অলৌকিক ঠুমরি
রাহমান ওয়াহিদ
কোথাও কোনো ওলোট-পালট নেই,
ভাঙচুর নেই,তবুও ভূতুড়ে প্রলয়ের
মাতম তুলে কারা যেন সব ভেতর বাড়ির
সব আসবাব,ফুলের বাসন,
খাটের তোষক,শোবার বালিশ, কলমদানি
তছনছ করে দিয়ে যায়।
কারা যেন সব খুব সন্তর্পণে অন্ধকার গোপন
কুঠরিতে দুর্বোধ্য রাগ-বিরাগে
অলৌকিক ঠুমরি বাজায়।
দৃশ্যত কোন ভাঙন নেই,ক্ষয় নেই
অমূর্ত অবয়বে তবু ভীষণ ধস নামে
ভালোবাসার মতো বৃষ্টি নামে
শিরিনের মতো কষ্ট নামে।
আর আমি ব্রাত্যজন অন্তরীক্ষে মাথা রেখে
অনস্পর্শীকে ডেকে ডেকে
নিরন্তর ভেঙে যাই,নুয়ে যাই,ক্ষয়ে যাই...।
জন্মান্ধ
গৌতম গুহ রায়
জন্মান্ধেরও ঘুম আসে, চোখের পাতা ওঠে নামে
স্বপ্ন আসে, রঙ্গিন ও দৃশ্যময়তার আধো ছায়া আধো আলো,
সেই কেবল দেখতে পায় ৩৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া হাওয়া মোরগ
ছুঁয়ে থাকা পালকের তাপ এবং পচে যাওয়া বাতাসের কটূ গন্ধ
দেবতার মতো মেঘের দরজা খুলে সে
মেঘের ওপারের দৈব বাগান দেখায়
তুমি এসব টের পাবে না,
পায়ে পায়ে ভিজে যাওয়া শিশির ও সবুজ ঘাস
পাখা মেলে উবে যাওয়া প্রজাপতি
রিক্ত মানুষের উবে যাওয়া কান্নার মতো
গভীর কালো দাগের কাঁধ, ওপারের মন্দাকিনী ও ব্যথার মিশ্রণ
জন্মান্ধের শরীরেও মায়ার গন্ধ লেগে থাকে
স্বপ্নের দাঁত ও নখ
হাসানাত লোকমান
শিশুটি, যার চোখে আমরা
নীলপরি দেখেছিলাম একদিন,
সে এখন দাঁতের কোণে
হিং¯্রতা ধার দেয়।
আমরা যাকে দিয়েছিলাম
পেন্সিলে আঁকা রঙিন ঘর,
সে তাতে আগুন লাগাতে শিখেছে।
আমরা জানতাম না
শীতল কুয়াশার ভেতর
আমাদের রোদগুলো হারিয়ে গেছে,
জানতাম না কলমের কালো কালি
কবে নীল ছাপার অনুমোদন হয়ে গেছে।
আমরা বুঝিনি-
ফাইলের ভাঁজে ভাঁজে
আসলে আমাদের শিরদাঁড়া রেখে এসেছি।
আমরা ‘আব্বা’ থেকে ‘ড্যাডি’ হয়ে
যেদিন উচ্চারণ ভুললাম,
সেদিনই ইতিহাসের খাতা
ছিঁড়ে ফেলেছিলো আমাদের ভবিষ্যৎ।
কেউ বোঝেনি,
আমাদের ঘরে পুষে রাখা স্বপ্নটি
আসলে এক ঘুমন্ত বাঘ।
সংখ্যাতত্ত্বউৎসর্গ : কথাসাহিত্যিক হামিম কামাল প্রীতিভাজনেষু
মতিন রায়হান
সংখ্যার হিসাব আজ তোলা থাক কালের শিকায়
আমি শুধু তোমাদের মনকে পড়তে চাই
খুব কি দ্বিধা খেলা করে সকাল-বিকাল?
লাল-সবুজের ভোর দেখলেই মাথা ঝিমঝিম করে?
