alt

মুক্ত আলোচনা

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও মর্যাদা : প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান

: শনিবার, ২২ মে ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের (ঘ)-এ বলা হয়েছে-‘সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত বা বৈধব্য, মাতৃ-পিতৃহীনতা বা বার্ধক্যসহ অন্যান্য আয়ত্তাতীত পরিস্থিতিজনিত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের ব্যবস্থা রাষ্ট্র করবে।’ সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের (১)-এ বলা হয়েছে-‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবে।’

এই যদি হয় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, তাহলে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সকল ক্ষেত্রে সুযোগ লাভের সমান অধিকার রয়েছে। ঠিক যেমনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরও রয়েছে রাষ্ট্র থেকে সকল সুযোগ লাভের অধিকার। এর মানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সকল ক্ষেত্রে সুযোগ লাভের বিষয়টি দান বা দয়া নয়। মূলত তারা অধিকার ও মর্যাদা নিয়েই বেঁচে থাকতে চায়। তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। দক্ষতা অর্জন করে স্বনির্ভর হতে চায়।

তাদের এ দক্ষতা অর্জনে ক্ষেত্র বিশেষে কারো কারো সামান্য শারীরিক বা মানসিক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। সেটা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার দায়িত্বও রাষ্ট্রের। আর এ জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

জন্মগত ত্রুটি বা অন্যান্য কারণে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি (আমরা অজ্ঞতাবশত প্রতিবন্ধী বলে থাকি) সাধারণ মানুষ থেকে কিছুটা আলাদা। তবে ভালোবাসা, বিশেষ যত্ন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারলে তারাও দেশের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হবে, হচ্ছেও। ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধীরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। এ মুহূর্তে সরকারি ও বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ অগ্রাধিকার বলে মত সকলের। বাড়ানো দরকার সচেতনতা।

এ প্রসঙ্গে এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগের ক্ষেত্রে সমন্বয় তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশে এখন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ৪০টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি কমিটি আছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আইন দ্বারা কমিটি করা আছে। ১০৩টির মতো তথ্য ও সেবাকেন্দ্র আছে ৫০০-এর অধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন আছে। তৃণমূল পর্যায়ে এই সংগঠন ছড়িয়ে আছে। এসব সংগঠনের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও চাকরির ক্ষেত্রে যেন আরও সুযোগ তৈরি করা যায় সে বিষয়গুলো আমাদের সামনে তুলে আনতে হবে। পরিবেশ, পাঠক্রম এবং অবকাঠামোর কারণে তারা সুযোগগুলো গ্রহণ করতে পারছে না। আরও বেশি সমন্বয় প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে এলে আইনে যে ১৬ ধরনের কর্মসূচির কথা আছে, তা বাস্তবায়ন করা যাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রেরণা ফাউন্ডেশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করছে। এ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির পরিচালক মুবিনা আসাফ সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, জাতির মূলধারার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন এবং এর সামগ্রিক দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতা নিশ্চিতে আমাদের কিছু সমন্বিত লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা দরকার; যা একই সঙ্গে আমাদের এসডিজি অর্জনের পথেও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছি। তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে পড়া দেশের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চল, বয়স ও সামাজিক শ্রেণির সব মানুষকে এই ডাটাবেজের আওতায় এনে একটি সামগ্রিক চিত্র দাঁড় করানো, যার মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং প্রাসঙ্গিক যে কোনো উদ্যোগ বা কার্যক্রম পরিচালনার প্রাথমিক ধারণা, তথ্য-উপাত্ত এবং কার্য গতিবিধি নির্ণয় করা আরও সহজ ও কার্যকরী হয়ে উঠবে। আমরা দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের গোটা জীবনযাত্রার ধরনকে স্পষ্টরূপে তুলে ধরবো, যার ফলে ঠিক কোন জায়গাগুলোতে আমাদের আরও জোর দেওয়া উচিত, কোন সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো উচিত এবং কীভাবে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত, তা আমরা গভীরভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম হবো।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫, ১৭, ২০ এবং ২৯ অনুচ্ছেদে অন্য নাগরিকদের সঙ্গে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমসুযোগ ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ দায়-দায়িত্বের অংশ হিসেবে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়টি দেখা। বঙ্গবন্ধু এটি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এটি সহমর্মিতা দিয়ে অনুভব করেন। প্রধানমন্ত্রী তনয়া সায়মা ওয়াজেদ হোসেন চার ধরনের প্রতিবন্ধী নিয়ে কাজ করছেন। এরকম মানুষকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের নজরে এনেছেন তিনি।

