প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ঐতিহাসিক কমলা রানীর দীঘি বা সাগরদীঘি অবস্থিত। এটি রাজনগর থানার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং স্থানীয়ভাবে সাগরদিঘী নামেই বেশি পরিচিত। ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে ভানু নারায়ণের অবর্তমানে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সুবিদ নারায়ন উত্তরাধিকার সূত্রে এ রাজ্যের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন। তার স্ত্রী অপরূপা কমলা রানীর ৫ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান ছিলো।
প্রজাবতসল, সমাজ সংস্ড়্গারক রাজা সুবিদ নারায়ন এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, তার এলাকায় দীঘি খনন করতে হবে। স্বপ্নে দেখা অনুযায়ী দীঘি খননের প্রথম দিন মাটিতে কোদালের ছোঁয়া দানকারীকে রানী একটি স্বর্ণের হার উপহার দেন। দীঘির অবস্থান ধরা হয় ১২ একর ১২ বিঘা ১২ পোয়া ১২ ছটাক জায়গা। দীঘির কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ হওয়ার পর দীঘিতে পানি উঠছে না দেখে রাজা সুবিদ নারায়ন বিস্মিত হয়ে পড়েন। এর কিছুদিন পরই রাজা পুনরায় স্বপ্নে দেখেন, কমলা রানী যদি দীঘিতে গঙ্গা দেবীর পূজা করেন তাহলে পানি উঠবে। রাজার কথামতো রানী সম্মতি প্রদান করলেন।
পন্ডিতগণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রানী পূজা সম্পন্ন করতে দীঘিতে পা রাখতেই তৎক্ষণাৎ শুরু হলো পানি ওঠা। এক সময় কমলা রানী পানিতে ডুবে গেলেন।
জনশ্রুতি রয়েছে রানীর পিতা মাতা বিলম্বে আসার কারণে গঙ্গা দেবী পুনরায় রানীকে পানির ওপর কিছু দিনের জন্য ভাসিয়ে ছিলেন। রাজা রানীকে হারিয়ে শোকার্ত হয়ে যখন দিকভ্রান্ত, তখন এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, রানী রাজাকে বলছেন, প্রতিদিন সূর্যোদ্বয়ের সময় আমার দু’সন্তানকে ঘাটে নিয়ে আসবে। আমি তাদের দুধ পান করাব। কিন্তু শর্ত হচ্ছে ১২ বছরের মধ্যে আমাকে তুমি স্পর্শ করতে পারবে না। তাহলে আমাকে আবার ফিরে পাবে। রানীর কথামতো প্রতিদিনই রাজা দু’সন্তানকে নিয়ে দীঘির পাড়ে আসেন এবং রানী সন্তানদের বুকের দুধ পান করাতেন। রাজা দূর থেকে রানীকে অবলোকন করতেন।
একদিন রাজার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। রাজা রানীর শাড়ীর আঁচল ধরলেন। তৎক্ষণাৎ রানী লাফ দিয়ে দীঘিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বলতে থাকেন আমি আর দীঘিতে থাকব না। এর পরপরই একটি নৌকা ভেসে ওঠে। রাজা নৌকার মধ্যে রানীকে দেখে কমলা বলে চিৎকার শুরু করেন। তখন রানী বলতে থাকেন আমি এ দীঘি থেকে চলে যাচ্ছি। সে সময় ভেসে ওঠা নৌকাটিও পানির নীচে তলিয়ে যায়। তারপর থেকে কমলা রানীকে রাজা দেখতে পাননি। পরবর্তীতে শোক বেদনায় জর্জরিত হয়ে রাজারও অন্তর্ধান হয়। রাজার দুই সন্তানের কথা ইতিহাসের পাতায় কি অবস্থায় ছিল, তা কারোর জানা নেই।
জনশ্রুতিতে জানা যায়, রাজার দুই পুত্রের মৃত্যু হয়েছিল কমলা রানীর অন্তর্ধানের পরপরই। কমলা রানীর এ কাহিনী আজও মানুষের মুখে মুখে ইতিহাসের গল্প রূপকথা কথার মতো ফুটে উঠেছে।
