alt

মুক্ত আলোচনা

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট

আরমান শেখ

: শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

সমৃদ্ধ ইউরোপে যুদ্ধের ঘণ্টাধ্বনি সৃষ্টিকারী চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শুরু হয় সাত বছর আগের ক্রিমিয়া দখল নিয়ে। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত দিক থেকে ক্রিমিয়া ‘রুশ অঞ্চল’ হলেও ১৯৫৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সোভিয়েত সরকার ইউক্রেনকে ভৌগোলিক সংযুক্তির অজুহাতে অনেকটা ‘উপহার’ স্বরূপ ক্রিমিয়া দিয়ে দেয়। উল্লেখ্য যে, ভৌগোলিকভাবে ক্রিমিয়া রাশিয়া থেকে কৃষ্ণ ও আজোভ সাগর সংযুক্তকারী ক্রেচ প্রণালীর মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন।

সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘রুটির ঝুড়ি’ খ্যাত বর্তমান ইউক্রেনের উত্তর অংশ ৯ম শতক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিয়েভান রুশের অংশ ছিল, ১৩শ শতকে মোঙ্গল আক্রমণে যার পতন ঘটে। এরপর ১৪৪১ সালে বৃহত্তর তুর্কি জাতির অন্তর্গত তাতাররা ক্রিমিয়ায় বসতি স্থাপন করে এবং চেঙ্গিস খানের একজন বংশধরের নেতৃত্বে ‘ক্রিমিয়ান খানাত’ প্রতিষ্ঠা করে। ১৪৭৫ সালে খানাতটি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হলেও রাষ্ট্রটির যথেষ্ট স্বাধীনতা ছিল। ১৭৬৮–৭৪ সালের রুশ–ওসমানীয় যুদ্ধের পর রাষ্ট্রটি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করলেও কার্যত রুশ সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়। পরিশেষে ১৭৮৩ সালে রাশিয়া সরাসরি ক্রিমিয়া দখল করে নেয় এবং তখন থেকেই অঞ্চলটি রাশিয়ার অংশ হয়ে যায়।

১৯১৭ সালে রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ভøাদিমির লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিকরা ক্রিমিয়ার তাতারদেরকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে এবং ১৯২১ সালে ক্রিমিয়ায় ক্রিমিয়ান স্বায়ত্তশাসিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৯২২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রটিকে রুশ সোভিয়েত ফেডারেল সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অন্তভুক্ত করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ক্রিমিয়ান তাতারদের একাংশ জার্মান আক্রমণকারীদের সহায়তা করে এবং এর শাস্তিস্বরূপ সোভিয়েত সরকার ১৯৪৪ সালে তাদের মধ্য এশিয়া ও সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করে। ভূখ-টির নাম পরিবর্তন করে ক্রিমিয়ান প্রদেশ রাখা হয়, যা রুশ প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সোভিয়েতের পতনের পর ক্রিমিয়া হস্তান্তরের ‘অবৈধ’ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয় ২০১৪ সালে। ২০১৩-১৪ সালের ইউরোমাইদান বিপ্লব এর প্রভাবে ইউক্রেনের রুশপন্থি প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে গেলে তদস্থলে একটি তীব্র রুশবিরোধী ও পশ্চিমাপন্থি সরকার ক্ষমতা লাভ করে এবং তারা ইউক্রেনে রুশ ভাষা নিষিদ্ধকরণসহ বিভিন্ন রুশবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর জেরে কিছুদিন পর ২০১৪ সালের মার্চে ক্রিমিয়া দখলে নেয় রুশ সেনারা। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ক্রিমিয়ায় মার্চ মাসে গণভোটও করা হয়, যাতে ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটারই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দেয়।

