alt

উপ-সম্পাদকীয়

এ এম হারুন-অর-রশিদ

যিনি আমাদের পদার্থবিজ্ঞানের রূপ, রস, বর্ণ ও গন্ধ চিনিয়েছেন

মাহমুদ হোসেন

: শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর ২০২১
image

অধ্যাপক এ এম হারুন-অর-রশিদকে বাংলাদেশের একজন পথিকৃৎ পদার্থবিজ্ঞানী বলা যেতে পারে। তবে তার বিশেষত্ব ছিল অন্য জায়গায়। তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের সিরিয়াস বিষয়গুলো বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করেছিলেন বিষয়টির রূপ যথাযথভাবে বজায় রেখেই। তিনি বলতেন, “আজকের পদার্থবিজ্ঞান রূপ রস বর্ণ ও গন্ধের বিচিত্র বিমূর্ত ধারণা সম্ভার নিয়ে যে অনবদ্য কারুকার্যের সূচিশিল্প গড়ে তুলেছেতার পরিচয় দেয়া আমি আমার কর্তব্য বলে মনে করি”।

বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানের যুগ পাল্টে দেয়া সব ধারণা বিশেষ করে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান তাকে দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত করেছিল আর যা অন্যদের জানানোর তাগিদ তিনি অনুভব করতেন মনের গভীরে। তার ভাষায়, “পদার্থবিজ্ঞানের গত ষাট বছরের যুগান্তকারী কিছু ধারণা বাংলায় উপস্থিত করার ধারণা দুঃসাহসিক মনে হতে পারে। বিশেষত এমন এক দেশে যেখানে বিজ্ঞান এখনও আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের মধ্যে বন্দি”।

কিন্তু তিনি এদেশে বিজ্ঞানকে মুক্ত করতে চেয়েছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি বিজ্ঞানের আলো দেখতে চেয়েছেন। এটা সহজ ছিল না কারণ বিশেষত পদার্থবিজ্ঞানের ধারণাগুলো গণিতের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপরও মৌলিক বিজ্ঞানের গভীর বিষয়কে তিনি গভীরভাবেই উপস্থাপনের পক্ষপাতী ছিলেন। তাকে বেশি সহজ করে এর সত্যিকারের রূপ পাল্টাতে তিনি নারাজ ছিলেন। তার কথায়, “আমার ধারণা বিজ্ঞান বেশ কষ্ট করে শিখতে হয় এবং এ ব্যাপারে কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। রবীন্দ্রনাথ তার বিশ্বপরিচয় বইটি লিখেছিলেন বিজ্ঞানে যাদের দাঁত ওঠেনি তাদের জন্য। ৫০ বছর পরেও দন্তহীনদের প্রশ্রয় দেয়া আমি সঙ্গত বলে মনে করি না”।

বিজ্ঞান শিক্ষার যে কোন বিষয়ের ওপর অবরোধ আরোপের বিপক্ষে ছিলেন তিনি। তিনি বলতেন, বিবর্তনবাদ, মহাবিস্ফোরণতত্ত্ব, এগুলো হচ্ছে বিজ্ঞানের বুনিয়াদি ভিত্তি। কোমল বয়সেই যদি শিক্ষার্থীদের এসব জ্ঞান বিজ্ঞান গ্রহণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়, তাহলে এদেশে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা বিকশিত হওয়া কঠিন। দৈনিক সংবাদে তার অনেক বিজ্ঞানভিত্তিক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। সংবাদ সবসময়ই তার প্রিয় পত্রিকার তালিকায় ছিল।

১৯২৪-২৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বোস প্ল্যাংকের কোয়ান্টাম তত্ত্বের নির্ধারণের মধ্যে অসংগতি চিহিৃত করেন এবং তিনিই প্রথম কণা নির্ভর সঠিক নির্ধারণটি বের করেন। এই ঘটনা তাকে গর্বিত করত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলতেন, “ঢাকার সৌভাগ্য যে, শেষ পর্যন্ত সত্যেন বোসই কণা নির্ভর সঠিক নির্ধারণটি বের করেন”। তবে একইভাবে মনক্ষুণœ হতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন বসুর কোন স্মৃতিই রক্ষিত হয়নি এটা দেখে।

ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলতেন এটা তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়। তিনি ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। আর জীবনের বাকি সময়েও বাংলায় মৌলিক বিজ্ঞান পড়ানোর চেষ্টা তিনি করে গেছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে। যদিও তার কোন কিছুই তেমনভাবে প্রচারিত নয়। দারুণ প্রচারবিমুখ একজন মানুষ ছিলেন তিনি।

