alt

সারাদেশ

মানিকগঞ্জে বর্ষা মৌসুমে নৌকার হাট জমজমাট

প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ : রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫

মানিকগঞ্জে পদ্মা যমুনা ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, ইছামতিসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওযায় জেলার ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলাতে বহু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তাই বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এসব এলাকাতে নৌকা তৈরি এবং বিক্রির ধুম পরে গেছে। ক্রেতাদের বেড়েছে ব্যাপক আনাগুনা। ঘিওর, দৌলতপুর উপজেলার প্রায় ২০-২২টি গ্রামের প্রত্যন্ত নিম্নাঞ্চল বর্ষার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় নৌকার কদর বেড়ে গেছে বহুগুন। দুর্গত এলাকার লোকজন নৌকার কেনার জন্য শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটে ভিড় করছেন। তবে এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন শত শত ডিঙ্গি নৌকাসহ বিভিন্ন রকমের নৌকা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছে নৌকা হাটায়। অনেকে এ মৌসুমে নৌকা বিক্রি করে তাদের জীবন যাত্রার মান বদলে যাবে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর দুর্গম চর এলাকায় নৌকা ছাড়া চলাফেরা করা সম্ভব হয়না। তাই বর্ষা আসার আগেই ঘিওর, দৌলতপুর এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কাঠ মিস্ত্রিরা নৌকা তৈরি এবং মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের মালামাল এবং জীবন জীবিকার একমাত্র বাহন হিসাবে নৌকার ব্যবহার দীর্ঘদিনের। বর্ষা কবলিত এলাকার লোকজন পারাপারে পুরোদমে ব্যবহার হচ্ছে নৌকা। নৌকা তৈরির শিল্পীরা প্রতি বুধবার জেলার ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রির জন্য আসে। নৌকা তৈরি সাথে জরিত শিল্পীরা স্থানীয় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করছে নৌকা। ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর এলাকার নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মিস্ত্রি পাড়ার নারী পুরুষ।

বর্ষার আগমনে মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, শিবালয়, বেশ কয়েকটি এলাকা নির্মাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। এসব অঞ্চলের লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র বাহন হয়ে উঠে নৌকা।

অন্যান্য বছরের মতো এবারও বর্ষার শুরুতেই জেলার ঘিওর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকাতে ঈদগা মাঠ এবং ঘিওর ডি, এন হাই স্কুলের মাঠের এক পাশে নৌকা বিক্রির হাট জমে উঠেছে। হাজার হাজার ধরনের ছোট বড় নৌকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ঘিওর বাজারে কাঠ মিস্ত্রি মাসুদ নিরঞ্জন সুত্রধরসহ অনেক মিস্ত্রিরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই তারা তাদের কর্মচারীদের নিয়ে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতি সপ্তাহে তাদের কারখানায় ২০ থেকে ২৫টি নৌকা তৈরি হয়।

ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, এবং মহদেবপুর এবং তরা হাট বাজারে তারা নৌকা বিক্রি করে। বর্তমানে লৌহা কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকা তৈরির খরচ বেড়ে গেছে। নৌকা প্রকার ভেদে প্রতিটি ডিঙ্গি নৌকা ৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়। তবে লাভের অংশ আগের থেকে কমে গেছে। কাঠ মিস্ত্রি সুবল সুত্রধর জানান, আমাদের বাপ দাদাদের আমল থেকেই আমরা নৌকা তৈরি করে বিক্রি করি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আদাদের বাড়িতে নৌকা তৈরি ধামধুম শুরু হয়। আমরা জৈষ্ঠ মাস থেকে নৌকা তৈরি শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন। বর্তমানে এলাকায় ছোট ডিঙ্গি ও কোষা নৌকা বেশি চলে। তবে কড়ই, জাম্বল,আম,ও কদম কাঠের নৌকা বিভিন্ন হাট বাজারে বেশি চলে। জাতি কাঠের তৈরি নৌকায় অনেক খরচ হয়। তবে এ পেশার সাথে জড়িত লোকজনের তেমন কদর নেই। উপজেলার বানিয়াজুরি, বালিয়াডাঙ্গি, সিংজুরি, বেগুন নারচি, হিজুলিয়া, ঠাকুরকান্দি, বেগুন নারচি, দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর, বাচামারা, বাঘুটিয়া, খলসি, ধামস্বর, কলিয়া, বিনোদপুর, এবং শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ, উথলি, মহাদেবপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলের বর্ষার একমাত্র বাহন নৌকা। হাট বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকা বিক্রি হয়।

ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা নিরঞ্জন সুত্রধর জানান, তিনি এ বছার ২৫টি নৌকা তৈরি করেছেন। ছোট ছাইজের ডিঙ্গি নৌকা ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা এবং মাঝারি সাইজের নৌকা ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার এবং বড় সাইজের নৌকা ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চলতি মৌসুমে এখনও তেমন বিক্রি শুরু হয়নি। পানি বাড়লে কেনাবেচা হবে । তবে শুরুতেই এবার নৌকার দাম একটু বেশি। তিনি আরো বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এ পেশার লোকজন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। তবে বাপ দাদার পৈত্রিক পেশার কারণে অনেক বহু কষ্টে টিকে আছে। তবে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজনকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। তা না হলে অচিরেই হারিয়ে যাবে এ পেশার সাথে জড়িত লোকজন।

নৌকা হাটের সাথে ঘিওরের সুনাম এবং ঐতিহ্য জড়িত আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ঘিওর হাটে নৌকা কিনতে আসে। হাটে বিভিন্ন ধরনের নৌকা বিক্রিয় হয়। অতিরিক্ত কোনো ধরনের খরচ না থাকায় ক্রেতা বিক্রেতারা নিরাপদে নৌকার ব্যবসা করে থাকেন। একজন ব্যবসায়ী ১৫-২০টি নৌকা বিক্রি করে থাকে।

তবে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটটি নদী ভাঙনের কারনে সুনাম ও ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসে সামাজিক নিরাপত্তা মেনে নৌকার হাটে কেনা বেচা চলে। শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাট নৌকা বিক্রির জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর বন্যা মৌসুমে হাজার হাজার নৌকা এই হাটে বিক্রি হয়। ক্রেতা এবং বিক্রেতারা সুন্দর পরিবেশে হাটে নৌকা বিক্রি করে থাকেন। তবে বাজার কমিটির উদ্যোগে আমরা প্রতি বছর শুষ্ট মনিটরিং করে থাকি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নৌকা আমদানি বেশি হবার কারনে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এলাকার অভিজ্ঞমহল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ ঘিওর হাটের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এবং বাজারের উন্নয়ন কল্পে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

ছবি

জাফলংয়ের পিয়াইন নদীতে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য

হরতালের সমর্থনে চকরিয়ায় মধ্যরাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বিক্ষোভ

বোয়ালখালীতে অটো রিক্সা চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

সারজিসের বক্তব্যের প্রতিবাদে বান্দরবানে সংবাদ সম্মেলন

আল আকাবা সমবায় সমিতির ৪শ’ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ: সিআইডি

মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টি, ডুবলো বরিশাল নগরী

ইবি শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যুতে ক্যাম্পাসে শোক র‌্যালি

খুলনায় মদ্যপানে সাতজনের মৃত্যু

বৈষ্যমের অভিযোগে ৮ দফা দাবিতে বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শাটডাউন

ছবি

সালাহউদ্দিনকে নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের জেরে রাঙামাটিতে এনসিপি-বিরোধী বিক্ষোভ

ছবি

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গোপালগঞ্জে আর নেই কারফিউ ও ১৪৪ ধারা: জেলা প্রশাসন

জামায়াতকে ‘নাম পরিবর্তনের পরামর্শ’ ফরহাদ মজহারের

রাজাকার ও স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্র বাংলার মানুষ মেনে নেবে না

ছবি

সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদ ভক্তদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন: শাওন

নোয়াখালীতে নৌকা ডুবে কিশোরীর মৃত্যু

শিক্ষা ও ব্যবসা খাতের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থারও সংস্কার চান ইফতেখারুজ্জামান

হাতিরঝিলে চক্রাকার বাসে ‘র‌্যাপিড পাসে’ ভাড়া দেয়া চালু হচ্ছে

শালবাহানে তেলের খনি পুনরায় চালুর দাবিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুুলিয়ায় মানববন্ধন

