দামুড়হুদা : কার্পাসডাঙ্গা চুল প্রসেসিং সেন্টারে কাজ করছে নারীরা -সংবাদ
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে চুল প্রসেসিং সেন্টার গড়ে উঠায় স্বাবলম্বী হয়েছে বেকার যুবক যুবতীরা । গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক চুল প্রসেসিং সেন্টার। আর এসব সেন্টারে কাজ করে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পেয়েছে অনেক প্রতিবন্ধীসহ নারী-পুরুষ। চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে মেয়েদের মাথার পরিত্যক্ত চুলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক চুল প্রসেসিং সেন্টার। স্থানীয়ভাবে ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেয়েদের মাথার পরিত্যক্ত চুল ক্রয় করে এনে এসব সেন্টারে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রসেসিং করে বিদেশী বায়ারের কাছে বিক্রী করা হয়। এ সমস্ত প্রসেসিং সেন্টারে কাজ করে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে অনেকে। স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠা চুল প্রসেসিং সেন্টার গুলো দেখিয়েছে বেকার থেকে মুক্তি পাওয়ার নতুন পথ। চুল প্রসেসিং সেন্টার গুলো এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে ।
জানা গেছে, এক সময় উপজেলা বিভিন্ন চোরাইপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এ পরিত্যক্ত চুল পাচার হতো। ফেরিওয়ালারা মেয়েদের চুলের ক্লিপ, চিরনী, কাটা, ফিতা, কাঁচের চুড়ি, বেলুন, আইসক্রিম, বাদামভাজা ও বাচ্চাদের নানারকম খেলনার বিনিময়ে শহর এবং গ্রামের বাড়ী থেকে এ সমস্ত পরিত্যক্ত চুল সংগ্রহ করে গোপনে চোরাচালানীদের কাছে বিক্রি করত। চোরাচালানীরা সে সময় সীমান্ত পথে ভারতে পাচার করে রাতারাতি প্রচুর টাকার মালিক হয়ে যায়। দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে এ ব্যবসার। বিষয়টি ব্যাপক আকার ধারন করলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীদের হাতে এ চুলসহ ধরা পড়ে অনেকে। সে সময় চীন,জাপান,কোরিয়া মায়ানমার সহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা ভারত থেকে এসব চুল কিনে নিয়ে যেত। বিদেশীরা তখন জানতো না যে. এ চুলের একটি মোটা অংশ বাংলাদেশ থেকে চোরাইপথে ভারতে আসে। তারা ভারত থেকে বেশি দামে এসব চুল ক্রয় করে নিজ দেশে রফতানী করতো। এক পর্যায়ে তারা বাংলাদেশের কয়েকজন চুল ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ থেকেই তারা এ চুল আমদানি করবে। এর কিছুদিন পর তারা বাংলাদেশে এসে ভাল দাম দিয়ে এ চুল কিনতে শুরু করে। তখন থেকেই চোরাপথে ভারতে এ চুল পাচার বন্ধ হয়ে যায়। বৈধভাবে এ ব্যবসা শুরু হওয়ায় নতুন করে অনেকেই জড়িয়ে পড়ে এ ব্যবসার সঙ্গে।
চুল ব্যবসায়ী মোস্তাক বলেন,প্রথমে জট পাকানো পরিত্যক্ত এ চুল কিনে এনে সুঁচ বা কাঁটা দিয়ে জট ছাড়ানো হয়। এরপর প্রথমে হুইল পাউডার ও পরে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল ভাবে ধুয়ে রোদে শুকানো হয় এবং দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্যাকিং করে কেজি দরে বিক্রি হয়।
কার্পসডাঙ্গা হেয়ার প্রসেসিং সমিতির সভাপতি শহিদ বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে চীন, কোরিয়া, মায়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথেই এসব চুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে এসব চুল ক্যাপ তৈরি ও টাক মাথায় হেয়ার প্লান্টেশনসহ আরোও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি এ চুলের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সরকার এ ব্যবসার প্রতিকূলতা দুর করে ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে দেশের হাজার হাজার বেকার যুবক-যুবতী এ ব্যবসা করে পাল্টে দিতে পারে অর্থনৈতিক চালচিত্র।
