রণেশ মৈত্র
জাতীয় সংসদে গত ৩ জুন তারিখে যে বিশাল আকারের বাজেট প্রস্তাব ২০২১-২২ তুলে ধরা হয়েছে তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। স্বাস্থ্যসহ অনেক খাতেই বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ব্যর্থ হয়ে থাকে। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, প্রয়োজন এবং অর্থ-উভয়ই থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পনার অভাবে টাকাগুলো অব্যবহৃত থাকে এবং জনস্বার্থ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তদুপরি প্রতি বছর নানা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থের যৌক্তিক ব্যয় অবহেলা করে দুর্নীতির খপ্পড়ে পড়তেও দেখা যাচ্ছে অনেক খাতকে কিন্তু সেই দুর্নীতি প্রতিরোধ বা দুর্নীতি যারা করছে তাদের শাস্তির আওতায় এনে টাকাগুলো উদ্ধারের কোন পথ নির্দেশ নেই।
করোনা প্রতিরোধের প্রচেষ্টার ব্যাপারে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত প্রভৃতি দেশ ও অঞ্চল করোনার তৃতীয় ধাক্কার প্রবল আশঙ্কার খবর জানাচ্ছে। তাই বাংলাদেশে সে ধাক্কা লাগবে না এমন ভাবার কোন কারণ নেই। সর্বাধিক প্রয়োজন বিনামূল্য শতভাগ মানুষের করোনা টেস্ট। দৈনিক ন্যূনতম ৫০,০০০ মানুষের নমুনা পরীক্ষা এবং তার সুযোগ সব জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ছাড়ানো। তা করতে পারলে প্রতিদিনকার প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা পাওয়া সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক করোনা টেস্টিং কিটস ও পিসিআর ল্যাব সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা, সব পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড, ডাক্তার, নার্স প্রভৃতির সঙ্গে অন্তত ১০/১২টি করে আইসিইউ বেড স্থাপন জরুরি। এগুলো করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কঠোরভাবে দুর্নীতিমুক্ত করা ও প্রয়োজনমত অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।
যে কোন উন্নত দেশে উন্নতির মূলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে সর্বজনীনভাবে দেয়ার বিষয়টিই প্রধান। আমরা তা না পারার আগেই পিছিয়ে পড়ছি। সুতরাং বিনামূল্যে বই এর চাইতে (এ ব্যবস্থা নেই পৃথিবীর কোথাও) বিমামূল্যে সর্বোচ্চ শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রয়োজন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দও বৃদ্ধি করা এবং স্বাস্থ্যবীমা চালু করার বিষয়টি ভাগ প্রয়োজন।
শিক্ষা খাত একটি মারাত্মক সংকটে নিপতিত আজ প্রায় দেড় বছর যাবৎ করোনা মহামারির কারণে। এ থেকে উত্তরণের জন্য অনলাইন বা টিভি চ্যানেলে শিক্ষাদানের উদ্যোগ সফল হয়নি। তেমনই সফল হয়নি অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ। প্রায় শতভাগ পরীক্ষার্থী অনলাইনে বই খুলে বসে পরীক্ষা দেয় বলে শিক্ষার্থী মহল থেকেই শুনেছি। তাই দ্রুত শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত-শিক্ষিকাদের শতভাগকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জুলাই ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরাপুরি চালু করা উচিত। সে কারণে বিভিন্ন উৎস থেকে এবং তার জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
বাজেটের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য দিক হলো- বিশাল অঙ্কের ঘাটতি এবং তা মেটানোর জন্যে বিদেশি সাহায্য ও ঋণের দ্বারস্থ হতে হবে। ফলে আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ার প্রত্যাশা এক অর্থহীন গ্রুপে পরিণত হবে, যা করা প্রয়োজন, দেশের নানা ক্ষেত্র থেকে অধিকতর অর্থ আহরণ করে ওই ঘাটতি মেটানো-তা হলেই মাত্র ওই বিশাল অঙ্কের ঘাটতির যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যেন।
খাতওয়ারি বরাদ্দের দিকে নজর দিলে দেখা যায়-জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১১.৫ ভাগ, পরিবহন ও যোগাযোগ ২৫.৮ ভাগ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ১৫.১ ভাগ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১৯.৭৫ ভাগ, কৃষি-৫.৬ ভাগ, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ ৩.০০ ভাগ এবং প্রতিরক্ষা ৫.৫ ভাগ, জন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ৪.৭ ভাগ এবং বিনোদন ও সংস্কৃতি ও ধর্ম ০.৮ ভাগ।
