১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নাম পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন কলামিস্ট ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন বলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। জামায়াতের শনিবারের জাতীয় সমাবেশের সফলতা কামনা করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘আইডিএল (ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ) বিলুপ্ত করে জামায়াতে ইসলামী নামে রাজনীতিতে পুনরায় আত্মপ্রকাশ করাটা রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ঘাটতি প্রকাশ করে।’
আইডিএল নামে এক মোর্চার মাধ্যমে রাজনীতিতে জামায়াতের আত্মপ্রকাশ ঘটে পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ওই সময় একটি অধ্যাদেশ জারি করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এএস এম সায়েম, যেখানে সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এরপর ওই বছরের ২৪ আগস্ট ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল মিলে গঠন করে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ বা আইডিএল নামের একটি মোর্চা, যেখানে জামায়াতই ছিল প্রধান সংগঠন।
১৯৭৯ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকার ইডেন হোটেল প্রাঙ্গণে জাতীয় সম্মেলনে জামায়াতের নতুন গঠনতন্ত্র অনুমোদনের পর ২৭ মে ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নামে দলের তৎপরতা শুরু হয়। চট্টগ্রামের মতবিনিময় সভায় কথা বলতে গিয়ে সেই আইডিএল নামেই ফের জামায়াতকে রাজনীতি করার পরামর্শ দিলেন ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘অনেক ধরনের ফ্যাসিবাদ আছে, ধর্ম নিরপেক্ষতার ফ্যাসিবাদ, ধর্মান্ধতার ফ্যাসিবাদ সব ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা করতে হবে।
একইসঙ্গে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন থেকে গণতন্ত্র রক্ষা করে জনগণের নিজস্ব গঠনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের প্রথম প্রয়োজন একটি গণমুখী গঠনতন্ত্র। জনগণকে বুঝাতে হবে, গঠনতন্ত্র কী এবং কেন তা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম হলো দেশের অর্থনীতির হৃদয়, যেখানে বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা রয়েছে। এ শহরের ক্ষতি মানে দেশের মারাত্মক ক্ষতি। এ কারণেই চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বন্দরের দুর্নীতি দূরীকরণ এবং স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বন্দরকে ঘুষ-দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কাস্টমসকে বন্দর থেকে আলাদা করতে হবে। দুর্নীতি করার জন্য পণ্য দিনের পর দিন বন্দরে রেখে দেয় কাস্টমস কর্মকর্তারা। খেয়াল রাখতে হবে বন্দর যাতে বিদেশি স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘চট্টগ্রাম হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্যউদাহরণ। হাটহাজারীর মতো অঞ্চলে মসজিদ ও মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত, যেখানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় এবং সামাজিক আচারে অংশ নিচ্ছেন। এই ঐতিহ্য যেন অক্ষুণ্য থাকে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। আর কখনও যেন দাড়ি-টুপি বা পাঞ্জাবি পরা কাউকে জঙ্গি কিংবা গেরুয়া বসন পরা কাউকে বিদেশি দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করা না হয়।’
সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হক, অধ্যাপক আর রাজী, সহকারী অধ্যাপক সাইমা আলম, রাষ্ট্রচিন্তক মেজর (অব.) ফেরদৌস, কালের কণ্ঠর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান প্রমুখ।
রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নাম পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন কলামিস্ট ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন বলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। জামায়াতের শনিবারের জাতীয় সমাবেশের সফলতা কামনা করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘আইডিএল (ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ) বিলুপ্ত করে জামায়াতে ইসলামী নামে রাজনীতিতে পুনরায় আত্মপ্রকাশ করাটা রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ঘাটতি প্রকাশ করে।’
আইডিএল নামে এক মোর্চার মাধ্যমে রাজনীতিতে জামায়াতের আত্মপ্রকাশ ঘটে পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ওই সময় একটি অধ্যাদেশ জারি করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এএস এম সায়েম, যেখানে সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এরপর ওই বছরের ২৪ আগস্ট ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল মিলে গঠন করে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ বা আইডিএল নামের একটি মোর্চা, যেখানে জামায়াতই ছিল প্রধান সংগঠন।
১৯৭৯ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকার ইডেন হোটেল প্রাঙ্গণে জাতীয় সম্মেলনে জামায়াতের নতুন গঠনতন্ত্র অনুমোদনের পর ২৭ মে ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নামে দলের তৎপরতা শুরু হয়। চট্টগ্রামের মতবিনিময় সভায় কথা বলতে গিয়ে সেই আইডিএল নামেই ফের জামায়াতকে রাজনীতি করার পরামর্শ দিলেন ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘অনেক ধরনের ফ্যাসিবাদ আছে, ধর্ম নিরপেক্ষতার ফ্যাসিবাদ, ধর্মান্ধতার ফ্যাসিবাদ সব ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা করতে হবে।
একইসঙ্গে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন থেকে গণতন্ত্র রক্ষা করে জনগণের নিজস্ব গঠনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের প্রথম প্রয়োজন একটি গণমুখী গঠনতন্ত্র। জনগণকে বুঝাতে হবে, গঠনতন্ত্র কী এবং কেন তা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম হলো দেশের অর্থনীতির হৃদয়, যেখানে বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা রয়েছে। এ শহরের ক্ষতি মানে দেশের মারাত্মক ক্ষতি। এ কারণেই চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বন্দরের দুর্নীতি দূরীকরণ এবং স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বন্দরকে ঘুষ-দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে কাস্টমসকে বন্দর থেকে আলাদা করতে হবে। দুর্নীতি করার জন্য পণ্য দিনের পর দিন বন্দরে রেখে দেয় কাস্টমস কর্মকর্তারা। খেয়াল রাখতে হবে বন্দর যাতে বিদেশি স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘চট্টগ্রাম হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্যউদাহরণ। হাটহাজারীর মতো অঞ্চলে মসজিদ ও মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত, যেখানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় এবং সামাজিক আচারে অংশ নিচ্ছেন। এই ঐতিহ্য যেন অক্ষুণ্য থাকে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। আর কখনও যেন দাড়ি-টুপি বা পাঞ্জাবি পরা কাউকে জঙ্গি কিংবা গেরুয়া বসন পরা কাউকে বিদেশি দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করা না হয়।’
সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হক, অধ্যাপক আর রাজী, সহকারী অধ্যাপক সাইমা আলম, রাষ্ট্রচিন্তক মেজর (অব.) ফেরদৌস, কালের কণ্ঠর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান প্রমুখ।