alt

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চূর্ণকবিতা
শামীম আজাদ

শিখছি কেবল সরের নিচে

বার বার তাপ দেয়া

তাই আমাদের জমানো সরের

প্রতিবার গলে যাওয়া ॥

বুঝতে চাই না শুনতে চাই না

নিজের দুর্বলতা

তাই বার বার ফিরে আসে

আমাদের ব?্যর্থতা।

নদীতে নতজানু পলক ফেলছি

রোদজলে হাড় মাথা দাঁত পা

জলের জানালায় কে অপেক্ষায়

বুঝতে পারছি না!

ক্রন্দন,

তুমি কেনো পছন্দ করো

বেগুনী বেদনা থালা?

ক্লেদের সাবানে কেচে রাখা বিষ পুরানো অন্তর্জালা?

পথরেখা ঝাপসা ও সুদূর
হাসান হাফিজ
যে কবিতা লেখা হয়নি

তারও আছে অশ্রুপাত বেদনামন্থন

আছে অতৃপ্তির দাহ অচিকিৎস্য রোগ

সেসব তাড়িয়ে ফেরে আমাকেই সর্বক্ষণ

মুক্তি খুঁজতে চেয়ে আরো নাকাল বেদিশা হই

আরো বেশি শৃঙ্খলিত,আরো বেশি উন্মূল কাঙাল।

যে বিপ্লব আজো অব্দি অধরা দূরের

তারও কিন্তু রক্তপাত ক্ষরণ বেদনা আছে

মনোমাঝে সারাক্ষণই সংক্রমিত হয়

স্বৈরাচারী বিষদাঁত তাকেও কামড়ে ধরে

কৌশলীজুলুম থেকে রেহাই সে পাবে না পাবে না

আছে বাল্যবিবাহের অগ্নি পোড়াতুষ ধিকিধিকি

নারীর নিগ্রহ আর অসাম্যের অন্ধ আস্ফালন

বুর্জোয়া সামন্তখিদে বেড়ে চলে ক্রমাগত

গ্রাস করে ফেলতে চায় জনপদ আকাশ মৃত্তিকা

যে ঘুম আসেনি চোখে

কবে আসবে জানা নেই, আলামতও দৃশ্যমান নয়

তার জন্যে পথ চেয়ে থাকতে থাকতে

আয়ু জ্বেলে জীবনপ্রদীপ সলতে নিভু নিভু

অসমাপ্ত পথরেখা এভাবেই সুদূরে মিলায়।

ঝড়
পিন্টু ভৌমিক

ঝড়ের সমুদ্র দেখবে বলে কী নিগূঢ় প্রতীক্ষা তোমার!

দূর ভ্রমণের সংগীরা একা-একা কোথায় হারিয়ে গেলো...

পাখিদের এই চঞ্চলতা, কর্কশতা কী ভাঙন আভাস?

তোমার বুকের ভিতর একটা ঝড়-

আরেকটা ঝড়ের দিকে নিয়ে যায়।

এই অসংগত বিভাজনে তোমারো কোনো হাত ছিলো...

নীরবতার আড়ালে যত কথা, আমি তুলে রাখি সব।

আরো কিছু শোক পেরিয়ে গেলে-

লিখে যাবো একপ্রস্থ ঝড়ের সঙ্গোপন

জানালায় মেয়েটির মুখ রাতের সীমানা দেখে।

রেলের কামরায় হেলে পড়ে দূরপাল্লার ঘুম।

আমাদের ভুলগুলো পাড়ার মুখে...

পুরনো বাড়িটি আর অপমান নিতে পারে না।

এই ফিরে আসা; বহুদূর হেঁটে যাবার পর।

যৌবনের পাসওয়ার্ড
তোফায়েল তফাজ্জল
এখন তো চোখে রঙ, এক ঝাঁক কামনা-বাসনা

শেষ হতে না হতেই স্থলাভিষিক্তের পথে হাঁটে অন্য দল।

পাখির আবেগী কণ্ঠ থেকে নেমে আসা গানেরা সাঁতার কাটে

ঋতুরাজ চলতে থাকা বাতাস জড়িয়ে।

বৃক্ষে, ঘাস-বনে উঁকি দেয় নতুনত্ব

যা আকর্ষণীয় করে তোলে পরিবেশ;