ক্রিমিয়া এক সময় রাশিয়ার মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর রাশিয়া ২০১৮ সালে বিচ্ছিন্নকারী ক্রেচ প্রণালীর উপরে ব্রিজ নির্মাণ করে তাদের কুবান অঞ্চলের সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে, যা উক্ত অঞ্চলে রাশিয়ার নৈতিক এবং সামরিক অবস্থান পাকাপোক্ত করে। বর্তমানে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর বহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি রয়েছে। এরপর ক্ষমতা প্রদর্শন করতে ঐ প্রণালীতে একই বছরের ২৫ নভেম্বর ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে গুলি চালিয়ে তিনজন নাবিককে আহত করার মাধ্যমে জাহাজগুলোকে আটক করে রাশিয়া, যাকে কেন্দ্র করে পুনরায় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তখন ইউক্রেন সরকার রুশ পদক্ষেপ মোকাবিলায় পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ২৬ নভেম্বর থেকে ৩০ দিনের সামরিক আইন জারি করে।

১৯৪৫ সালের পর ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সেভাস্তোপোল নামে কেন্দ্রশাসিত শহর হিসেবে নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামোতে অঙ্গীভূত করার মাধ্যমে প্রথম রাজ্য বিস্তার ঘটিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে কম্পন সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা বিশ্ব অবরোধ আরোপ করে রাশিয়ার উপর। তবে বিচক্ষণ পুতিন অবরোধ সামলে নিজ অবস্থানে অনড় থেকেছেন সর্বদা। উল্টো সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের দনবাস এলাকা নিয়ে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার মারমুখী অবস্থান পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর বর্ণনা অনুযায়ী, গত মার্চের শেষ নাগাদ সীমান্তে প্রায় ২০ হাজার সেনা জড়ো করেছে। পাশাপাশি সীমান্তে শত্রুসেনাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার ও ভূমিতে অবস্থিত শত্রুবাহিনীর রাডার ব্যবস্থায় হামলার ক্ষমতা সম্পন্ন ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট দুই দেশের মধ্যকার এই যুদ্ধাবস্থায় বহিঃশক্তিগুলোর অন্তর্ভুক্তি কামনা করেছে ইউক্রেন। ইতোমধ্যেই এই ইস্যুতে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেয়ার আহ্বানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জেলেনস্কি সশরীরে তুরস্ক সফর করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ন্যাটোর সদস্য পদ প্রদানের আহ্বানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিক কোন তৎপরতা না দেখিয়ে এটি তাদের একক বিষয় নয় বলে দায় সারা উত্তর দিয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করে তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে না হলেও নৈতিকভাবে এবং গঠতন্ত্র অনুসারে যেকোন সময় ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দমনে দায়বদ্ধ থাকবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সুবিধামত প্রয়োজনানুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে এই বছরের মধ্যেই তথা জানুয়ারী ও মার্চ মাসে দুবার সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। সর্বশেষ এই মেোস শুরুতে সামরিক বিশেষজ্ঞের একটি দলও পাঠায় তারা।

অপরদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ইস্যুতে তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ এখন ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে বাগে আনতে তৎপর। ইতোমধ্যেই পরমাণু কেন্দ্রে ইজরায়েলি সাইবার হামলার জেরে ইরান ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় পশ্চিমারা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ যৌক্তিক মনে করছে না। তবে পরিস্থিতি অনুকূল হলে রাশিয়ার টুঁটি চেপে ধরতে পিছপা হবেনা বাইডেন প্রশাসন।

