alt

সারাদেশ

এখন আর নতুন করে কেউ তৈরি করছে না ‘শান্তির নীড়’ মাটির ঘর

প্রতিনিধি, আদমদীঘি (বগুড়া) : শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে মাটির দ্বিতল বাড়ি -সংবাদ

বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি। নতুন করে এখন আর কেউ মাটির বাড়ি তৈরি করছে না। অনেকেই মাটির বাড়ি ভেঙে ইটের তৈরি ছাদ ঢালাই বাড়ি নির্মাণ করছেন। গ্রামের মানুষের ধারনা আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তির নীড় এই মাটির বাড়ি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। এসব মানুষের জন্য প্রায় ৭০ হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার মাটি এটেল হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলের মানুষ মাটির তৈরি বাড়ি তৈরি নির্মাণ করে আসছেন। ৭০ দশক থেকে এক তলা মাটির বাড়ির পাশাপশি এই উপজেলায় দ্বিতল মাটির বাড়ি তৈরি শুরু হয়। মাটির বাড়ি তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর কারিগর ছিল। এসব বাড়ি বানাতে যারা অবদান রাখতেন তাদের দেওয়ালি নামে ডাকা হতো। তারা তারা প্রতি হাত দেওয়াল নির্মাণের জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দিত। শোভা বর্ধনের জন্য বাড়ির দেওয়ালের উপরে বিভিন্ন আলপনা আঁকা হতো। এখন এলাকায় অনেক আলপনা আঁকানো এক তলা ও দ্বিতল মাটির বাড়ি দেখা মেলে। এসব বাড়ির ছাউনির জন্য খড় ওটিন ব্যবহার করা হতো যা দেখেই পরিবারের সম্ভ্রান্ততা যাচাই করা হতো। কেউবা খোলা বা টালি নামের সামগ্রী দিয়ে ছাউনী দিত। সে সময় বিদ্যুৎতের ব্যবহার তেমন একটা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই এলাকার বিপুল জনগোষ্টি মধ্যপ্রাচ্যেসহ বিদেশে পাড়ি জমান। সেই সুবাদে প্রবাসী পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রবাসে বসবাসকারী মানুষের বাড়ি ইটের তৈরি। এ ছাড়া ১৯৯৫ সালে এই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার কারণে বেশিরভাগ মাটির তৈরি বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরে ভেঙ্গে পড়া বাড়ির মালিকরা আর মাটির বাড়ি তৈরি না করে পাকা ও আধাপাকা ইটের বাড়ি তৈরি করেন। উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন গ্রামে তৈরি করেছেন বিকেল আকারের তিনতলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি। বেলাল হোসেন বলেন, তার দুই ছেলে ও এক জামাই বিদেশ রয়েছেন। তাদের আয়ের টাকা দিয়েই এই বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ি তৈরির পাশাপশি মাঠে ফসলের কিছু পরিমাণ ফসলি জমিও কিনেছি। তিনি বলেন, তার গ্রামে প্রায় ৬০ ভাগ পরিবার ইটের তৈরি একতলা ও বহুতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উপজেলার প্রসাদখালি গ্রামের মাটির বাড়ি তৈরির কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার এখন সান্তাহার পৌর শহরে নিজেই বিকেল আকারের পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তার ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে তার আগের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। মাটির বাড়ি তৈরির কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান গ্রামের মানুষ এখন আর মাটির বাড়ি তৈরি করেন না এ কারণে এই পেশায় আর কাউকে পাওয়া যায় না।

ছবি

কক্সবাজারে জামায়াত নেতার হামলা, বিএনপি নেতা নিহত

ছবি

শায়েস্তাগঞ্জ ও অলিপুরে উচ্ছেদ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা, উদ্বোধন হলো পুলিশ বক্স

ছবি

বিনা বিচারে ৩০ বছর, অবশেষে মুক্তি পেলেন কানু মিয়া

ছবি

ঐতিহাসিক ভবন ভাঙা ঠেকাতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চিঠি

ছবি

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিশেষজ্ঞ নেই ১০ বছর

মহেশপুর আদালত চত্বরে জাল কোর্টফিতে সয়লাব

কমলগঞ্জে চা শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

মোহনগঞ্জে হারিয়ে গেছে দেশি জাতের ধান

নবাবগঞ্জে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার

মোরেলগঞ্জ ভেটেরিনারি হাসপাতালে ১১ পদের মধ্যে ৮ পদেই কেউ নেই

রংপুর চেম্বারের নির্বাচন সম্পন্ন

ছবি

৭ বছর আগের সেই মর্মান্তিক ঘটনায় চোখের জলে বুক ভাসান স্বজনরা

চাঁদপুরে অপরাধে জড়িত সন্দেহে আটক ২২

তারাগঞ্জে চাষিদের বীজ, সার ও অর্থ বিতরণ

ছবি

হরিপুর-চিলমারী সেতুর উদ্বোধন ২ আগস্ট

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে কলমাকান্দায় আলোচনা সভা

বাগাতিপাড়ায় সড়ক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, দুদকের অভিযান