যে প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকার
গহিন রাতেও তখন আলো হয়ে ফুটেছিল
বলতে পারি, সে ছিল এক জ্যোৎস্নাজ্বলা রাত!
এমন অগণন রাত সেদিন পাহারা বসিয়েছিল
সকল সীমান্তে
তোমরা দেখোনি সেসব দৃশ্য
তোমাদের চোখ সেদিন অন্ধ হয়ে পড়েছিল
নগরের নয়ানজুলিতে
কিলবিল করছিল নর্দমার কীটের মতো
সেসব দৃশ্য আমি দাঁড়িয়ে দেখেছি!
সংখ্যাতত্ত্বে আজ তেমন বিশ্বাস রাখি না
কারণ ইচ্ছে হলেই তা বদলে ফেলা যায়
এই নিয়ে তোলা যায় তুমুল তর্কও
তাই আমি প্রতিদিন পড়তে চাই
তোমাদের হৃদয়কাব্য
যেখানে আঁকা আছে একটি মাত্র ছবি
এ কা ত্ত র!
জীবনের মানচিত্রে অজানা নকশা
শেলী সেনগুপ্তা
জীবনের আলপথে জোনাক আলোয়
বিহঙ্গ ছায়ায় আলোকবর্ষ ছুটে চলা
শ্রমনিবিড় বিষণœ বিকেলে
দমকা হাওয়ায় স্বেদ ধোয়া পরশ
বিপন্ন গ্রীষ্মে কদম ফোটাতে বুকের জমিনে লাঙ্গন চষা
অসুর বধে দধিচী হওয়ার অলিখিত নির্দেশ-
জীবনের মানচিত্রে অজানা নকশা
অজান্তেই আঁকা হলো!
ধমনীতে বইয়ে দিয়ে বাঁচার বিপ্লব
পদরেখা চলে গেছে অনেক দূর,
আলোছায়ার মতো অঙ্গুলী
আজো ধরে আছি-
কঠিনের সাথে মিতালীর সাধ
অদম্য সাহস দিয়ে ছড়িয়ে দিলো পৃথিবীর পথে,
আজো চলছি, কাঁটার রথে
ফেরা দেখার ক্ষণেই চলার নির্দেশ
মনের আরশীতে প্রতিবিম্ব
আমার সুরে কথা বলে
যেতে হবে বহুদূর জীবনের প্রান্তে
দ্রাঘিমা রেখার ওপারে-
‘পদচিহ্ন রেখে যেতে’।
যার মতো জীবন খুঁজেছি
আমার ছায়া, আমাতেই যাকে পাই
বাবার মতো করে ভাবতে চাই।
তিনটি লিরিক
মোহাম্মদ আবদুল মাননান
এক
চোখে চোখ রেখে মুখ নিয়ে কানে
কী কথা বলবে, কী লাভ বলে!
কতো কথাই তো বলেছে অবলীলায়
তার সাথে মনে মনে ফোনে ফোনে।
দুই
কীভাবে ফেরাবে তারে
সেদিন ফিরিয়ে দিয়েছে যারে
মনের সাথে যুদ্ধ করে কী বাঁচা যায়
শুধুই রক্তক্ষরণ হয়- যন্ত্রণা বাড়ে।
তিন
ভাবনাগুলো মনের ভেতর ঝড়ের বেগে ছোটে
বলা তো হয় না কিছুই
বলতে যা চাই সেকথাটি ভাসে কেবল ঠোঁটে
আধেক ভাবি আধেক বুঝি বলা হয় না মুখ ফুটে।
ধানফুলের ইচ্ছেডানা
আদ্যনাথ ঘোষ
আর এভাবেই লিখতে হয় কবিতা।
যেমন লিখতে হয় পরাস্ত জীবনের ক্ষুধার আগুন,
ধানফুলের ডুবে যাওয়া সূর্য,
বুকের মধ্যে জমাট বাঁধা ঘোলাটে গুমোট,
