alt

সাময়িকী

প্রিয় লোরকার উদ্দেশে

পাবলো নেরুদ

: বুধবার, ১৬ আগস্ট ২০২৩

মূল স্প্যানিশ থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ক্যালেব বেইসার্ট

ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন সোমনাথ চক্রবর্ত্তী

যদি ভয় পেয়ে নির্জন ঘরে চিৎকার করতে পারতাম,

যদি চোখ দুটো বের করে খেয়ে ফেলতে পারতাম,

তা নিশ্চয়ই করতাম তোমার কমলালেবুর মতো বিষাদময় কণ্ঠের জন্য

আর তোমার কবিতার জন্য যার জন্ম আর্তনাদের মতো।

কারণ তোমার জন্য তারা হাসপাতালগুলোকে লাল রঙে রাঙায়।

স্কুল আর স্প্যানিশবলা বসতিগুলো বেড়ে ওঠে

পরিপূর্ণ হয় আহত দেবদূতদের পালকে

আচ্ছাদিত হয় বিবাহোৎস ব্যবহৃত মাদেদের আঁশে,

আর সমুদ্রতলদেশের শজারুদের আকাশে ছুড়ে দেয়া হয়;

তোমার জন্যই দর্জির দোকান সজ্জিত হয়

রক্তে ঢাকা কালো পর্দায়,

তারা ছেঁড়া ফিতে গেলে, আর মেরে ফেলে চুমু খেয়ে,

এবং তারা সাদা পোশাক পরে।

যখন তুমি চলে যাও জাম-এর মতো,

যখন তুমি হাসো ঝড়-ওড়া চালের মতো,

যখন তুমি হাসো দাঁত আর নাড়ি

আর গলা ও আঙ্গুল কেঁপে ওঠে,

তুমি এত মিষ্টি তোমার জন্য মরতে পারি,

মরতে পারি সেই লাল রঙের দিঘির জন্য

যেখানে তুমি থাক হেমন্তের মাঝামাঝি

সাথে থাকে যুদ্ধ-পরাজিত ঘোড়া আর রক্ত-সিক্ত ঈশ্বর।

আমি মরতে পারি সেই জলমগ্ন করব খানাগুলোর জন্য

যা গভীর রাতে

চাপা ঘণ্টাধ্বনিব আড়ালে

ধূসর নদীর মতো উপেক্ষিত:

সেই নদীগুলো যা অসুস্থ সৈনিকের দলে

পুরু হয়ে ওঠে, ফুলেফেঁপে ওঠে

মৃত্যুর দিকে মর্মর প্রস্তর সুরে

আর শুকিয়ে যায় মালা শোকসূচক তেল রঙের মতো :

আমি মরতে পারি তোমাকে দেখে

যখন তুমি রাতে তাকিয়ে থাক রাশীকৃত ক্রুশের দিকে,

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদো তুমি,

কারণ তুমি মৃত্যুর নদীর সামনে কাঁদো

তুমি একা, আহত

তুমি কাঁদো আরো কাঁদো তোমার চোখ ভরে যায়

চোখের জলে, চোখের জলে, চোখের জলে।

যদি কোনো রাতে আশাহীন একা আমি

সঞ্চয় করতে পারি অনেক বিস্তৃতি, ছায়া আর ধূম

দাঁড়াতে পারি সব রেলপথ আর জলযানের ঊর্ধ্বে

সেই জলযান যা তার কালো ফানেল দিয়ে

চিবিয়ে ফেলে ছাই।

সেদিন রোপণ করি সেই বৃক্ষ সেখানে তুমি বেড়ে ওঠো

সেই সোনালি জলের বাসা তুমি সঞ্চয় করো,

আর দ্রাক্ষালতা তোমার হাড় ঢেকে দেয়

যা প্রকাশ করে রাতের গোপন রহস্য।

ভেজা পেঁয়াজের গন্ধে ঢাকা শহরগুলো

অপেক্ষা করে কখন তুমি চাপা স্বরে গেয়ে যাবে,

নিশ্চুপ ধার্য জাহাজ তোমাকে ধাওয়া করে,

আর সবুজ সোয়ালো পাখি তোমার চুলে বাসা করে,

আর বাসা বাঁধে ঝিনুক, সপ্তাহের সব কাজের দিনগুলো,

দুমড়ানো মাস্তুল আর চেরি ফলেরা

ভনভন করে ঘোরে

তোমার পনের চোখের মাথা

আর রক্তে ডোবা মুখ দেখে।

যদি শহরের সব হল ঘরগুলোতে ঝুলকালি ঘষে দিতে পারতাম

যদি ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ভাঙতে পারতাম সব ঘড়িগুলো,

