alt

মুক্ত আলোচনা

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও সরকারের ‘স্বপ্ন’ প্রকল্প

সাকিলা পারভীন

: সোমবার, ২৪ মে ২০২১

কাজলী রানী এখন নিজের ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মাত্র কয়েক বছর আগে শুন্য হাতে দুই সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিলো দরিদ্র বাবার সংসারে। কাজলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামে। সেদিনের অসহায় স্বামী পরিত্যক্তা কাজলী একটি মুদি দোকান দিয়েছে। দোকানের মূলধনও এখন লাখ পেরিয়েছে। সন্তানদের মুখে হাসি দেখে আনন্দ অশ্রু ফেলেন কাজলী।

দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরা ও উত্তরের কুড়িগ্রামের এমন শত শত কাজলীর সংসারে বইছে সুখের বাতাস। এসব সুবিধাবঞ্চিত নারীদের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের স্বপ্ন প্রকল্প। দেশের চরম দরিদ্রপ্রবণ এলাকার সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ‘উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ উন্নয়ন (স্বপ্ন)’ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই ‘স্বপ্ন’ প্রকল্পের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, মারিকো-বাংলাদেশ লিমিটেড ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি (সিডা)।

সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বিত উদ্যোগ স্বপ্ন প্রকল্প ২০১৫ সালের আগস্টে সাতক্ষীরা ও কুড়িগ্রাম জেলায় কার্যক্রম শুরু করে। দুই ধাপে প্রায় নয় হাজার গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের স্বনির্ভর করে তোলা সম্ভব হয়। প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক দরিদ্র নারীদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ, কর্মশালার ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মদক্ষতা তৈরির পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা হয়েছে। যারা করোনাকালেও আর্থিক স্বচ্ছলতার মধ্যে আছে। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত জরিপে স্বপ্ন প্রকল্পটি অন্যতম সেরা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে আরো ২০০টি উপজেলায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

সরকার এই সফলতাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে ২০২০ সালে প্রকল্পের কার্যক্রম লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলায় শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা আরো ২২টি জেলার সহস্রাধিক ইউনিয়নে এপ্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব ও ‘স্বপ্ন’-এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে অসহায় দরিদ্র নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সঞ্চয়ী হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে নানান প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের গ্রামীণ সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের কাজে প্রকল্পভুক্ত এসব নারীদের ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা অনস্বীকার্য হিসেবে উল্লেখ করে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, তৃণমূলের নারীরাই গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। ফলে তাদেরকে পিছনে ফেলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। একারণেই স্বপ্ন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় গৃহীত ‘স্বপ্ন’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউএনডিপি শুরু থেকেই কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। এর ফলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নারীরা সমাজের মূল ধারায় যুক্ত হওয়ার সামর্থ লাভ করছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম ধাপে কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা জেলার ১২৪টি ইউনিয়নের চার হাজার ৪৬৪ জন নারীকে নিয়ে ২০১৫ সালের আগস্ট হতে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেড় বছরের চক্র সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে দ্বিতীয় ধাপে চার হাজার ৪৬৪ জন নতুন নারীকে ২০১৭ সালের নভেম্বর হতে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত আরো দেড় বছরের চক্র সম্পন্ন হয়েছে। এই সফলতা ছড়িয়ে দিতে তৃতীয় ধাপে জামালপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার ৯৯টি ইউনিয়নে তিন হাজার ৫৬৪জন নতুন নারীকে নিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

