ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
“বাবা, আমি কোচিংয়ে যাচ্ছি” এটাই ছিল জান্নাতুল তাওহিদা জীমের শেষ কথা। তারপর থেকে আর কোনো খবর নেই মেয়েটির। দিন গুনতে গুনতে কেটে গেছে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময়, কিন্তু এখনও ফিরেনি সেই প্রিয় মুখটি। বাবা-মায়ের বুকফাটা কান্না, অশ্রুসিক্ত চোখ আর একটাই প্রশ্ন কোথায় হারিয়ে গেল তাদের স্নেহের জীম? নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দিয়ার মশুরিয়া গ্রামের মো. জহরুল ইসলাম ও রেহেনা বেগম দম্পতির সন্তান জান্নাতুল তাওহিদা জীম (১৫) ইয়াছিনপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ১০ অক্টোবর, শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো কোচিং ক্লাসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জীম। সকাল ৬টার দিকে নিজ বাসা থেকে বের হয়ে আর কখনও ফিরে আসেনি সে। জীমের বাবা মো. জহরুল ইসলাম ভাঙা কণ্ঠে বলেন, “ও প্রতিদিনই সকালে কোচিংয়ে যেত। সেদিনও তাই ভেবেছি। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও আর ফিরে এল না। পরে কোচিং সেন্টারে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি, সেদিন ও সেখানে যায়নি। চারপাশে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব সব জায়গায় খুঁজেছি। শেষ পর্যন্ত বাগাতিপাড়া থানায় জিডি করেছি। আমার ধারণা, কোনো খারাপ চক্র আমার মেয়েকে ভুল পথে নিয়ে গেছে।” অসহায় মা রেহেনা বেগম কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, “আমি শুধু আমার মেয়েকে ফেরত চাই। আমার মেয়ের কোনো শত্রু ছিল না। ও খুব ভদ্র, শান্ত মেয়ে। কেউ যদি আমার মেয়ের খবর জানে, একটু দয়া করে জানিয়ে দিন। আমি আমার মেয়েকে ছাড়া এক মুহূর্তও বাঁচতে পারব না।”গ্রামের মানুষ বলছেন, জীম ছিল সবার প্রিয় মেয়ে। স্কুলে ভালো ফল করত, সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত। প্রতিবেশী শাহিনা বেগম বলেন, “আমরা সবাই জীমকে খুব ভালোবাসতাম। মেয়েটা যেখানেই থাক, আল্লাহ যেন ওকে ভালোভাবে ফিরিয়ে দেয়।” এদিকে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে জহরুল ইসলামের পরিবারে নেমে এসেছে নীরব শোকের ছায়া। প্রতিদিন ভোরে মা রেহেনা দরজার পাশে বসে থাকেন, মনে মনে প্রার্থনা করেন হয়তো আজ তার জীম ফিরে আসবে। ঘরের দেয়ালে ঝুলছে জীমের হাস্যোজ্জ্বল একটি ছবি, তাকিয়ে থাকলেই বুক ভেঙে যায় মায়ের। বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চেস্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারব।” মানুষ এখন মেয়েটির খোঁজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট দিচ্ছে। কেউ কেউ নিজের মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে বলছেন “এটা শুধু জহরুল সাহেবের মেয়ে নয়, এটা আমাদের মেয়েও হতে পারত।”
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
“বাবা, আমি কোচিংয়ে যাচ্ছি” এটাই ছিল জান্নাতুল তাওহিদা জীমের শেষ কথা। তারপর থেকে আর কোনো খবর নেই মেয়েটির। দিন গুনতে গুনতে কেটে গেছে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময়, কিন্তু এখনও ফিরেনি সেই প্রিয় মুখটি। বাবা-মায়ের বুকফাটা কান্না, অশ্রুসিক্ত চোখ আর একটাই প্রশ্ন কোথায় হারিয়ে গেল তাদের স্নেহের জীম? নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দিয়ার মশুরিয়া গ্রামের মো. জহরুল ইসলাম ও রেহেনা বেগম দম্পতির সন্তান জান্নাতুল তাওহিদা জীম (১৫) ইয়াছিনপুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ১০ অক্টোবর, শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের মতো কোচিং ক্লাসের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জীম। সকাল ৬টার দিকে নিজ বাসা থেকে বের হয়ে আর কখনও ফিরে আসেনি সে। জীমের বাবা মো. জহরুল ইসলাম ভাঙা কণ্ঠে বলেন, “ও প্রতিদিনই সকালে কোচিংয়ে যেত। সেদিনও তাই ভেবেছি। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও আর ফিরে এল না। পরে কোচিং সেন্টারে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি, সেদিন ও সেখানে যায়নি। চারপাশে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব সব জায়গায় খুঁজেছি। শেষ পর্যন্ত বাগাতিপাড়া থানায় জিডি করেছি। আমার ধারণা, কোনো খারাপ চক্র আমার মেয়েকে ভুল পথে নিয়ে গেছে।” অসহায় মা রেহেনা বেগম কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, “আমি শুধু আমার মেয়েকে ফেরত চাই। আমার মেয়ের কোনো শত্রু ছিল না। ও খুব ভদ্র, শান্ত মেয়ে। কেউ যদি আমার মেয়ের খবর জানে, একটু দয়া করে জানিয়ে দিন। আমি আমার মেয়েকে ছাড়া এক মুহূর্তও বাঁচতে পারব না।”গ্রামের মানুষ বলছেন, জীম ছিল সবার প্রিয় মেয়ে। স্কুলে ভালো ফল করত, সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত। প্রতিবেশী শাহিনা বেগম বলেন, “আমরা সবাই জীমকে খুব ভালোবাসতাম। মেয়েটা যেখানেই থাক, আল্লাহ যেন ওকে ভালোভাবে ফিরিয়ে দেয়।” এদিকে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে জহরুল ইসলামের পরিবারে নেমে এসেছে নীরব শোকের ছায়া। প্রতিদিন ভোরে মা রেহেনা দরজার পাশে বসে থাকেন, মনে মনে প্রার্থনা করেন হয়তো আজ তার জীম ফিরে আসবে। ঘরের দেয়ালে ঝুলছে জীমের হাস্যোজ্জ্বল একটি ছবি, তাকিয়ে থাকলেই বুক ভেঙে যায় মায়ের। বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চেস্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারব।” মানুষ এখন মেয়েটির খোঁজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট দিচ্ছে। কেউ কেউ নিজের মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে বলছেন “এটা শুধু জহরুল সাহেবের মেয়ে নয়, এটা আমাদের মেয়েও হতে পারত।”