alt

শামুকখোল পাখির গ্রাম জয়পুরহাট

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

বিরল প্রজাতির শামুকখোল পাখির গ্রাম নামে পরিচিত এখন জয়পুরহাট জেলা। গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুকখোল পাখি। নিরাপদ অভয়াশ্রম পেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে বছরের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো এখানে বসবাস করে। সে জন্য গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম হিসেবে। সকালে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাখিগুলোকে দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।

জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা আলমের বাড়ির পাশে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর আম, বট, তেঁতুল, নিম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। এসব গাছে একটা সময় রাতচরা পাখি বাসা বেঁধেছিল। তারপর সাদা বক বাসা বাঁধে বর্তমানে ধীরে ধীরে সেখানে রাজত্ব চলে আসে শামুকখোল পাখির দখলে। প্রায় দুই দশক ধরে শামুকখোল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।

এই শামুকখোল পাখিগুলো গাছের মগডালে নিজেদের আপন খেয়ালে বাসা বেঁধে আসছে। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে বক, কানা বক, শঙ্খ চোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে এর মধ্যে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই নিজের সন্তানের মতো লালন করেন তারা পাখিদের। অন্যদিকে গাছে গাছে পাখিরা ডিম পেরে বাচ্চাও ফুটাচ্ছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আবু নাসের বলেন, একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।

পাঁচবিবি উপজেলা থেকে দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী জয়নাল আবেদীন বলেন, শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।

কানাইপুকুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, পাখিগুলো আমাদের গ্রামকে মুখরিত করে রাখে। কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করি। এপ্রিল মাসের দিকে পাখিগুলো এখানে এসে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর জুন মাসের দিকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়াল শিখতে শিখতে শীত চলে আসে। তখন তারা এখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের অনেক খারাপ লাগে।

এই পাখি কলোনির আলম বলেন, অতিথি পাখিগুলো এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে আসছে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে এই পাখি কলোনি দেখাশোনা করি। এই পাখিগুলো সাধারণত সব জায়গায় বাসা বাঁধে না। এরা আমাদের এখানে বাসা বেঁধেছে এটা আমাদেরও একটা গর্বের বিষয়।

ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা চলে যায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের দিকে। এরা সাধারণত কলোনিয়াল ভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে এরা অনেক দিন থেকে যায়। অতিথি পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। পাখিগুলো যদি অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসা বা কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।

ছবি

সীতাকুণ্ডে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে প্রাণ গেল পাঁচ যাত্রীর

ছবি

ভালুকায় বস্তায় আদা চাষে আক্তারের সাফল্য

ছবি

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চসিকের বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু

ছবি

বেনাপোলের রঘুনাথপুর সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ

ছবি

কটিয়াদীতে ব্রি ধান-১০৩ জাতের বাম্পার ফলন

ছবি

হিমাগারে মওজুদ রয়ে গেছে প্রচুর আলু ঝুঁকিতে আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা

ছবি

মুক্তাগাছায় বাস চাপায় নানী-নাতি নিহত

ছবি

বোয়ালখালীতে হাইব্রিড লাউ চাষে সফল কৃষক সাজ্জাদ

ছবি

পৌরসভায় কাজ না করে ৮১ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

ছবি

দুমকিতে আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

নন্দীগ্রামে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগাছানাশকে পুড়লো কৃষকের আধা পাকা ধান

ছবি

ভোলার মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন: গুলিবিদ্ধ তিন

ছবি

বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

আসতে না আসতেই বেতাগীতে জেঁকে বসেছে শীত

ছবি

বালু ব্যবসার অভিযোগ, বালুর স্তূপে চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী

বাগেরহাট কারাগারে বন্দি ভারতীয় জেলের মৃত্যু

ছবি

অপচিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু প্রসূতির অবস্থা আশঙ্কাজনক