সোভিয়েতের পতনের পর বিগত দশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্য বিস্তারের ধারাবাহিকতায় ওবামা তার দুই মেয়াদের শাসনামলের প্রথম ভাগে মধ্যপ্রাচ্যসহ এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় পুরোমাত্রায় খবরদারি করেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসেই মুখোমুখি হয়েছেন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পুতিনের, যিনি ২০১৪ সালের পর থেকে পশ্চিমা শক্তিকে বেশ দাপটের সঙ্গেই মোকাবিলা করে চলছেন। নব্বইয়ের দশকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার আর কোনো নেতা এভাবে পশ্চিমা বিশ্বকে চোখ রাঙাতে পারেননি, পারেননি তাদের মোকাবিলা করে নিজ দাবিতে অটল থাকতে। তিনিই প্রথম মার্কিনিদের সামনে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মধ্যেপ্রাচ্যের সিরিয়া ইস্যুতে, যেখানে মার্কিনিরা পিছিয়ে পড়েছে পরবর্তীতে। সম্প্রতি আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ায়ও রাশিয়ার বড় হস্তক্ষেপের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। গত ৮ এপ্রিল রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে পুতিনের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ব্ল্যাংক চেক প্রদানের কথা উল্লেখ করেছে উচ্চপদস্থ একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা।

তবে ক্রিমিয়া ইস্যুতে সম্প্রতি তুরস্ক তার আগের অবস্থান স্বরণ করিয়ে দিয়ে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে, যাতে রাশিয়া বেশ চটেছে বৈকি। এই ঘোষণার কিছুদিন আগেই তুর্কি নিয়ন্ত্রাধীন বসফরাস প্রণালী দিয়ে দুটি মার্কিন রণতরী প্রবেশ নিয়ে মন্ট্রাক্স কনভেনশন অনুসারে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানিয়েছিল রাশিয়া।

উপর্যুক্ত ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসন দুই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। প্রথমত, তুরস্কের রুশ বিরোধী অবস্থান নিশ্চিত করে দুই পক্ষের মাঝে ফাটল সৃষ্টির মাধ্যমে তুরস্ককে পক্ষে টেনে সিরিয়া ও ইরাক ইস্যুতেও ফায়দা হাসিল করা এবং তুরস্ক-রাশিয়া-ইরান জোট ভেঙ্গে দিয়ে তিন দেশকেই দুর্বল করে দেয়া। আর তুরষ্কের কাছে কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বই এই বৈপরীত্য সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। দ্বিতীয়ত, শীতল যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে রাশিয়াকে দুর্বল করা এবং বহির্বিশ্বে তাদের নৈতিক অবস্থান ভেঙ্গে দেয়া।

তবে বিরোধী মত দমনের অভিযোগে রুশ এবং তুর্কি রাষ্ট্রপতি উভয়েই নিজ দেশে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন বর্তমানে, এমতাবস্থায় কেউই যুদ্ধে জড়াবেন বলে আশা করা যায় না। তাছাড়া বিশ্বে রাশিয়া এবং তুরস্কের বর্তমান উপস্থিতি এবং পারস্পরিক সম্পর্ক পূর্বের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। ফলে দুই দেশ সহজে সংঘাতে জড়াবে না, যদি না যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য করে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপের প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ দুটির মধ্যকার সৃষ্ট এই সংকটের একটি স্থায়ী ও গ্রহণযোগ্য সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জার্মানি ও তুরস্ক। এর আগেও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সৃষ্ট রুশ-ইউক্রেন সংকটে জার্মানি সর্বাধিক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। তুরস্কও বলছে তারা এই অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলার পক্ষে। মার্কিন রণতরী কৃষ্ণসাগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে এরদোয়ান বলেন, এই সাগরকে অস্থিতিশীল নয়, শান্তি ও সহযোগিতাপূর্ণ দেখতে চায় তুরস্ক। সুতরাং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখে দুই দেশকে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌছতে তুরস্ক ও জার্মানির পাশাপাশি জাতিসংঘকে শীঘ্রই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় মহামারী বিপর্যস্ত এই বিশ্ব আরো একটি ভয়াবহ যুদ্ধের সম্মুখীন হতে পারে, যা ইউরোপে শরণার্থীর নতুন ঢল সৃষ্টির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাঙ্গনের কারণ হতে পারে।

