বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : মাঠে মাঠে পাকা ধান কাটার ধুম
কয়েকদিন পূর্বেও সবুজের সমারোহের বেড়াজালে আবৃত ছিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বিস্তীর্ণ মাঠ গুলো। তারপর হলুদবর্ণে রূপান্তর। শীতল বাতাসে সোনালি ধান দুলছিল মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে প্রফুল্ল হয়ে উঠেছে কৃষকদের মন। দেখতে দেখতে সবুজ, আর হলুদাভাবের সেই পাকা ধানে পরিপূর্ণতা পেয়ে বর্তমানে তা ঘরে তুলতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার জৈষ্টপুরা, শ্রীপুর খরণদ্বীপ ও করলডেঙ্গা গ্রামের প্রান্তিক কৃষকেরা।
অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতিতে আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন কৃষাণিরা। সবমিলিয়ে কৃষক পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ, করলডেঙ্গা ও জৈষ্টপুরা এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরোদমে চলছে ধানকাটা, বাছা, গোছানো এবং মাড়াই করার কাজে মহা ব্যস্ত কৃষকরা।
কৃষক এবং কৃষি কাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের ঘাটতি নেই বললেই চলে। আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধে গ্রামের মেঠো পথ হতে শুরু করে কৃষকের বাড়ী পর্যন্ত ভরপুর হয়ে উঠেছে। কৃষকের পাশাপাশি কৃষাণীরাও মহাব্যস্ত সময় অতিক্রম করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।
চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ সারসহ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ফলন দেখে কৃষকদের মনে বিরাজ করছে যেন উৎসব।
উপজেলার সারোয়াতলি গ্রামের কৃষক মোর্শেদ আলম এবার ৪ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় ৩৩ শতক জমিতে ব্রী ধান ৮৭ প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বোরো ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আর সে কারণেই আমন ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আমনের বাম্পার ফলন আশা করছেন তিনি।
২০ একর জমিতে আমন চাষ করেছেন আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ব্রি-ধান ৯৩, ৯৬, ৪৯ ও আগাম জাতের ১০৩ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে কাটা শুরু হবে একই কথা জানিয়েছেন আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক এস এম বাবর। চলতি মৌসুমে ২৫ কানি জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক নিমাই দে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু করেছি। এখন ৮ কানি মতো কাটা হয়েছে। এবার আমন ধানের যে ফলন হয়েছে তা আশানুরূপ।
যদি বাজারে ধানের দাম ভালো পাই, তাহলে লাভের মুখ দেখব আশা করছি। একই কথা জানান ওই এলাকার একাধিক কৃষক।
অতিরিক্ত দায়িত্বরত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে ধান চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ধানের রোগবালাইও কম। এখন পর্যন্ত ফসলের মাঠ ভালো রয়েছে। উপজেলার কোন কোন জায়গায় এখন পুরোদমে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে। নতুন ধান ঘরে তুলতে কৃষকের হাসিমুখে ছড়িয়ে পড়েছে এক উৎসবের আমেজ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) : মাঠে মাঠে পাকা ধান কাটার ধুম
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
কয়েকদিন পূর্বেও সবুজের সমারোহের বেড়াজালে আবৃত ছিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বিস্তীর্ণ মাঠ গুলো। তারপর হলুদবর্ণে রূপান্তর। শীতল বাতাসে সোনালি ধান দুলছিল মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে প্রফুল্ল হয়ে উঠেছে কৃষকদের মন। দেখতে দেখতে সবুজ, আর হলুদাভাবের সেই পাকা ধানে পরিপূর্ণতা পেয়ে বর্তমানে তা ঘরে তুলতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার জৈষ্টপুরা, শ্রীপুর খরণদ্বীপ ও করলডেঙ্গা গ্রামের প্রান্তিক কৃষকেরা।
অন্যদিকে মাঠ থেকে নতুন ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতিতে আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন কৃষাণিরা। সবমিলিয়ে কৃষক পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ, করলডেঙ্গা ও জৈষ্টপুরা এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরোদমে চলছে ধানকাটা, বাছা, গোছানো এবং মাড়াই করার কাজে মহা ব্যস্ত কৃষকরা।
কৃষক এবং কৃষি কাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের ঘাটতি নেই বললেই চলে। আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধে গ্রামের মেঠো পথ হতে শুরু করে কৃষকের বাড়ী পর্যন্ত ভরপুর হয়ে উঠেছে। কৃষকের পাশাপাশি কৃষাণীরাও মহাব্যস্ত সময় অতিক্রম করছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।
চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ সারসহ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ফলন দেখে কৃষকদের মনে বিরাজ করছে যেন উৎসব।
উপজেলার সারোয়াতলি গ্রামের কৃষক মোর্শেদ আলম এবার ৪ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। এছাড়া ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় ৩৩ শতক জমিতে ব্রী ধান ৮৭ প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বোরো ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আর সে কারণেই আমন ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আমনের বাম্পার ফলন আশা করছেন তিনি।
২০ একর জমিতে আমন চাষ করেছেন আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ব্রি-ধান ৯৩, ৯৬, ৪৯ ও আগাম জাতের ১০৩ চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে কাটা শুরু হবে একই কথা জানিয়েছেন আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক এস এম বাবর। চলতি মৌসুমে ২৫ কানি জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন জৈষ্টপুরা গ্রামের কৃষক নিমাই দে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু করেছি। এখন ৮ কানি মতো কাটা হয়েছে। এবার আমন ধানের যে ফলন হয়েছে তা আশানুরূপ।
যদি বাজারে ধানের দাম ভালো পাই, তাহলে লাভের মুখ দেখব আশা করছি। একই কথা জানান ওই এলাকার একাধিক কৃষক।
অতিরিক্ত দায়িত্বরত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে ধান চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ধানের রোগবালাইও কম। এখন পর্যন্ত ফসলের মাঠ ভালো রয়েছে। উপজেলার কোন কোন জায়গায় এখন পুরোদমে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে। নতুন ধান ঘরে তুলতে কৃষকের হাসিমুখে ছড়িয়ে পড়েছে এক উৎসবের আমেজ।