সাংবাদিক শাহ আলমের মৃত্যুতে আরএসএফের উদ্যোগ, গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান

ছবি

বেতাগীর ৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি

ছবি

ঈশ্বরগঞ্জের ব্রহ্মপুত্র থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আ’লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

অপারেশনে গুলি বের করলেও যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন মোবারক

বোয়ালখালীতে স্কাউটস ওরিয়েন্টেশন

জমি না কেনায় প্রবাসীর বাড়ির টিনের চালসহ মালামাল লুট

ছবি

ভরা বর্ষায় কলমাকান্দা সীমান্তে পানি নেই রোপা-আমন চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

মোহনগঞ্জে গৃহবধূর আত্মহত্যা

‘বান্দরবানকে অবমাননা’ মন্তব্যে এনসিপির প্রতি ক্ষোভ, ক্ষমা চাইতে বললেন শিক্ষার্থীরা

ছবি

মাদারগঞ্জে হা-ডু-ডু খেলা দেখতে জনতার ঢল

রামপালে বৃদ্ধের আত্মহত্যা

ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিপ্লবের মাথা ছিদ্র হয়ে বুলেট বেরিয়ে যায় অন্যপ্রান্তে

ছবি

অবৈধ সম্পদ গোপনের দায়ে হাছান আলীর কারাদণ্ড, স্ত্রী খালাস

রাজশাহীতে বিশেষ অভিযানে আটক ২৬

ছবি

কারাগারে নথিপত্র না থাকায় মামলায় জটিলতা, পলাতক ১২২ আসামি

সান্তাহারে বেড়েছে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে চারটি জয়তুন চারা রোপণ

tab

সারাদেশ

মানিকগঞ্জে বর্ষা মৌসুমে নৌকার হাট জমজমাট

প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫

মানিকগঞ্জে পদ্মা যমুনা ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, ইছামতিসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওযায় জেলার ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর উপজেলাতে বহু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তাই বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এসব এলাকাতে নৌকা তৈরি এবং বিক্রির ধুম পরে গেছে। ক্রেতাদের বেড়েছে ব্যাপক আনাগুনা। ঘিওর, দৌলতপুর উপজেলার প্রায় ২০-২২টি গ্রামের প্রত্যন্ত নিম্নাঞ্চল বর্ষার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় নৌকার কদর বেড়ে গেছে বহুগুন। দুর্গত এলাকার লোকজন নৌকার কেনার জন্য শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটে ভিড় করছেন। তবে এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন শত শত ডিঙ্গি নৌকাসহ বিভিন্ন রকমের নৌকা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছে নৌকা হাটায়। অনেকে এ মৌসুমে নৌকা বিক্রি করে তাদের জীবন যাত্রার মান বদলে যাবে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর দুর্গম চর এলাকায় নৌকা ছাড়া চলাফেরা করা সম্ভব হয়না। তাই বর্ষা আসার আগেই ঘিওর, দৌলতপুর এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কাঠ মিস্ত্রিরা নৌকা তৈরি এবং মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের মালামাল এবং জীবন জীবিকার একমাত্র বাহন হিসাবে নৌকার ব্যবহার দীর্ঘদিনের। বর্ষা কবলিত এলাকার লোকজন পারাপারে পুরোদমে ব্যবহার হচ্ছে নৌকা। নৌকা তৈরির শিল্পীরা প্রতি বুধবার জেলার ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রির জন্য আসে। নৌকা তৈরি সাথে জরিত শিল্পীরা স্থানীয় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করছে নৌকা। ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর এলাকার নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে মিস্ত্রি পাড়ার নারী পুরুষ।

বর্ষার আগমনে মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, শিবালয়, বেশ কয়েকটি এলাকা নির্মাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। এসব অঞ্চলের লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র বাহন হয়ে উঠে নৌকা।

অন্যান্য বছরের মতো এবারও বর্ষার শুরুতেই জেলার ঘিওর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকাতে ঈদগা মাঠ এবং ঘিওর ডি, এন হাই স্কুলের মাঠের এক পাশে নৌকা বিক্রির হাট জমে উঠেছে। হাজার হাজার ধরনের ছোট বড় নৌকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ঘিওর বাজারে কাঠ মিস্ত্রি মাসুদ নিরঞ্জন সুত্রধরসহ অনেক মিস্ত্রিরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই তারা তাদের কর্মচারীদের নিয়ে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতি সপ্তাহে তাদের কারখানায় ২০ থেকে ২৫টি নৌকা তৈরি হয়।