প্রকল্পের উপকারভোগী চম্পা জানালেন, স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবার সংসারে আশ্রয় নিয়ে অভাবে তাড়নায় যখন দিশেহারা অবস্থা এমনই এক দুপুরে মাইকিং হতে শুনি ‘দরিদ্র নারীদের জন্য কাজ এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে’। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এই মাইকিং শুনেই উল্লেখিত স্থানে যোগাযোগ করি এবং পরে লটারীর মাধ্যমে এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান বলে জানান। চম্পা বলেন, ১৮ মাসে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও গবাদি-পশু পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি দৈনিক মজুরি থেকে কিছু সঞ্চয়ও হয়। প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে ছোট ছোট দলে সঞ্চয় ভিত্তিক সমিতি গঠন একটি। যেটি রোসকা বা টানা সমিতি নামে পরিচিত। একটি রোসকা বা টানা সমিতির সদস্য সংখ্যা থাকে ১২ জন। এমন একটি রোসকায় অংশ নিয়ে টাকা জমানো শুরু করেন বলে জানান চম্পা। সঞ্চিত অর্থ দিয়ে শুরু করেন ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। সকালে স্বপ্নের কাজ ও বিকেলে নিজের চায়ের দোকান চালাতে থাকেন। প্রকল্পের চুক্তির মেয়াদ শেষে জমা হওয়া ২২ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগ করেন চায়ের দোকানে। বর্তমানে তার দোকানে মূলধন লক্ষাধিক টাকা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই কার্যক্রমে জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক কাজল চ্যাটার্জী বলেন, প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর সকল উপকারভোগীকে নেতৃত্ব উন্নয়ন, নারী অধিকার, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নারী-পুরুষ সম্পর্ক উন্নয়ন, স্বশিক্ষণ সহজ হিসাব, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের করণীয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলার কৌশল এই সাতটি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের চাহিদা মোতাবেক গরু-ছাগল ও ভেড়া পালন, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও কবুতর পালন, মাছ-কাঁকড়া চাষ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে এপর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার নারীকে স্বনির্ভর করে তোলা সম্ভব হয়েছে। উপকারভোগীদের অধিকাংশই গড়ে ৩ থেকে ৪ ধরনের আয় বৃদ্ধিমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। আর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এসব নারীদের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০জন উন্নতমানের তৈরী পোশাক কারখানায় কর্মসংস্থান তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন।

সফল এই প্রকল্পের জাতীয় ব্যবস্থাপক বলেন, কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগণ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পারিবারিক বিরোধ নিরসনে নারী ও ‘শিশু কল্যাণ বিষয়ক স্থায়ী’ কমিটি সমন্বিতভাবেই প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচন করে। প্রকল্পভুক্ত শতভাগ সদস্যকে ই-পেমেন্টের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। উপকারভোগীদের মোবাইল নম্বর সম্বলিত মোবাইল ডিরেক্টরি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রমসহ অন্যান্য বিষয়ে তথ্য পাওয়া সহজ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বির মহামারীতে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও একটা অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে এই সংকটকালেও প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ সদস্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করছে। করোনা মোকাবেলা করতে সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারবিধি প্রদর্শনসহ এক লাখ ৯১ হাজার ৪৪টি সাবান ও মাস্ক, ৫ হাজার ৮২৮ জনকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং ৬ হাজার ৬৪ জন সদস্যকে জনপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ২০০ নারীকে মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা লক্ষাধিক মাস্ক তৈরি ও বাজারজাত করেছে। ইউএনসিডিএফ’র সহায়তায় সাতক্ষীরায় একটি মিনি-গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যেখানে ৬০ জন উপকারভোগীর কর্মসংস্থান হয়েছে। কুড়িগ্রামের স্বপ্ননারী ও কল্যাণী নারী কল্যাণ সমিতি নামে দু’টি সমিতি গঠন এবং সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে। ইউএনসিডিএফের সহযোগিতায় কুড়িগ্রামে একটি ডেইরি এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় তিনশ’ উপকারভোগীর কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবেলায় প্রায় সাত হাজার উপকারভোগী বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। যারা প্রায় ৩৫ হাজার বস্তায় সবজি চাষ করছে। তাদের রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের জন্য কেঁচো সার উৎপাদন বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। এসব সদস্যদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে ১৭১টি ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামে প্রকল্পের সদস্যদের মালিকানা ও তত্ত্বাবধানে স্বল্প মূল্যের স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার মূল উদ্দেশ্য দরিদ্র নারী-কিশোরীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এতে ৫০ জন নারীর সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে। এই পণ্যটি বিক্রির মাধ্যমে প্রায় এক হাজার নারী আয় বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন। এছাড়া উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জামালপুরে দু’টি ক্ষুদ্র বীমা পলিসি করা হয়েছে। চামড়া শিল্পের কাজে যুক্ত হতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর লেদার স্কিল বাংলাদেশ লিমিটেডের (কোয়েল) সহায়তায় ৩০টি চাকরিপূর্ব প্রস্তুতিমূলক কর্মশালা করা হয়েছে। এতে প্রায় চারশ’ জনকে চামড়া শিল্পে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পরিচালিত জরিপে অন্যতম সেরা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প স্বপ্ন-এর সফলতা বিবেচনায় প্রকল্পটি আরো ২২টি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এখনও সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মনে করেন। এর ফলে টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অনেকাংশে কমে আসবে।

[লেখক : সাংবাদিক ও অধিকার কর্মী]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও সরকারের ‘স্বপ্ন’ প্রকল্প