[ লেখক : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট

আরমান শেখ

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

সমৃদ্ধ ইউরোপে যুদ্ধের ঘণ্টাধ্বনি সৃষ্টিকারী চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট শুরু হয় সাত বছর আগের ক্রিমিয়া দখল নিয়ে। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত দিক থেকে ক্রিমিয়া ‘রুশ অঞ্চল’ হলেও ১৯৫৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সোভিয়েত সরকার ইউক্রেনকে ভৌগোলিক সংযুক্তির অজুহাতে অনেকটা ‘উপহার’ স্বরূপ ক্রিমিয়া দিয়ে দেয়। উল্লেখ্য যে, ভৌগোলিকভাবে ক্রিমিয়া রাশিয়া থেকে কৃষ্ণ ও আজোভ সাগর সংযুক্তকারী ক্রেচ প্রণালীর মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন।

সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘রুটির ঝুড়ি’ খ্যাত বর্তমান ইউক্রেনের উত্তর অংশ ৯ম শতক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিয়েভান রুশের অংশ ছিল, ১৩শ শতকে মোঙ্গল আক্রমণে যার পতন ঘটে। এরপর ১৪৪১ সালে বৃহত্তর তুর্কি জাতির অন্তর্গত তাতাররা ক্রিমিয়ায় বসতি স্থাপন করে এবং চেঙ্গিস খানের একজন বংশধরের নেতৃত্বে ‘ক্রিমিয়ান খানাত’ প্রতিষ্ঠা করে। ১৪৭৫ সালে খানাতটি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হলেও রাষ্ট্রটির যথেষ্ট স্বাধীনতা ছিল। ১৭৬৮–৭৪ সালের রুশ–ওসমানীয় যুদ্ধের পর রাষ্ট্রটি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করলেও কার্যত রুশ সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়। পরিশেষে ১৭৮৩ সালে রাশিয়া সরাসরি ক্রিমিয়া দখল করে নেয় এবং তখন থেকেই অঞ্চলটি রাশিয়ার অংশ হয়ে যায়।

১৯১৭ সালে রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ভøাদিমির লেনিনের নেতৃত্বাধীন বলশেভিকরা ক্রিমিয়ার তাতারদেরকে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে এবং ১৯২১ সালে ক্রিমিয়ায় ক্রিমিয়ান স্বায়ত্তশাসিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ১৯২২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রটিকে রুশ সোভিয়েত ফেডারেল সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অন্তভুক্ত করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ক্রিমিয়ান তাতারদের একাংশ জার্মান আক্রমণকারীদের সহায়তা করে এবং এর শাস্তিস্বরূপ সোভিয়েত সরকার ১৯৪৪ সালে তাদের মধ্য এশিয়া ও সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করে। ভূখ-টির নাম পরিবর্তন করে ক্রিমিয়ান প্রদেশ রাখা হয়, যা রুশ প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সোভিয়েতের পতনের পর ক্রিমিয়া হস্তান্তরের ‘অবৈধ’ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয় ২০১৪ সালে। ২০১৩-১৪ সালের ইউরোমাইদান বিপ্লব এর প্রভাবে ইউক্রেনের রুশপন্থি প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে গেলে তদস্থলে একটি তীব্র রুশবিরোধী ও পশ্চিমাপন্থি সরকার ক্ষমতা লাভ করে এবং তারা ইউক্রেনে রুশ ভাষা নিষিদ্ধকরণসহ বিভিন্ন রুশবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর জেরে কিছুদিন পর ২০১৪ সালের মার্চে ক্রিমিয়া দখলে নেয় রুশ সেনারা। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ক্রিমিয়ায় মার্চ মাসে গণভোটও করা হয়, যাতে ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটারই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট দেয়।