এসডিজির মূল বিষয় কাউকে পেছনে ফেলা নয়। এসডিজিতে প্রতিবন্ধীদের মূল স্রোতধারায় আনার বিষয়টি আছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের বিষয়ও আছে। নগরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষরা কীভাবে চলবে, সে বিষয়টিও আছে। অংশীদারিত্বের বিষয় আছে। সরকারের সামগ্রিক পরিকল্পনা উল্লেখ করে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মন্ত্রণালয়গুলোর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের কথা মাথায় রেখেই করা হচ্ছে। সরকার তৎপর। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য শতভাগ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্রদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য ডাটাবেজ করা হয়েছে। সেখানে ১৯ লাখেরও বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য আছে। যখনই একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নজরে আসছে তার বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সেখানে কার কী পেশা সব দেওয়া আছে। কোন ধরনের প্রতিবন্ধী তা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই তথ্যভান্ডার সবার জন্য উন্মুক্ত।

এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজের মন্তব্য হলো-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের প্রতি শুধু দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। সচেতনতাটা জরুরি। সচেতনতা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে মিডিয়া। করোনাকালে সাধারণ মানুষ যে রকম সমস্যায় পড়েছেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য তা আরও কষ্টকর। করোনা উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন। সেখানে উপকারভোগীদের মধ্যে প্রতিবন্ধীরাও আছেন। সরাসরি এই টাকা তাদের মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধিতা আছে তাদের পড়াশোনার জন্য।

অটিজম কিংবা মানসিক প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ করার কারণে প্রতিবন্ধীদের সুবিধা হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি হয়েছে, অ্যাপস তৈরি হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু মনিটর করছেন। সবাই মিলে যদি কাজ করি প্রতিবন্ধীদের জন্য বাংলাদেশ বাসযোগ্য হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাফল্য তিনি বেশ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রকাশ করে বলেন, অনেক প্রতিবন্ধী কিন্তু পাহাড়েও উঠে যাচ্ছেন। তাদের সাফল্য আমরা দেখছি। তারা রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছেন। সবাই মিলে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করতে হবে। সরকার যতটা সম্ভব করছে। আমি মনে করি, চ্যারিটি ব্যক্তি উদ্যোগেই হয়। সবার সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবন সহজ এবং আনন্দদায়ক হবে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অটিজম সেলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. এএম পারভেজ রহিম সমন্বয়হীনতা তেমন নেই বলে মনে করেন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনে ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতার কথা বলা হয়েছে। আমরা আপাতত পাঁচ ধরনের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে কাজ করি। এখানে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পার্সনরা প্রতি সোমবার মিলিত হই। অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করি। জাতীয় কমিটির আলোকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কমিটি আছে। অনেক সময় আমরা বিভিন্ন উপজেলায় গিয়েও মিটিং করি। তিনি বলেন, আমরা মূলত প্রতিবন্ধীদের মাঝে একমুখী প্রতিভা দেখতে পাই। যে ছবি আঁকতে চায় সে খুব সুন্দর ছবি আঁকে, যে বেহালা বাজায় সে সুন্দর বেহালা বাজায়। এ পর্যন্ত সাত হাজার ৪০০ শিশুকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মৃদু ও মাঝারি রকম সমস্যা আছে, যেগুলো শিশুর সিরিয়াস সমস্যা, তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন স্কুলে আমরা ভর্তি করাচ্ছি। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা কাজ করছি, সমন্বয়হীনতার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান আছে, এখন প্রয়োজন বাস্তবায়ন।

বাংলাদেশে সরকারের পাশাপাশি আইএলও, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএসহ বেসরকারি অনেক সংস্থা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছে। প্রতিবন্ধীদের মূল স্রোতধারায় আনা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সচেতনতা তৈরিতে মিডিয়া বড় ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা জরুরি। প্রতিবন্ধীদের মূল জনগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না। তাদের মূল ¯্রােতে আনতে হবে। তাদের দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা বাড়লে কর্মসংস্থান হবে। দেশ এগিয়ে যাবে।

দেশ এগিয়ে যাক সকলের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করে-এটা সবার প্রত্যাশা। তার জন্য প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে। নিজের অধিকার বুঝে নিতে হবে। পাশাপাশি অন্যের অধিকার ও মর্যাদাকে মূল্য দিতে হবে। তবেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

(পিআইডি-শিশু ও নারী উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম বিষয়ক নিবন্ধ)

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও মর্যাদা : প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