তবে থাকতাম তোমার ভাঙা ঠোঁটওয়ালা বাড়িতে

দেখতাম কেমন করে গ্রীষ্ম আসে

একদল লোক আসে মৃত্যুর পোশাকে

আরো দেখি বিষাদমগ্ন দ্যুতির সমারোহ,

আরো আসে চষা মৃত আফিম গাছ

আর আসে সমাধিখনক আর আশ্বারোহীর দল

দেখি গ্রহপুঞ্জ আর রক্তে ভেজা মানচিত্র,

আর আসে একদল ছাইমাখা ডুবুরি,

আরো দেখি মুখোশ পরা পুরুষেরা যারা কুমারি মেয়েদের

টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়

লম্বা ছুরির সামনে দাঁড় করায় তাদের

আর আসে শেকড়, শিরা, হাসপাতাল

ঝরণা, পিঁপড়েরা

এর পর দেখি এক গভীর রাত উপস্থিত হয় সেই বিছানা সমেত

যেখানে এক অশ্বারোহী সৈনিক স্পাইডার ল্যাম্পের মাঝে মারা যায়,

আর দেখি এক ঘৃণা ভরা গোলাপ আর কাঁটা,

এর পর দেখি জাহাজ বোঝাই হলদে দ্রব্য সম্ভার,

এর পর আসে একটি ঝড়ো দিন সঙ্গে একটি শিশু,

এর পর আসি আমি সঙ্গে অলিভেরিও, নরা,

ভিসেন্তে আলেইকজান্দ্রে, দেলিয়া,

মাককা, মালভা মারিনা, মারিয়া লুইসা এবং লারকো,

লা রুবিয়া, রাফায়েল উগার্ডে

কোটাপস, রাফায়েল আলবের্তি,

কারলস, বেবে, ম্যানুয়েল, আরটোলা গুইরে,

মলিনারি,

রোসানেস, কনচা মেনভেজ

এবং আরো অনেককে ভুলে যাচ্ছি আমি।

তারা দেখে তুমি কতো সম্মানিত, স্বাস্থ্যবান যুবক

প্রজাপতির মতো, ফুটফুটে যুবক

কারো বিদ্যুৎ ঝলক চিরমুক্ত,

আলোপচারিতায় আমাদের মাঝে,

এখন যখন আমরা কেউ তীব্র আঘাতপ্রাপ্ত নই,

সহজ কথা বলি আমরা কেমন আছি আমি আর তুমি

কবিতার কাজ কী? কী-ই বা শিশির বিন্দুর?

কী বা কাব্যের কাজ যদি আজ রাতের জন্য না হয় কিছু

যখন কোনো তীক্ষ্ণ ছোরা আমাদের দিকে ধেয়ে আসে,

আমরা আজকের দিনের জন্য

এই গোধূলির এই ভাঙাচোরা গলির জন্য

যেখানে ক্ষতবিক্ষত হৃদয় মৃত্যুর প্রস্তুতি নেয়?