বারুদে লাইটার জ্বলে ওঠা টের পায়

উঠতিদের শিরা-উপশিরা।

অনেকের জেগে ওঠা হার না মানা আকুতি

পাখা নাড়ে নীলে, এখানে ওখানে ঘোরে,

ফিরতে চায় না দিনের শেষ প্রহরেও।

আজকে তোমার থেকে এসব বিবর্ণ বা নেতিয়ে-

ঢুকতেই পারছে না হাঁ-বোধক সায় না দেয়ায় কালে।

বিপরীত চুম্বকেও কাছে টানতে ব্যর্থ

হারিয়ে যাওয়ায় যৌবনের পাসওয়ার্ড।

শঙ্কা
সাইয়্যিদ মঞ্জু
ঐ উপত্যকায় অনাদিকালের চাকা

যথারীতি পিষে যায় দুর্বল শরীর

জাতের বাকলে মোড়া পরিচয় পত্র

অথচ মানুষ দেখি মানুষের রক্ত খায়

আবহাওয়ায় কেন এতো উষ্ণবীণা

অবগত কি-না ফেরেশতা ই¯্রাফিল

পৃথিবীর চোখে শঙ্কা পারমাণবিক...

তবে-

কেয়ামত কার হাতে বুঝে নিতে হয়

বিকলাঙ্গ জন্ম মোড়লপনার খেল

হিরোশিমা- নাগাসাকি জ্বলে

জেরুজালেম প্রান্তর...

সাত সাগরের ঢেউ
হাশিম কিয়াম
বজ্রপাতের নীরবতায় ঘুমভাঙা শহরে

জলের রডে গেঁথে আছে মানুষের ক্লান্তি

বাস্তব স্বপ্নের ঝুলবারান্দায় নাচছে আলোকিত

ব্ল্যাকহোল

ভাতের হাঁড়ির ভেতর বাসর সাজিয়ে

একাকী অপেক্ষায় প্রাগৈতিহাসিক খিদে

আগুনের মানচিত্রে জমে বরফ হয়ে গেছে

তোমার স্বদেশ

বুনো আইফোনের স্ক্রিনে জ্বলছে

চিরহরিৎ বন

ঝড়ো স্লোগানে প্রকম্পিত আদর্শের ফুলকিতে

ছেয়ে গেছে ঘরহারা নদীর যৌবন

বিবশ প্রজ্ঞার ঝলকানিতে নিভে যাচ্ছে প্রস্ফুটিত

প্রাণের মেলা

তোমার শেষ আশ্রয় পুড়ে গেছে

ভাদরের বৃষ্টিতে

এই জনম কি তোমার প্রিয়ার হাতের তালুতে

নির্ভয়ে এঁকে দিতে পারবে সাত সাগরের ঢেউ?

তুমি, আমি ও মরা অজগর
শেলী সেনগুপ্তা
হঠাৎ বৃষ্টির তোড়ে

থেমে যাওয়া কথামালা

ভেসে গেছে জলের ¯্রােতে,

অনাকাক্সিক্ষত শর্ত মেনেও

খুঁজছি ঘরে ফেরাতে

দু’পায়ের দূরত্বে শুয়ে আছে মৃত অজগর

কথাদের শরীর চুঁইয়ে পড়া ক্লান্তির মতো

তুমুল বৃষ্টিতে ভিজেও পারে না

উত্তাপ ছড়াতে,

তুমি, আমি এমনকি মরা অজগরটিও

নাতিশীতোষ্ণ চেতনার প্রতীক!

অথচ সাধ হলো

এই বৃষ্টিতে নোঙ্গর ফেলার...

আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র
ফারজানা ফেরদৌস
আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র

একটি স্বাধীন দেশ স্বাধীন নাগরিক

স্বাধীন নিঃশ্বাস স্বাধীন প্রেমে মত্ত হতে দাও

আমি পুরুষ আমি নারী অথবা কোনোটিই নয়

আমাকে উল্লাস করতে দাও।

আমার অনন্ত নির্ভরতা চাই।

বুকের ভিতর উদার চিতিয়ে যে দাঁড়িয়ে থাকে

আঁকড়ে ধরে বন্ধনে, আমার শয্যা আমার স্বপ্নে

যার সবুজ পেলাব পৃষ্ঠ শুধু তার অধিকার তার

তন্ত্র আমার হাতে তুলে দাও।

আমার শূন্যতার ধ্বনি প্রতিধ্বনি, বাতাসের

ভাঙাচোরা বুকের ভিতর তোলপাড় যুদ্ধ, আর কত!

