সারাদেশের ন্যায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা জুড়ে গত কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ, বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৌসুমী ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাতে চলতি মৌসুমের পাকা-আধাপাকা আমন ধানসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। হঠাৎ করেই গত ৪ দিন যাবত লাগাতার অনবরত বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে নেমে এসেছে হতাশার দুর্বিষহ দুর্ভিক্ষের ছাপ।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে , গত চারদিন ধরে চলমান একটানা ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া সহ অতি বৃষ্টির কারণে মাঠের ফসল মাটিতে পড়ে গিয়ে পানিতে ডুবে গিয়ে সীমাহীন ক্ষতির শিকার হওয়ার সম্ভব না দেখা দিয়েছে। দমকা হাওয়ায় অনেক এলাকার পাকা আমন ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বলা চলে ফসলের মাঠ জুড়ে শুধুই পানিবন্দী আঁধা পাকা সোনালী ধানের ফসলের মাঠের ক্ষতির চিত্র। উপজেলার ১০ইউনিয়নে এই ঝড়হাওয়া অনাবরত বৃষ্টিপাতের প্রভাবে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। চাষিরা জানান, মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান কাটার প্রস্তুতি নেয়ার প্রাক্কালে এরকম দুর্যোগ ভাবাই মুশকিল। হঠাৎ করে ভারী বৃষ্টিতে ধান গাছ পড়ে যাওয়ায় ধানের গোড়ায় পচন ধরে ধানের শীষের দানায় কালচে রং আকার ধারন করেছে। এর ফলে উৎপাদন কমে গিয়ে আমন আবাদে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উততর কুমার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো, লেবু মিয়া দৈনিক সংবাদকে বলেন, আমন ধানই নয়, শীতকালীন রবি শস্য, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, লাল শাক, পালং শাক, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির ক্ষেতও পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় জমির মাটি নরম হয়ে গিয়ে গাছ উপড়ে পড়েছে। আবার অনেক শাকসবজি তলা পানিতে তলিয়ে পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন। খালিশা চাপানী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আমন ধান কাটার পূর্ব মুহূর্তে এমন বৃষ্টির ও দমকা হাওয়ার কারনে সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল। ফসল ঘরে তুলতে না পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। কি করবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো, মীর হাসান আল বান্না সংবাদকে জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ধানের ফসল সহ শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কৃষি সহকারি (বিএস) গনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো সহ আবেদন করা হবে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে পারে। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশ মেঘলা থাকবে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এদিকে, আকস্মিক দমকা ঝড়হাওয়া ও বৃষ্টির কারনে ফসলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
সারাদেশের ন্যায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা জুড়ে গত কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ, বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৌসুমী ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাতে চলতি মৌসুমের পাকা-আধাপাকা আমন ধানসহ শীতকালীন বিভিন্ন জাতের রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। হঠাৎ করেই গত ৪ দিন যাবত লাগাতার অনবরত বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় কৃষকের মুখের হাসি ম্লান হয়ে নেমে এসেছে হতাশার দুর্বিষহ দুর্ভিক্ষের ছাপ।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে , গত চারদিন ধরে চলমান একটানা ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া সহ অতি বৃষ্টির কারণে মাঠের ফসল মাটিতে পড়ে গিয়ে পানিতে ডুবে গিয়ে সীমাহীন ক্ষতির শিকার হওয়ার সম্ভব না দেখা দিয়েছে। দমকা হাওয়ায় অনেক এলাকার পাকা আমন ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বলা চলে ফসলের মাঠ জুড়ে শুধুই পানিবন্দী আঁধা পাকা সোনালী ধানের ফসলের মাঠের ক্ষতির চিত্র। উপজেলার ১০ইউনিয়নে এই ঝড়হাওয়া অনাবরত বৃষ্টিপাতের প্রভাবে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। চাষিরা জানান, মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান কাটার প্রস্তুতি নেয়ার প্রাক্কালে এরকম দুর্যোগ ভাবাই মুশকিল। হঠাৎ করে ভারী বৃষ্টিতে ধান গাছ পড়ে যাওয়ায় ধানের গোড়ায় পচন ধরে ধানের শীষের দানায় কালচে রং আকার ধারন করেছে। এর ফলে উৎপাদন কমে গিয়ে আমন আবাদে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উততর কুমার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো, লেবু মিয়া দৈনিক সংবাদকে বলেন, আমন ধানই নয়, শীতকালীন রবি শস্য, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, লাল শাক, পালং শাক, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির ক্ষেতও পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় জমির মাটি নরম হয়ে গিয়ে গাছ উপড়ে পড়েছে। আবার অনেক শাকসবজি তলা পানিতে তলিয়ে পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন। খালিশা চাপানী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আমন ধান কাটার পূর্ব মুহূর্তে এমন বৃষ্টির ও দমকা হাওয়ার কারনে সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল। ফসল ঘরে তুলতে না পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। কি করবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো, মীর হাসান আল বান্না সংবাদকে জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ধানের ফসল সহ শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির নিরূপণে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কৃষি সহকারি (বিএস) গনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো সহ আবেদন করা হবে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে পারে। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশ মেঘলা থাকবে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এদিকে, আকস্মিক দমকা ঝড়হাওয়া ও বৃষ্টির কারনে ফসলের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়ে নতুন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তারা সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পুনর্বাসনে আর্থিক সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।