বিশেষত রাতের বেলায়

রাতে যখন অনেক তারা থাকে,

এক নদীর মধ্যে থাকে সব তারা

গরিব মানুষের বাড়ির জানলার পাশে রাখা

সুসজ্জিত ফিতের মতো।

কেউ খুন হয়েছে, হয়ত

তাদের অফিসের চাকরি খোয়া গেছে,

হাসপাতালে এলিভেটরের মধ্যে,

খনিতে

এবং তাদের কান্না সর্বত্র মানানসই

যখন তারারা চলে লম্বা নদী বরাবর

তখন জানলার পাশে দাঁড়ালে গভীর কান্না শোনা যায়,

দরজাগুলি জীর্ণ হয় কান্নায়,

শোয়ার ঘর কান্নায় ভিজে যায়

যা আসে ঢেউয়ের আকারে আর খেয়ে নেয় কার্পেট।

ফেদেরিকো

তুমি পৃথিবী দেখতে পাও, দেখ রাস্তাগুলোকে,

ভিনেগার

স্টেশনে জানানো বিদায় মুহূর্ত

যখন ধোঁয়া তুলে ধরে নিষ্পত্তিমূলক চাকা

নিয়ে যায় সেদিকে যেখানে কিছু নেই

আছে শুধু বিচ্ছেদ, পাথর, রেললাইন।

অনেক মানুষ আজ প্রশ্ন করতে চায়

সব জায়গাতেই।

আছে সেই রক্তাক্ত গন্ধ মানুষ, আর ওই রাগি লোকেরা আর

সেই হতাশ মানুষগুলো,

আর বেচারার দল, গাছের মত হাতের নখ,

আছে দস্যু পরশ্রীকাতর।

এই আমি বুঝি জীবনের ফেদেরিকো, এই আছে আমার,

আমার বন্ধুত্ব তোমার জন্য

যা দিতে পারি আমি এক বিষাদময় পুরুষালী মানুষ।

তুমি তো অনেক কিছুই জান তোমার সম্পর্কে এরই মধ্যে।

আর তুমি জেনে যাবে ওদের-ও ধীরে ধীরে।

ছবি

রবীন্দ্রসংগীত চর্চা, বাংলাদেশে-

শক্তিমান কবির কলমে গল্প

ছবি

শহীদুল হকের জীবন ও আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা

ছবি

জলবন্দী স্বপ্ন

সাময়িকী কবিতা

ছবি

কমল চক্রবর্তী, আদি ও অকৃত্রিম রিংমাস্টার

ছবি

নূরুল হক : আধুনিক মরমি কবি

ছবি

ও. হেনরি : ছোটগল্পের কালজয়ী অগ্রদূত

ছবি

নজরুল : বিশ্বতোরণে বৈজয়ন্তী মানব-বিজয়-কেতন

ছবি

নিছক সাজুর গল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

কবিতায় বিশ্বস্ত স্বর

ছবি

স্মৃতির আয়নাজুড়ে শহীদ ভাই

ছবি

ব্যক্তিগত শহীদ

ছবি

দূরের তারাটিকে

ছবি

একটি দুর্বিনীত নাশকতার অন্তিম চিৎকার

ছবি

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন

ছবি

ফিরবে না তা জানি

ছবি

ওবায়েদ আকাশের বাছাই ৩২ কবিতা

ছবি

‘অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে’

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

ছবি

দেহাবশেষ

ছবি

যাদুবাস্তবতা ও ইলিয়াসের যোগাযোগ

ছবি

বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা

ছবি

মিহির মুসাকীর কবিতা

ছবি

শুশ্রƒষার আশ্রয়ঘর

ছবি

সময়োত্তরের কবি

ছবি

নাট্যকার অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭৪

ছবি

মহত্ত্বম অনুভবে রবিউল হুসাইন

‘লাল গহনা’ উপন্যাসে বিষয়ের গভীরতা

ছবি

‘শৃঙ্খল মুক্তির জন্য কবিতা’

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

ছবি

মোহিত কামাল

ছবি

আশরাফ আহমদের কবিতা

ছবি

‘আমাদের সাহিত্যের আন্তর্জাতিকীকরণে আমাদেরই আগ্রহ নেই’

ছবি

ছোটগল্পের অনন্যস্বর হাসান আজিজুল হক

tab

সাময়িকী

প্রিয় লোরকার উদ্দেশে

পাবলো নেরুদ

বুধবার, ১৬ আগস্ট ২০২৩

মূল স্প্যানিশ থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ক্যালেব বেইসার্ট

ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন সোমনাথ চক্রবর্ত্তী

যদি ভয় পেয়ে নির্জন ঘরে চিৎকার করতে পারতাম,

যদি চোখ দুটো বের করে খেয়ে ফেলতে পারতাম,

তা নিশ্চয়ই করতাম তোমার কমলালেবুর মতো বিষাদময় কণ্ঠের জন্য

আর তোমার কবিতার জন্য যার জন্ম আর্তনাদের মতো।

কারণ তোমার জন্য তারা হাসপাতালগুলোকে লাল রঙে রাঙায়।

স্কুল আর স্প্যানিশবলা বসতিগুলো বেড়ে ওঠে

পরিপূর্ণ হয় আহত দেবদূতদের পালকে

আচ্ছাদিত হয় বিবাহোৎস ব্যবহৃত মাদেদের আঁশে,

আর সমুদ্রতলদেশের শজারুদের আকাশে ছুড়ে দেয়া হয়;