মোহাম্মদ ওমর ফারুক দেওয়ান

শনিবার, ২২ মে ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের (ঘ)-এ বলা হয়েছে-‘সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত বা বৈধব্য, মাতৃ-পিতৃহীনতা বা বার্ধক্যসহ অন্যান্য আয়ত্তাতীত পরিস্থিতিজনিত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের ব্যবস্থা রাষ্ট্র করবে।’ সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের (১)-এ বলা হয়েছে-‘সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবে।’

এই যদি হয় রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, তাহলে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সকল ক্ষেত্রে সুযোগ লাভের সমান অধিকার রয়েছে। ঠিক যেমনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরও রয়েছে রাষ্ট্র থেকে সকল সুযোগ লাভের অধিকার। এর মানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সকল ক্ষেত্রে সুযোগ লাভের বিষয়টি দান বা দয়া নয়। মূলত তারা অধিকার ও মর্যাদা নিয়েই বেঁচে থাকতে চায়। তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। দক্ষতা অর্জন করে স্বনির্ভর হতে চায়।

তাদের এ দক্ষতা অর্জনে ক্ষেত্র বিশেষে কারো কারো সামান্য শারীরিক বা মানসিক সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। সেটা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার দায়িত্বও রাষ্ট্রের। আর এ জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

জন্মগত ত্রুটি বা অন্যান্য কারণে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি (আমরা অজ্ঞতাবশত প্রতিবন্ধী বলে থাকি) সাধারণ মানুষ থেকে কিছুটা আলাদা। তবে ভালোবাসা, বিশেষ যত্ন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তুলতে পারলে তারাও দেশের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হবে, হচ্ছেও। ইতোমধ্যে প্রতিবন্ধীরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। এ মুহূর্তে সরকারি ও বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ অগ্রাধিকার বলে মত সকলের। বাড়ানো দরকার সচেতনতা।

এ প্রসঙ্গে এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগের ক্ষেত্রে সমন্বয় তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশে এখন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ৪০টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি কমিটি আছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আইন দ্বারা কমিটি করা আছে। ১০৩টির মতো তথ্য ও সেবাকেন্দ্র আছে ৫০০-এর অধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন আছে। তৃণমূল পর্যায়ে এই সংগঠন ছড়িয়ে আছে। এসব সংগঠনের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও চাকরির ক্ষেত্রে যেন আরও সুযোগ তৈরি করা যায় সে বিষয়গুলো আমাদের সামনে তুলে আনতে হবে। পরিবেশ, পাঠক্রম এবং অবকাঠামোর কারণে তারা সুযোগগুলো গ্রহণ করতে পারছে না। আরও বেশি সমন্বয় প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে এলে আইনে যে ১৬ ধরনের কর্মসূচির কথা আছে, তা বাস্তবায়ন করা যাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রেরণা ফাউন্ডেশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করছে। এ ফাউন্ডেশনের গভর্নিং বডির পরিচালক মুবিনা আসাফ সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, জাতির মূলধারার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন এবং এর সামগ্রিক দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতা নিশ্চিতে আমাদের কিছু সমন্বিত লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা দরকার; যা একই সঙ্গে আমাদের এসডিজি অর্জনের পথেও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সব তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করছি। তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে পড়া দেশের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চল, বয়স ও সামাজিক শ্রেণির সব মানুষকে এই ডাটাবেজের আওতায় এনে একটি সামগ্রিক চিত্র দাঁড় করানো, যার মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং প্রাসঙ্গিক যে কোনো উদ্যোগ বা কার্যক্রম পরিচালনার প্রাথমিক ধারণা, তথ্য-উপাত্ত এবং কার্য গতিবিধি নির্ণয় করা আরও সহজ ও কার্যকরী হয়ে উঠবে। আমরা দেশের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের গোটা জীবনযাত্রার ধরনকে স্পষ্টরূপে তুলে ধরবো, যার ফলে ঠিক কোন জায়গাগুলোতে আমাদের আরও জোর দেওয়া উচিত, কোন সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো উচিত এবং কীভাবে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত, তা আমরা গভীরভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম হবো।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫, ১৭, ২০ এবং ২৯ অনুচ্ছেদে অন্য নাগরিকদের সঙ্গে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমসুযোগ ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ দায়-দায়িত্বের অংশ হিসেবে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। রাষ্ট্রের দায়িত্ব প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়টি দেখা। বঙ্গবন্ধু এটি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এটি সহমর্মিতা দিয়ে অনুভব করেন। প্রধানমন্ত্রী তনয়া সায়মা ওয়াজেদ হোসেন চার ধরনের প্রতিবন্ধী নিয়ে কাজ করছেন। এরকম মানুষকে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের নজরে এনেছেন তিনি।

