আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে মাটির দ্বিতল বাড়ি -সংবাদ
বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি। নতুন করে এখন আর কেউ মাটির বাড়ি তৈরি করছে না। অনেকেই মাটির বাড়ি ভেঙে ইটের তৈরি ছাদ ঢালাই বাড়ি নির্মাণ করছেন। গ্রামের মানুষের ধারনা আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তির নীড় এই মাটির বাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। এসব মানুষের জন্য প্রায় ৭০ হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার মাটি এটেল হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলের মানুষ মাটির তৈরি বাড়ি তৈরি নির্মাণ করে আসছেন। ৭০ দশক থেকে এক তলা মাটির বাড়ির পাশাপশি এই উপজেলায় দ্বিতল মাটির বাড়ি তৈরি শুরু হয়। মাটির বাড়ি তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর কারিগর ছিল। এসব বাড়ি বানাতে যারা অবদান রাখতেন তাদের দেওয়ালি নামে ডাকা হতো। তারা তারা প্রতি হাত দেওয়াল নির্মাণের জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দিত। শোভা বর্ধনের জন্য বাড়ির দেওয়ালের উপরে বিভিন্ন আলপনা আঁকা হতো। এখন এলাকায় অনেক আলপনা আঁকানো এক তলা ও দ্বিতল মাটির বাড়ি দেখা মেলে। এসব বাড়ির ছাউনির জন্য খড় ওটিন ব্যবহার করা হতো যা দেখেই পরিবারের সম্ভ্রান্ততা যাচাই করা হতো। কেউবা খোলা বা টালি নামের সামগ্রী দিয়ে ছাউনী দিত। সে সময় বিদ্যুৎতের ব্যবহার তেমন একটা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই এলাকার বিপুল জনগোষ্টি মধ্যপ্রাচ্যেসহ বিদেশে পাড়ি জমান। সেই সুবাদে প্রবাসী পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রবাসে বসবাসকারী মানুষের বাড়ি ইটের তৈরি। এ ছাড়া ১৯৯৫ সালে এই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার কারণে বেশিরভাগ মাটির তৈরি বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরে ভেঙ্গে পড়া বাড়ির মালিকরা আর মাটির বাড়ি তৈরি না করে পাকা ও আধাপাকা ইটের বাড়ি তৈরি করেন। উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন গ্রামে তৈরি করেছেন বিকেল আকারের তিনতলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি। বেলাল হোসেন বলেন, তার দুই ছেলে ও এক জামাই বিদেশ রয়েছেন। তাদের আয়ের টাকা দিয়েই এই বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ি তৈরির পাশাপশি মাঠে ফসলের কিছু পরিমাণ ফসলি জমিও কিনেছি। তিনি বলেন, তার গ্রামে প্রায় ৬০ ভাগ পরিবার ইটের তৈরি একতলা ও বহুতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উপজেলার প্রসাদখালি গ্রামের মাটির বাড়ি তৈরির কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার এখন সান্তাহার পৌর শহরে নিজেই বিকেল আকারের পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তার ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে তার আগের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। মাটির বাড়ি তৈরির কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান গ্রামের মানুষ এখন আর মাটির বাড়ি তৈরি করেন না এ কারণে এই পেশায় আর কাউকে পাওয়া যায় না।
আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে মাটির দ্বিতল বাড়ি -সংবাদ
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি। নতুন করে এখন আর কেউ মাটির বাড়ি তৈরি করছে না। অনেকেই মাটির বাড়ি ভেঙে ইটের তৈরি ছাদ ঢালাই বাড়ি নির্মাণ করছেন। গ্রামের মানুষের ধারনা আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তির নীড় এই মাটির বাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। এসব মানুষের জন্য প্রায় ৭০ হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার মাটি এটেল হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলের মানুষ মাটির তৈরি বাড়ি তৈরি নির্মাণ করে আসছেন। ৭০ দশক থেকে এক তলা মাটির বাড়ির পাশাপশি এই উপজেলায় দ্বিতল মাটির বাড়ি তৈরি শুরু হয়। মাটির বাড়ি তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর কারিগর ছিল। এসব বাড়ি বানাতে যারা অবদান রাখতেন তাদের দেওয়ালি নামে ডাকা হতো। তারা তারা প্রতি হাত দেওয়াল নির্মাণের জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দিত। শোভা বর্ধনের জন্য বাড়ির দেওয়ালের উপরে বিভিন্ন আলপনা আঁকা হতো। এখন এলাকায় অনেক আলপনা আঁকানো এক তলা ও দ্বিতল মাটির বাড়ি দেখা মেলে। এসব বাড়ির ছাউনির জন্য খড় ওটিন ব্যবহার করা হতো যা দেখেই পরিবারের সম্ভ্রান্ততা যাচাই করা হতো। কেউবা খোলা বা টালি নামের সামগ্রী দিয়ে ছাউনী দিত। সে সময় বিদ্যুৎতের ব্যবহার তেমন একটা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই এলাকার বিপুল জনগোষ্টি মধ্যপ্রাচ্যেসহ বিদেশে পাড়ি জমান। সেই সুবাদে প্রবাসী পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রবাসে বসবাসকারী মানুষের বাড়ি ইটের তৈরি। এ ছাড়া ১৯৯৫ সালে এই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার কারণে বেশিরভাগ মাটির তৈরি বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরে ভেঙ্গে পড়া বাড়ির মালিকরা আর মাটির বাড়ি তৈরি না করে পাকা ও আধাপাকা ইটের বাড়ি তৈরি করেন। উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন গ্রামে তৈরি করেছেন বিকেল আকারের তিনতলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি। বেলাল হোসেন বলেন, তার দুই ছেলে ও এক জামাই বিদেশ রয়েছেন। তাদের আয়ের টাকা দিয়েই এই বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ি তৈরির পাশাপশি মাঠে ফসলের কিছু পরিমাণ ফসলি জমিও কিনেছি। তিনি বলেন, তার গ্রামে প্রায় ৬০ ভাগ পরিবার ইটের তৈরি একতলা ও বহুতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উপজেলার প্রসাদখালি গ্রামের মাটির বাড়ি তৈরির কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার এখন সান্তাহার পৌর শহরে নিজেই বিকেল আকারের পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তার ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে তার আগের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। মাটির বাড়ি তৈরির কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান গ্রামের মানুষ এখন আর মাটির বাড়ি তৈরি করেন না এ কারণে এই পেশায় আর কাউকে পাওয়া যায় না।