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ঐতিহাসিক কমলা রানীর দীঘি বা সাগরদীঘি অবস্থিত। এটি রাজনগর থানার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং স্থানীয়ভাবে সাগরদিঘী নামেই বেশি পরিচিত। ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে ভানু নারায়ণের অবর্তমানে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সুবিদ নারায়ন উত্তরাধিকার সূত্রে এ রাজ্যের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন। তার স্ত্রী অপরূপা কমলা রানীর ৫ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান ছিলো।
প্রজাবতসল, সমাজ সংস্ড়্গারক রাজা সুবিদ নারায়ন এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, তার এলাকায় দীঘি খনন করতে হবে। স্বপ্নে দেখা অনুযায়ী দীঘি খননের প্রথম দিন মাটিতে কোদালের ছোঁয়া দানকারীকে রানী একটি স্বর্ণের হার উপহার দেন। দীঘির অবস্থান ধরা হয় ১২ একর ১২ বিঘা ১২ পোয়া ১২ ছটাক জায়গা। দীঘির কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ হওয়ার পর দীঘিতে পানি উঠছে না দেখে রাজা সুবিদ নারায়ন বিস্মিত হয়ে পড়েন। এর কিছুদিন পরই রাজা পুনরায় স্বপ্নে দেখেন, কমলা রানী যদি দীঘিতে গঙ্গা দেবীর পূজা করেন তাহলে পানি উঠবে। রাজার কথামতো রানী সম্মতি প্রদান করলেন।
পন্ডিতগণের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রানী পূজা সম্পন্ন করতে দীঘিতে পা রাখতেই তৎক্ষণাৎ শুরু হলো পানি ওঠা। এক সময় কমলা রানী পানিতে ডুবে গেলেন।
জনশ্রুতি রয়েছে রানীর পিতা মাতা বিলম্বে আসার কারণে গঙ্গা দেবী পুনরায় রানীকে পানির ওপর কিছু দিনের জন্য ভাসিয়ে ছিলেন। রাজা রানীকে হারিয়ে শোকার্ত হয়ে যখন দিকভ্রান্ত, তখন এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, রানী রাজাকে বলছেন, প্রতিদিন সূর্যোদ্বয়ের সময় আমার দু’সন্তানকে ঘাটে নিয়ে আসবে। আমি তাদের দুধ পান করাব। কিন্তু শর্ত হচ্ছে ১২ বছরের মধ্যে আমাকে তুমি স্পর্শ করতে পারবে না। তাহলে আমাকে আবার ফিরে পাবে। রানীর কথামতো প্রতিদিনই রাজা দু’সন্তানকে নিয়ে দীঘির পাড়ে আসেন এবং রানী সন্তানদের বুকের দুধ পান করাতেন। রাজা দূর থেকে রানীকে অবলোকন করতেন।
একদিন রাজার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। রাজা রানীর শাড়ীর আঁচল ধরলেন। তৎক্ষণাৎ রানী লাফ দিয়ে দীঘিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং বলতে থাকেন আমি আর দীঘিতে থাকব না। এর পরপরই একটি নৌকা ভেসে ওঠে। রাজা নৌকার মধ্যে রানীকে দেখে কমলা বলে চিৎকার শুরু করেন। তখন রানী বলতে থাকেন আমি এ দীঘি থেকে চলে যাচ্ছি। সে সময় ভেসে ওঠা নৌকাটিও পানির নীচে তলিয়ে যায়। তারপর থেকে কমলা রানীকে রাজা দেখতে পাননি। পরবর্তীতে শোক বেদনায় জর্জরিত হয়ে রাজারও অন্তর্ধান হয়। রাজার দুই সন্তানের কথা ইতিহাসের পাতায় কি অবস্থায় ছিল, তা কারোর জানা নেই।
জনশ্রুতিতে জানা যায়, রাজার দুই পুত্রের মৃত্যু হয়েছিল কমলা রানীর অন্তর্ধানের পরপরই। কমলা রানীর এ কাহিনী আজও মানুষের মুখে মুখে ইতিহাসের গল্প রূপকথা কথার মতো ফুটে উঠেছে।