সাকিলা পারভীন

সোমবার, ২৪ মে ২০২১

কাজলী রানী এখন নিজের ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মাত্র কয়েক বছর আগে শুন্য হাতে দুই সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিলো দরিদ্র বাবার সংসারে। কাজলীর বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামে। সেদিনের অসহায় স্বামী পরিত্যক্তা কাজলী একটি মুদি দোকান দিয়েছে। দোকানের মূলধনও এখন লাখ পেরিয়েছে। সন্তানদের মুখে হাসি দেখে আনন্দ অশ্রু ফেলেন কাজলী।

দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরা ও উত্তরের কুড়িগ্রামের এমন শত শত কাজলীর সংসারে বইছে সুখের বাতাস। এসব সুবিধাবঞ্চিত নারীদের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের স্বপ্ন প্রকল্প। দেশের চরম দরিদ্রপ্রবণ এলাকার সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ‘উৎপাদনশীল ও সম্ভাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহণে নারীর সামর্থ উন্নয়ন (স্বপ্ন)’ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই ‘স্বপ্ন’ প্রকল্পের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএনডিপি, মারিকো-বাংলাদেশ লিমিটেড ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি (সিডা)।

সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বিত উদ্যোগ স্বপ্ন প্রকল্প ২০১৫ সালের আগস্টে সাতক্ষীরা ও কুড়িগ্রাম জেলায় কার্যক্রম শুরু করে। দুই ধাপে প্রায় নয় হাজার গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের স্বনির্ভর করে তোলা সম্ভব হয়। প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক দরিদ্র নারীদের বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ, কর্মশালার ইত্যাদির মাধ্যমে কর্মদক্ষতা তৈরির পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা হয়েছে। যারা করোনাকালেও আর্থিক স্বচ্ছলতার মধ্যে আছে। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত জরিপে স্বপ্ন প্রকল্পটি অন্যতম সেরা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে আরো ২০০টি উপজেলায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়েছে।

সরকার এই সফলতাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে ২০২০ সালে প্রকল্পের কার্যক্রম লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলায় শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা আরো ২২টি জেলার সহস্রাধিক ইউনিয়নে এপ্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব ও ‘স্বপ্ন’-এর জাতীয় প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে অসহায় দরিদ্র নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সঞ্চয়ী হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে নানান প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের গ্রামীণ সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের কাজে প্রকল্পভুক্ত এসব নারীদের ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা অনস্বীকার্য হিসেবে উল্লেখ করে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, তৃণমূলের নারীরাই গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। ফলে তাদেরকে পিছনে ফেলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। একারণেই স্বপ্ন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় গৃহীত ‘স্বপ্ন’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউএনডিপি শুরু থেকেই কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। এর ফলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নারীরা সমাজের মূল ধারায় যুক্ত হওয়ার সামর্থ লাভ করছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথম ধাপে কুড়িগ্রাম ও সাতক্ষীরা জেলার ১২৪টি ইউনিয়নের চার হাজার ৪৬৪ জন নারীকে নিয়ে ২০১৫ সালের আগস্ট হতে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেড় বছরের চক্র সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে দ্বিতীয় ধাপে চার হাজার ৪৬৪ জন নতুন নারীকে ২০১৭ সালের নভেম্বর হতে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত আরো দেড় বছরের চক্র সম্পন্ন হয়েছে। এই সফলতা ছড়িয়ে দিতে তৃতীয় ধাপে জামালপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলার ৯৯টি ইউনিয়নে তিন হাজার ৫৬৪জন নতুন নারীকে নিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