জমে থাকা দীর্ঘশ^াস।
ফিরে দেখা গল্পের হাতপাখার দিনগুলো
আলগোছে ফেলে আসতে হয়,
বুকের ভেতরের ক্ষত আর ক্ষতি নিয়ে
কুমারীকালের লজ্জার মতোন।
ঠোঁটের চুম্বনের দগদগে ছ্যাকা নিয়ে,
যে সোনালি স্বপ্নের চন্দনফুল ফোটে
তার সাথে দুঃখের মিশ্রণে ফেটেই কি পড়ে
অন্ধকারের আয়োজিত ঘুম।
তবুও স্বপ্নগুলো ছুঁয়ে যায় আমার ইচ্ছেডানায়।
ঠাকুরস্পর্শ
বেনজির শিকদার
শতস্মৃতি ঘেরা সফেদ বাড়িটি প্রেমালু পরশে কাঁপে
প্রথম দেখায় পুড়ে গেল মন প্রণয়-প্রখর তাপে।
উত্তাপহীন অগ্নিদহনে নীরব নিথর ধোঁয়া;
এমন মরণে মরেছে ক’জন? ক্ষণিকের এই ছোঁয়া।
চারপাশে যত দেখি অবিরত, আপন আপন সবই
এখানে হেঁটেছে প্রাণের দোসর, ভালোবাসা-ব্রত কবি।
এখানে বসেছে চেয়ারের পাশে গাছের ছায়ার তলে;
কাব্য করেছে নাব্য প্রণয়ে- জীবনের যোগফলে।
যাপন কবিকে আপন করেছে, সময় দিয়েছে ভ্রম
এখানে ছিলেন, আজও যেন আছে কোথাও কবির দম।
অতি-ভাবনায় আর্দ্র এ মন, আরবানা-জুড়ে দেখি;
শিকাগো এসেও প্রাণ জুড়েছিল গতিময় লেখালেখি।
ঠাকুর যেখানে কবিতা সেখানে, শব্দের দোলাচলে;
মানুষ থাকে না স্মৃতি থেকে যায়, ইতিহাসঘেঁষা জলে।
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
অলৌকিক ঠুমরি
রাহমান ওয়াহিদ
কোথাও কোনো ওলোট-পালট নেই,
ভাঙচুর নেই,তবুও ভূতুড়ে প্রলয়ের
মাতম তুলে কারা যেন সব ভেতর বাড়ির
সব আসবাব,ফুলের বাসন,
খাটের তোষক,শোবার বালিশ, কলমদানি
তছনছ করে দিয়ে যায়।
কারা যেন সব খুব সন্তর্পণে অন্ধকার গোপন
কুঠরিতে দুর্বোধ্য রাগ-বিরাগে
অলৌকিক ঠুমরি বাজায়।
দৃশ্যত কোন ভাঙন নেই,ক্ষয় নেই
অমূর্ত অবয়বে তবু ভীষণ ধস নামে
ভালোবাসার মতো বৃষ্টি নামে
শিরিনের মতো কষ্ট নামে।
আর আমি ব্রাত্যজন অন্তরীক্ষে মাথা রেখে
অনস্পর্শীকে ডেকে ডেকে
নিরন্তর ভেঙে যাই,নুয়ে যাই,ক্ষয়ে যাই...।
জন্মান্ধ
গৌতম গুহ রায়
জন্মান্ধেরও ঘুম আসে, চোখের পাতা ওঠে নামে
স্বপ্ন আসে, রঙ্গিন ও দৃশ্যময়তার আধো ছায়া আধো আলো,
সেই কেবল দেখতে পায় ৩৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া হাওয়া মোরগ
ছুঁয়ে থাকা পালকের তাপ এবং পচে যাওয়া বাতাসের কটূ গন্ধ
দেবতার মতো মেঘের দরজা খুলে সে
