ছেলে আমার দেশের জন্যে জীবন দিলেও পুলিশের চাপে ছেলের শান্তিপূর্ণ জানাযাও দিতে পারি নাই’। বাড়ির পাশেই ছেলেকে কবরস্থ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন- ‘ছেলের জানাযার পর প্রতিদিনই বাড়িতে পুলিশ আইতো, পুলিশের ডরে বাড়ি ছাইড়া আমি দিন-রাইত বাইরে থাকতাম। হাসিনা সরকরের পতন না অইলে মনে হয় ছেলের আন্দোলন করার অপরাধে আমার বাকি জীবন জেলেই থাকতে অইত’। কথাগুলো বলছিলেন শহীদ বিপ্লব হাসনের বাবা বাবুল মিয়া।
তিনি আরও জানান, তার তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে সন্তান বিপ্লব হাসান সবার বড়। সে হাজী মোজাফফর আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তিনি বলেন, সকালে তার মার কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে নাস্তা খাওয়ার কথা বলে মিছিলে যোগ দেয় বিপ্লব। এ সময় তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।
শহীদ বিপ্লব হাসানের মা বিলকিস আক্তার বলেন, আমি ঘুমাতে পারি না। বারবার মনে হয়, এই তো বিপ্লব আমাকে ডাকছে। মা, মাগো- আমাকে নাস্তার টাকা দাও! ঘরের এ পাশ ও ওপাশেও ওর পায়ের শব্দ পাই। সে দিনের বুলেটের শব্দে মতো, কোনো শব্দ হলেই আমি আতংকে উঠি।
তিনি আরও বলেন, আমার একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে আজ আমি তো নি:স্ব। ছেলে নেই! আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো। বিপ্লব তো বিপ্লব করেই চলে গেলো। আমার বুক খালি করে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ২০২৪ সনের ২০জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন বিপ্লব হাসান। কারফিউ ভেঙে সেদিনের মিছিলের অগ্রভাগে থাকা বিপ্লবের মাথায় পুলিশের বুলেট এক দিকে ঢুকে অপরপ্রান্ত দিয়ে বেড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় শহিদ বিপ্লব হাসানের পিতা উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চুড়ালি গ্রামের বাবুল মিয়া বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় গত ৪ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে গৌরীপুর থানার তৎকালীন সাবইন্সপেক্টর শফিকুল আলম ও ২নং আসামী করা হয়েছে গৌরীপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ সুমন চন্দ্র রায়কে।
ঘটনার প্রায় এক বছর ও মামলা দায়েরের তিন মাস অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামীদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ মামলার বাদী। তিনি বলেন, পুলিশ-পুলিশকে ধরছে না। আমার ছেলের মাথায় ঝাঁজরা করে দিলো বুলেট। অথচ সেই পুলিশ এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে, এটা মানতে পারছি না।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম জানান, তারা পলাতক রয়েছেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা, ডৌহাখলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সরকার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মিথুন, কলতাপাড়ার ফারুক আহম্মেদ, দুদু ফকির, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হক শুভ, তমাল পাঠান, ময়মনসিংহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীর আহম্মেদ রাজিব, অভি, শাহাবুল আলম ও অজ্ঞাত ১৫০জনকে। মামলার তদন্তকারী অফিসার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন শরীফ জানান, এ মামলায় এজাহারভুক্ত ডৌহাখলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সরকার, ময়মনসিংহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীর আহম্মেদ রাজিব, শাহাবুল আলমসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫
ছেলে আমার দেশের জন্যে জীবন দিলেও পুলিশের চাপে ছেলের শান্তিপূর্ণ জানাযাও দিতে পারি নাই’। বাড়ির পাশেই ছেলেকে কবরস্থ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন- ‘ছেলের জানাযার পর প্রতিদিনই বাড়িতে পুলিশ আইতো, পুলিশের ডরে বাড়ি ছাইড়া আমি দিন-রাইত বাইরে থাকতাম। হাসিনা সরকরের পতন না অইলে মনে হয় ছেলের আন্দোলন করার অপরাধে আমার বাকি জীবন জেলেই থাকতে অইত’। কথাগুলো বলছিলেন শহীদ বিপ্লব হাসনের বাবা বাবুল মিয়া।
তিনি আরও জানান, তার তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে সন্তান বিপ্লব হাসান সবার বড়। সে হাজী মোজাফফর আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। তিনি বলেন, সকালে তার মার কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে নাস্তা খাওয়ার কথা বলে মিছিলে যোগ দেয় বিপ্লব। এ সময় তিনি দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।
শহীদ বিপ্লব হাসানের মা বিলকিস আক্তার বলেন, আমি ঘুমাতে পারি না। বারবার মনে হয়, এই তো বিপ্লব আমাকে ডাকছে। মা, মাগো- আমাকে নাস্তার টাকা দাও! ঘরের এ পাশ ও ওপাশেও ওর পায়ের শব্দ পাই। সে দিনের বুলেটের শব্দে মতো, কোনো শব্দ হলেই আমি আতংকে উঠি।
তিনি আরও বলেন, আমার একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে আজ আমি তো নি:স্ব। ছেলে নেই! আমি কাকে নিয়ে বাঁচবো। বিপ্লব তো বিপ্লব করেই চলে গেলো। আমার বুক খালি করে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ২০২৪ সনের ২০জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন বিপ্লব হাসান। কারফিউ ভেঙে সেদিনের মিছিলের অগ্রভাগে থাকা বিপ্লবের মাথায় পুলিশের বুলেট এক দিকে ঢুকে অপরপ্রান্ত দিয়ে বেড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় শহিদ বিপ্লব হাসানের পিতা উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের চুড়ালি গ্রামের বাবুল মিয়া বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় গত ৪ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে গৌরীপুর থানার তৎকালীন সাবইন্সপেক্টর শফিকুল আলম ও ২নং আসামী করা হয়েছে গৌরীপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ সুমন চন্দ্র রায়কে।
ঘটনার প্রায় এক বছর ও মামলা দায়েরের তিন মাস অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামীদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এ মামলার বাদী। তিনি বলেন, পুলিশ-পুলিশকে ধরছে না। আমার ছেলের মাথায় ঝাঁজরা করে দিলো বুলেট। অথচ সেই পুলিশ এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে, এটা মানতে পারছি না।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম জানান, তারা পলাতক রয়েছেন। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা, ডৌহাখলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সরকার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মিথুন, কলতাপাড়ার ফারুক আহম্মেদ, দুদু ফকির, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হক শুভ, তমাল পাঠান, ময়মনসিংহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীর আহম্মেদ রাজিব, অভি, শাহাবুল আলম ও অজ্ঞাত ১৫০জনকে। মামলার তদন্তকারী অফিসার ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন শরীফ জানান, এ মামলায় এজাহারভুক্ত ডৌহাখলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সরকার, ময়মনসিংহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীর আহম্মেদ রাজিব, শাহাবুল আলমসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।