। শিশুদের বইয়ের সঙ্গে ভালোবাসা সৃষ্টি করতে হবে নিঃসন্দেহে। প্লে শব্দের অর্থ খেলা করা। তাহলে প্লে ক্লাসের শিশুরা খেলতে খেলতে শিখবে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে, প্লে ক্লাসের একটি শিশুকে যত বই-খাতা স্কুলে বহন করে নিয়ে যেতে হয়, দশম শ্রেণীর একজন ছাত্রকে তত বই বহন করতে হয় না। প্লে থেকে কেজি ক্লাসের শিশুদের ব্যাগ এত বেশি ভারী থাকে যে তাদের ব্যাগ নিতে অনেক কষ্ট হয়। আমি যখন প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিলাম তখন তিনটি বই আর একটি খাতা নিয়ে স্কুলে যেতাম। আর এখন কেজি স্কুলে নার্সারিতে পড়ুয়া আমার ভাইবোনটি বই-খাতা মোট ১৫টি নিয়ে যায়। সঙ্গে পানির ফ্লাক্স, টিফিনবক্স তো আছেই। শিশুদের বিভিন্ন রকমের পাঠ্যবই আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত না করে সৃজনশীল পাঠাভ্যাসের জন্য বিকল্প কিছু চিন্তা করা দরকার।
সঠিক দিকনির্দেশনা যেমন শিশুকে আগামী দিনের একজন সফল মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারে, তেমনি ভুল নির্দেশনাও একটি শিশুকে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই সন্তানের যত্ন নিন, পড়াশোনার জন্য কেবল চাপ না দিয়ে তাকে পড়তে উৎসাহিত করা উচিত। শিক্ষার আলোকোজ্জ্বল পৃথিবী শিশুকে স্পর্শ করুক। ভালো থাকুক, ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে উঠুক প্রতিটি শিশু।
সিনথিয়া সুমি