লোকজ সংস্কৃতির দেশ বাংলাদেশ। গ্রামীণ জীবনের পরতে পরতে মিশে আছে বিভিন্ন লোকজ সংস্কৃতির মিশেল। শেকড় ঐতিহ্যের একটি নান্দনিক আয়োজন লোকজ সংস্কৃতি। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন ধারাপাতে লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য অনেক পুরনো। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন ঘনিষ্ট লোকজ সংস্কৃতির অনেক ধারাই এখন বিলুপ্তির পথে।
লোকজ সংস্কৃতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো হলো গ্রামীণ যাত্রা, বাউল গান, কবিগান, জারিগান, গাজীর গীত, ধামাইল, মাইট্যা তামশা, পুঁথিপাঠ, কিচ্ছা কাহিনি, নৌকা বাইচ, বৈঠকিগান, সংসাজা, ঢপযাত্রা, পালাগান, মানপালা, মাথুরপালা, নিমাই সন্যাস, নৌকাবিলাস, গ্রাম্যগীত ইত্যাদি। আকাশ সংস্কৃতির দাপটে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে জীবন ঘনিষ্ট লোকজ সংস্কৃতির এসব ধারা। বিদ্যুতের আশির্বাদে গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে টিভি সেট, হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। কে আর খবর রাখে লোকজ সংস্কৃতির। অথচ এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামে গ্রামে আয়োজন হতো লোকজ সংস্কৃতির মেলা। এসবের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হতো মেলবন্ধন। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠতো শৌখিন গ্রামীণ যাত্রা,ঢপযাত্রার দল। কবির টপ্পা, আর কবির লড়াইয়ে মুখরিত হতো গ্রামীণ জনপদ। বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, হালখাতা, পুইনা উপলক্ষে জমে উঠতো বাউল ও কবিগানের আসর। বিয়েশাদি উপলক্ষে বাটাভরা পান নিয়ে বারান্দায়, আঙিনায় বসতো গ্রামীণ মহিলাদের গীতের আসর। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠতো জারিগানের দল। প্রতিযোগিতা চলতো দলে দলে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে গজীর গীত পরিবেশন করতেন গাজীর গাইনরা। এছাড়াও তারা বায়না নিয়ে গাজীর পালা পরিবেশন করতেন। কবিগানের ডাক না পড়ায় জীবদ্দশায় নেত্রকোনার কবিয়াল মদন সরকারের সাথে কথা হয়। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কবিমশাই কবির দিন তো শেষ। আপনার এখন কি কাম। স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেন, কামের মধ্যে কাম, তৈজসপত্রে লেখি নাম (বৃদ্ধাবস্থায় তিনি বাসনকোসনে নাম লিখতেন) অক্ষর প্রতি আট আনা দাম, এই হারেতে পাই, বৃদ্ধ বয়সে মদনে, ঠেহলাম বড় নিদানে, দন্তহীন বদনে। এভাবেই কালের অতল তলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চিরচেনা শেকড় ঐতিহ্য লোকজ সংস্কৃতি। বর্তমান প্রজন্মও ভুলতে বসেছে লোকজ সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
লোকজ সংস্কৃতির দেশ বাংলাদেশ। গ্রামীণ জীবনের পরতে পরতে মিশে আছে বিভিন্ন লোকজ সংস্কৃতির মিশেল। শেকড় ঐতিহ্যের একটি নান্দনিক আয়োজন লোকজ সংস্কৃতি। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন ধারাপাতে লোকজ সংস্কৃতির ঐতিহ্য অনেক পুরনো। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন ঘনিষ্ট লোকজ সংস্কৃতির অনেক ধারাই এখন বিলুপ্তির পথে।
লোকজ সংস্কৃতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধারাগুলো হলো গ্রামীণ যাত্রা, বাউল গান, কবিগান, জারিগান, গাজীর গীত, ধামাইল, মাইট্যা তামশা, পুঁথিপাঠ, কিচ্ছা কাহিনি, নৌকা বাইচ, বৈঠকিগান, সংসাজা, ঢপযাত্রা, পালাগান, মানপালা, মাথুরপালা, নিমাই সন্যাস, নৌকাবিলাস, গ্রাম্যগীত ইত্যাদি। আকাশ সংস্কৃতির দাপটে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে জীবন ঘনিষ্ট লোকজ সংস্কৃতির এসব ধারা। বিদ্যুতের আশির্বাদে গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে টিভি সেট, হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। কে আর খবর রাখে লোকজ সংস্কৃতির। অথচ এমন এক সময় ছিল যখন গ্রামে গ্রামে আয়োজন হতো লোকজ সংস্কৃতির মেলা। এসবের মাধ্যমে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হতো মেলবন্ধন। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠতো শৌখিন গ্রামীণ যাত্রা,ঢপযাত্রার দল। কবির টপ্পা, আর কবির লড়াইয়ে মুখরিত হতো গ্রামীণ জনপদ। বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, হালখাতা, পুইনা উপলক্ষে জমে উঠতো বাউল ও কবিগানের আসর। বিয়েশাদি উপলক্ষে বাটাভরা পান নিয়ে বারান্দায়, আঙিনায় বসতো গ্রামীণ মহিলাদের গীতের আসর। গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠতো জারিগানের দল। প্রতিযোগিতা চলতো দলে দলে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে গজীর গীত পরিবেশন করতেন গাজীর গাইনরা। এছাড়াও তারা বায়না নিয়ে গাজীর পালা পরিবেশন করতেন। কবিগানের ডাক না পড়ায় জীবদ্দশায় নেত্রকোনার কবিয়াল মদন সরকারের সাথে কথা হয়। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কবিমশাই কবির দিন তো শেষ। আপনার এখন কি কাম। স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেন, কামের মধ্যে কাম, তৈজসপত্রে লেখি নাম (বৃদ্ধাবস্থায় তিনি বাসনকোসনে নাম লিখতেন) অক্ষর প্রতি আট আনা দাম, এই হারেতে পাই, বৃদ্ধ বয়সে মদনে, ঠেহলাম বড় নিদানে, দন্তহীন বদনে। এভাবেই কালের অতল তলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চিরচেনা শেকড় ঐতিহ্য লোকজ সংস্কৃতি। বর্তমান প্রজন্মও ভুলতে বসেছে লোকজ সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য।