ই খাতওয়ারি বরাদ্দের দিকে তাকালে স্পষ্টতই ধরা পড়ে কৃষি খাত মারাত্মকভাবে অবহেলিত, শিল্প খাত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেই তবে বিদ্যমান। শিল্প কারখানার মালিকদের স্বার্থে কর-রেয়াতসহ নানা প্রণোদনা। ফলে বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ নেহায়েতই একটি স্বপ্নমাত্র। কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি এবং না পাওয়ার নিশ্চয়তা বিষয়ে বাজেটটি মৌল। ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ আপাত দৃষ্টিতে যথেষ্ট বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হলেও তা প্রয়োজন মেটাতে আদৌ সক্ষম হবে না। এক্ষেত্রে বেকারদের নামের তালিকা নির্ভূলভাবে প্রণয়ন এবং তাদের জন্য কমপক্ষে ১০,০০০ টাকা করে বেকার ভাতা চালু করাটা জরুরি।
সর্বাধিক প্রহসনমূলক বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে। প্রথমেই বলি, ধর্ম যেহেতু ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়-তাই সে বাবদে রাষ্ট্রের নিজ কাঁধে কোন দায়িত্ব গ্রহণ অসঙ্গত। এ ব্যাপারে ১৯৭২ এ বঙ্গবন্ধু প্রণীত মূল সংবিধান পথ প্রদর্শক হতে পারে।
থাকলো বিনোদন ও সংস্কৃতি। বরাদ্দ ০.৮ ভাগ। ফলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা ব্যতীত আর কিছু করার থাকবে না। আমাদের নৈতিক অধপতন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির যে সংকট তার পেছনে প্রধান কারণই হলো আমাদের সাংস্কৃতিক কমকা-ে অবহেলা। বাংলাদেশকে যে সম্ভাবনাময় অবস্থায় ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছিলাম-আজ সেখান থেকে পিছিয়ে পড়ার পেছনে প্রধানতম কারণ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আমাদের মারাত্মক অধপতন। তাই সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ কম পক্ষে ৩.০০ ভাগের উন্নীত করা প্রয়োজন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা বর্তমানে যা দেয়া হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নিরীখে তা তিনগুণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাজেট সেইভাবে অর্থ বরাদ্দ করার সুপারিশ করছি।
সর্বোপরি উৎপাদন খাতে ব্যয় কার্যত আদৌ বৃদ্ধি করা হয়েছে কিনা স্পষ্ট হয়নি। বন্ধ কল কারকানা চালু করা, নতুন নতুন শিল্পকারখানা রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপন, কৃষির ব্যাপক উন্নতি ব্যতিরেকে দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকারত্ব দূরীকরণ অসম্ভব। তাই বাজেটকে সেভাবে সংশোধন করা হোক-করা হোক জনমুখী।
[লেখক : সভাপতিম-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ]
raneshmaitra@gmail.com
রণেশ মৈত্র
সোমবার, ০৭ জুন ২০২১
জাতীয় সংসদে গত ৩ জুন তারিখে যে বিশাল আকারের বাজেট প্রস্তাব ২০২১-২২ তুলে ধরা হয়েছে তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। স্বাস্থ্যসহ অনেক খাতেই বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ব্যর্থ হয়ে থাকে। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, প্রয়োজন এবং অর্থ-উভয়ই থাকা সত্ত্বেও পরিকল্পনার অভাবে টাকাগুলো অব্যবহৃত থাকে এবং জনস্বার্থ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তদুপরি প্রতি বছর নানা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থের যৌক্তিক ব্যয় অবহেলা করে দুর্নীতির খপ্পড়ে পড়তেও দেখা যাচ্ছে অনেক খাতকে কিন্তু সেই দুর্নীতি প্রতিরোধ বা দুর্নীতি যারা করছে তাদের শাস্তির আওতায় এনে টাকাগুলো উদ্ধারের কোন পথ নির্দেশ নেই।
করোনা প্রতিরোধের প্রচেষ্টার ব্যাপারে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত প্রভৃতি দেশ ও অঞ্চল করোনার তৃতীয় ধাক্কার প্রবল আশঙ্কার খবর জানাচ্ছে। তাই বাংলাদেশে সে ধাক্কা লাগবে না এমন ভাবার কোন কারণ নেই। সর্বাধিক প্রয়োজন বিনামূল্য শতভাগ মানুষের করোনা টেস্ট। দৈনিক ন্যূনতম ৫০,০০০ মানুষের নমুনা পরীক্ষা এবং তার সুযোগ সব জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ছাড়ানো। তা করতে পারলে প্রতিদিনকার প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা পাওয়া সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক করোনা টেস্টিং কিটস ও পিসিআর ল্যাব সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা, সব পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড, ডাক্তার, নার্স প্রভৃতির সঙ্গে অন্তত ১০/১২টি করে আইসিইউ বেড স্থাপন জরুরি। এগুলো করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কঠোরভাবে দুর্নীতিমুক্ত করা ও প্রয়োজনমত অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।
যে কোন উন্নত দেশে উন্নতির মূলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে সর্বজনীনভাবে দেয়ার বিষয়টিই প্রধান। আমরা তা না পারার আগেই পিছিয়ে পড়ছি। সুতরাং বিনামূল্যে বই এর চাইতে (এ ব্যবস্থা নেই পৃথিবীর কোথাও) বিমামূল্যে সর্বোচ্চ শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রয়োজন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দও বৃদ্ধি করা এবং স্বাস্থ্যবীমা চালু করার বিষয়টি ভাগ প্রয়োজন।
