alt

মুক্ত আলোচনা

শিশুদের বিকাশে চাই খেলার মাঠ

আয়েশা সিদ্দিকা

: বৃহস্পতিবার, ০৩ জুন ২০২১

পোষা পাখি যেমন ছোট্ট খাচায় বন্দী থাকে, ঠিকমতো নড়াচড়াও করতে পারে না, আমাদের শিশুদের অবস্থাও এখন তেমনই। ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী। ছোট্ট পরিসরের সময় কাটে। না আছে খেলাধুলা বা শরীরচর্চার সুযোগ, না আছে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ।

শিশুর মানাসিক বিকাশে সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন দুটিই জরুরি। আমাদের শিশুরা কি সুস্থ ও সুন্দরভাবে বিকশিত হচ্ছে? উত্তর ইতিবাচক হওয়ার অবকাশ কম। বিশেষ করে নগর-মহানগরের শিশুদের বিকাশ যে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে হচ্ছে না, তা আজ সত্য। কিন্তু কেন হচ্ছে না? কেন তাদের আমরা খেলার মাঠ দিতে পারছি না? কেন তাদের মানসিক বা সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ দিতে পারছি না? এই প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া খুবই জরুরি।

কয়েক দশক আগেও ঢাকায় অনেক মাঠ ছিল। এমনকি ঘিঞ্জি এলাকা হিসেবে পরিচিত পুরান ঢাকায়ও ছিল অনেক মাঠ। যেমন গে-ারিয়ার ধূপখোলা মাঠ, নারিন্দার শিশু পার্ক, মালিটোলা পার্ক, বংশাল ট্রায়াংগল পার্ক, বাহাদুর শাহ পার্ক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্ক, জগন্নাথ সাহা পার্ক, নাজিরাবাজার পার্ক, বকশীবাজার পার্ক, বাংলাদেশ মাঠসহ আরও অনেক পার্ক ও মাঠ। নতুন ঢাকায়ও ছিল অনেক মাঠ। লালমাটিয়ায় বিশাল লম্বা মাঠ ছিল, শত শত শিশু খেলতে পারত। মোহাম্মদপুরে শহীদ পার্ক খেলার মাঠ, ধানমন্ডির, কলাবাগান মাঠ, বাসাবো খেলার মাঠসহ অনেক মাঠ ও পার্ক ছিল উন্মুক্ত। ক্রমে এসব মাঠ সংকুচিত হয়েছে, স্থাপনা তৈরি হয়েছে, বা আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ঢাকায় অনেক জলাশয় ছিল, যেগুলোতে শিশুরা সাঁতার কাটতে পারত। এখন কোথায় সেসব! আর শুধু ঢাকা নয়, অন্য বড় শহরগুলোতেও একই অবস্থা।

গবেষকদের মতে, জন্মের পর থেকেই শিশুর শরীরের বৃদ্ধি আর মনের বিকাশ ঘটতে থাকে। বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন ও আকৃতি সুগঠিত হতে থাকে। অন্যদিকে জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধা, আবেগ ও অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করার দক্ষতা অর্জিত হয়। শারীরিক শক্তি ও মানসিক চিন্তা-চেতনা, বুদ্ধিমত্তা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো খেলাধুলা। খেলাধুলাই একমাত্র সুস্থ শরীর গঠন, সঠিক ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও মানসিক বিকাশে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা নানা পরিস্থিতি সামাল দিতে শেখে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পরাজয় মেনে নিতে শিখে। বাইরে খেলাধুলা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। খোলা প্রান্তর বা মাঠের সঙ্গে শৈশবের দুরন্তপনার সম্পর্ক রয়েছে। মাঠ শিশু-কিশোরদের বিনোদনের বড় অনুষঙ্গ। মাঠ মানেই খোলা আকাশের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, অনেক শিশু-কিশোরের সঙ্গে মেলামেশা, যা পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর মনোজগৎ বিস্তৃত হতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর শরীর, হাড় ও মাসল শক্তিশালী হয়।

জাতিসংঘের শিশু সনদে বলা হয়েছে, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ রক্ষা ও সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। জাতীয় শিশুনীতি ও শিক্ষানীতিতেও শিশুর বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য অনেক কথা বলা হয়েছে। অথচ বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। সুযোগ সৃষ্টি তো হচ্ছেই না, যেটুকু সুযোগ আছে, তাও রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের কথা ও কাজের মধ্যে সংগতি দেখতে চাই। শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত ও উন্মুক্ত খেলার মাঠ পাই।