ক্রিমিয়া এক সময় রাশিয়ার মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার পর রাশিয়া ২০১৮ সালে বিচ্ছিন্নকারী ক্রেচ প্রণালীর উপরে ব্রিজ নির্মাণ করে তাদের কুবান অঞ্চলের সঙ্গে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে, যা উক্ত অঞ্চলে রাশিয়ার নৈতিক এবং সামরিক অবস্থান পাকাপোক্ত করে। বর্তমানে ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর বহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি রয়েছে। এরপর ক্ষমতা প্রদর্শন করতে ঐ প্রণালীতে একই বছরের ২৫ নভেম্বর ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে গুলি চালিয়ে তিনজন নাবিককে আহত করার মাধ্যমে জাহাজগুলোকে আটক করে রাশিয়া, যাকে কেন্দ্র করে পুনরায় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তখন ইউক্রেন সরকার রুশ পদক্ষেপ মোকাবিলায় পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ২৬ নভেম্বর থেকে ৩০ দিনের সামরিক আইন জারি করে।

১৯৪৫ সালের পর ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সেভাস্তোপোল নামে কেন্দ্রশাসিত শহর হিসেবে নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামোতে অঙ্গীভূত করার মাধ্যমে প্রথম রাজ্য বিস্তার ঘটিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে কম্পন সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা বিশ্ব অবরোধ আরোপ করে রাশিয়ার উপর। তবে বিচক্ষণ পুতিন অবরোধ সামলে নিজ অবস্থানে অনড় থেকেছেন সর্বদা। উল্টো সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের দনবাস এলাকা নিয়ে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার মারমুখী অবস্থান পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর বর্ণনা অনুযায়ী, গত মার্চের শেষ নাগাদ সীমান্তে প্রায় ২০ হাজার সেনা জড়ো করেছে। পাশাপাশি সীমান্তে শত্রুসেনাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার ও ভূমিতে অবস্থিত শত্রুবাহিনীর রাডার ব্যবস্থায় হামলার ক্ষমতা সম্পন্ন ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট দুই দেশের মধ্যকার এই যুদ্ধাবস্থায় বহিঃশক্তিগুলোর অন্তর্ভুক্তি কামনা করেছে ইউক্রেন। ইতোমধ্যেই এই ইস্যুতে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ দেয়ার আহ্বানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জেলেনস্কি সশরীরে তুরস্ক সফর করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ন্যাটোর সদস্য পদ প্রদানের আহ্বানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিক কোন তৎপরতা না দেখিয়ে এটি তাদের একক বিষয় নয় বলে দায় সারা উত্তর দিয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করে তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে না হলেও নৈতিকভাবে এবং গঠতন্ত্র অনুসারে যেকোন সময় ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দমনে দায়বদ্ধ থাকবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সুবিধামত প্রয়োজনানুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে এই বছরের মধ্যেই তথা জানুয়ারী ও মার্চ মাসে দুবার সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। সর্বশেষ এই মেোস শুরুতে সামরিক বিশেষজ্ঞের একটি দলও পাঠায় তারা।

অপরদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই ইস্যুতে তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ এখন ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে বাগে আনতে তৎপর। ইতোমধ্যেই পরমাণু কেন্দ্রে ইজরায়েলি সাইবার হামলার জেরে ইরান ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় পশ্চিমারা রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ যৌক্তিক মনে করছে না। তবে পরিস্থিতি অনুকূল হলে রাশিয়ার টুঁটি চেপে ধরতে পিছপা হবেনা বাইডেন প্রশাসন।