ভিডব্লিউবি কার্ডধারীদের কাছে ট্যাক্সের নামে টাকা আদায়

ছবি

দশমিনায় বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষে সাফল্য

কাঁঠালিয়ায় জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

চিতলমারীতে মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ছবি

বারবার প্রতিশ্রুতির পরও পাকাকরণ হয়নি সড়ক

পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন ভবন উদ্বোধন

মা হত্যার দায়ে পুত্রের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ছবি

মাদারগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু পুনর্নির্মাণ

শ্রীমঙ্গলে চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন দুই বন্ধু গ্রেপ্তার

ভুক্তভোগী দুই নারীকে হুমকির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

ছবি

বড়াল নদীতে মাছ ধরার উৎসব

স্বজনদের আপত্তির মুখে লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে গেল পিবিআই টিম

মোরেলগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রকে কুপিয়ে জখম

ছবি

চাঁদাবাজি বন্ধে বিএনপির সমাবেশ

অটোরিকশা চালককে মারধর করায় বিএনপি নেতার পদ স্থগিত

খাগড়াছড়িতে এনসিপির নেতানেত্রীর পাল্টাপাল্টি জিডি

ছবি

দোয়ারাবাজারে সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকোতে পারাপার

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে প্যাকেজ অফারের প্রতারণার অভিযোগ, ভোগান্তিতে গ্রাহক

বাগেরহাটে শিশুকে যৌন নির্যাতন

tab

সারাদেশ

এখন আর নতুন করে কেউ তৈরি করছে না ‘শান্তির নীড়’ মাটির ঘর

প্রতিনিধি, আদমদীঘি (বগুড়া)

আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে মাটির দ্বিতল বাড়ি -সংবাদ

শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি। নতুন করে এখন আর কেউ মাটির বাড়ি তৈরি করছে না। অনেকেই মাটির বাড়ি ভেঙে ইটের তৈরি ছাদ ঢালাই বাড়ি নির্মাণ করছেন। গ্রামের মানুষের ধারনা আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তির নীড় এই মাটির বাড়ি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস এই উপজেলায়। এসব মানুষের জন্য প্রায় ৭০ হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার মাটি এটেল হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলের মানুষ মাটির তৈরি বাড়ি তৈরি নির্মাণ করে আসছেন। ৭০ দশক থেকে এক তলা মাটির বাড়ির পাশাপশি এই উপজেলায় দ্বিতল মাটির বাড়ি তৈরি শুরু হয়। মাটির বাড়ি তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর কারিগর ছিল। এসব বাড়ি বানাতে যারা অবদান রাখতেন তাদের দেওয়ালি নামে ডাকা হতো। তারা তারা প্রতি হাত দেওয়াল নির্মাণের জন্য পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দিত। শোভা বর্ধনের জন্য বাড়ির দেওয়ালের উপরে বিভিন্ন আলপনা আঁকা হতো। এখন এলাকায় অনেক আলপনা আঁকানো এক তলা ও দ্বিতল মাটির বাড়ি দেখা মেলে। এসব বাড়ির ছাউনির জন্য খড় ওটিন ব্যবহার করা হতো যা দেখেই পরিবারের সম্ভ্রান্ততা যাচাই করা হতো। কেউবা খোলা বা টালি নামের সামগ্রী দিয়ে ছাউনী দিত। সে সময় বিদ্যুৎতের ব্যবহার তেমন একটা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই এলাকার বিপুল জনগোষ্টি মধ্যপ্রাচ্যেসহ বিদেশে পাড়ি জমান। সেই সুবাদে প্রবাসী পরিবারগুলো আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রবাসে বসবাসকারী মানুষের বাড়ি ইটের তৈরি। এ ছাড়া ১৯৯৫ সালে এই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যার কারণে বেশিরভাগ মাটির তৈরি বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরে ভেঙ্গে পড়া বাড়ির মালিকরা আর মাটির বাড়ি তৈরি না করে পাকা ও আধাপাকা ইটের বাড়ি তৈরি করেন। উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন গ্রামে তৈরি করেছেন বিকেল আকারের তিনতলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি। বেলাল হোসেন বলেন, তার দুই ছেলে ও এক জামাই বিদেশ রয়েছেন। তাদের আয়ের টাকা দিয়েই এই বাড়ি তৈরি করেছি। বাড়ি তৈরির পাশাপশি মাঠে ফসলের কিছু পরিমাণ ফসলি জমিও কিনেছি। তিনি বলেন, তার গ্রামে প্রায় ৬০ ভাগ পরিবার ইটের তৈরি একতলা ও বহুতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। উপজেলার প্রসাদখালি গ্রামের মাটির বাড়ি তৈরির কারিগর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার এখন সান্তাহার পৌর শহরে নিজেই বিকেল আকারের পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তার ছেলেরা প্রবাসে থাকার কারণে তার আগের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। মাটির বাড়ি তৈরির কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান গ্রামের মানুষ এখন আর মাটির বাড়ি তৈরি করেন না এ কারণে এই পেশায় আর কাউকে পাওয়া যায় না।

back to top