alt

সারাদেশ

তানোরে ভূগ্রাসীচক্রের কৌশলে কমছে ফসলি জমি পরিমাণ

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী : বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

রাজশাহী : নির্বিচারে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে -সংবাদ

রাজশাহীর তানোর উপজেলার অর্থনীতি প্রায় সম্পুর্ণ কৃষি নির্ভর। তবে নির্বিচারে ফসলি জমি নষ্টের কারণে খাদ্য উদ্বৃত উপজেলায় খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসী চক্রের কৌশলের কাছে পরাস্থ হয়ে কৃষি জমির মালিকেরা অনেকটা বাধ্য হয়ে তাদের আবাদি জমিতে পুকুর খনন করতে দিচ্ছে। প্রভাবশালীরা প্রথমে বিস্তীর্ণ ফসলি জমির মধ্যে যে জমিতে ফসল উৎপাদন তুলনামূলক কম হয় ওই জমিতে কৌশলে পুকুর করা শুরু করে। এর পর ওই পুকুরের কারণে আশপাশের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন ওই সব জমির মালিকেরা ফসল উৎপাদনে লোকশানে পড়ে। এতে তারা তাদের আবাদি জমি প্রভাবশালী ওই পুকুর খননকারীকে লীজ দিয়ে দিতে বাধ্য হয়। উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপির বেড়লপাড়া, জুড়ানপুর, হাড়দহ, রাতৈল, কামাগাঁ ইউপির হাতিশাইল নিজামপুর, তানোর পৌরসভার মাসিন্দা মাঠ এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুকুর খননকারী বলেন, সকলকে ম্যানেজ করতে বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করলেই অনায়াসে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা যায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, রাজশাহী জেলায় গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ হেক্টর (প্রায় ২ হাজার ৪০০ বিঘা) এবং গত কয়েক বছরে প্রায় ১৭ হাজার ২৪৬ একর ফসলি জমি কমেছে। এ পরিমাণ জমি জেলার মোট আবাদযোগ্য ফসলি জমির এক-তৃতীয়াংশ। এসব জমির বড় অংশই গেছে অবৈধ পুকুরের পেটে। এছাড়াও যত্রতত্র কল-কারখানা, বসতভিটা বা গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। তানোরে বিগত ১০ বছরে প্রায় ১০ হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন হয়েছে এবং কলকারখানা, হিমাগার ও আবাসিক ভবনের কারণে আরো বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি নষ্ট হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তানোর-মুন্ডুমালা রাস্তার ধারে বিএমডিএ’র গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায়, আন্ডারগ্রাউন্ড সেচনালা ভেঙ্গে ও জমির শ্রেণী পরিবর্তন না করে, চার ফসলি কৃষি জমিতে কোল্ড স্টোর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ ফসলি নস্ট হচ্ছে। যার প্রভাব পড়বে খাদ্য উৎপাদনে।

স্থানীয়রা জানান, শিল্পায়ন হোক সেটা তারাও চাই, তবে ভাতের থালায় লাথি দিয়ে নয়। অর্থাৎ ফসলি জমি নষ্ট করে নয়, পতিত বা এক ফসলি জমিতে করা হোক। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে ফসলী জমি নষ্ট করে কোনো কিছুই করা যাবে না।

স্থানীয় ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, উপজেলায় বিগত ১০-১৫ বছরে কমপক্ষে দশ হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু জমির শ্রেণী পরিবর্তন না হওয়ায় কৃষি জমির খাজনা নিতে হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ কৃষি জমি প্রতি শতকে খাজনা মাত্র ২ টাকা এবং পুকুরের প্রতি শতকে খাজনা ৬০ টাকা। তিনি বলেন, প্রশাসন ও মিডিয়া ম্যানেজ করেই কৃষি জমিতে এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, কৃষি জমিতে পুকুর খনন প্রতিরোধ করা উপজেলা প্রশাসনের কাজ। এ বিষয়ে তানোর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) ইমান আলী জানান, জমির শ্রেণী পরিবর্তন না হলে কিছুই করনীয় নাই। কৃষি জমিতে পুকুর হলেও শ্রেণী পরিবর্তন না হওয়ায় ২ টাকা শতক হিসেবে খাজনা নিতে হয়। এক শতকে ৫৮ টাকা গচ্ছা। তবে কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে, নতুন ভাবে রেকর্ড না হওয়া পর্যন্ত এনিয়মেই খাজনা আদায় হবে বলে মনে হচ্ছে।