প্রকল্পের উপকারভোগী চম্পা জানালেন, স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবার সংসারে আশ্রয় নিয়ে অভাবে তাড়নায় যখন দিশেহারা অবস্থা এমনই এক দুপুরে মাইকিং হতে শুনি ‘দরিদ্র নারীদের জন্য কাজ এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে’। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এই মাইকিং শুনেই উল্লেখিত স্থানে যোগাযোগ করি এবং পরে লটারীর মাধ্যমে এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান বলে জানান। চম্পা বলেন, ১৮ মাসে ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও গবাদি-পশু পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি দৈনিক মজুরি থেকে কিছু সঞ্চয়ও হয়। প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে ছোট ছোট দলে সঞ্চয় ভিত্তিক সমিতি গঠন একটি। যেটি রোসকা বা টানা সমিতি নামে পরিচিত। একটি রোসকা বা টানা সমিতির সদস্য সংখ্যা থাকে ১২ জন। এমন একটি রোসকায় অংশ নিয়ে টাকা জমানো শুরু করেন বলে জানান চম্পা। সঞ্চিত অর্থ দিয়ে শুরু করেন ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। সকালে স্বপ্নের কাজ ও বিকেলে নিজের চায়ের দোকান চালাতে থাকেন। প্রকল্পের চুক্তির মেয়াদ শেষে জমা হওয়া ২২ হাজার ৫০০ টাকা বিনিয়োগ করেন চায়ের দোকানে। বর্তমানে তার দোকানে মূলধন লক্ষাধিক টাকা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই কার্যক্রমে জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক কাজল চ্যাটার্জী বলেন, প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর সকল উপকারভোগীকে নেতৃত্ব উন্নয়ন, নারী অধিকার, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নারী-পুরুষ সম্পর্ক উন্নয়ন, স্বশিক্ষণ সহজ হিসাব, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের করণীয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলার কৌশল এই সাতটি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের চাহিদা মোতাবেক গরু-ছাগল ও ভেড়া পালন, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও কবুতর পালন, মাছ-কাঁকড়া চাষ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। তিনি বলেন, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে এপর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার নারীকে স্বনির্ভর করে তোলা সম্ভব হয়েছে। উপকারভোগীদের অধিকাংশই গড়ে ৩ থেকে ৪ ধরনের আয় বৃদ্ধিমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। আর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এসব নারীদের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ২০০জন উন্নতমানের তৈরী পোশাক কারখানায় কর্মসংস্থান তৈরিতে সক্ষম হয়েছেন।

সফল এই প্রকল্পের জাতীয় ব্যবস্থাপক বলেন, কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগণ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পারিবারিক বিরোধ নিরসনে নারী ও ‘শিশু কল্যাণ বিষয়ক স্থায়ী’ কমিটি সমন্বিতভাবেই প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচন করে। প্রকল্পভুক্ত শতভাগ সদস্যকে ই-পেমেন্টের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। উপকারভোগীদের মোবাইল নম্বর সম্বলিত মোবাইল ডিরেক্টরি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রমসহ অন্যান্য বিষয়ে তথ্য পাওয়া সহজ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৈশ্বির মহামারীতে সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও একটা অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে এই সংকটকালেও প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ সদস্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করছে। করোনা মোকাবেলা করতে সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহারবিধি প্রদর্শনসহ এক লাখ ৯১ হাজার ৪৪টি সাবান ও মাস্ক, ৫ হাজার ৮২৮ জনকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং ৬ হাজার ৬৪ জন সদস্যকে জনপ্রতি এক হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ২০০ নারীকে মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা লক্ষাধিক মাস্ক তৈরি ও বাজারজাত করেছে। ইউএনসিডিএফ’র সহায়তায় সাতক্ষীরায় একটি মিনি-গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যেখানে ৬০ জন উপকারভোগীর কর্মসংস্থান হয়েছে। কুড়িগ্রামের স্বপ্ননারী ও কল্যাণী নারী কল্যাণ সমিতি নামে দু’টি সমিতি গঠন এবং সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে। ইউএনসিডিএফের সহযোগিতায় কুড়িগ্রামে একটি ডেইরি এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় তিনশ’ উপকারভোগীর কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবেলায় প্রায় সাত হাজার উপকারভোগী বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। যারা প্রায় ৩৫ হাজার বস্তায় সবজি চাষ করছে। তাদের রাসায়নিক মুক্ত সবজি চাষের জন্য কেঁচো সার উৎপাদন বিষয়ক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। এসব সদস্যদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে ১৭১টি ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামে প্রকল্পের সদস্যদের মালিকানা ও তত্ত্বাবধানে স্বল্প মূল্যের স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার মূল উদ্দেশ্য দরিদ্র নারী-কিশোরীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এতে ৫০ জন নারীর সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে। এই পণ্যটি বিক্রির মাধ্যমে প্রায় এক হাজার নারী আয় বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন। এছাড়া উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জামালপুরে দু’টি ক্ষুদ্র বীমা পলিসি করা হয়েছে। চামড়া শিল্পের কাজে যুক্ত হতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর লেদার স্কিল বাংলাদেশ লিমিটেডের (কোয়েল) সহায়তায় ৩০টি চাকরিপূর্ব প্রস্তুতিমূলক কর্মশালা করা হয়েছে। এতে প্রায় চারশ’ জনকে চামড়া শিল্পে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পরিচালিত জরিপে অন্যতম সেরা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প স্বপ্ন-এর সফলতা বিবেচনায় প্রকল্পটি আরো ২২টি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এখনও সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের মনে করেন। এর ফলে টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অনেকাংশে কমে আসবে।

[লেখক : সাংবাদিক ও অধিকার কর্মী]

back to top