[লেখক : শিক্ষার্থী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

শিশুদের বিকাশে চাই খেলার মাঠ

আয়েশা সিদ্দিকা

বৃহস্পতিবার, ০৩ জুন ২০২১

পোষা পাখি যেমন ছোট্ট খাচায় বন্দী থাকে, ঠিকমতো নড়াচড়াও করতে পারে না, আমাদের শিশুদের অবস্থাও এখন তেমনই। ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী। ছোট্ট পরিসরের সময় কাটে। না আছে খেলাধুলা বা শরীরচর্চার সুযোগ, না আছে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ।

শিশুর মানাসিক বিকাশে সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন দুটিই জরুরি। আমাদের শিশুরা কি সুস্থ ও সুন্দরভাবে বিকশিত হচ্ছে? উত্তর ইতিবাচক হওয়ার অবকাশ কম। বিশেষ করে নগর-মহানগরের শিশুদের বিকাশ যে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে হচ্ছে না, তা আজ সত্য। কিন্তু কেন হচ্ছে না? কেন তাদের আমরা খেলার মাঠ দিতে পারছি না? কেন তাদের মানসিক বা সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ দিতে পারছি না? এই প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া খুবই জরুরি।

কয়েক দশক আগেও ঢাকায় অনেক মাঠ ছিল। এমনকি ঘিঞ্জি এলাকা হিসেবে পরিচিত পুরান ঢাকায়ও ছিল অনেক মাঠ। যেমন গে-ারিয়ার ধূপখোলা মাঠ, নারিন্দার শিশু পার্ক, মালিটোলা পার্ক, বংশাল ট্রায়াংগল পার্ক, বাহাদুর শাহ পার্ক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা পার্ক, জগন্নাথ সাহা পার্ক, নাজিরাবাজার পার্ক, বকশীবাজার পার্ক, বাংলাদেশ মাঠসহ আরও অনেক পার্ক ও মাঠ। নতুন ঢাকায়ও ছিল অনেক মাঠ। লালমাটিয়ায় বিশাল লম্বা মাঠ ছিল, শত শত শিশু খেলতে পারত। মোহাম্মদপুরে শহীদ পার্ক খেলার মাঠ, ধানমন্ডির, কলাবাগান মাঠ, বাসাবো খেলার মাঠসহ অনেক মাঠ ও পার্ক ছিল উন্মুক্ত। ক্রমে এসব মাঠ সংকুচিত হয়েছে, স্থাপনা তৈরি হয়েছে, বা আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ঢাকায় অনেক জলাশয় ছিল, যেগুলোতে শিশুরা সাঁতার কাটতে পারত। এখন কোথায় সেসব! আর শুধু ঢাকা নয়, অন্য বড় শহরগুলোতেও একই অবস্থা।

গবেষকদের মতে, জন্মের পর থেকেই শিশুর শরীরের বৃদ্ধি আর মনের বিকাশ ঘটতে থাকে। বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন ও আকৃতি সুগঠিত হতে থাকে। অন্যদিকে জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধা, আবেগ ও অন্যের সঙ্গে মেলামেশা করার দক্ষতা অর্জিত হয়। শারীরিক শক্তি ও মানসিক চিন্তা-চেতনা, বুদ্ধিমত্তা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো খেলাধুলা। খেলাধুলাই একমাত্র সুস্থ শরীর গঠন, সঠিক ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও মানসিক বিকাশে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা নানা পরিস্থিতি সামাল দিতে শেখে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পরাজয় মেনে নিতে শিখে। বাইরে খেলাধুলা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। খোলা প্রান্তর বা মাঠের সঙ্গে শৈশবের দুরন্তপনার সম্পর্ক রয়েছে। মাঠ শিশু-কিশোরদের বিনোদনের বড় অনুষঙ্গ। মাঠ মানেই খোলা আকাশের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, অনেক শিশু-কিশোরের সঙ্গে মেলামেশা, যা পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর মনোজগৎ বিস্তৃত হতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর শরীর, হাড় ও মাসল শক্তিশালী হয়।

জাতিসংঘের শিশু সনদে বলা হয়েছে, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ রক্ষা ও সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। জাতীয় শিশুনীতি ও শিক্ষানীতিতেও শিশুর বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য অনেক কথা বলা হয়েছে। অথচ বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। সুযোগ সৃষ্টি তো হচ্ছেই না, যেটুকু সুযোগ আছে, তাও রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকদের কথা ও কাজের মধ্যে সংগতি দেখতে চাই। শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত ও উন্মুক্ত খেলার মাঠ পাই।

[লেখক : শিক্ষার্থী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top