এএম হারুন-অর-রশিদ ১৯৯১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদানের জন্য একুশে পদকে ভূষিত হোন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোস প্রফেসর নিযুক্ত হন ১৯৯৩ সালে। এছাড়া ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদার্থবিদ হলেও রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল তার প্রিয় বিষয়। আমি বিষ্মিত হতাম যখন দেখতাম তিনি কি নিপুণ হাতে দক্ষ মিউজিক অর্গানাইজারের মতো পদার্থবিজ্ঞানের ধারণাকে রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সঙ্গে রিলেট করছেন। একটি প্রবন্ধ যেখানে তিনি বস্তুর বিবর্তনের আদি এবং অন্ত আলোচনা করছেন, সেটি তিনি শুরু করলেন যে লাইন দিয়ে সেটি রবীন্দ্রনাথের ‘চির নবীনতা’ প্রবন্ধ থেকে, “আজ এই যে দিনটি দেখা দিল একি আজকের?”

আর বিষয়টির বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার পর তিনি শেষ কথা বলছেন রবীন্দ্রনাথের একটি গানের লাইন দিয়ে

“কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে/ সে তো আজকে নয় সে আজকে নয়..”

এটা হচ্ছে দুই বিশাল ব্যাপ্তির দুজন মানুষের চিন্তার সফল মেলবন্ধন যদিও তারা দুজন দৃশ্যত ভিন্ন পথের পথিক। অধ্যাপক এ. এম. হারুন-অর-রশিদ এর মত একজন মহীরুহ চলে যাওয়ায় যে শুন্যতা তৈরি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।

তার লেখা উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিজ্ঞান ও দর্শন,পদার্থবিজ্ঞানে বিপ্লব, চিরায়ত বিদ্যুৎ বলবিজ্ঞান, আইনস্টাইন ও আপেক্ষিক তত্ত্ব, বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান, কম্পিউটারের কাহিনী; চিরায়ত বলবিজ্ঞান, গ্ল্যাসো-সালাম-ভাইনবার্গ তত্ত্ব, উপমহাদেশের কয়েকজন বিজ্ঞানী, আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের কয়েকজন স্রষ্টা, সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব ও বিশ্বসৃষ্টি, আধুনিক নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞান।

[লেখক : সাংবাদিক]

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

কমিশন কিংবা ভিজিটে জমি রেজিস্ট্রির আইনি বিধান ও প্রাসঙ্গিকতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

এ এম হারুন-অর-রশিদ

যিনি আমাদের পদার্থবিজ্ঞানের রূপ, রস, বর্ণ ও গন্ধ চিনিয়েছেন

মাহমুদ হোসেন

image

শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর ২০২১

অধ্যাপক এ এম হারুন-অর-রশিদকে বাংলাদেশের একজন পথিকৃৎ পদার্থবিজ্ঞানী বলা যেতে পারে। তবে তার বিশেষত্ব ছিল অন্য জায়গায়। তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের সিরিয়াস বিষয়গুলো বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করেছিলেন বিষয়টির রূপ যথাযথভাবে বজায় রেখেই। তিনি বলতেন, “আজকের পদার্থবিজ্ঞান রূপ রস বর্ণ ও গন্ধের বিচিত্র বিমূর্ত ধারণা সম্ভার নিয়ে যে অনবদ্য কারুকার্যের সূচিশিল্প গড়ে তুলেছেতার পরিচয় দেয়া আমি আমার কর্তব্য বলে মনে করি”।

বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানের যুগ পাল্টে দেয়া সব ধারণা বিশেষ করে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান তাকে দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত করেছিল আর যা অন্যদের জানানোর তাগিদ তিনি অনুভব করতেন মনের গভীরে। তার ভাষায়, “পদার্থবিজ্ঞানের গত ষাট বছরের যুগান্তকারী কিছু ধারণা বাংলায় উপস্থিত করার ধারণা দুঃসাহসিক মনে হতে পারে। বিশেষত এমন এক দেশে যেখানে বিজ্ঞান এখনও আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের মধ্যে বন্দি”।

কিন্তু তিনি এদেশে বিজ্ঞানকে মুক্ত করতে চেয়েছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি বিজ্ঞানের আলো দেখতে চেয়েছেন। এটা সহজ ছিল না কারণ বিশেষত পদার্থবিজ্ঞানের ধারণাগুলো গণিতের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপরও মৌলিক বিজ্ঞানের গভীর বিষয়কে তিনি গভীরভাবেই উপস্থাপনের পক্ষপাতী ছিলেন। তাকে বেশি সহজ করে এর সত্যিকারের রূপ পাল্টাতে তিনি নারাজ ছিলেন। তার কথায়, “আমার ধারণা বিজ্ঞান বেশ কষ্ট করে শিখতে হয় এবং এ ব্যাপারে কোন সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। রবীন্দ্রনাথ তার বিশ্বপরিচয় বইটি লিখেছিলেন বিজ্ঞানে যাদের দাঁত ওঠেনি তাদের জন্য। ৫০ বছর পরেও দন্তহীনদের প্রশ্রয় দেয়া আমি সঙ্গত বলে মনে করি না”।