ছবি

অভয়নগরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মতুয়া সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি হস্তান্তর

ছবি

গোপালগঞ্জে এনসিপি কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা, সেনা-পুলিশ টহল

ছবি

রহিম উদ্দিন সিকদার হত্যা: বিএনপির অভিযোগে ‘জামায়াত নেতা’র নাম, জামায়াতের অস্বীকার

দুর্যোগের সময় ভুল তথ্য ঠেকাতে টিকটকের নতুন টুল

চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়র গ্রেপ্তার

জয়পুরহাট নার্সিং ইনস্টিটিউটে অগ্নিকা-, দুই দিনের ছুটি

ট্রাকের ধাক্কায় বাইকচালক নিহত

ছবি

পানের দামে ধস, বিপাকে চাষিরা

মহেশপুরের দত্তনগর হাই স্কুলের মালামাল চুরি

পাদুকা শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগে কারখানা মালিক গ্রেপ্তার

ছবি

সিরাজগঞ্জ সালেহা ইসহাক সরকারি বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় প্রতিনিয়ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ

ভালুকায় চাঞ্চল্যকর ৩ খুনের আসামি গ্রেপ্তার

মহেশপুরে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ

ছবি

৩৪ ভারতীয় জেলেকে কারাগারে প্রেরণ

চুয়াডাঙ্গায় দুটি হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি

ফকিরহাট ফলতিতা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

ছবি

বরুড়ায় মিনি শিশু পার্ক, উচ্ছ্বসিত শিশুরা

শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় ৫৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা

কলমাকান্দায় ক্ষতিপূরণ পেল নার্সারি মালিকরা

ছবি

ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত কুষ্টিয়া শহর, দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি

ঈশ্বরগঞ্জে চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ

ছবি

দুমকিতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো থাকলেও নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী

রায়গঞ্জে ৪৩টি গরু চুরি, আতঙ্কে কৃষক-খামারিরা

ছবি

হামলা, অগ্নিসংযোগ ও গুলি: গোপালগঞ্জে উত্তপ্ত এনসিপির সমাবেশ

ছবি

মোহনগঞ্জের পাটের দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষক

ভারতে আটক ৪ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

২১ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না শাহিনের

চাঁদপুরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ

ছবি

কালীগঞ্জে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কে পানি, ভোগান্তিতে ৫০ গ্রামের মানুষ

জুলাই শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা

পাথরঘাটায় শিক্ষকের পিটুনিতে দ্বিতীয় শ্রেণীর ৫ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

ছবি

বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

পদ আছে দুই শিক্ষকের নেয়া হয়েছে তৃতীয় শিক্ষক

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমাতে ঐক্যবদ্ধ আলোচনার ওপর জোর দিলেন আমীর খসরু

বাউয়েটে ছয় দিনব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন

tab

সারাদেশ

তানোরে ভূগ্রাসীচক্রের কৌশলে কমছে ফসলি জমি পরিমাণ

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

রাজশাহী : নির্বিচারে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে -সংবাদ

বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

রাজশাহীর তানোর উপজেলার অর্থনীতি প্রায় সম্পুর্ণ কৃষি নির্ভর। তবে নির্বিচারে ফসলি জমি নষ্টের কারণে খাদ্য উদ্বৃত উপজেলায় খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসী চক্রের কৌশলের কাছে পরাস্থ হয়ে কৃষি জমির মালিকেরা অনেকটা বাধ্য হয়ে তাদের আবাদি জমিতে পুকুর খনন করতে দিচ্ছে। প্রভাবশালীরা প্রথমে বিস্তীর্ণ ফসলি জমির মধ্যে যে জমিতে ফসল উৎপাদন তুলনামূলক কম হয় ওই জমিতে কৌশলে পুকুর করা শুরু করে। এর পর ওই পুকুরের কারণে আশপাশের জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন ওই সব জমির মালিকেরা ফসল উৎপাদনে লোকশানে পড়ে। এতে তারা তাদের আবাদি জমি প্রভাবশালী ওই পুকুর খননকারীকে লীজ দিয়ে দিতে বাধ্য হয়। উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউপির বেড়লপাড়া, জুড়ানপুর, হাড়দহ, রাতৈল, কামাগাঁ ইউপির হাতিশাইল নিজামপুর, তানোর পৌরসভার মাসিন্দা মাঠ এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুকুর খননকারী বলেন, সকলকে ম্যানেজ করতে বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করলেই অনায়াসে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা যায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, রাজশাহী জেলায় গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ হেক্টর (প্রায় ২ হাজার ৪০০ বিঘা) এবং গত কয়েক বছরে প্রায় ১৭ হাজার ২৪৬ একর ফসলি জমি কমেছে। এ পরিমাণ জমি জেলার মোট আবাদযোগ্য ফসলি জমির এক-তৃতীয়াংশ। এসব জমির বড় অংশই গেছে অবৈধ পুকুরের পেটে। এছাড়াও যত্রতত্র কল-কারখানা, বসতভিটা বা গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। তানোরে বিগত ১০ বছরে প্রায় ১০ হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন হয়েছে এবং কলকারখানা, হিমাগার ও আবাসিক ভবনের কারণে আরো বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি নষ্ট হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তানোর-মুন্ডুমালা রাস্তার ধারে বিএমডিএ’র গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায়, আন্ডারগ্রাউন্ড সেচনালা ভেঙ্গে ও জমির শ্রেণী পরিবর্তন না করে, চার ফসলি কৃষি জমিতে কোল্ড স্টোর নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ ফসলি নস্ট হচ্ছে। যার প্রভাব পড়বে খাদ্য উৎপাদনে।

স্থানীয়রা জানান, শিল্পায়ন হোক সেটা তারাও চাই, তবে ভাতের থালায় লাথি দিয়ে নয়। অর্থাৎ ফসলি জমি নষ্ট করে নয়, পতিত বা এক ফসলি জমিতে করা হোক। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে ফসলী জমি নষ্ট করে কোনো কিছুই করা যাবে না।

স্থানীয় ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, উপজেলায় বিগত ১০-১৫ বছরে কমপক্ষে দশ হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু জমির শ্রেণী পরিবর্তন না হওয়ায় কৃষি জমির খাজনা নিতে হচ্ছে। এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ কৃষি জমি প্রতি শতকে খাজনা মাত্র ২ টাকা এবং পুকুরের প্রতি শতকে খাজনা ৬০ টাকা। তিনি বলেন, প্রশাসন ও মিডিয়া ম্যানেজ করেই কৃষি জমিতে এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, কৃষি জমিতে পুকুর খনন প্রতিরোধ করা উপজেলা প্রশাসনের কাজ। এ বিষয়ে তানোর ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (তহসিলদার) ইমান আলী জানান, জমির শ্রেণী পরিবর্তন না হলে কিছুই করনীয় নাই। কৃষি জমিতে পুকুর হলেও শ্রেণী পরিবর্তন না হওয়ায় ২ টাকা শতক হিসেবে খাজনা নিতে হয়। এক শতকে ৫৮ টাকা গচ্ছা। তবে কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে, নতুন ভাবে রেকর্ড না হওয়া পর্যন্ত এনিয়মেই খাজনা আদায় হবে বলে মনে হচ্ছে।

back to top