মেঘের ওপারের দৈব বাগান দেখায়
তুমি এসব টের পাবে না,
পায়ে পায়ে ভিজে যাওয়া শিশির ও সবুজ ঘাস
পাখা মেলে উবে যাওয়া প্রজাপতি
রিক্ত মানুষের উবে যাওয়া কান্নার মতো
গভীর কালো দাগের কাঁধ, ওপারের মন্দাকিনী ও ব্যথার মিশ্রণ
জন্মান্ধের শরীরেও মায়ার গন্ধ লেগে থাকে
স্বপ্নের দাঁত ও নখ
হাসানাত লোকমান
শিশুটি, যার চোখে আমরা
নীলপরি দেখেছিলাম একদিন,
সে এখন দাঁতের কোণে
হিং¯্রতা ধার দেয়।
আমরা যাকে দিয়েছিলাম
পেন্সিলে আঁকা রঙিন ঘর,
সে তাতে আগুন লাগাতে শিখেছে।
আমরা জানতাম না
শীতল কুয়াশার ভেতর
আমাদের রোদগুলো হারিয়ে গেছে,
জানতাম না কলমের কালো কালি
কবে নীল ছাপার অনুমোদন হয়ে গেছে।
আমরা বুঝিনি-
ফাইলের ভাঁজে ভাঁজে
আসলে আমাদের শিরদাঁড়া রেখে এসেছি।
আমরা ‘আব্বা’ থেকে ‘ড্যাডি’ হয়ে
যেদিন উচ্চারণ ভুললাম,
সেদিনই ইতিহাসের খাতা
ছিঁড়ে ফেলেছিলো আমাদের ভবিষ্যৎ।
কেউ বোঝেনি,
আমাদের ঘরে পুষে রাখা স্বপ্নটি
আসলে এক ঘুমন্ত বাঘ।
সংখ্যাতত্ত্বউৎসর্গ : কথাসাহিত্যিক হামিম কামাল প্রীতিভাজনেষু
মতিন রায়হান
সংখ্যার হিসাব আজ তোলা থাক কালের শিকায়
আমি শুধু তোমাদের মনকে পড়তে চাই
খুব কি দ্বিধা খেলা করে সকাল-বিকাল?
লাল-সবুজের ভোর দেখলেই মাথা ঝিমঝিম করে?
যে প্রত্যয়দীপ্ত অঙ্গীকার
গহিন রাতেও তখন আলো হয়ে ফুটেছিল
বলতে পারি, সে ছিল এক জ্যোৎস্নাজ্বলা রাত!
এমন অগণন রাত সেদিন পাহারা বসিয়েছিল
সকল সীমান্তে
তোমরা দেখোনি সেসব দৃশ্য
তোমাদের চোখ সেদিন অন্ধ হয়ে পড়েছিল
নগরের নয়ানজুলিতে
কিলবিল করছিল নর্দমার কীটের মতো
সেসব দৃশ্য আমি দাঁড়িয়ে দেখেছি!
সংখ্যাতত্ত্বে আজ তেমন বিশ্বাস রাখি না
কারণ ইচ্ছে হলেই তা বদলে ফেলা যায়
এই নিয়ে তোলা যায় তুমুল তর্কও
তাই আমি প্রতিদিন পড়তে চাই
তোমাদের হৃদয়কাব্য
যেখানে আঁকা আছে একটি মাত্র ছবি
এ কা ত্ত র!
জীবনের মানচিত্রে অজানা নকশা
শেলী সেনগুপ্তা
জীবনের আলপথে জোনাক আলোয়
বিহঙ্গ ছায়ায় আলোকবর্ষ ছুটে চলা
শ্রমনিবিড় বিষণœ বিকেলে
দমকা হাওয়ায় স্বেদ ধোয়া পরশ
বিপন্ন গ্রীষ্মে কদম ফোটাতে বুকের জমিনে লাঙ্গন চষা
অসুর বধে দধিচী হওয়ার অলিখিত নির্দেশ-
জীবনের মানচিত্রে অজানা নকশা
অজান্তেই আঁকা হলো!