একটি কাক্সিক্ষত গোলাপে ঠোঁট রাখতে চাই।

দোয়েলের সাদা বুক, চড়–ইয়ের উন্মাদনা, কাকের

তৃষ্ণার্ত দুপুর, পুকুরে গাছের নীরব ছায়া, প্রজন্মের

বীজ ধান, লোনা ঘাম, ইলিশের চকচকে শরীর

শালিকের ঠোঁটে সূর্য দেখা এ সব আমাদের যুগল

প্রেমের ইতিবৃত্ত।

তোমাদের রাজমুকুট, মঞ্চের কৃত্রিম আলোতে তার

নির্লজ্জ হাহাকার, আলেখ্য লিখন আর কত!

আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র

সূর্য চিকিৎসায় সেরে উঠুক শ্বাসতন্ত্র

ছবি

আধুনিক বাংলা কবিতার একশ’ বছর

ছবি

বিশ্বসাহিত্যে এর প্রতিফলন

ছবি

মোজগান ফারামানেশ-এর কবিতা

ছবি

চোখ

ছবি

যোগফল শূন্য

ছবি

লাল লুঙ্গি

ছবি

শ্বেতা শতাব্দী এষের কবিতা

ছবি

বিপন্ন মানুষের মনোবাস্তবতার স্বরূপ

ছবি

দিনু বিল্লাহ: জীবনমরণের সীমানা ছাড়ায়ে

জেলার সিরিজ কবিতা

ছবি

লাল লুঙ্গি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

নির্মলেন্দু গুণের রাজনৈতিক বলয় অতিক্রমের ক্ষমতা

ছবি

কেরাসিন বাত্তি ও লালচুলা মেয়েটি

ছবি

তাঁর সমকালীনদের চোখে

ছবি

নিজের মতো করেই সঠিক পথটি বেছে নিতে হবে

ছবি

সুকান্ত ভট্টাচার্য: বহুচর্চিত, বহুপঠিত এক অনন্য কবি

ছবি

চিত্রাঙ্গদা: দ্বৈত সত্তার শিল্পস্মারক

ছবি

খালেদ হামিদীর দৌত্যে ওরহান পামুক

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মেঘলা আকাশ বৃষ্টি

ছবি

স্মৃতি ভদ্র

ছবি

হৃদয়রেখা

ছবি

সুরমা বুজি অথবা কাচপোকা

ছবি

শ্রাবণের জোছনায় হেসেছিল নার্গিস

ছবি

যোগাযোগ

ছবি

বাংলাদেশের স্বাপ্নিক কবি নজরুল

ছবি

ইলিয়াসের আশ্চর্য নিরীক্ষা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মাটি ও মানুষের কথক

ছবি

অনাবিল প্রাচুর্যে ঋদ্ধ নজরুল প্রতিভা

ছবি

নজরুল: চির-বিস্ময়

ছবি

জীবনের সাথে সংযোগ ঘটল কই

পোয়েমস দ্যাট কেম টু মি

ছবি

লালন ও রবীন্দ্রনাথ অন্তর্জগতের আলাপন

ছবি

বংশধারা

tab

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চূর্ণকবিতা
শামীম আজাদ

শিখছি কেবল সরের নিচে

বার বার তাপ দেয়া

তাই আমাদের জমানো সরের

প্রতিবার গলে যাওয়া ॥

বুঝতে চাই না শুনতে চাই না

নিজের দুর্বলতা

তাই বার বার ফিরে আসে

আমাদের ব?্যর্থতা।

নদীতে নতজানু পলক ফেলছি

রোদজলে হাড় মাথা দাঁত পা

জলের জানালায় কে অপেক্ষায়

বুঝতে পারছি না!

ক্রন্দন,

তুমি কেনো পছন্দ করো

বেগুনী বেদনা থালা?

ক্লেদের সাবানে কেচে রাখা বিষ পুরানো অন্তর্জালা?