তোমার জন্যই দর্জির দোকান সজ্জিত হয়

রক্তে ঢাকা কালো পর্দায়,

তারা ছেঁড়া ফিতে গেলে, আর মেরে ফেলে চুমু খেয়ে,

এবং তারা সাদা পোশাক পরে।

যখন তুমি চলে যাও জাম-এর মতো,

যখন তুমি হাসো ঝড়-ওড়া চালের মতো,

যখন তুমি হাসো দাঁত আর নাড়ি

আর গলা ও আঙ্গুল কেঁপে ওঠে,

তুমি এত মিষ্টি তোমার জন্য মরতে পারি,

মরতে পারি সেই লাল রঙের দিঘির জন্য

যেখানে তুমি থাক হেমন্তের মাঝামাঝি

সাথে থাকে যুদ্ধ-পরাজিত ঘোড়া আর রক্ত-সিক্ত ঈশ্বর।

আমি মরতে পারি সেই জলমগ্ন করব খানাগুলোর জন্য

যা গভীর রাতে

চাপা ঘণ্টাধ্বনিব আড়ালে

ধূসর নদীর মতো উপেক্ষিত:

সেই নদীগুলো যা অসুস্থ সৈনিকের দলে

পুরু হয়ে ওঠে, ফুলেফেঁপে ওঠে

মৃত্যুর দিকে মর্মর প্রস্তর সুরে

আর শুকিয়ে যায় মালা শোকসূচক তেল রঙের মতো :

আমি মরতে পারি তোমাকে দেখে

যখন তুমি রাতে তাকিয়ে থাক রাশীকৃত ক্রুশের দিকে,

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদো তুমি,

কারণ তুমি মৃত্যুর নদীর সামনে কাঁদো

তুমি একা, আহত

তুমি কাঁদো আরো কাঁদো তোমার চোখ ভরে যায়

চোখের জলে, চোখের জলে, চোখের জলে।

যদি কোনো রাতে আশাহীন একা আমি

সঞ্চয় করতে পারি অনেক বিস্তৃতি, ছায়া আর ধূম

দাঁড়াতে পারি সব রেলপথ আর জলযানের ঊর্ধ্বে

সেই জলযান যা তার কালো ফানেল দিয়ে

চিবিয়ে ফেলে ছাই।

সেদিন রোপণ করি সেই বৃক্ষ সেখানে তুমি বেড়ে ওঠো

সেই সোনালি জলের বাসা তুমি সঞ্চয় করো,

আর দ্রাক্ষালতা তোমার হাড় ঢেকে দেয়

যা প্রকাশ করে রাতের গোপন রহস্য।

ভেজা পেঁয়াজের গন্ধে ঢাকা শহরগুলো

অপেক্ষা করে কখন তুমি চাপা স্বরে গেয়ে যাবে,

নিশ্চুপ ধার্য জাহাজ তোমাকে ধাওয়া করে,

আর সবুজ সোয়ালো পাখি তোমার চুলে বাসা করে,

আর বাসা বাঁধে ঝিনুক, সপ্তাহের সব কাজের দিনগুলো,

দুমড়ানো মাস্তুল আর চেরি ফলেরা

ভনভন করে ঘোরে

তোমার পনের চোখের মাথা

আর রক্তে ডোবা মুখ দেখে।

যদি শহরের সব হল ঘরগুলোতে ঝুলকালি ঘষে দিতে পারতাম

যদি ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ভাঙতে পারতাম সব ঘড়িগুলো,