ধমনীতে বইয়ে দিয়ে বাঁচার বিপ্লব
পদরেখা চলে গেছে অনেক দূর,
আলোছায়ার মতো অঙ্গুলী
আজো ধরে আছি-
কঠিনের সাথে মিতালীর সাধ
অদম্য সাহস দিয়ে ছড়িয়ে দিলো পৃথিবীর পথে,
আজো চলছি, কাঁটার রথে
ফেরা দেখার ক্ষণেই চলার নির্দেশ
মনের আরশীতে প্রতিবিম্ব
আমার সুরে কথা বলে
যেতে হবে বহুদূর জীবনের প্রান্তে
দ্রাঘিমা রেখার ওপারে-
‘পদচিহ্ন রেখে যেতে’।
যার মতো জীবন খুঁজেছি
আমার ছায়া, আমাতেই যাকে পাই
বাবার মতো করে ভাবতে চাই।
তিনটি লিরিক
মোহাম্মদ আবদুল মাননান
এক
চোখে চোখ রেখে মুখ নিয়ে কানে
কী কথা বলবে, কী লাভ বলে!
কতো কথাই তো বলেছে অবলীলায়
তার সাথে মনে মনে ফোনে ফোনে।
দুই
কীভাবে ফেরাবে তারে
সেদিন ফিরিয়ে দিয়েছে যারে
মনের সাথে যুদ্ধ করে কী বাঁচা যায়
শুধুই রক্তক্ষরণ হয়- যন্ত্রণা বাড়ে।
তিন
ভাবনাগুলো মনের ভেতর ঝড়ের বেগে ছোটে
বলা তো হয় না কিছুই
বলতে যা চাই সেকথাটি ভাসে কেবল ঠোঁটে
আধেক ভাবি আধেক বুঝি বলা হয় না মুখ ফুটে।
ধানফুলের ইচ্ছেডানা
আদ্যনাথ ঘোষ
আর এভাবেই লিখতে হয় কবিতা।
যেমন লিখতে হয় পরাস্ত জীবনের ক্ষুধার আগুন,
ধানফুলের ডুবে যাওয়া সূর্য,
বুকের মধ্যে জমাট বাঁধা ঘোলাটে গুমোট,
জমে থাকা দীর্ঘশ^াস।
ফিরে দেখা গল্পের হাতপাখার দিনগুলো
আলগোছে ফেলে আসতে হয়,
বুকের ভেতরের ক্ষত আর ক্ষতি নিয়ে
কুমারীকালের লজ্জার মতোন।
ঠোঁটের চুম্বনের দগদগে ছ্যাকা নিয়ে,
যে সোনালি স্বপ্নের চন্দনফুল ফোটে
তার সাথে দুঃখের মিশ্রণে ফেটেই কি পড়ে
অন্ধকারের আয়োজিত ঘুম।
তবুও স্বপ্নগুলো ছুঁয়ে যায় আমার ইচ্ছেডানায়।
ঠাকুরস্পর্শ
বেনজির শিকদার
শতস্মৃতি ঘেরা সফেদ বাড়িটি প্রেমালু পরশে কাঁপে
প্রথম দেখায় পুড়ে গেল মন প্রণয়-প্রখর তাপে।
উত্তাপহীন অগ্নিদহনে নীরব নিথর ধোঁয়া;
এমন মরণে মরেছে ক’জন? ক্ষণিকের এই ছোঁয়া।
চারপাশে যত দেখি অবিরত, আপন আপন সবই
এখানে হেঁটেছে প্রাণের দোসর, ভালোবাসা-ব্রত কবি।
এখানে বসেছে চেয়ারের পাশে গাছের ছায়ার তলে;
কাব্য করেছে নাব্য প্রণয়ে- জীবনের যোগফলে।
যাপন কবিকে আপন করেছে, সময় দিয়েছে ভ্রম
এখানে ছিলেন, আজও যেন আছে কোথাও কবির দম।
অতি-ভাবনায় আর্দ্র এ মন, আরবানা-জুড়ে দেখি;
শিকাগো এসেও প্রাণ জুড়েছিল গতিময় লেখালেখি।
ঠাকুর যেখানে কবিতা সেখানে, শব্দের দোলাচলে;
মানুষ থাকে না স্মৃতি থেকে যায়, ইতিহাসঘেঁষা জলে।