পথরেখা ঝাপসা ও সুদূর
হাসান হাফিজ
যে কবিতা লেখা হয়নি

তারও আছে অশ্রুপাত বেদনামন্থন

আছে অতৃপ্তির দাহ অচিকিৎস্য রোগ

সেসব তাড়িয়ে ফেরে আমাকেই সর্বক্ষণ

মুক্তি খুঁজতে চেয়ে আরো নাকাল বেদিশা হই

আরো বেশি শৃঙ্খলিত,আরো বেশি উন্মূল কাঙাল।

যে বিপ্লব আজো অব্দি অধরা দূরের

তারও কিন্তু রক্তপাত ক্ষরণ বেদনা আছে

মনোমাঝে সারাক্ষণই সংক্রমিত হয়

স্বৈরাচারী বিষদাঁত তাকেও কামড়ে ধরে

কৌশলীজুলুম থেকে রেহাই সে পাবে না পাবে না

আছে বাল্যবিবাহের অগ্নি পোড়াতুষ ধিকিধিকি

নারীর নিগ্রহ আর অসাম্যের অন্ধ আস্ফালন

বুর্জোয়া সামন্তখিদে বেড়ে চলে ক্রমাগত

গ্রাস করে ফেলতে চায় জনপদ আকাশ মৃত্তিকা

যে ঘুম আসেনি চোখে

কবে আসবে জানা নেই, আলামতও দৃশ্যমান নয়

তার জন্যে পথ চেয়ে থাকতে থাকতে

আয়ু জ্বেলে জীবনপ্রদীপ সলতে নিভু নিভু

অসমাপ্ত পথরেখা এভাবেই সুদূরে মিলায়।

ঝড়
পিন্টু ভৌমিক

ঝড়ের সমুদ্র দেখবে বলে কী নিগূঢ় প্রতীক্ষা তোমার!

দূর ভ্রমণের সংগীরা একা-একা কোথায় হারিয়ে গেলো...

পাখিদের এই চঞ্চলতা, কর্কশতা কী ভাঙন আভাস?

তোমার বুকের ভিতর একটা ঝড়-

আরেকটা ঝড়ের দিকে নিয়ে যায়।

এই অসংগত বিভাজনে তোমারো কোনো হাত ছিলো...

নীরবতার আড়ালে যত কথা, আমি তুলে রাখি সব।

আরো কিছু শোক পেরিয়ে গেলে-

লিখে যাবো একপ্রস্থ ঝড়ের সঙ্গোপন

জানালায় মেয়েটির মুখ রাতের সীমানা দেখে।

রেলের কামরায় হেলে পড়ে দূরপাল্লার ঘুম।

আমাদের ভুলগুলো পাড়ার মুখে...

পুরনো বাড়িটি আর অপমান নিতে পারে না।

এই ফিরে আসা; বহুদূর হেঁটে যাবার পর।

যৌবনের পাসওয়ার্ড
তোফায়েল তফাজ্জল
এখন তো চোখে রঙ, এক ঝাঁক কামনা-বাসনা

শেষ হতে না হতেই স্থলাভিষিক্তের পথে হাঁটে অন্য দল।

পাখির আবেগী কণ্ঠ থেকে নেমে আসা গানেরা সাঁতার কাটে

ঋতুরাজ চলতে থাকা বাতাস জড়িয়ে।

বৃক্ষে, ঘাস-বনে উঁকি দেয় নতুনত্ব

যা আকর্ষণীয় করে তোলে পরিবেশ;

বারুদে লাইটার জ্বলে ওঠা টের পায়

উঠতিদের শিরা-উপশিরা।

অনেকের জেগে ওঠা হার না মানা আকুতি

পাখা নাড়ে নীলে, এখানে ওখানে ঘোরে,

ফিরতে চায় না দিনের শেষ প্রহরেও।

আজকে তোমার থেকে এসব বিবর্ণ বা নেতিয়ে-

ঢুকতেই পারছে না হাঁ-বোধক সায় না দেয়ায় কালে।

বিপরীত চুম্বকেও কাছে টানতে ব্যর্থ

হারিয়ে যাওয়ায় যৌবনের পাসওয়ার্ড।

শঙ্কা
সাইয়্যিদ মঞ্জু
ঐ উপত্যকায় অনাদিকালের চাকা

যথারীতি পিষে যায় দুর্বল শরীর

জাতের বাকলে মোড়া পরিচয় পত্র

অথচ মানুষ দেখি মানুষের রক্ত খায়

আবহাওয়ায় কেন এতো উষ্ণবীণা

অবগত কি-না ফেরেশতা ই¯্রাফিল

পৃথিবীর চোখে শঙ্কা পারমাণবিক...