তবে থাকতাম তোমার ভাঙা ঠোঁটওয়ালা বাড়িতে

দেখতাম কেমন করে গ্রীষ্ম আসে

একদল লোক আসে মৃত্যুর পোশাকে

আরো দেখি বিষাদমগ্ন দ্যুতির সমারোহ,

আরো আসে চষা মৃত আফিম গাছ

আর আসে সমাধিখনক আর আশ্বারোহীর দল

দেখি গ্রহপুঞ্জ আর রক্তে ভেজা মানচিত্র,

আর আসে একদল ছাইমাখা ডুবুরি,

আরো দেখি মুখোশ পরা পুরুষেরা যারা কুমারি মেয়েদের

টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়

লম্বা ছুরির সামনে দাঁড় করায় তাদের

আর আসে শেকড়, শিরা, হাসপাতাল

ঝরণা, পিঁপড়েরা

এর পর দেখি এক গভীর রাত উপস্থিত হয় সেই বিছানা সমেত

যেখানে এক অশ্বারোহী সৈনিক স্পাইডার ল্যাম্পের মাঝে মারা যায়,

আর দেখি এক ঘৃণা ভরা গোলাপ আর কাঁটা,

এর পর দেখি জাহাজ বোঝাই হলদে দ্রব্য সম্ভার,

এর পর আসে একটি ঝড়ো দিন সঙ্গে একটি শিশু,

এর পর আসি আমি সঙ্গে অলিভেরিও, নরা,

ভিসেন্তে আলেইকজান্দ্রে, দেলিয়া,

মাককা, মালভা মারিনা, মারিয়া লুইসা এবং লারকো,

লা রুবিয়া, রাফায়েল উগার্ডে

কোটাপস, রাফায়েল আলবের্তি,

কারলস, বেবে, ম্যানুয়েল, আরটোলা গুইরে,

মলিনারি,

রোসানেস, কনচা মেনভেজ

এবং আরো অনেককে ভুলে যাচ্ছি আমি।

তারা দেখে তুমি কতো সম্মানিত, স্বাস্থ্যবান যুবক

প্রজাপতির মতো, ফুটফুটে যুবক

কারো বিদ্যুৎ ঝলক চিরমুক্ত,

আলোপচারিতায় আমাদের মাঝে,

এখন যখন আমরা কেউ তীব্র আঘাতপ্রাপ্ত নই,

সহজ কথা বলি আমরা কেমন আছি আমি আর তুমি

কবিতার কাজ কী? কী-ই বা শিশির বিন্দুর?

কী বা কাব্যের কাজ যদি আজ রাতের জন্য না হয় কিছু

যখন কোনো তীক্ষ্ণ ছোরা আমাদের দিকে ধেয়ে আসে,

আমরা আজকের দিনের জন্য

এই গোধূলির এই ভাঙাচোরা গলির জন্য

যেখানে ক্ষতবিক্ষত হৃদয় মৃত্যুর প্রস্তুতি নেয়?

বিশেষত রাতের বেলায়

রাতে যখন অনেক তারা থাকে,

এক নদীর মধ্যে থাকে সব তারা

গরিব মানুষের বাড়ির জানলার পাশে রাখা

সুসজ্জিত ফিতের মতো।

কেউ খুন হয়েছে, হয়ত

তাদের অফিসের চাকরি খোয়া গেছে,

হাসপাতালে এলিভেটরের মধ্যে,

খনিতে

এবং তাদের কান্না সর্বত্র মানানসই

যখন তারারা চলে লম্বা নদী বরাবর

তখন জানলার পাশে দাঁড়ালে গভীর কান্না শোনা যায়,

দরজাগুলি জীর্ণ হয় কান্নায়,

শোয়ার ঘর কান্নায় ভিজে যায়

যা আসে ঢেউয়ের আকারে আর খেয়ে নেয় কার্পেট।

ফেদেরিকো

তুমি পৃথিবী দেখতে পাও, দেখ রাস্তাগুলোকে,

ভিনেগার

স্টেশনে জানানো বিদায় মুহূর্ত

যখন ধোঁয়া তুলে ধরে নিষ্পত্তিমূলক চাকা

নিয়ে যায় সেদিকে যেখানে কিছু নেই

আছে শুধু বিচ্ছেদ, পাথর, রেললাইন।

অনেক মানুষ আজ প্রশ্ন করতে চায়

সব জায়গাতেই।

আছে সেই রক্তাক্ত গন্ধ মানুষ, আর ওই রাগি লোকেরা আর

সেই হতাশ মানুষগুলো,

আর বেচারার দল, গাছের মত হাতের নখ,

আছে দস্যু পরশ্রীকাতর।

এই আমি বুঝি জীবনের ফেদেরিকো, এই আছে আমার,

আমার বন্ধুত্ব তোমার জন্য

যা দিতে পারি আমি এক বিষাদময় পুরুষালী মানুষ।

তুমি তো অনেক কিছুই জান তোমার সম্পর্কে এরই মধ্যে।

আর তুমি জেনে যাবে ওদের-ও ধীরে ধীরে।

back to top