শিক্ষা খাত একটি মারাত্মক সংকটে নিপতিত আজ প্রায় দেড় বছর যাবৎ করোনা মহামারির কারণে। এ থেকে উত্তরণের জন্য অনলাইন বা টিভি চ্যানেলে শিক্ষাদানের উদ্যোগ সফল হয়নি। তেমনই সফল হয়নি অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ। প্রায় শতভাগ পরীক্ষার্থী অনলাইনে বই খুলে বসে পরীক্ষা দেয় বলে শিক্ষার্থী মহল থেকেই শুনেছি। তাই দ্রুত শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত-শিক্ষিকাদের শতভাগকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জুলাই ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরাপুরি চালু করা উচিত। সে কারণে বিভিন্ন উৎস থেকে এবং তার জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
বাজেটের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য দিক হলো- বিশাল অঙ্কের ঘাটতি এবং তা মেটানোর জন্যে বিদেশি সাহায্য ও ঋণের দ্বারস্থ হতে হবে। ফলে আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ার প্রত্যাশা এক অর্থহীন গ্রুপে পরিণত হবে, যা করা প্রয়োজন, দেশের নানা ক্ষেত্র থেকে অধিকতর অর্থ আহরণ করে ওই ঘাটতি মেটানো-তা হলেই মাত্র ওই বিশাল অঙ্কের ঘাটতির যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যেন।
খাতওয়ারি বরাদ্দের দিকে নজর দিলে দেখা যায়-জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১১.৫ ভাগ, পরিবহন ও যোগাযোগ ২৫.৮ ভাগ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ১৫.১ ভাগ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১৯.৭৫ ভাগ, কৃষি-৫.৬ ভাগ, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ ৩.০০ ভাগ এবং প্রতিরক্ষা ৫.৫ ভাগ, জন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ৪.৭ ভাগ এবং বিনোদন ও সংস্কৃতি ও ধর্ম ০.৮ ভাগ।
ই খাতওয়ারি বরাদ্দের দিকে তাকালে স্পষ্টতই ধরা পড়ে কৃষি খাত মারাত্মকভাবে অবহেলিত, শিল্প খাত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেই তবে বিদ্যমান। শিল্প কারখানার মালিকদের স্বার্থে কর-রেয়াতসহ নানা প্রণোদনা। ফলে বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ নেহায়েতই একটি স্বপ্নমাত্র। কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি এবং না পাওয়ার নিশ্চয়তা বিষয়ে বাজেটটি মৌল। ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ আপাত দৃষ্টিতে যথেষ্ট বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হলেও তা প্রয়োজন মেটাতে আদৌ সক্ষম হবে না। এক্ষেত্রে বেকারদের নামের তালিকা নির্ভূলভাবে প্রণয়ন এবং তাদের জন্য কমপক্ষে ১০,০০০ টাকা করে বেকার ভাতা চালু করাটা জরুরি।
সর্বাধিক প্রহসনমূলক বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে। প্রথমেই বলি, ধর্ম যেহেতু ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়-তাই সে বাবদে রাষ্ট্রের নিজ কাঁধে কোন দায়িত্ব গ্রহণ অসঙ্গত। এ ব্যাপারে ১৯৭২ এ বঙ্গবন্ধু প্রণীত মূল সংবিধান পথ প্রদর্শক হতে পারে।
থাকলো বিনোদন ও সংস্কৃতি। বরাদ্দ ০.৮ ভাগ। ফলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা ব্যতীত আর কিছু করার থাকবে না। আমাদের নৈতিক অধপতন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির যে সংকট তার পেছনে প্রধান কারণই হলো আমাদের সাংস্কৃতিক কমকা-ে অবহেলা। বাংলাদেশকে যে সম্ভাবনাময় অবস্থায় ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছিলাম-আজ সেখান থেকে পিছিয়ে পড়ার পেছনে প্রধানতম কারণ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আমাদের মারাত্মক অধপতন। তাই সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ কম পক্ষে ৩.০০ ভাগের উন্নীত করা প্রয়োজন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা বর্তমানে যা দেয়া হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নিরীখে তা তিনগুণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাজেট সেইভাবে অর্থ বরাদ্দ করার সুপারিশ করছি।
সর্বোপরি উৎপাদন খাতে ব্যয় কার্যত আদৌ বৃদ্ধি করা হয়েছে কিনা স্পষ্ট হয়নি। বন্ধ কল কারকানা চালু করা, নতুন নতুন শিল্পকারখানা রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপন, কৃষির ব্যাপক উন্নতি ব্যতিরেকে দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকারত্ব দূরীকরণ অসম্ভব। তাই বাজেটকে সেভাবে সংশোধন করা হোক-করা হোক জনমুখী।
[লেখক : সভাপতিম-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ]
raneshmaitra@gmail.com