তবে-

কেয়ামত কার হাতে বুঝে নিতে হয়

বিকলাঙ্গ জন্ম মোড়লপনার খেল

হিরোশিমা- নাগাসাকি জ্বলে

জেরুজালেম প্রান্তর...

সাত সাগরের ঢেউ
হাশিম কিয়াম
বজ্রপাতের নীরবতায় ঘুমভাঙা শহরে

জলের রডে গেঁথে আছে মানুষের ক্লান্তি

বাস্তব স্বপ্নের ঝুলবারান্দায় নাচছে আলোকিত

ব্ল্যাকহোল

ভাতের হাঁড়ির ভেতর বাসর সাজিয়ে

একাকী অপেক্ষায় প্রাগৈতিহাসিক খিদে

আগুনের মানচিত্রে জমে বরফ হয়ে গেছে

তোমার স্বদেশ

বুনো আইফোনের স্ক্রিনে জ্বলছে

চিরহরিৎ বন

ঝড়ো স্লোগানে প্রকম্পিত আদর্শের ফুলকিতে

ছেয়ে গেছে ঘরহারা নদীর যৌবন

বিবশ প্রজ্ঞার ঝলকানিতে নিভে যাচ্ছে প্রস্ফুটিত

প্রাণের মেলা

তোমার শেষ আশ্রয় পুড়ে গেছে

ভাদরের বৃষ্টিতে

এই জনম কি তোমার প্রিয়ার হাতের তালুতে

নির্ভয়ে এঁকে দিতে পারবে সাত সাগরের ঢেউ?

তুমি, আমি ও মরা অজগর
শেলী সেনগুপ্তা
হঠাৎ বৃষ্টির তোড়ে

থেমে যাওয়া কথামালা

ভেসে গেছে জলের ¯্রােতে,

অনাকাক্সিক্ষত শর্ত মেনেও

খুঁজছি ঘরে ফেরাতে

দু’পায়ের দূরত্বে শুয়ে আছে মৃত অজগর

কথাদের শরীর চুঁইয়ে পড়া ক্লান্তির মতো

তুমুল বৃষ্টিতে ভিজেও পারে না

উত্তাপ ছড়াতে,

তুমি, আমি এমনকি মরা অজগরটিও

নাতিশীতোষ্ণ চেতনার প্রতীক!

অথচ সাধ হলো

এই বৃষ্টিতে নোঙ্গর ফেলার...

আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র
ফারজানা ফেরদৌস
আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র

একটি স্বাধীন দেশ স্বাধীন নাগরিক

স্বাধীন নিঃশ্বাস স্বাধীন প্রেমে মত্ত হতে দাও

আমি পুরুষ আমি নারী অথবা কোনোটিই নয়

আমাকে উল্লাস করতে দাও।

আমার অনন্ত নির্ভরতা চাই।

বুকের ভিতর উদার চিতিয়ে যে দাঁড়িয়ে থাকে

আঁকড়ে ধরে বন্ধনে, আমার শয্যা আমার স্বপ্নে

যার সবুজ পেলাব পৃষ্ঠ শুধু তার অধিকার তার

তন্ত্র আমার হাতে তুলে দাও।

আমার শূন্যতার ধ্বনি প্রতিধ্বনি, বাতাসের

ভাঙাচোরা বুকের ভিতর তোলপাড় যুদ্ধ, আর কত!

একটি কাক্সিক্ষত গোলাপে ঠোঁট রাখতে চাই।

দোয়েলের সাদা বুক, চড়–ইয়ের উন্মাদনা, কাকের

তৃষ্ণার্ত দুপুর, পুকুরে গাছের নীরব ছায়া, প্রজন্মের

বীজ ধান, লোনা ঘাম, ইলিশের চকচকে শরীর

শালিকের ঠোঁটে সূর্য দেখা এ সব আমাদের যুগল

প্রেমের ইতিবৃত্ত।

তোমাদের রাজমুকুট, মঞ্চের কৃত্রিম আলোতে তার

নির্লজ্জ হাহাকার, আলেখ্য লিখন আর কত!

আমাদের হাতে তুলে দাও সাধারণতন্ত্র

সূর্য চিকিৎসায় সেরে উঠুক শ্বাসতন্ত্র

back to top