সোভিয়েতের পতনের পর বিগত দশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্য বিস্তারের ধারাবাহিকতায় ওবামা তার দুই মেয়াদের শাসনামলের প্রথম ভাগে মধ্যপ্রাচ্যসহ এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোয় পুরোমাত্রায় খবরদারি করেছেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসেই মুখোমুখি হয়েছেন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী পুতিনের, যিনি ২০১৪ সালের পর থেকে পশ্চিমা শক্তিকে বেশ দাপটের সঙ্গেই মোকাবিলা করে চলছেন। নব্বইয়ের দশকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার আর কোনো নেতা এভাবে পশ্চিমা বিশ্বকে চোখ রাঙাতে পারেননি, পারেননি তাদের মোকাবিলা করে নিজ দাবিতে অটল থাকতে। তিনিই প্রথম মার্কিনিদের সামনে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মধ্যেপ্রাচ্যের সিরিয়া ইস্যুতে, যেখানে মার্কিনিরা পিছিয়ে পড়েছে পরবর্তীতে। সম্প্রতি আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ায়ও রাশিয়ার বড় হস্তক্ষেপের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। গত ৮ এপ্রিল রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে পুতিনের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ব্ল্যাংক চেক প্রদানের কথা উল্লেখ করেছে উচ্চপদস্থ একজন পাকিস্তানি কর্মকর্তা।

তবে ক্রিমিয়া ইস্যুতে সম্প্রতি তুরস্ক তার আগের অবস্থান স্বরণ করিয়ে দিয়ে ইউক্রেনকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে, যাতে রাশিয়া বেশ চটেছে বৈকি। এই ঘোষণার কিছুদিন আগেই তুর্কি নিয়ন্ত্রাধীন বসফরাস প্রণালী দিয়ে দুটি মার্কিন রণতরী প্রবেশ নিয়ে মন্ট্রাক্স কনভেনশন অনুসারে বিষয়টি পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানিয়েছিল রাশিয়া।

উপর্যুক্ত ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসন দুই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। প্রথমত, তুরস্কের রুশ বিরোধী অবস্থান নিশ্চিত করে দুই পক্ষের মাঝে ফাটল সৃষ্টির মাধ্যমে তুরস্ককে পক্ষে টেনে সিরিয়া ও ইরাক ইস্যুতেও ফায়দা হাসিল করা এবং তুরস্ক-রাশিয়া-ইরান জোট ভেঙ্গে দিয়ে তিন দেশকেই দুর্বল করে দেয়া। আর তুরষ্কের কাছে কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বই এই বৈপরীত্য সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। দ্বিতীয়ত, শীতল যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে রাশিয়াকে দুর্বল করা এবং বহির্বিশ্বে তাদের নৈতিক অবস্থান ভেঙ্গে দেয়া।

তবে বিরোধী মত দমনের অভিযোগে রুশ এবং তুর্কি রাষ্ট্রপতি উভয়েই নিজ দেশে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন বর্তমানে, এমতাবস্থায় কেউই যুদ্ধে জড়াবেন বলে আশা করা যায় না। তাছাড়া বিশ্বে রাশিয়া এবং তুরস্কের বর্তমান উপস্থিতি এবং পারস্পরিক সম্পর্ক পূর্বের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। ফলে দুই দেশ সহজে সংঘাতে জড়াবে না, যদি না যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য করে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপের প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ দুটির মধ্যকার সৃষ্ট এই সংকটের একটি স্থায়ী ও গ্রহণযোগ্য সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে জার্মানি ও তুরস্ক। এর আগেও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সৃষ্ট রুশ-ইউক্রেন সংকটে জার্মানি সর্বাধিক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। তুরস্কও বলছে তারা এই অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলার পক্ষে। মার্কিন রণতরী কৃষ্ণসাগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে এরদোয়ান বলেন, এই সাগরকে অস্থিতিশীল নয়, শান্তি ও সহযোগিতাপূর্ণ দেখতে চায় তুরস্ক। সুতরাং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ বিবেচনায় রেখে দুই দেশকে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌছতে তুরস্ক ও জার্মানির পাশাপাশি জাতিসংঘকে শীঘ্রই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় মহামারী বিপর্যস্ত এই বিশ্ব আরো একটি ভয়াবহ যুদ্ধের সম্মুখীন হতে পারে, যা ইউরোপে শরণার্থীর নতুন ঢল সৃষ্টির মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাঙ্গনের কারণ হতে পারে।

[ লেখক : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ]

back to top