দামুড়হুদা : কার্পাসডাঙ্গা চুল প্রসেসিং সেন্টারে কাজ করছে নারীরা -সংবাদ
রোববার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে চুল প্রসেসিং সেন্টার গড়ে উঠায় স্বাবলম্বী হয়েছে বেকার যুবক যুবতীরা । গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক চুল প্রসেসিং সেন্টার। আর এসব সেন্টারে কাজ করে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পেয়েছে অনেক প্রতিবন্ধীসহ নারী-পুরুষ। চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে মেয়েদের মাথার পরিত্যক্ত চুলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক চুল প্রসেসিং সেন্টার। স্থানীয়ভাবে ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মেয়েদের মাথার পরিত্যক্ত চুল ক্রয় করে এনে এসব সেন্টারে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রসেসিং করে বিদেশী বায়ারের কাছে বিক্রী করা হয়। এ সমস্ত প্রসেসিং সেন্টারে কাজ করে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে অনেকে। স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠা চুল প্রসেসিং সেন্টার গুলো দেখিয়েছে বেকার থেকে মুক্তি পাওয়ার নতুন পথ। চুল প্রসেসিং সেন্টার গুলো এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে ।
জানা গেছে, এক সময় উপজেলা বিভিন্ন চোরাইপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এ পরিত্যক্ত চুল পাচার হতো। ফেরিওয়ালারা মেয়েদের চুলের ক্লিপ, চিরনী, কাটা, ফিতা, কাঁচের চুড়ি, বেলুন, আইসক্রিম, বাদামভাজা ও বাচ্চাদের নানারকম খেলনার বিনিময়ে শহর এবং গ্রামের বাড়ী থেকে এ সমস্ত পরিত্যক্ত চুল সংগ্রহ করে গোপনে চোরাচালানীদের কাছে বিক্রি করত। চোরাচালানীরা সে সময় সীমান্ত পথে ভারতে পাচার করে রাতারাতি প্রচুর টাকার মালিক হয়ে যায়। দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে এ ব্যবসার। বিষয়টি ব্যাপক আকার ধারন করলে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীদের হাতে এ চুলসহ ধরা পড়ে অনেকে। সে সময় চীন,জাপান,কোরিয়া মায়ানমার সহ বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা ভারত থেকে এসব চুল কিনে নিয়ে যেত। বিদেশীরা তখন জানতো না যে. এ চুলের একটি মোটা অংশ বাংলাদেশ থেকে চোরাইপথে ভারতে আসে। তারা ভারত থেকে বেশি দামে এসব চুল ক্রয় করে নিজ দেশে রফতানী করতো। এক পর্যায়ে তারা বাংলাদেশের কয়েকজন চুল ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ থেকেই তারা এ চুল আমদানি করবে। এর কিছুদিন পর তারা বাংলাদেশে এসে ভাল দাম দিয়ে এ চুল কিনতে শুরু করে। তখন থেকেই চোরাপথে ভারতে এ চুল পাচার বন্ধ হয়ে যায়। বৈধভাবে এ ব্যবসা শুরু হওয়ায় নতুন করে অনেকেই জড়িয়ে পড়ে এ ব্যবসার সঙ্গে।
চুল ব্যবসায়ী মোস্তাক বলেন,প্রথমে জট পাকানো পরিত্যক্ত এ চুল কিনে এনে সুঁচ বা কাঁটা দিয়ে জট ছাড়ানো হয়। এরপর প্রথমে হুইল পাউডার ও পরে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল ভাবে ধুয়ে রোদে শুকানো হয় এবং দৈর্ঘ্য অনুযায়ী প্যাকিং করে কেজি দরে বিক্রি হয়।
কার্পসডাঙ্গা হেয়ার প্রসেসিং সমিতির সভাপতি শহিদ বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে চীন, কোরিয়া, মায়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথেই এসব চুল কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে এসব চুল ক্যাপ তৈরি ও টাক মাথায় হেয়ার প্লান্টেশনসহ আরোও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি এ চুলের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সরকার এ ব্যবসার প্রতিকূলতা দুর করে ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে দেশের হাজার হাজার বেকার যুবক-যুবতী এ ব্যবসা করে পাল্টে দিতে পারে অর্থনৈতিক চালচিত্র।