ছবি

কোটচাঁদপুরে বেড়েই চলেছে নিষিদ্ধ পলেথিনের ব্যবহার

ছবি

ঝালকাঠিবাসী আজও সিডরের সেই ভয়াল স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে

ছবি

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিন বাসে আগুন, হাতবোমা বিস্ফোরণ—হতাহতের খবর নেই

ছবি

সিলেটে নিজ ঘর থেকে মেডিকেল ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

বাগেরহাটের বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি

সিরাজগঞ্জে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর উপরে শুকানো হচ্ছে ধান-খড়

গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় গভীর রাতে পেট্রলবোমা হামলা

ছবি

মহম্মদপুরে ইউএনওসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য, ভোগান্তিতে জনসাধারণ

ছবি

লৌহজংয়ে জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম

লালপুরে দুই কমিটির দ্বন্দ্বে গোঁসাই আশ্রমের নবান্ন উৎসব নিয়ে শঙ্কা

ছবি

সিলেটে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল অ্যাম্বুলেন্স ও বাস

ছবি

আজও সিডরের সেই ভয়াল স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে

ছবি

হাইমচরে শিক্ষক দম্পতির বাসায় ডাকাতি

ছবি

হাইমচরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান গ্রেপ্তার

মোরেলগঞ্জে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলা, আহত ৫

ছবি

ক্যান্সারে আক্রান্ত তৃষা বাঁচতে চায়

ছবি

চান্দিনায় সড়কের গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতকারী, প্রশাসন নীরব

ছবি

ফরিদগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে সাত প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত

ছবি

শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ

tab

শামুকখোল পাখির গ্রাম জয়পুরহাট

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট

বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

বিরল প্রজাতির শামুকখোল পাখির গ্রাম নামে পরিচিত এখন জয়পুরহাট জেলা। গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুকখোল পাখি। নিরাপদ অভয়াশ্রম পেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে বছরের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো এখানে বসবাস করে। সে জন্য গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম হিসেবে। সকালে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাখিগুলোকে দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।

জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা আলমের বাড়ির পাশে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর আম, বট, তেঁতুল, নিম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। এসব গাছে একটা সময় রাতচরা পাখি বাসা বেঁধেছিল। তারপর সাদা বক বাসা বাঁধে বর্তমানে ধীরে ধীরে সেখানে রাজত্ব চলে আসে শামুকখোল পাখির দখলে। প্রায় দুই দশক ধরে শামুকখোল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।

এই শামুকখোল পাখিগুলো গাছের মগডালে নিজেদের আপন খেয়ালে বাসা বেঁধে আসছে। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে বক, কানা বক, শঙ্খ চোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে এর মধ্যে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই নিজের সন্তানের মতো লালন করেন তারা পাখিদের। অন্যদিকে গাছে গাছে পাখিরা ডিম পেরে বাচ্চাও ফুটাচ্ছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আবু নাসের বলেন, একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।

পাঁচবিবি উপজেলা থেকে দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী জয়নাল আবেদীন বলেন, শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।

কানাইপুকুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, পাখিগুলো আমাদের গ্রামকে মুখরিত করে রাখে। কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করি। এপ্রিল মাসের দিকে পাখিগুলো এখানে এসে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর জুন মাসের দিকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়াল শিখতে শিখতে শীত চলে আসে। তখন তারা এখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের অনেক খারাপ লাগে।

এই পাখি কলোনির আলম বলেন, অতিথি পাখিগুলো এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে আসছে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে এই পাখি কলোনি দেখাশোনা করি। এই পাখিগুলো সাধারণত সব জায়গায় বাসা বাঁধে না। এরা আমাদের এখানে বাসা বেঁধেছে এটা আমাদেরও একটা গর্বের বিষয়।

ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা চলে যায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের দিকে। এরা সাধারণত কলোনিয়াল ভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে এরা অনেক দিন থেকে যায়। অতিথি পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। পাখিগুলো যদি অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসা বা কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।

back to top