ঘিওর, দৌলতপুর, হরিরামপুর, এবং মহদেবপুর এবং তরা হাট বাজারে তারা নৌকা বিক্রি করে। বর্তমানে লৌহা কাঠের দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকা তৈরির খরচ বেড়ে গেছে। নৌকা প্রকার ভেদে প্রতিটি ডিঙ্গি নৌকা ৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা হয়। তবে লাভের অংশ আগের থেকে কমে গেছে। কাঠ মিস্ত্রি সুবল সুত্রধর জানান, আমাদের বাপ দাদাদের আমল থেকেই আমরা নৌকা তৈরি করে বিক্রি করি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আদাদের বাড়িতে নৌকা তৈরি ধামধুম শুরু হয়। আমরা জৈষ্ঠ মাস থেকে নৌকা তৈরি শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন। বর্তমানে এলাকায় ছোট ডিঙ্গি ও কোষা নৌকা বেশি চলে। তবে কড়ই, জাম্বল,আম,ও কদম কাঠের নৌকা বিভিন্ন হাট বাজারে বেশি চলে। জাতি কাঠের তৈরি নৌকায় অনেক খরচ হয়। তবে এ পেশার সাথে জড়িত লোকজনের তেমন কদর নেই। উপজেলার বানিয়াজুরি, বালিয়াডাঙ্গি, সিংজুরি, বেগুন নারচি, হিজুলিয়া, ঠাকুরকান্দি, বেগুন নারচি, দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর, বাচামারা, বাঘুটিয়া, খলসি, ধামস্বর, কলিয়া, বিনোদপুর, এবং শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ, উথলি, মহাদেবপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলের বর্ষার একমাত্র বাহন নৌকা। হাট বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকা বিক্রি হয়।

ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রি করতে আসা নিরঞ্জন সুত্রধর জানান, তিনি এ বছার ২৫টি নৌকা তৈরি করেছেন। ছোট ছাইজের ডিঙ্গি নৌকা ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা এবং মাঝারি সাইজের নৌকা ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার এবং বড় সাইজের নৌকা ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চলতি মৌসুমে এখনও তেমন বিক্রি শুরু হয়নি। পানি বাড়লে কেনাবেচা হবে । তবে শুরুতেই এবার নৌকার দাম একটু বেশি। তিনি আরো বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এ পেশার লোকজন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। তবে বাপ দাদার পৈত্রিক পেশার কারণে অনেক বহু কষ্টে টিকে আছে। তবে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজনকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। তা না হলে অচিরেই হারিয়ে যাবে এ পেশার সাথে জড়িত লোকজন।

নৌকা হাটের সাথে ঘিওরের সুনাম এবং ঐতিহ্য জড়িত আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ঘিওর হাটে নৌকা কিনতে আসে। হাটে বিভিন্ন ধরনের নৌকা বিক্রিয় হয়। অতিরিক্ত কোনো ধরনের খরচ না থাকায় ক্রেতা বিক্রেতারা নিরাপদে নৌকার ব্যবসা করে থাকেন। একজন ব্যবসায়ী ১৫-২০টি নৌকা বিক্রি করে থাকে।

তবে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটটি নদী ভাঙনের কারনে সুনাম ও ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসে সামাজিক নিরাপত্তা মেনে নৌকার হাটে কেনা বেচা চলে। শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাট নৌকা বিক্রির জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর বন্যা মৌসুমে হাজার হাজার নৌকা এই হাটে বিক্রি হয়। ক্রেতা এবং বিক্রেতারা সুন্দর পরিবেশে হাটে নৌকা বিক্রি করে থাকেন। তবে বাজার কমিটির উদ্যোগে আমরা প্রতি বছর শুষ্ট মনিটরিং করে থাকি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নৌকা আমদানি বেশি হবার কারনে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এলাকার অভিজ্ঞমহল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ ঘিওর হাটের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার জন্য এবং বাজারের উন্নয়ন কল্পে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

back to top