বিজ্ঞান শিক্ষার যে কোন বিষয়ের ওপর অবরোধ আরোপের বিপক্ষে ছিলেন তিনি। তিনি বলতেন, বিবর্তনবাদ, মহাবিস্ফোরণতত্ত্ব, এগুলো হচ্ছে বিজ্ঞানের বুনিয়াদি ভিত্তি। কোমল বয়সেই যদি শিক্ষার্থীদের এসব জ্ঞান বিজ্ঞান গ্রহণ না করার পরামর্শ দেয়া হয়, তাহলে এদেশে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা বিকশিত হওয়া কঠিন। দৈনিক সংবাদে তার অনেক বিজ্ঞানভিত্তিক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। সংবাদ সবসময়ই তার প্রিয় পত্রিকার তালিকায় ছিল।

১৯২৪-২৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বোস প্ল্যাংকের কোয়ান্টাম তত্ত্বের নির্ধারণের মধ্যে অসংগতি চিহিৃত করেন এবং তিনিই প্রথম কণা নির্ভর সঠিক নির্ধারণটি বের করেন। এই ঘটনা তাকে গর্বিত করত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলতেন, “ঢাকার সৌভাগ্য যে, শেষ পর্যন্ত সত্যেন বোসই কণা নির্ভর সঠিক নির্ধারণটি বের করেন”। তবে একইভাবে মনক্ষুণœ হতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন বসুর কোন স্মৃতিই রক্ষিত হয়নি এটা দেখে।

ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বলতেন এটা তার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অধ্যায়। তিনি ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। আর জীবনের বাকি সময়েও বাংলায় মৌলিক বিজ্ঞান পড়ানোর চেষ্টা তিনি করে গেছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে। যদিও তার কোন কিছুই তেমনভাবে প্রচারিত নয়। দারুণ প্রচারবিমুখ একজন মানুষ ছিলেন তিনি।

এএম হারুন-অর-রশিদ ১৯৯১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদানের জন্য একুশে পদকে ভূষিত হোন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোস প্রফেসর নিযুক্ত হন ১৯৯৩ সালে। এছাড়া ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদার্থবিদ হলেও রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল তার প্রিয় বিষয়। আমি বিষ্মিত হতাম যখন দেখতাম তিনি কি নিপুণ হাতে দক্ষ মিউজিক অর্গানাইজারের মতো পদার্থবিজ্ঞানের ধারণাকে রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সঙ্গে রিলেট করছেন। একটি প্রবন্ধ যেখানে তিনি বস্তুর বিবর্তনের আদি এবং অন্ত আলোচনা করছেন, সেটি তিনি শুরু করলেন যে লাইন দিয়ে সেটি রবীন্দ্রনাথের ‘চির নবীনতা’ প্রবন্ধ থেকে, “আজ এই যে দিনটি দেখা দিল একি আজকের?”

আর বিষয়টির বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার পর তিনি শেষ কথা বলছেন রবীন্দ্রনাথের একটি গানের লাইন দিয়ে

“কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে/ সে তো আজকে নয় সে আজকে নয়..”

এটা হচ্ছে দুই বিশাল ব্যাপ্তির দুজন মানুষের চিন্তার সফল মেলবন্ধন যদিও তারা দুজন দৃশ্যত ভিন্ন পথের পথিক। অধ্যাপক এ. এম. হারুন-অর-রশিদ এর মত একজন মহীরুহ চলে যাওয়ায় যে শুন্যতা তৈরি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।

তার লেখা উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিজ্ঞান ও দর্শন,পদার্থবিজ্ঞানে বিপ্লব, চিরায়ত বিদ্যুৎ বলবিজ্ঞান, আইনস্টাইন ও আপেক্ষিক তত্ত্ব, বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান, কম্পিউটারের কাহিনী; চিরায়ত বলবিজ্ঞান, গ্ল্যাসো-সালাম-ভাইনবার্গ তত্ত্ব, উপমহাদেশের কয়েকজন বিজ্ঞানী, আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের কয়েকজন স্রষ্টা, সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব ও বিশ্বসৃষ্টি, আধুনিক নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞান।

[লেখক : সাংবাদিক]

back to top