এসডিজির মূল বিষয় কাউকে পেছনে ফেলা নয়। এসডিজিতে প্রতিবন্ধীদের মূল স্রোতধারায় আনার বিষয়টি আছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের বিষয়ও আছে। নগরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষরা কীভাবে চলবে, সে বিষয়টিও আছে। অংশীদারিত্বের বিষয় আছে। সরকারের সামগ্রিক পরিকল্পনা উল্লেখ করে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মন্ত্রণালয়গুলোর মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের কথা মাথায় রেখেই করা হচ্ছে। সরকার তৎপর। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য শতভাগ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্রদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য ডাটাবেজ করা হয়েছে। সেখানে ১৯ লাখেরও বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য আছে। যখনই একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নজরে আসছে তার বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সেখানে কার কী পেশা সব দেওয়া আছে। কোন ধরনের প্রতিবন্ধী তা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই তথ্যভান্ডার সবার জন্য উন্মুক্ত।

এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজের মন্তব্য হলো-বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের প্রতি শুধু দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, তাদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। সচেতনতাটা জরুরি। সচেতনতা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে মিডিয়া। করোনাকালে সাধারণ মানুষ যে রকম সমস্যায় পড়েছেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য তা আরও কষ্টকর। করোনা উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন। সেখানে উপকারভোগীদের মধ্যে প্রতিবন্ধীরাও আছেন। সরাসরি এই টাকা তাদের মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রতিবন্ধিতা আছে তাদের পড়াশোনার জন্য।

অটিজম কিংবা মানসিক প্রতিবন্ধীদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ করার কারণে প্রতিবন্ধীদের সুবিধা হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি হয়েছে, অ্যাপস তৈরি হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদান বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু মনিটর করছেন। সবাই মিলে যদি কাজ করি প্রতিবন্ধীদের জন্য বাংলাদেশ বাসযোগ্য হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাফল্য তিনি বেশ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রকাশ করে বলেন, অনেক প্রতিবন্ধী কিন্তু পাহাড়েও উঠে যাচ্ছেন। তাদের সাফল্য আমরা দেখছি। তারা রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছেন। সবাই মিলে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করতে হবে। সরকার যতটা সম্ভব করছে। আমি মনে করি, চ্যারিটি ব্যক্তি উদ্যোগেই হয়। সবার সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবন সহজ এবং আনন্দদায়ক হবে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অটিজম সেলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. এএম পারভেজ রহিম সমন্বয়হীনতা তেমন নেই বলে মনে করেন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইনে ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতার কথা বলা হয়েছে। আমরা আপাতত পাঁচ ধরনের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে কাজ করি। এখানে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের ফোকাল পার্সনরা প্রতি সোমবার মিলিত হই। অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করি। জাতীয় কমিটির আলোকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কমিটি আছে। অনেক সময় আমরা বিভিন্ন উপজেলায় গিয়েও মিটিং করি। তিনি বলেন, আমরা মূলত প্রতিবন্ধীদের মাঝে একমুখী প্রতিভা দেখতে পাই। যে ছবি আঁকতে চায় সে খুব সুন্দর ছবি আঁকে, যে বেহালা বাজায় সে সুন্দর বেহালা বাজায়। এ পর্যন্ত সাত হাজার ৪০০ শিশুকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মৃদু ও মাঝারি রকম সমস্যা আছে, যেগুলো শিশুর সিরিয়াস সমস্যা, তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন স্কুলে আমরা ভর্তি করাচ্ছি। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা কাজ করছি, সমন্বয়হীনতার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান আছে, এখন প্রয়োজন বাস্তবায়ন।

বাংলাদেশে সরকারের পাশাপাশি আইএলও, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএসহ বেসরকারি অনেক সংস্থা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছে। প্রতিবন্ধীদের মূল স্রোতধারায় আনা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সচেতনতা তৈরিতে মিডিয়া বড় ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা জরুরি। প্রতিবন্ধীদের মূল জনগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা যাবে না। তাদের মূল ¯্রােতে আনতে হবে। তাদের দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা বাড়লে কর্মসংস্থান হবে। দেশ এগিয়ে যাবে।

দেশ এগিয়ে যাক সকলের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করে-এটা সবার প্রত্যাশা। তার জন্য প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্বটুকু পালন করতে হবে। নিজের অধিকার বুঝে নিতে হবে। পাশাপাশি অন্যের অধিকার ও মর্যাদাকে মূল্য দিতে হবে। তবেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

(পিআইডি-শিশু ও নারী উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম বিষয়ক নিবন্ধ)

back to top